• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

হাতসাফাই বিদ্যানিকেতন

লাইব্রেরি » বাংলা কৌতুক » রম্য রচনা » হাতসাফাই বিদ্যানিকেতন

চার-পাঁচ জন ছেলে মিলে যে লোকটাকে হাটুরে মার দিতে দিতে বাস থেকে টেনে হিঁচেড় নামাল, তাকে দেখে আমার কষ্টই হচ্ছিল। মাথার চুল খাবলা খাবলা করে ওপড়ানো, মুখের একটা পাশ ফুলে গেছে, জামার পেছনটা লম্বালিম্ব ভাবে ছেঁড়া। বাসস্ট্যাণ্ডে ফেলে আরও দু’চার ঘা দিয়ে লোকটাকে ফুটপাথে বসিয়ে রেখে, কী সব বলতে বলতে ছেলেগুলো ওই বাসে করেই কোথায় উধাও হেয় গেল।

আমি কাছেই দাঁড়িয়ে ছিলাম। সন্ধ্যে হয়ে গেছে। লোকজন বাড়ি ফিরছে যে যার মতো। ফুটপাথে বসে ধুঁকতে থাকা লোকটার দিকে নজর নেই কারও। দেখে একটু খারাপ লাগল। কাছে গিয়ে বললাম, ‘ও মশাই, সুস্থ আছেন তো?’

লোকটা বসে বসে গালে হাত বোলাচ্ছিল। অতি কেষ্ট উঠে দাঁড়াল। বলল, ‘ব্যাটারা জোর মেরেছে। ওঃ!’
‘এ অবস্থায় আপনি বাড়ি ফিরবেন কী করে?’
‘সে ঠিক ফিরতে পারব। এ সব আমার অভ্যেস আছে। একটু চা খাওয়াবেন, স্যর?’
‘চা— চা— আচ্ছা। ওই যে একটা চােয়র দোকান। চলুন, ওখানে গিয়ে বসি।’

খোঁড়াতে খোঁড়াতে অতি কেষ্ট চায়ের দোকানে গিয়ে বসল লোকটা। দুটো চােয়র অর্ডার দিলাম। লোকটার জন্য দুটো বিস্কুট। তার পর বললাম, ‘হ্যাঁ, এ বার বলুন তো, কী হেয়ছিল?’
‘আপনার বাড়ি কোথায়, স্যর?’
‘ব্যারাকপুরে।’
‘এখানে কোথায় এসেছিলেন?’
‘আমি যে এখানকার কলেজে পড়াই। ফিলজফির প্রফেসর আমি।’
‘তাই বলুন, স্যর। আপনাকে দেখেই মনে হয়, আপনি খুব দয়ালু। আজ অবধি কেউ আমাকে ডেকে এ ভাবে চা খাওয়ায়নি।’
‘আপনি কিন্তু আমার প্রেশ্নর উত্তর দেননি। কেন বাসে আপনাকে সবাই ও ভাবে মারল?’

লোকটা এ বার লজ্জা লজ্জা মুখ করে বলল, ‘শুনতেই হবে স্যর?’ চা এসে গেছিল। টোস্ট বিস্কুটে কড়াৎ করে একটা কামড় বসিয়ে, এক চুমুক চা খেেয় লোকটা বলল, ‘পকেটমারি করছিলাম, স্যর।’
‘তার মানে আপ—তুম—আপনি পকেটমার?’
‘হ্যাঁ, স্যর। তবে শুধু পকেটমার নই, আমি এক জন শিক্ষক। আমার একটা স্কুল আছে। হাতসাফাই বিদ্যানিকেতন। কিছু মনে করবেন না’, লোকটার গলায় গর্বের সুর, ‘আপনার মতো কলেজের প্রফেসর না হলেও এ লাইনে আমার নামডাক কিছু কম নয়। আমার ছাত্রের সংখ্যা এখন একশোর ওপরে। মাইনে ওদের থেকে যা নিই, তাতে আমার অবস্থা যথেষ্ট ভাল।’
এ অভিজ্ঞতা আমার আগে কখনও হয়নি। শুনতেও খারাপ লাগছিল না। বললাম, ‘কিন্তু, আজকে কী হল?’
‘সবই কপালের ফের। আমার বেশ কেয়ক জন ছাত্র কিছুতেই ব্যাপারটা রপ্ত করে উঠতে পারছে না। লাউয়ের ওপর রুমাল রেখে এত বার ওদের তার ওপরে েব্লড চালানো শিখিয়েছি, কিন্তু আসল জায়গায় করতে গিয়ে ওরা সব গড়বড় করে ফেলছে। বেশ কেয়ক জন ধরা পেড় মারও খেয়েছে। তাই আজ আমি ওদের কেয়ক জনকে নিয়ে বাসে উঠেছিলাম। ওদের হাতেকলমে ব্যাপারটা দেখাব বলে। ভিেড়র মধ্যে একটা লোককে বেছে নিয়ে সবাই মিলে তাকে ঘিরে ফেলে যেই না মানিব্যাগটা হাতাতে গেছি, অমনি সব গোলমাল হেয় গেল। লোকটা টের পেয়ে আমার হাত চেপে ধরল। ব্যস, বাসের সব লোক ঝাঁপিেয় পড়ল আমার ওপর। প্রথমটা খুব মার খাচ্ছিলাম, তার পর আমার দলের ছেলেরাই আমাকে ঘিরে ধরে বাস থেকে নামাল।’
‘কিন্তু, ওরাও আপনাকে ঠ্যাঙাচ্ছিল দেখলাম।’
‘বাসের মধ্যে তো মারার ভান করতেই হবে, স্যর। তা না হলে বাসভর্তি লোকের মারের হাত থেকে আমাকে বাঁচাবে কী করে?’ আচমকা লোকটার মুখ করুণ হেয় গেল, ‘কিন্তু স্যর, বাস থেকে নামিয়ে ওরা আমাকে সত্যি সত্যিই মেরেছে। মেরেছে আর বলেছে, যে গুরু নিজেই পরীক্ষায় ফেল করে, সে আবার ছাত্রদের কী শেখাবে? আমার মান-সম্মান সব গেল, স্যর।’
লোকটা হঠাৎ বুক চাপেড় কেঁদে উঠল, ‘পকেটমারি করতে গিয়ে ধরা পেড়ছি, স্যর, এই বদনাম শুনে আমার সব ছাত্র যদি স্কুল ছেড়ে দেয়, তবে আমার চলবে কী করে? আমি খাব কী?’

ভেউ ভেউ করে কাঁদতে লাগল লোকটা। চা-ওয়ালা ফ্যালফ্যাল করে তাকিেয় রইল। আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বসে রইলাম।

এ গেল্পর আর একটুখানি বাকি আছে। খানিকক্ষণ পর কান্নাটান্না সামলে লোকটা বলল, ‘চলি, স্যর। আপনার কথা কোনও দিন ভুলব না। আর, স্যর, মানিকতলা থেকে কলেজ স্কোয়ারের মধ্যে যদি কোনও দিন পকেটমারের পাল্লায় পেড়ন, শুধু বলবেন, আমি ছুকু ওস্তাদের চেনা লোক। দেখবেন, আর কোনও বিপদ হবে না।’ আমি চােয়র পয়সা মিটিয়ে দিলাম। তার পর আমাকে আর এক দফা ধন্যবাদ দিয়ে, হাতটাত মিলিয়ে খোঁড়াতে খোঁড়াতে দোকান থেকে বেরিেয় কোথায় যেন মিলিয়ে গেল লোকটা। আমি বাসস্ট্যাণ্ডে এসে বাস ধরলাম শেয়ালদা যাব বলে। কিন্তু কণ্ডাক্টর এসে ভাড়া চাইতেই, পকেটে হাত দিয়ে, একটা বাজে অজুহাত দেখিয়ে বাস থেকে নেমে যেতে হল।

আমার মানিব্যাগটা উধাও!

চা খেয়ে বেরোনোর পর এক ফাঁকে কখন যেন পকেটটা ফাঁকা করে দিয়ে গেছে ছুকু ওস্তাদ।

অমিত দেবনাথ
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা, অক্টোবর ০৪, ২০০৯

Category: বাংলা কৌতুক, রম্য রচনা
Previous Post:ভূত
Next Post:এ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑