• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

দালানকোঠার ভেতর পূর্ণিমার চাঁদ – সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

লাইব্রেরি » বিবিধ লেখার সংকলন » প্রবন্ধ » দালানকোঠার ভেতর পূর্ণিমার চাঁদ – সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

একটি উপন্যাসের প্রধান চরিত্রের—যে চরিত্রের নামে বস্তুত উপন্যাসের শিরোনাম অঙ্কিত—মৃত্যুর খবর জানানো হয় প্রথম পৃষ্ঠায়। তাহলে গল্পটা কিভাবে এগোয়? ‘সুনির্মিত বয়ান’-ধর্মী উপন্যাসে এ রকমটি হলে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়; এমনকি আধুনিক অথবা উত্তরাধুনিক উপন্যাসেও প্রধান চরিত্রের মৃত্যু দিয়ে কাহিনি শুরু হতে খুব একটা দেখা যায় না। পাঠকের কৌতূহল তাতে ধরে রাখা কঠিন হয়, হয়তো সে কারণে। অথবা, ওই মৃত্যুর অভিঘাতটি তখন বড় হয়ে না বাজার একটা আশংকা থেকে যায়—হয়তো সে কারণে।
গোয়েন্দা উপন্যাসে এ রকম হতে পারে কিন্তু শহীদুল জহিরের আবু ইব্রাহীমের মৃত্যু কোনো গোয়েন্দা গল্প নয়, তাহলে কি এটি একটি এপিকধর্মী উপন্যাস, যেখানে নায়কের মৃত্যুর অনিবার্যতা মাথায় থাকে শুরু থেকেই? তাও তো নয়। এ উপন্যাসের প্রধান চরিত্রের নায়কসুলভ কোনো গুণ নেই। লোকটি ছাপোষা এক সরকারি কর্মকর্তা। কিছুটা স্থূলও, তার কথাবার্তা বা তার স্ত্রী-সন্তানদের কথাবার্তা থেকে অন্তত সে রকম প্রতীয়মান হয়—এবং হেলেনের সঙ্গে তার সম্পর্ক না হওয়ার একটা কারণও হতে পারে তার স্থূলতা—কিন্তু সে প্রশ্নাতীত সততার অধিকারী। তবে শুধু ওই কারণে এপিক-নায়কের পঙিক্তভুক্ত হওয়া যায় না। তাহলে কেন শহীদুল জহির তাঁর কাহিনী শুরু করলেন ইব্রাহীমের মৃত্যু দিয়ে? কারণ শুরুর মৃত্যু আর শেষের মৃত্যুর যে ফারাক, তা যে তিনি নানান প্রশ্ন তুলে, জিজ্ঞাসা দিয়ে, বর্ণনা-ব্যাখ্যা এবং রহস্য দিয়ে একটা ঘনবদ্ধ গল্পের কাঠামোয় নিয়ে আসতে পারবেন, সে বিশ্বাস তাঁর ছিল বলেই তিনি তা করেছেন। না, শুরুর গল্পে আবু ইব্রাহীমের মৃত্যুকে শুধু যে আমরা তার হূদযন্ত্রের ইস্তফা দেওয়া বা এ ধরনের অপঘাতের কারণে হতে পারে ভেবে এগিয়ে নিয়ে শেষে এক দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে সেটি ঘটতে দেখি, সেই ফারাক নয় (যদিও এখানে নিঃসন্দেহে একটি বড় চমক রয়ে যায়); ফারাকটা আরও গভীর এবং শহীদুল জহিরের অন্যান্য উপন্যাস বা গল্পের মতো তা তৈরি হয় কোনো তুচ্ছ মুহূর্তে হঠাত্ কোনো রহস্যের ছায়া পড়ে, অথবা নিতান্ত পার্থিব কোনো অভিজ্ঞতায় প্রগাঢ় কোনো অপার্থিবতার দোলা লেগে অথবা, তাঁর ব্যবহূত জাদুবাস্তবতার নিরিখে, অস্তিত্বের কোনো বদ্ধপুকুরে হঠাত্ অবাস্তবের কোনো ঢেউ জেগে ওঠায়। মাত্র ৬৪ পৃষ্ঠার একটি উপন্যাসে এ রকম মুহূর্তের হিসাবটা কম নয়। তারপরও, আবু ইব্রাহীমের মৃত্যুটা তিনি আগে-ভাগে জানিয়ে দিয়ে কিভাবে টেনে নিলেন গল্পটি?
টেনে যে নিলেন—এবং শুধু নিলেন না, আমাদের হাতে একটা আলতো আঙুল ঢুকিয়ে একটা ঘোরের মধ্য দিয়ে আমাদেরও টেনে নিলেন—সেখানেই শহীদুল জহির শহীদুল জহির। উপন্যাসটির প্রথম প্রকাশ ১৯ বছর আগে, নিপুণ-এ। আমার চোখ এড়িয়ে গেছে নিপুণ-এর সেই সংখ্যাটি। তিনি নিজেও এড়িয়ে গেছেন এটি প্রকাশের দায়, হয়তো এ নিয়ে তাঁর উচ্চাভিলাষ ছিল না। কিন্তু ছাপানো উপন্যাসটি পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে, খুব প্রবলভাবে মনে হয়েছে, আবু ইব্রাহীমের মতো তাঁরও অসময়ে চলে যাওয়াটা কতটা কষ্টের। এ রকম একটি কাজকে যিনি হেলাফেলায় ফেলে রাখতে পারতেন, তাঁর কত বড় কিছু দেওয়ার ছিল।
কেন এই উপন্যাস নিয়ে সক্রিয় হননি শহীদুল জহির, তার একটি কারণ হয়তো এই যে আরও কিছু যোগ করার ছিল তাঁর, আরও একটু পরিসর বাড়ানোর; কিন্তু হঠাত্ চুপ হয়ে যাওয়ার শব্দ, শেষ হয়ে যাওয়া গল্পকে নিয়ে হয়তো ঘষামাজা করার ইচ্ছা ছিল। হেলেনের গল্পটি হঠাত্ই শেষ হয়ে যায়। সে কি শুধু ইব্রাহীম মারা যাবে, সেজন্য? হেলেনকে নিয়ে ইব্রাহীমের স্ত্রী মমতার টানাপোড়েনের পুরোটা তিনি তুলে ধরেন না, অনেক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার কোনো সমীকরণও করেন না। ইব্রাহীম হেলেনকে নিয়ে এক পিকনিকে হঠাত্ হেঁটে হেঁটে উধাও হয়ে যায়। তারপর শুধু একটা বিপত্তির আভাস দিয়ে ওই অধ্যায়টি মিলিয়ে যায়। আবু ইব্রাহীমের পরিবর্তনটাও একটু যেন তাড়াহুড়ার পক্ষে গেছে। এসবই অবশ্য একজন পাঠকের ‘শিক্ষিত অনুমান’—শিক্ষিত অর্থটি এখানে শহীদুল জহিরের কাজের ধারা ও চরিত্রের সঙ্গে সম্যক পরিচয়ের অন্য নাম। তা ছাড়া সর্বজ্ঞ বয়ানকারীর ‘আমরা আরও জানব,’ ‘আমরা দেখব’ ইত্যাদি ভবিষ্য-কৃতির উল্লেখ কাহিনির আরও বড় মলাটের আভাস দেয়। অথবা, আমাদের অনুমানটা আরেকটু টেনে নিয়ে কি বলতে পারি, তাঁর গল্পের মর্যালিটি কাঠামোটি নিয়ে তিনি বিকল্প কিছু ভাবছিলেন? আবু ইব্রাহীমের মৃত্যুর এই কাঠামোটি তাঁর অন্যান্য উপন্যাস গল্প থেকে অনেকটাই পৃথক। সত্ আবু ইব্রাহীম ঘুষের টাকা নেয়; দ্রুত ফিরিয়েও দেয় না, বরং এক ধরনের আত্মঘাতী রগড় থেকে সেটি যে নিয়েছে তা অস্বীকার করে। তার সঙ্গে সে রগড় করে, অথবা রগড় নয় এক বিপন্ন নিষ্ক্রিয়তার মহড়া দেখায় যাতে নিজের ওপর জমে থাকা গ্লানি একটি প্রতিবাদের পথ পায়, সে ওই মর্যালিটি আখ্যানের খলনায়ক, তার নামটিও আবু ইব্রাহীমের থেকে অনেক দূরত্বে এক নির্মম ‘আধুনিক’ সমাজের ছলাকলা প্রতিষ্ঠা করে। একসময় হঠাত্ করে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আবু ইব্রাহীম। সময় ও জায়গাটা সেই বেছে নেয়, যেমন করে মর্যালিটি চরিত্ররা তাদের পতনের অনিবার্যতা নিজেরাই তৈরি করে নেয়। তারপর তো তাকে মারাই যেতে হয়।
এসবই অবশ্য উন্যাসের এক অথবা দেড়খানা পঠন। শহীদুল জহির ও তাঁর ঘনিষ্ঠ এবং অনুপ্রেরণাদানকারী পূর্বসূরি সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ তাঁদের উপন্যাসের কয়েকটি পঠনের সুযোগ করে দেন (কাঁদো নদী কাঁদোর চরিত্রগুলোর নামের গুরুত্ব নিয়ে একটি অভিসন্দর্ভ লেখা হয়েছে)। আবু ইব্রাহীমের মৃত্যুর আরও পঠন সম্ভব। যেমন আমাদের সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতার এটি একটি চিত্রও বটে। উপন্যাসের এক জায়গায় সামরিক শাসন আসতে দেখি যদিও এর কোনো গুরুত্ব কাহিনির জন্য নেই। তারপরও দেশের বুড়ো ও কালো চেহারার রাষ্ট্রপ্রধানকে হটিয়ে দিয়ে সুদর্শন সেনাপ্রধানের ক্ষমতা দখল ও টেলিভিশনে ভাষণ দেওয়ার মধ্যে একটা প্রগাঢ় মন্তব্য রয়ে যায়—আবারও মর্যালিটি আখ্যানের মাকাল ফলের কথাটা কি আমাদের স্মরণে আসে না? শহীদুল জহির অস্তিত্ববাদের নানা সূত্রে, জাদুবাস্তবতার নানা নিজস্ব নির্মাণে তাঁর কাহিনি সাজান, কিন্তু বর্ণনায় একটি সূক্ষ্ম কৌতুক ঢুকিয়ে দেন এখানে-সেখানে। সেই কৌতুক কোনো কোনো সময় বড়ই নির্মম হয়ে দেখা দেয়। আবু ইব্রাহীমের মৃত্যু কি সে রকম নির্মম একটি কৌতুক? যদি তাই হয়, তাহলে শুরুতে তার মৃত্যুর বর্ণনা দিয়ে তিনি কৌতুক থেকে গভীর বোধে তুচ্ছ থেকে তুমুল জীবনচেতনায় পরিব্যাপ্ত হন। এই ক্ষমতাটি ছিল শহীদুল জহিরের তুলনাহীন। একই বাক্যে দুর্ধর্ষ তত্সম এবং চটুল কথ্যের মিশ্রণ; হাল্কা চাল এবং ক্লাসিকধর্মী ইঙ্গিতের মেলবন্ধন ঘটাতে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। আবার নিসর্গের বর্ণনায় তিনি জীবনানন্দের সমগোত্রের। চাঁদ, রাত, নির্জনতা, হাওয়া এবং নদীর শব্দকল্পদ্রূম রচনায় তাঁর ছিল অবিশ্বাস্য কুশলতা। এই উপন্যাসে, অবাক কাণ্ড, যতবারই চাঁদ এসেছে বর্ণনায়, ততবারই সে এক অব্যক্ত বেদনা নিয়ে এসেছে, যেন মানুষের সবচেয়ে আর্ত কিন্তু অনুচ্চারিত অনুভূতিগুলোর সঙ্গে চাঁদের রয়েছে গভীর সখ্য।
আবু ইব্রাহীমের মৃত্যু একটি সামান্য মানুষের সামান্য জীবনের গল্প। আবু ইব্রাহীমের যেটুকু যোগাযোগ, তা তার বন্ধু সিদ্দিক হোসেনের সঙ্গে। স্ত্রীর সঙ্গে তার সম্পর্কটি তীর্যক, তাদের কথাবার্তায় নিষ্ঠুরতার ভাগ বেশি, যদিও কোনো কোনো মুহূর্তে ঘনিষ্ঠতা এবং আবেগের প্রকাশ ঘটে। দুজনের মাঝখানে ছায়া হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে হেলেন। শুধু মেয়ে বিন্দুর সঙ্গেই তার যেটুকু বন্ধুত্ব। কিন্তু এই ইব্রাহীমের জন্য আমাদের কষ্ট হয়, তার সুখে-দুখে আমরা ভাগ বসাতে উত্সাহী হই, তার বিষণ্নতায় বিচলিত হই। আবু ইব্রাহীমের মুত্যৃর এই দিকটি—এই সামান্য জীবনের পরিণতির পরিতাপটি অনেক পঠনের মধ্যে বড় পঠন হয়ে থাকে। উপন্যাসটির বড় একটি মূল্য এই জায়গাতে, এই ইব্রাহীমের সঙ্গে আমাদের একাত্ম হয়ে যাওয়াতে। কিন্তু উপন্যাসের শেষে, শেষ পৃষ্ঠায় বস্তুত, আবদুল হাকিমের স্ত্রী হিসেবে মমতার অসহায় আত্মসমর্পণের পর ট্রেন ধরে তার সসন্তান চলে যাওয়ার পর একলা পড়ে থাকা আবু ইব্রাহীমের কবরটি হঠাত্ জানান দেয়, শুধু সামান্য নয়, অসামান্যের চিত্রায়নেও সমান সফল শহীদুল জহির। শোকের ওই একটি পৃষ্ঠা লিখতেও অনেকের এক জীবন চলে যাবে।
‘কবরস্থানের কবরের কথা আমরা এভাবে ভুলে যাই,’ গল্পটা গুছিয়ে শেষ করার আগে বয়ানকারী লেখেন। কিন্তু ভুলে কি যাই আমরা? ভুলে যাওয়া কি সম্ভব? এই কবরটি কি একটি প্রশ্নচিহ্নের মতো জগত্-সংসার নিয়ে আমাদের তৈরি সব বয়ানের মাথার ওপর বসে থাকে না? যদিও জীবন চলে, থেমে থাকে না। তবুও। অথবা, হয়তো সে জন্য।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ০৮, ২০১০

Category: প্রবন্ধ
Previous Post:রসিক নাইয়ার সমঝদারি – আবুল মোমেন
Next Post:সাহসের তথ্যপ্রমাণ – কাজী রোজী

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑