• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

জয়য়য়য়য়য়য়য়…বাংলা – নির্মলেন্দু গুণ

লাইব্রেরি » বাংলা কৌতুক » রম্য রচনা » জয়য়য়য়য়য়য়য়…বাংলা – নির্মলেন্দু গুণ

একদিন দুপুরের দিকে আমার কবিবন্ধু হুমায়ুন কবির আমার অফিসে আসে। ষাটের দশকের কবিদের মধ্যে হুমায়ুন কবিরকেই আমি ঢাকার রাজপথের জঙ্গি মিছিলগুলোতে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলাম।
হুমায়ুন এসেই বলল, ‘তোর ডান্ডি কার্ড আছে?’
আমি বললাম, ‘আছে।’
‘তাহলে আর সময় নষ্ট করে লাভ নেই। চল, ভুট্টো শালাকে “জয় বাংলা” স্লোগানটা শুনিয়ে আসি। ব্যাটা এখনই হোটেলে ফিরবে। তাড়াতাড়ি কর।’
হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সিকিউরিটির লোকজন আমাকে পিপল পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে জানতেন। আশপাশ দিয়ে যাতায়াত তো ছিলই। আনোয়ার জাহিদের কৃপায় গভীর রাতে পত্রিকার কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর আমরা মাঝেমধ্যে ওই হোটেলে চা বা কফি খেতে যেতাম। জাহিদ ভাই তখন আমাদের বস ছিলেন। গভীর রাতে দেখা মানুষকে মানুষ সহজে ভুলতে পারে না। ফলে ওই হোটেলের লোকজন আমাকে বেশ সমীহই করতেন।
হুমায়ুন বলল, ‘ওই সুযোগে তুই আমাকে সঙ্গে নিয়ে যাবি। আমরা লিফটের গোড়ায় ভুট্টো শালার জন্য অপেক্ষা করব। ব্যাটা যখন লিফটের কাছাকাছি আসবে, তখন ওর কানের পর্দা ফাটিয়ে আমরা একসঙ্গে স্লোগান দেব।’
এরূপ স্থির করে হোটেলের গেটে জমা হওয়া শত শত মানুষের ভিড় ঠেলে, সিকিউরিটির লোকদের আমার আইডেনটিটি কার্ড দেখিয়ে হোটেলের ভেতরে প্রবেশ করা সম্ভব হলো আমাদের। আমরা লিফটের কাছে গিয়ে অবস্থান নিলাম। লিফটের কাছে আমাদের খুব বেশি অপেক্ষা করতে হলো না। বেশিক্ষণ অপেক্ষা করলে আমাদের ওপর নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত লোকদের সন্দেহ হতো। ওখানে যেতে বিলম্ব হওয়ায় ভালোই হলো।
আমরাও ঢুকেছি আর সঙ্গে সঙ্গে ভুট্টোকে বহনকারী মোটরবহরটি বাঁশি বাজাতে বাজাতে এসে প্রবেশ করল হোটেলের গেটে। চারদিক থেকে স্লোগান উঠল। চারপাশের মানুষের চঞ্চলতা ছড়িয়ে পড়ল নিরাপত্তার লোকজনের মধ্যেও। ভুট্টো আমাদের খুব কাছে এসে একটি গাড়ি থেকে নামলেন। তাঁকে ঘিরে ধরল পাঁচ-ছয়জন সৈনিক। তাঁদের প্রত্যেকের হাতেই মারাত্মক অস্ত্র। কোনোটির নল ভুট্টোর ঘাড়ের ওপর দিয়ে, কোনোটির নল ভুট্টোর বগলের নিচ দিয়ে উঁকি দিচ্ছে। মনে হচ্ছিল, ভুট্টোকে বুঝি আষ্টেপৃষ্ঠে পেঁচিয়ে ধরেছে কতগুলো সাপ। ভুট্টো ঘামছেন। তাঁর মুখ ঘামে, রাগে, উত্তেজনা ও দুশ্চিন্তায় বিষণ্ন। লিফটের দিকে এগোনোর সময় আড়চোখে তাকাতেই আমাদের সঙ্গে তাঁর দৃষ্টি বিনিময় হলো। আমরা এ রকম একটি মোক্ষম সুযোগের জন্যই অপেক্ষা করছিলাম। এটাই যে ঘটনা ঘটানোর সুবর্ণ সময় সে কথা আমরা দুজন বুঝে ফেললাম একই সঙ্গে। ফলে একই সঙ্গে আমাদের আইয়ুববিরোধী গণ-অভ্যুত্থানকারী আন্দোলনের স্লোগান-অভিজ্ঞ হাত আকাশে উত্থিত হলো এবং একই সঙ্গে আমাদের দুজনের কণ্ঠ থেকে নির্গত হলো বাঙালির উদ্ভাবিত শ্রেষ্ঠ স্লোগান ‘জয়য়য়য়য়য়…বাংলা’।
চরাচরে প্রতিধ্বনি তুলে ওই স্লোগানের কম্পন ছড়িয়ে পড়ল হোটেলের চারপাশে। হোটেলের ভেতর ভুট্টোর জন্য অত্যন্ত স্পর্শকাতর বলে বিবেচিত ওই স্লোগানটি ভুট্টোর নাকের ডগায় উচ্চারিত হতে পারে, তা কেউ ভাবতে পারেননি। না ভুট্টো, না সিকিউরিটির লোকজন—না হোটেলের চারপাশে ভিড় করা জনতা।
আমাদের কণ্ঠে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান শুনে প্রচণ্ড উল্লাসে ফেটে পড়ল হোটেলের চারপাশে ভিড় করা জনতা। পরের পদক্ষেপটি বাংলার মাটিতে ফেলতে গিয়ে ভুট্টোর পা স্থির হয়ে থাকল মুহূর্তের জন্য। আর সেই সঙ্গে আমাদের দুজনের বুকের ওপর চেপে বসল বেশ কটি আগ্নেয়াস্ত্রের চকচকে নল।
আমাদের স্লোগান-উত্থিত হাত একটি ফ্রিজ শটে স্থির হয়ে রইল। একজন সৈনিক আমাদের বুকে বন্দুকের নল ঠেকিয়ে বলল, ‘আওর এক স্লোগান দেয়গা তো গুলি কর দেয়গা।’
ভুট্টো আমাদের দিকে ভীতত্রস্ত এবং একই সঙ্গে লাল চোখে তাকালেন। আমরাও ভুট্টোর চোখের দিকে তাকালাম। তিনি লিফটের দিকে এগিয়ে গেলেন। খাঁচার ভেতরে সার্কাসের বাঘকে যেভাবে ঢোকানো হয়, সৈনিকেরা ভুট্টোকে ঠেলতে ঠেলতে ঠিক সেভাবেই লিফটের ভেতর ঢোকাল। ভুট্টো লিফটের ভেতরে প্রবেশ করেন।
যতক্ষণ লিফটের দরজাটি বন্ধ না হয়, ততক্ষণ ভুট্টোর চোখ আমাদের দুজনের দিকেই নিবদ্ধ থাকে। লিফটের দরজাটি বন্ধ হয়ে যেতেই সৈনিকেরা আমাদের বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে ঠেলতে ঠেলতে হোটেলের বাইরে নিষ্ক্রান্ত হতে বাধ্য করে।
আমরা যখন হোটেলের বাইরে বেরিয়ে আসি, উপস্থিত জনতা আমাদের ঘিরে আনন্দে নাচতে শুরু করে। আমাদের দুজনকে তারা বরণ করে বীরের মতো। শতকণ্ঠে আকাশ কাঁপিয়ে তারা স্লোগান তোলে ‘জয়য়য়য়য়য়য়…বাংলা’।

নির্মলেন্দু গুণ: কবি ও লেখক।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ২২, ২০১০

Category: বাংলা কৌতুক, রম্য রচনা
Previous Post:কুইজ টাইম
Next Post:উর্দিবাণী

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑