• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

বাজার

লাইব্রেরি » বাংলা কৌতুক » রম্য রচনা » বাজার

মাসের প্রথম শুক্রবার ভয়ের মধ্যে থাকি। এদিন বাজারে যেতে হয়। ১৫ দিনের কেনাকাটা করি। বলাবাহুল্য পুরো কেনাকাটাই হয় অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ। পরবর্তী দুই সপ্তাহ সেসব ত্রুটি-বিচ্যুতি সম্পর্কে সমালোচনা শুনি। স্ত্রী অভিযোগ করে, যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। ছুটা বুয়া দারোয়ানদের সঙ্গে ঠাট্টা করে। বলে, বেকুব সাহেব। আমি অধিকাংশ সময় নীরব থাকি। মনে মনে শুধু বলি, আমি নির্দোষ। তাহলে প্রশ্ন ওঠে দোষী কে? আমি জানি, আসলে দোষী কে? কিন্তু বিপদ হলো, জানা সত্ত্বেও এই দোষীদের বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারছি না। কেউ কিছু করতে পারে না। এরা যখন-তখন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। ওজনে কম দেয়। ভেজাল জিনিস দিয়ে সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করে। সরকারও এদের সঙ্গে পেরে ওঠে না।
কিন্তু আমাকে পারতে হবে। এটা অস্তিত্বের প্রশ্ন। সে প্রশ্নের সমাধানের জন্য শুক্রবার আমি বাজারে এলাম।
কিছুদিন আগেও গরুর মাংসের কেজি ছিল ১৬০ টাকা। এখন তা ২৪০ টাকা। এক কেজি গরুর মাংসের টুকরা স্ট্যান্ডার্ড সাইজ করলে ১৬ পিস করা যায়। অর্থাত্ প্রতি পিসের দাম পড়ে পনের টাকা। কসাইরা ওজনে সব সময়ই ঘাপলা করে। দুই পিস পরিমাণ মাংস কম দিলে ৩০ টাকা গচ্চা। উপরন্তু ভালো মাংসের সঙ্গে কৌশলে গলার মাংস, পর্দা এবং হাড্ডি মিশিয়ে দেয়।
মাংসের দোকানদার কম বয়সী। সম্প্রতি বিয়ে করেছে। আমার বিশেষ পরিচিত। পরিচিতির কারণে অতি মহব্বত করে আমার সঙ্গে এই অপকর্মটি করে। একাধিকবার বাইরে ওজন দিয়ে আমাদের বুয়া সেই প্রমাণ পেয়েছে। দোকানিকে বললে সে কিরা-কসম কাটে, অস্বীকার করে। আজ জিজ্ঞাসা করলাম তোমার পালা—পাথর ঠিক আছে?
বলল, এক কাচ্চা কম-ব্যাশ নেই। থাকলে জুতার বাড়ি। নিজে ওজন দিয়া নেবেন। সে এক কেজি মাংস দিল। ১৭ পিস।
আরেকজন মাংস নিয়ে ঝগড়া শুরু করে দিল। বলল, ওজন ঠিক নেই। কম আছে। মাংসে চর্বি ভর্তি। আমি মাংসের দাম দিয়েছি। যাওয়ার আগে সবার সামনে হাত তুলে কসাইয়ের জন্য দোয়া করলাম। আল্লাহ, এই দিলু কসাই সম্প্রতি বিয়ে করেছে। সে যদি আমাকে ওজনে কম না দিয়ে থাকে, ঠিক জিনিস দিয়ে থাকে, তুমি তাদের সংসারকে সুখের সংসার করে দিয়ো। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রেম বাড়িয়ে দিয়ো। আর যদি বাটপারি করে, ওজনে কম দিয়ে থাকে, খারাপ মাংস মিশিয়ে দিয়ে থাকে, তুমি তাকে নতুন বউয়ের হাতে মার খাওয়ার ব্যবস্থা করো। তুমি সব বিষয় জানো, মাবুদ! আমিন।
লোকজন আমার দিকে হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। দিলু কসাই বলল, স্যার খাড়ান। সে গরুর ঝুলন্ত রান থেকে এক চাকা মাংস কেটে আমার ব্যাগে ভরে দিল। ১০০ গ্রামের কম হবে না।
তুমি না বললে ওজন ঠিক আছে? আবার মাংস দিচ্ছ কেন?
ঠিকই আছে। কিন্তু সকালে তো মাংসের মধ্যে পানি থাকে, আপনে যেই দোয়া করছেন, যদি ওজনে আবার কম হয়! নতুন বউয়ের মার খাব।
আমার হাতিয়ার প্রথম ধাক্কায় সফল।
চলে এলাম কাঁচাবাজারে। মাছ কিনব। তার আগে সবজির খোঁজ নিলাম। সবাইকে বললাম, মাছটা কিনে তারপর সবজি নেব। বাজারের কয়েক মাছওয়ালা আমার পরিচিত। দেখলে সম্মান করে। কিন্তু মাছ দিয়ে সেই ইজ্জতটা নাশ করে দেয়।
নদীর পাঙাশের দাম রেখে চাষের পাঙাশ গছিয়ে দেয়। পদ্মার ইলিশ বলে বরিশাল-চিটাগাংয়ের ইলিশ দিয়েছে বহুদিন। নিজেরাই আবার স্বীকার করে। বলে অমুক দিন নষ্ট মাছ দিলাম বোঝেনও নাই, আজকে ভালো মাছ দিতাছি—বিশ্বাস করেন না। এরেই বলে বাঙালি।
মোটামুটি সব মাছের মধ্যেই ভেজাল। দাগি মাছের অভাব নেই। ফরমালিন মেশানো। কয়েক দিনেও মাছ পচবে না। বাংলাদেশে মাছের বাজার বড় কর্দমাক্ত, নোংরা। ইউরোপের অন্যতম বড় মাছের বাজার স্পেনের বিলবাওতে। সেটা দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। বিশাল বাজার। হাজার হাজার কেজি টাটকা মাছ সারাক্ষণ আসছে, বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু বাজারে কোনো কাদা নেই, ময়লা নেই।
মাছের দোকানিরা আমাকে ডাকাডাকি করছে, স্যার আসেন। ভালো মাছ আছে, বড় মাছ আছে। আসেন। আমি মাঝের সুলেমানের দোকানে দাঁড়ালাম। বড় দোকান। থালায় রুই-কাতল-বোয়াল এবং আইড় মাছ সাজানো।
আমি রুই মাছ নেব। দোকানি বলল, নিয়া যান। ২৬০ টাকা কেজি। খাইলে সারা বছর মনে থাকব। আমি বললাম, দাম তো অনেক বেশি চাচ্ছেন। এখন তো বড় মাছের দাম কম। ছোট মাছের দাম বেশি। বার্মিজ আর চাইনিজ মাছের দাম কম। ১৫০ টাকা কেজি। ওগুলো খাইলে মাটির মতো স্বাদ পাইবেন। হাই ফরমালিন দেওয়া, বিষাক্ত। ১৫০ টাকা মাছের লগে বোনাস পাইবেন আলসার আর ক্যানসার। আপনার মাছ কোথাকার? অরজিনাল ভৈরবের মাছ, চাষও না। গাঙ্গের থিকা ধরা মাছ। মাছের কানকা দেইখা দাম দিবেন। খারাপ হইলে খাইয়া আইসা পরের দিন ট্যাকা ফেরত নিয়া যায়েন। সে মাছের কানকো দেখাচ্ছে। কানকো লাল।
আপনারা তো বড় বড় কথা বলেন। কিন্তু কথা আর কাজে মিল নেই।
মিছকুরের কারবার (মিথ্যা কথার) সুলেমান করে না। যা বলব সলিড বলব। কথা সলিড! মাল সলিড! আমার বার্গেনিং এবং কথোপকথনে আশপাশে কাস্টমার জমে গেছে, কথা শুনছে। সবাই কমবেশি দোকানদারদের ঠকবাজি কিংবা ছলনার শিকার। কিন্তু প্রতিবাদের কোনো উপায় নেই। কেউ পাত্তা দেয় না। ২৪০ টাকা দরে চার কেজি ওজনের একটা রুই নিলাম। ফলাফল খাওয়ার পরে কাল বুঝব। মাছওয়ালা মধ্যবয়সী। টাকা দিতে দিতে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনার স্ত্রী-ছেলেমেয়ে কয়জন? দুই ছেলে। মজা করে বলল, স্ত্রী একজন। জানাল, তার দুই ছেলেই কলেজে পড়ে।
আমি প্রকাশ্যে ভরা বাজারে হাত তুলে তার জন্য দোয়া শুরু করলাম, হায় আল্লাহ—এই মাছওয়ালা সত্য কথা বলে আমাকে ভালো মাছ দিয়ে থাকলে তুমি তার ছেলেদের উচ্চশিক্ষিত করো। ভালো মানুষ বানিয়ে দিয়ো। আর যদি কোনো মিথ্যা বলে থাকে, আমাকে ঠকিয়ে থাকে, খারাপ জিনিস দিয়ে থাকে বা ওজনে কম দিয়ে থাকে, তুমি তার ছেলেদের সন্ত্রাসী-নেশাখোর-খারাপ সন্তান বানিয়ে দিয়ো, যেন বাবার হারাম টাকা উড়িয়ে ফেলে। বরবাদ করে। সুম্মা আমিন।
দোয়া করে আমি সবজির দোকানে চলে এলাম। মাথার দিকে আঘাত করলে নিচের দিক এমনিই ঠিক হয়ে যায়। সারা বাজারে শোরগোল পড়ে গেছে। মাছের দোকানের ঘটনা অন্যদের মধ্যেও প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। সুফল পেলাম সবজি কিনতে গিয়ে। সবাই বাছাই করে ভালো জিনিসটা আমাকে দিচ্ছে। ওজনে বাড়তি দিচ্ছে। যেন কম না হয়, কোনো ঝগড়াঝাটি কলহ-বিবাদ ছাড়া দোয়া-থেরাপি ভালো কাজ করছে।
আমি বাজার কম্পাউন্ড ছেড়ে নিচে নেমে এলাম। রিকশায় উঠব। হঠাত্ ইগল পাখির মতো ছোঁ মেরে একজন আমার মাছের ব্যাগটা নিয়ে নিল। তাকিয়ে দেখি, মাছওয়ালা স্বয়ং। সে কোনো কথা না বলে আমার হাতের মুঠোয় টাকা গুঁজে দিল। বলল, স্যার আরেক দিন ভালো মাছ নিয়েন। মাছটা ভৈরবের না। সে দ্রুত চলে গেল। সত্যি সত্যি বাংলাদেশে দোয়াই এখন মুমিনের হাতিয়ার।

আবু সুফিয়ান
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ০৮, ২০১০

Category: বাংলা কৌতুক, রম্য রচনা
Previous Post:ক্যাডেট কলেজ রঙ্গ – মার্চ ০৮, ২০১০
Next Post:নূরজাহান বেগম

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑