• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

অভিধানের কথাই চূড়ান্ত নয় – মোরশেদ শফিউল হাসান

লাইব্রেরি » বিবিধ লেখার সংকলন » বই পরিচিতি » অভিধানের কথাই চূড়ান্ত নয় – মোরশেদ শফিউল হাসান

বাংলা ভাষায় ‘আঁতাত’ ও ‘দাঁতাত’ শব্দ দুটি যেমন ফরাসি ভাষা থেকে এসেছে তেমনি ‘অতলান্তিক’ শব্দটিও এসেছে সরাসরি ইংরেজি ‘আটলান্টিক’ থেকে। এর সঙ্গে ‘অতল’ ও ‘অন্ত’-এর কোনো সম্পর্ক নেই। আর সে সম্পর্ক খুঁজতে গিয়ে ‘অতলান্তিক’ শব্দটিকে তৎসম প্রতিপন্ন করারও কোনো যুক্তি নেই। যদিও আমাদের বাংলা একাডেমী অভিধানে সেটিই করা হয়েছে। আবার ‘আঁতাত’ শব্দটিকে আমরা বাংলা ভাষায় যে-অর্থে ব্যবহার করি, মূল ফরাসি ভাষায় entenete শব্দটি ঠিক সে অর্থে ব্যবহূত হয় না। বলা বাহুল্য, ‘আঁতাত’ শব্দটির মধ্যে একরকম গোপন সম্পর্ক বা ষড়যন্ত্রের আভাস আছে। অথচ মূল ফরাসি ভাষায় entenete-এর অর্থ দুটি দেশের মধ্যে মৈত্রী বা বন্ধুত্বের সম্পর্ক। কালের বিবর্তনে কিংবা কৃতঋণ শব্দের বেলায় শব্দের অর্থ বা ব্যঞ্জনার এই পরিবর্তন ঘটা অস্বাভাবিক নয়। পৃথিবীর অন্যান্য ভাষার বেলায়ও এমনটি দেখা যায়।
বাংলা ‘তামাক’ শব্দটি এসেছে ইংরেজি ‘টোবাকো’ থেকে, যেমন হিন্দিতে হয়েছে ‘তামাকু’। কিন্তু আমাদের পণ্ডিতদের পারদর্শিতায় ‘তামাক’ শব্দের উৎস নির্দেশ করা হয়েছে সংস্কৃত ‘তাম্রকূট’, আর এর একটি চমৎকার ব্যাখ্যাও তাঁরা দাঁড় করিয়েছেন, তামাক খেলে দাড়ির অগ্রভাগ (কূট) তাম্রবর্ণ ধারণ করে বলে এর নাম ‘তাম্রকূট’। এ না হলে আর পণ্ডিত কেন? ‘ব্যাখ্যায় করিতে পারেন ওলটপালট’। কোকিল অর্থে ‘পিক’ শব্দটি এসেছে লাতিন ‘পিকা’ থেকে। অথচ আমাদের অভিধানে শব্দটির ব্যুৎপত্তি দেখানো হয়েছে অপি কৈ +অ(র্তৃ), অপি কায়তীতি পিকঃ, অর্থাৎ রব করে বলেই এটি পিক্ । বাংলা ভাষার এই আর্যীকরণ প্রক্রিয়ায় অস্ট্রিক শব্দ ‘কলা’ ও ‘বাইগন’ হয়ে গেছে ‘কদলী’ ও ‘বাতিঙ্গন’, আর অভিধানেও শব্দ দুটি ওই মূল সংস্কৃত থেকেই এসেছে বলে নির্দেশ করা হয়েছে। এ রকম আরও বহু শব্দের উদাহরণ আমাদের আলোচ্য শব্দচিন্তা চমৎকারা বইয়ের লেখক দিলীপ দেবনাথ দিয়েছেন, যার উেস রয়েছে দ্রাবিড়, অস্ট্রিক, বিদেশি বা খাঁটি দেশি শব্দ। অথচ বাংলা ভাষার প্রচলিত অভিধানগুলোতে এগুলোকে তৎসম হিসেবে চিহ্নিত করে তার কষ্টকল্পিত বুৎপত্তি দাঁড় করানো হয়েছে। লেখক একে বলেছেন ‘পণ্ডিতদের ধাপ্পাবাজি’। তাঁর মতে, ‘বিদেশী শব্দের আপন্নসংস্কারে আমাদের পণ্ডিতদের মেধা ও চাতুর্য তুলনাহীন।’
ব্যাকরণ বা ভাষাশিক্ষার বই থেকে আমরা যতই সমার্থক শব্দের উদাহরণ মুখস্থ করি, কোনো শব্দই কিন্তু কোনো শব্দের বিকল্প নয়। ‘হত্যা’ ও ‘খুন’ শব্দ দুটি যদিও একার্থক, এর একটি তৎসম ও অন্যটি ফারসি, ব্যবহূতও হয় একই কাজ বা ঘটনা বোঝাতে, তবু মানবেতর প্রাণীর বেলায় আমরা ‘খুন’ শব্দটি ব্যবহার করি না। কখনো লিখি না, ‘বাঘ মানুষ খুন করেছে।’ লেখক মজা করে বলেছেন, ‘খুন শব্দটি আমরা মানুষের জন্যই তুলে রেখেছি।’ দৃষ্টান্ত আরও বাড়িয়ে লেখক দেখাতে পারতেন, ‘জল’ ও ‘আব’ শব্দ দুটি যদিও আমরা একই পানি অর্থে ব্যবহার করি, যেমন ‘বায়ু’ ও ‘হাওয়া’ শব্দ দুটি একই বাতাস অর্থে, তবু ‘জলবায়ু’ ও ‘আবহাওয়া’ কথার মানে এক নয়। এবং আমরা বলি ও লিখি ‘জলযোগ’, ‘জলযান’; কখনোই ‘পনিযোগ’ বা পানিযান’ নয়। যদিও ‘জলবন্দি’র চেয়ে ‘পানিবন্দি’ কথাটার সঙ্গেই আমরা অধিক পরিচিত। এভাবে বিস্তৃততর আলোচনায় পাঠকের কাছে বিষয়টি স্পষ্টতর করে তোলা যেত। কিন্তু লেখাগুলো যেহেতু পত্রিকার জন্য এবং সেভাবেই তা গ্রন্থিত হয়েছে, পত্রিকায় তাঁর জন্য বরাদ্দ পরিসরের সংকীর্ণতা তাঁকে হয়তো স্বল্পবাক হতে বাধ্য করেছে। কোথাও কোথাও তিনি আবার বিশদের পথেও হেঁটেছেন, চলে গেছেন প্রসঙ্গ থেকে প্রসঙ্গান্তরে। শব্দের ব্যুৎপত্তি নির্ণয়ে যার শুরু, সে আলোচনা গড়িয়ে গেছে দেশ-সমাজ, পুরাণ-ইতিহাসের প্রসঙ্গে। লেখকের বিস্তৃত পাঠ-অভিজ্ঞতা ও গভীর অভিনিবেশের যা পরিচয় দেয়।
সাংবাদিকতার পেশাগত অভিজ্ঞতা থেকে শব্দ নিয়ে নিরন্তর কৌতূহল বা জিজ্ঞাসাই হয়তো লেখককে প্রাথমিকভাবে এই বইয়ের লেখাগুলো লিখতে প্ররোচিত করেছে। আর এই শব্দ বা ভাষাচিন্তার সূত্রে লেখক বাংলা ভাষার কিছূ গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। আর শুধু দৃষ্টি আকর্ষণ করেই ক্ষান্ত হননি। এ ব্যাপারে নিজের প্রস্তাব বা পরামর্শও তুলে ধরেছেন। লেখকের মতে, যে ভাষা যত আধুনিক তার প্রতিশব্দ তত কম। অন্তত ব্যবহারিক ভাষার ক্ষেত্রে তাঁর এই মন্তব্যের যৌক্তিকতা স্বীকার না করে উপায় নেই। বাংলা অভিধানে আমরা সাধারণত একই শব্দের অনেকগুলো প্রতিশব্দ দেখতে পাই, অধিকাংশ ক্ষেত্রে যার অর্থের তেমন পার্থক্য নেই কিংবা অভিধান সে পার্থক্য নির্দেশ করে না। এই যে একই শব্দের কাছাকাছি একাধিক অর্থ, একে লেখক ভাষার সবলতা নয়, দুর্বলতার পরিচয় বলে গণ্য করেছেন। বলেছেন, ভাষার সাবলীলতার স্বার্থেই প্রতিটি শব্দের অর্থ নির্দিষ্টকরণ খুব জরুরি। অভিধানে ‘ভাষণ’, ‘বক্তৃতা’, ‘অভিভাষণ’ এই শব্দগুলো পাশাপাশি দেওয়া থাকলেও এবং আমরাও প্রায় নির্বিচারে সেগুলোর ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে পড়লেও, লেখক ‘জনসভায় প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্যকে ভাষণ ও কর্মীদের বক্তব্যকে ‘বক্তৃতা’, প্রতিষ্ঠানের সভায় সভাপতির বক্তব্যকে ‘অভিভাষণ’, ক্লাসে শিক্ষকের বক্তব্যকে ‘পাঠনা’ লেখার পক্ষপাতী।
শব্দের যেমন শ্রেণীচরিত্র (কর্তা মশাই ‘আহারে বসেন’, তাঁর অধস্তনেরা শ্রেণীভেদে কেউ খায়, আবার কেউ ‘গেলে’; গরিব ‘মারা যায়’, বড়লোক ‘ইন্তেকাল করেন/ফরমান’) তেমনি সাম্প্রদায়িক রংও আছে। সময়ের প্রভাবে কিংবা কখনো বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গির লেখকের হাতে পড়েও তা বিশেষ রং পায়। যেমন, বাংলায় মূল আইওনীয় বা প্রাচীন গ্রিক শব্দ ‘যবন’-এর ‘চূড়ান্ত অর্থাবনতি ঘটান বঙ্কিমচন্দ্র’। লেখকের ভাষায়, ‘ঋষি বঙ্কিমের এই অঋষিসুলভ আচরণ বাঙালি আজও ভুলতে পারেনি।’
ভাষা শুদ্ধভাবে লেখা ও শেখার জন্য আমাদের অবশ্যই অভিধান দেখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু সে কর্তব্যের তাগিদ দেওয়ার পাশাপাশি লেখক আমাদের অভিধানে যা আছে তাকেই ‘চরম ও পরম’ জ্ঞান করার বিপদ সম্পর্কেও সতর্ক করে দিয়েছেন। বিশেষ করে একই শব্দের উৎস ও ব্যুৎপত্তি সম্পর্কে যখন অনেক ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন অভিধানে ভিন্ন ভিন্ন নির্দেশ পাওয়া যায়।
আমাদের সংবাদপত্রে ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় (কি সংবাদে কি বিজ্ঞাপনে), সাহিত্যে, এমনকি পাঠ্যপুস্তকেও আজ যখন ভুল বানান, শব্দ ও বাক্য ব্যবহারের ছড়াছড়ি (দুই দশক আগেও যা প্রায় কল্পনাতীত ছিল); আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক পণ্ডিত ও বুদ্ধিজীবীরা যেখানে ভাষা ও বানান বিষয়ে বিদ্যমান বিশৃঙ্খলা বা নৈরাজ্য দূর করার এবং এ বিষয়ে একটা ঐকমত্য সম্ভব করে তোলার জরুরি কর্তব্যটি পালনের পরিবর্তে বরং নিজস্ব অধিকারবোধ নিয়ে অনেক ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি বাড়িয়ে তুলতেই সাহায্য করছেন (তাঁদের লেখা বাজারে চালু ভাষাশিক্ষার বইগুলোই যার প্রমাণ), কিংবা আত্মোন্নতি-সহায়ক ও সামাজিক তাৎপর্যহীন নানা কাজে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন; দিলীপ দেবনাথের মতো একজন প্রবীণ সংবাদকর্মীর এই ভাষাবিষয়ক চিন্তাচেতনা ও দায়িত্ববোধের পরিচয় আমাদের মুগ্ধ করে। ভাষার ব্যবহার নিয়ে আমরা সাধারণত যেসব সমস্যা, জটিলতা বা বিভ্রান্তির মুখোমুখি হই, তার অনেকগুলোর জবাব দিতে চেষ্টা করেছেন লেখক তাঁর এ বইটিতে। লেখকের রসবোধ বা পরিহাসপ্রিয়তাও একটি বৈশিষ্ট্য, যা বইটিকে সুখপাঠ্য করে তুলেছে। বইটি পড়ে পাঠক যুগপত্ আনন্দিত ও উপকৃত হবেন বলে আমাদের ধারণা।

সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, এপ্রিল ১৬, ২০১০

Category: বই পরিচিতি, সমালোচনা
Previous Post:আত্মকথায় জীবন-জিজ্ঞাসা – সোহরাব হাসান
Next Post:পুরোনো দিনের ঢাকার কড়চা – মাহবুব আলম

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑