• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

দাম্পত্য জীবন – সৈয়দ মুজতবা আলী

লাইব্রেরি » বাংলা কৌতুক » রম্য রচনা » দাম্পত্য জীবন – সৈয়দ মুজতবা আলী

কথায় কথায় বিবাহিত জীবন নিয়ে আলোচনা। সায়েব বললে, ‘লন্ডনে একবার স্বামীদের এক আড়াই মাইল লম্বা প্রসেশন হয়েছিল, স্ত্রীদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবার জন্য। প্রসেশনের মাথায় ছিল এক পাঁচ ফুট লম্বা টিঙটিঙে হাড্ডি-সার ছোকরা। হঠাৎ বলা নেই, কওয়া নেই ছ’ফুট লম্বা ইয়া লাশ এক ঔরত্ দুমদুম করে তার দিকে এগিয়ে গিয়ে তার হাত ধরে এক হ্যাঁচকা টান দিয়ে বললে, “তুমি এখানে কেন, তুমি তো আমাকে ডরাও না। চলো বাড়ি।” সুড়সুড় করে ছোকরা চলে গেল সেই খাণ্ডার বউয়ের পিছনে পিছনে।’
আমার চীনা বন্ধুটি আদব-মাফিক মিষ্টি মৌরী হাসি হাসলেন। সায়েব খুশী হয়ে চলে গেল।
গুটিকয়েক শুকনো নিমপাতা টেবিলের ওপর ঝরে পড়ল। বন্ধু তাই দিয়ে টেবিলক্লথের উপর আল্পনা সাজাতে সাজাতে বললেন, ‘কী গল্প! শুনে হাসির চেয়ে কান্না পায় বেশী।’ তারপর চোখ বন্ধ করে বললেন—
‘চীনা গুণী আচার্য সু তাঁর প্রামাণিক শাস্ত্রগ্রন্থে লিখেছেন, একদা চীন দেশের পেপিং শহরে অত্যাচার-জর্জরিত স্বামীরা এক মহতী সভার আহ্বান করেন। সভার উদ্দেশ্য, কি প্রকারে নিপীড়িত স্বামী-কুলকে তাঁদের খাণ্ডার খাণ্ডার গৃহিণীদের হাত থেকে উদ্ধার করা যায়?
‘সভাপতির সম্মানিত আসনে বসানো হল সবচেয়ে জাঁদরেল দাড়িওলা অধ্যাপক মাওলীকে। ঝাড়া ষাটটি বছর তিনি তাঁর দজ্জাল গিন্নীর হাতে অশেষ অত্যাচারে ভুগেছেন সেকথা সকলেরই জানা ছিল।
‘ওজস্বিনী ভাষায় গম্ভীর কণ্ঠে বজ্রনির্ঘোষে বক্তার পর বক্তা ঘণ্টার পর ঘণ্টা আপন আপন অভিজ্ঞতা বলে যেতে লাগলেন। স্ত্রীলোকের অত্যাচারে দেশ গেল, ঐতিহ্য গেল, ধর্ম গেল, সব গেল, চীন দেশ হটেনটটের মুল্লুকে পরিণত হতে চলল, এর একটা প্রতিকার করতেই হবে। ধন-প্রাণ সর্বস্ব দিয়ে এ অত্যাচার ঠেকাতে হবে। এস ভাই, এক জোট হয়ে—
‘এমন সময় বাড়ির দারোয়ান হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে বলল, “হুজুুররা এবার আসুন। আপনাদের গিন্নীরা কি করে এ সভার খবর পেয়ে ঝাঁটা, ছেঁড়া জুতো, ভাঙা ছাতা ইত্যাদি যাবতীয় মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এদিকে ধাওয়া করে আসছে।”
‘যেই না শোনা, আর যাবে কোথায়? জানলা দিয়ে, পেছনের দরজা দিয়ে, এমন কি ছাত ফুটো করে, দেয়াল কানা করে দে ছুট, দে ছুট! তিন সেকেণ্ডে মিটিঙ সাফ—বিলকুল ঠাণ্ডা!
‘কেবলমাত্র সভাপতি বসে আছেন সেই শান্ত গম্ভীর মুখ নিয়ে—তিনি বিন্দুমাত্র বিচলিত হন নি। দারোয়ান তাঁর কাছে ছুটে গিয়ে বারবার প্রণাম করে বলল, “হুজুর যে সাহস দেখাচ্ছেন তাঁর সামনে চেঙ্গিস খানও তসলীম ঠুকতেন, কিন্তু এ তো সাহস নয়, এ হচ্ছে আত্মহৎযার শামিল। গৃহিণীদের প্রসেশনে সক্কলের পয়লা রয়েছেন আপনারই স্ত্রী। এখনো সময় আছে। আমি আপনাকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাচ্ছি।” সভাপতি তবু চুপ। তখন দারোয়ান তাঁকে তুলে ধরতে গিয়ে দেখে তাঁর সর্বাঙ্গ ঠাণ্ডা। হার্ট ফেল করে মারা গিয়েছেন।’
আচার্য উ থামলেন। আমি উচ্ছ্বসিত হয়ে ‘সাধু সাধু’, ‘শাবাশ’, ‘শাবাশ’ বললুম। করতালি দিয়ে নিবেদন করলুম, ‘এ একটা গল্পের মত গল্প বটে।’ আচার্য উ বললেন, ‘এ বিষয়ে ভারতীয় আপ্তবাক্য কি?’
চোখ বন্ধ করে আল্লা রসুকলকে স্মরণ করলুম, পীর দরবেশ গুরু ধর্ম কেউই বাদ পড়লেন না। শেষটায় মৌলা আলীর দয়া হল।
হাত জোড় করে বরজলালের মত ক্ষীণ কণ্ঠে ইমন কল্যাণ ধরলুম।
শ্রীমন্মহারাজ রাজাধিরাজ দেবেন্দ্রবিজয় মুখ কালি করে একদিন বসে আছেন ঘরের অন্ধকার কোণে। খবর পেয়ে প্রধানমন্ত্রী এসে শুধালেন মহারাজের কুশল তো? মহারাজ নড়েন না। মন্ত্রী বিস্তর পীড়াপীড়ি করাতে হঠাৎ খ্যাঁক খ্যাঁক করে উঠলেন, ঐ রাণীটা—ওঃ কি দজ্জাল, কি খাণ্ডার! বাপরে বাপ! দেখলেই আমার বুকের রক্ত হিম হয়ে আসে।’
মন্ত্রীর যেন বুক থেকে হিমালয় নেমে গেল। বললেন, ‘ওঃ! আমি ভাবি আর কিছু। তাতে অতো বিচলিত হচ্ছেন কেন মহারাজ! বউকে তো সবাই ডরায়—আম্মো ডরাই। তাই বলে তো আর কেউ এ রকমধারা গুম হয়ে বসে থাকে না।’
রাজা বললেন, ‘ঐ তুমি ফের আরেকখানা গুল ছাড়লে।’ মন্ত্রী বললেন, ‘আমি প্রমাণ করতে পারি।’ রাজা বললেন, ‘ধর বাজি।’ ‘কত মহারাজ?’ ‘দশ লাখ?’ ‘দশ লাখ।’
পরদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরে ঢোল পেটানোর সঙ্গে সঙ্গে হুকুম জারি হল—বিষ্যুত্বার বেলা পাঁচটায় শহরের তাবত বিবাহিত পুরুষ যেন শহরের দেয়ালের বাইরে জমায়েত হয়; মহারাজ তাদের কাছ থেকে একটি বিষয় জানতে চান।
লোকে লোকারণ্য। মধ্যিখানে মাচাঙ—তার উপরে মহারাজ আর মন্ত্রী। মন্ত্রী চেঁচিয়ে বললেন, ‘মহারাজ জানতে চান তোমরা তোমাদের বউকে ডরাও কি না। তাই তাঁর হয়ে আমি হুকুম দিচ্ছি যারা বউকে ডরাও তারা পাহাড়ের দিকে সরে যাও আর যারা ডরাও না তারা যাও নদীর দিকে।’
যেই না বলা অমনি হুড়মুড় করে, বাঘের সামনে পড়লে গোরুর পালের মতো, কালবৈশাখীর সামনে শুকনো পলাশ পাতার মতো সবাই ধাওয়া করলে পাহাড়ের দিকে, একে অন্যকে পিষে, দলে, থেঁতলে—তিন সেকেণ্ডের ভিতর পাহাড়ের গা ভর্তি।
বউকে না-ডরানোর দিক বিলকুল ফর্সা। না, ভুল বললুম। মাত্র একটি রোগা টিঙটিঙে লোক সেই বিরাট মধ্যিখানে লিকলিক করছে।
রাজা তো অবাক। ব্যাপারটা যে এ-রকম দাঁড়াবে তিনি আর কল্পনাও করতে পারেননি। মন্ত্রীকে বললেন, ‘তুমি বাজি জিতলে। এই নাও দশ লখা হার।’ মন্ত্রী বললেন, ‘দাঁড়ান মহারাজ। ওই যে একটা লোক রয়ে গেছে।’ মন্ত্রী তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকলেন। কাছে এলে বললেন, ‘তুমি যে বড় ওদিকে দাঁড়িয়ে? বউকে ডরাও না বুঝি?’
লোকটা কাঁপতে কাঁপতে কাঁদো কাঁদো হয়ে বললে, “অতশত বুঝি নে, হুজুর। এখানে আসার সময় বউ আমাকে ধমকে দিয়ে বলেছিল, ‘যেদিকে ভিড় সেখানে যেয়ো না।’ তাই আমি ওদিকে যাই নি।”
আচার্য উ আমাকে আলিঙ্গন করে বললেন, ‘ভারতবর্ষেরই জিৎ। তোমার গল্প যেন বাঘিনী বউ। আমার গল্প ভয়ে পালাল।’
তবু আমার মনে সন্দ রয়ে গিয়েছে। রসিক পাঠক, তুমি বলতে পারো কোন গল্পটাকে শিরোপা দি।

সৈয়দ মুজতবা আলী: আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম রম্যরচয়িতা। তাঁর বিখ্যাত রম্যগ্রন্থ পঞ্চতন্ত্র ও ময়ূরকণ্ঠী। এ ছাড়া দেশে বিদেশে, শবনম, চাচা কাহিনীও পাঠকমহলে ব্যাপক জনপ্রিয়। জন্ম-১৯০৪, মৃত্যু-১৯৭৪।

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মে ০৩, ২০১০

Category: বাংলা কৌতুক, রম্য রচনা
Previous Post:সিএনজি-বৃত্তান্ত!
Next Post:ফেসবুক আছে তাই…

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑