• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

ও ডাবওয়ালা!

লাইব্রেরি » বাংলা কৌতুক » রম্য রচনা » ও ডাবওয়ালা!

মানুষটার মুখখানা বেশ হাসি হাসি। ঠোঁটের পরে বেশ পুরু একখানা গোঁফ। মাথায় কার্নিশওয়ালা লাল টুপি। গায়ে সাদা টি-শার্ট। হাতে একটা চকচকে চাপাতি। বড় একটা কাঠের বাক্সের ভেতর কী যেন বিকোচ্ছে লোকটা। তাঁর ওপর আমাদের চোখ আটকে যাওয়ার কারণ অবশ্য এসব কোনোটাই নয়। গাত্রবর্ণ আর হাবভাব দেখেই মনে হচ্ছে, এই লোক নির্ঘাত বাঙালি। চ্যানেল আইয়ের প্রতিবেদক মল্লিক ভাই সেই শুরু থেকে মহা উত্তেজিত, সিঙ্গাপুরের প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে একটা প্রতিবেদন না করলেই নয়। অতএব, সিঙ্গাপুর-প্রবাসী বাংলাদেশি অনুসন্ধান অভিযানে নেমেছি আমরা তিনজন। সেই উদ্দেশ্যেই বাঙালিদের মিলনমেলাখ্যাত মুস্তাফা মার্কেটে আমাদের আগমন। আর মার্কেটে ঢুকতে না-ঢুকতেই এই বাঙালিসদৃশ সগুম্ফ ভদ্রলোককে দেখে আমরা যারপরনাই উৎফুল্ল হয়ে উঠি। আনন্দধারার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক অরুণদা এগিয়ে যান প্রথম। পেছন পেছন আমি আর মল্লিক ভাই। ‘তুমি কি বাঙালি?’ মুখে একগাল হাসি নিয়ে ইংরেজিতে তাঁকে জিজ্ঞেস করেন অরুণদা। আমাদের আগ্রহে একরাশ পানি ঢেলে দিয়ে না-সূচক মাথা নাড়ে সে। কিন্তু আমরা হাল ছাড়ার পাত্র নই। ‘তবে কি তুমি তামিল?’ মরিয়া হয়ে পরের প্রশ্ন আমাদের। কে না জানে সিঙ্গাপুরে তামিল লোকজনের অভাব নেই। আর তারা দেখতেও প্রায় বাংলাদেশিদের মতো। কিন্তু লোকটা একদম যা-তা। সে যেন পণ করেছে, আমাদের কোনো অনুমান আজ সে কিছুতেই সত্যি হতে দেবে না। না, লোকটা তামিলও নয়। ‘আমি থাইল্যান্ডের লোক’-বেশ বিরক্তমুখেই জবাব দেয় সে। ততক্ষণে আরও দু-চারজন লোক জমে গেছে তাকে ঘিরে। মুখের ভাব দেখেই বুঝতে পারছি, ব্যর্থ মনোরথ হয়ে মল্লিক ভাই সম্ভবত অন্যদিকে হাঁটা দেওয়ার কথা ভাবছেন। এ সময় লোকটা সামনের কাঠের বাক্স থেকে তার গোলগাল হালকা হলুদাভ জিনিসটা বের করল। তারপর চাপাতি দিয়ে এয়সা এক কোপ বসায় ওই গোলগাল জিনিসটার গায়ে, দেখেই আমাদের চক্ষু চড়কগাছ। ওমা, এ যে একদম অরিজিনাল ডাব, মানে নারকেল! এতক্ষণে আমাদের চোখ পড়ে লোকটার পেছনের লাল ব্যানারটার ওপর। সেখানে ছোট ছোট ইংরেজি হরফে লেখা, ‘ফ্রেশ, কোকোনাট ফ্রম থাইল্যান্ড। ১·৫ ডলার।’ চোখের সামনে এমন তরতাজা ডাব দেখে এইবেলা গলাটা একদম শুকনো ঠেকতে থাকে আমাদের কাছে। অরুণ দার অর্থায়নে ঝটপট তিনটা ডাব হাতে নিয়ে আমরা বসে যাই এককোনায়। শ্যামদেশীয় ডাবের পানিতে চুমুক দিয়েই ওই বেয়াড়া লোকটার বাংলাদেশি না হওয়ার অপরাধ মনে মনে ক্ষমা করে দিই আমরা; মানে ক্ষমা করে দিতে বাধ্য হই। আহ্‌, ডাবের পানি এমন দারুণ মিষ্টি আর এমন ঠান্ডা হতে পারে-ভাবাই যায় না! কী কৌশলে এই ডাবের পানিকে এমন বরফশীতল করে তুলেছে এই থাই লোকটা, কে জানে। রহস্য ভেদ করার জন্য কাঠের বাক্সটার ভেতর উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করি। নিচে বেশ কয়েক প্রস্থ বরফ বসিয়েছে সে বাক্সের ভেতর। তার ওপরই রেখেছে একদম নিখুঁতভাবে ছোবড়া-ছাড়ানো ডাবগুলো।
বাংলাদেশি ডাবওয়ালাদের কথা মনে হয় আমার। প্রায়ই এই নারকেলসুধাপিয়াসী আমি ময়লা-নোংরা-কাদাটে একটা জায়গায় গিয়ে দাঁড়াই। আমার চারপাশে ভনভন করে অগণিত মানুষ আর মাছি। এর মধ্যে ডাবের কাঁদি নিয়ে বসে থাকে আমাদের চিরচেনা ডাবওয়ালারা। তারা আমাকে মিষ্টি পানি আর কচি ডাবের লোভ দেখায়। দরাদরি করে শেষমেশ ১৫ টাকায় রফা হয়। ওরা আনাড়ি আর ময়লা হাতে ডাব কাটে; কিন্তু ডাবটা হাতে নিতে নিতে অর্ধেক উৎসাহই মরে যায়। কোনোমতে দু-এক চুমুক দিয়ে কেটে পড়তে বাধ্য হই। আহা! আমাদের ডাবওয়ালারাও যদি এই ডাব ঠান্ডা রাখার পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারত! মনে পড়ে গেল পাশের দেশের কলকাতার সদর স্ট্রিট, মির্জা গালিব স্ট্রিটের আনাচকানাচে অহরহ দেখা মেলে ডাবওয়ালাদের। সাঁই সাঁই করে দা চালিয়ে অতি দ্রুত ডাব কাটার কাজটাকে ওরা রীতিমতো শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। সেই শিল্পটাও আমাদের ডাবওয়ালাদের নেই।
ডাবের পানি খাওয়া শেষ হলে সিঙ্গাপুরি ডাবওয়ালা একটা প্লাস্টিকের চামচ আমাদের হাতে তুলে দেয়। ডাবের ভেতর বেশ পুরু শাঁস, প্লাস্টিকের চামচ দিয়ে তুলে খাও-ওটাই তো আসল মজা। ডাবওয়ালা সত্যি তোফা লোক।
অবশ্য থাইল্যান্ড থেকে সিঙ্গাপুর এসে ডাব বিক্রি করে পেট চালানোটাও চাট্টিখানি কথা নয়। ইতিমধ্যে আরও দু-চারজন খদ্দের জুটে গেছে। লোকটা ফটাফট ডাব কাটছে আর ডলার গুনছে-ডাবপ্রতি দেড় ডলার। বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮০ টাকা। তোফা বাণিজ্য!
কোনো একটা জায়গার লোকজনকে বোঝার জন্য নাকি দুটি জায়গা পরিদর্শন খুবই জরুরি। এক· স্থানীয় কাঁচাবাজার (ওখানকার মানুষ কী খায়, সেটা জানতে)। দুই· স্থানীয় বইয়ের দোকান (ওরা কী পড়ে, সেটা জানতে)। অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের এই ফর্মুলা অনুসরণ করে আমি নিজেও একটি ফর্মুলা দাঁড় করিয়েছি। এই ফর্মুলার নাম ‘ডাবওয়ালা ফর্মুলা’-কোন দেশ কতটা এগিয়ে, সেটা জানতে চান? তবে সেখানকার ডাবওয়ালাদের কাছে যান।

ইকবাল হোসাইন চৌধুরী
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, অক্টোবর ২০, ২০০৮

Category: বাংলা কৌতুক, রম্য রচনা
Previous Post:কথার কথা – আনিসুল হক
Next Post:চোরাচালান

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑