• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

১৬. বিদায়

লাইব্রেরি » মুহম্মদ জাফর ইকবাল » সায়েন্স ফিকশন সমগ্র » টুকুনজিন » ১৬. বিদায়

১৬. বিদায়

গভীর রাতে আমার ঘুম ভেঙে গেল, টুকুনজিল আমাকে ডাকছে। আমি উঠে বসি বিছানায়। রাঙাবুবু ঘুমিয়ে আছে বিছানায় ক্লান্ত হয়ে, অন্যপাশে লাবু। সাবধানে বিছানা থেকে নেমে আমি দরজা খুলে বাইরে এসে দাঁড়ালাম। আকাশে মস্ত একটা চাঁদ উঠেছে তার নরম জোছনায় চারদিকে কী সুন্দর কোমল একটা ভাব। বারান্দায় জলচৌকিতে আমি চুপচাপ বসে রইলাম। টুকুনজিল ডাকল আমাকে, বিলু।

বল।

আমার কেন জানি যেতে ইচ্ছে করছে না। মনে হচ্ছে এখানে থেকে যাই।

টুকুনজিল, আমারও তাই ইচ্ছে করছে।

কিন্তু আমার তো যেতে হবে জান। এখানে থেকে যাওয়া তো খুব অযৌক্তিক ব্যাপার। তাই না?

হ্যাঁ।

তবু মনে হচ্ছে থেকে যাই। মনে হচ্ছে তোমাকে নিয়ে আকাশে উড়ে বেড়াই।

আমি চুপ করে রইলাম।

কিন্তু আমার যেতে হবে। যেতে ইচ্ছে করছে না, তবু যেতে হবে। খুব বিচিত্র একটা অনুভূতি। খুব বিচিত্র। এর কি কোনো নাম আছে বিলু?

হ্যাঁ, আছে।

কি নাম?

মন-খারাপ। দুঃখ।

দুঃখ। আমার খুব দুঃখ হচ্ছে , বিলু।

আমি কোনো কথা না বলে হঠাৎ হুঁ হুঁ করে কেঁদে উঠলাম।

টুকুনজিল বলল, তুমি কেঁদো না বিলু। কেঁদো না। কেউ কাঁদলে কী করতে হয় আমি জানি না।

আমি শার্টের হাতা দিয়ে আমার চোখ মোছার চেষ্টা করলাম। টুকুনজিল আবার বলল, আমি যখন ফিরে যাব তখন আমার গ্রহের সবাইকে বলব, ছায়াপথে ছোট্ট একটা নক্ষত্র আছে তার নাম সূর্য। সেই নক্ষত্রে ছোট্ট একটা গ্রহ আছে তার নাম পৃথিবী। সেই পৃথিবীতে ছোট্ট একটা মানুষ আছে, তার নাম বিলু। সেই বিলুর সাথে আমার ভাব হয়েছিল। সেই বিলু আমাকে খুব আশ্চর্য একটা জিনিস শিখিয়েছে, সেটার নাম ভালবাসা। আমাকে সে এত ভালবেসেছে যে হঠাৎ করে আমার বুকের ভেতরেও সেই আশ্চর্য অনুভূতির জন্ম হয়েছে। আমি একটা আশ্চর্য জিনিস বুকে করে নিয়ে যাচ্ছি বিলু। আমি তোমাকে কোনো দিন ভুলব না।

আমিও ভুলব না, টুকুনজিল।

আবার যখন আসব, আমি তখন তোমাকে খুঁজে বের করব।

কখন আসবে তুমি?

সময় সংকোচনের পঞ্চম পর্যায়ের তৃতীয় তরঙ্গে।

সেটা কবে?

এক শ তিরিশ বছর পরে।

এক শ’ তিরিশ। আমি ততদিনে মরে ভূত হয়ে যাব।

তোমার সন্তানেরা থাকবে। কিংবা তাদের সন্তানেরা। আমি তাদের খুঁজে বের করে তোমার কথা বলব।

ঠিক আছে টুকুনজিল।

আমার যাবার সময় হয়েছে বিলু। যাবার আগে তুমি কি আমার কাছে কিছু জানতে চাও?

কি জানতে চাইব?

কোনো পরম জ্ঞান? মহাকর্ষ ও নিউক্লিয়ার বলের সংমিশ্রণ? সর্বশেষ প্রাইম সংখ্যা? আলোর প্রকৃত বেগ? বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সীমা? কোনো মহাসত্য?

না টুকুনজিল, জানতে চাই না। তুমি তো বলেছ জ্ঞানে কোনো শর্টকাট নেই।

তাহলে কি তোমাকে বলে যাব কেমন করে সমুদ্রের পানি থেকে সোনা বের করতে হয়? বালু থেকে কেমন করে ইউরেনিয়াম বের করতে হয়? বলব?

টুকুনজিল। আমি কিছু চাই না।

কিছু চাও না?

না, শুধু চাই তুমি যেন ভালো থাক। যেখানে থাক ভালো থেকো।

বিলু।

আমাকে বিদায় দাও, বিলু।

তুমি কোথায়?

এই যে আমি, তোমার হাতের উপর বসে আছি।

আমার হাতের উপর হালকা নীল আলোর একটা বিন্দু। আমি আলতোভাবে স্পর্শ করে বললাম, বিদায়।

 

টুকুনজিলের মহাকাশযান থেকে নীল বিদ্যুৎচ্ছটা ছড়িয়ে পড়ে। আমার হাত থেকে সেটা উপরে উঠে আসে, তারপর আমাকে ঘিরে সেটা ঘুরতে শুরু করে। প্রথমে আস্তে আস্তে, তারপর দ্রুত, দ্রুত থেকে দ্রুততর। ঝিঁঝিপোকার মতো একটা শব্দ হয়, তারপর হঠাৎ করে নীরব হয়ে যায় চারদিকে।

 

টুকুনজিল চলে গেছে। বুকের ভেতর কেমন জানি ফাঁকা ফাঁকা লাগতে থাকে আমার।

 

দরজা খুলে হঠাৎ বাবা বের হয়ে আসেন। বারান্দায় দাঁড়িয়ে চাঁদের দিকে তাকালেন, তারপর দু হাত তুলে আড়মোড়া ভাঙলেন। আমাকে দেখতে পান নি বাবা, হঠাৎ দেখলেন, দেখে চমকে উঠে বললেন, কে? কে ওটা?

আমি, বাবা।

বিলু তুই?

হ্যাঁ বাবা।

বাইরে বসে আছিস কেন?

হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল তাই।

বাবা এসে আমার পাশে বসলেন। জোরে জোরে কয়েকটা নিঃশ্বাস নিয়ে বললেন, কী সুন্দর ফুলের গন্ধ।

আমি জিজ্ঞেস করলাম, বাবা, তোমার শরীরটা কেমন লাগছে এখন?

শরীর? কেমন জানি হালকা হালকা লাগছে, মনে হচ্ছে বয়স কুড়ি বছর কমে গেছে হঠাৎ। একেবারে অন্যরকম লাগছে। খুব ভালো লাগছে শরীরটা। খুব ভালো। তুই এসেছিস বলেই মনে হয়।

রাতজাগা একটা পাখি হঠাৎ কঁককঁক করে ডেকে উড়ে গেল মাথার উপর দিয়ে। আমি চমকে উঠে বললাম, বাবা, শুনলে?

হ্যাঁ। ওটা কিছু না। পাখি।

পাখিটা কি বলছে, বাবা?

বাবা শব্দ করে হাসলেন। বললেন, ধূর বোকা। মানুষ কি কখনো পাখির কথা বুঝতে পারে?

আমি শক্ত করে বাবাকে আঁকড়ে ধরে সাবধানে চোখের পানি মুছে নিলাম। টুকুনজিল আমার বাবাকে ভালো করে দিয়ে গেছে।

টুকুনজিল! তুমি যেখানেই থাক, ভালো থেকো।

 

শেষ কথা

আমি নীলাঞ্জনা হাই স্কুলেই আছি। বেশ ভালোই আছি। সারা দিন স্কুল করে বিকেলে কাদায় গড়াগড়ি দিয়ে ফুটবল খেলি। তারপর দলবেঁধে বড় দিঘিতে লাফিয়ে পড়ি। হৈচৈ করে সাঁতার কেটে গোসল করি, ড়ুব-সাঁতার দিয়ে এক জন আরেকজনের পা ধরে টানাটানি করি, ভারি মজা হয় তখন।

ছুটির দিনে আমি আর দুলাল হেঁটে হেঁটে সদরের বড় লাইব্রেরিতে যাই, এই লাইব্রেরিটা অনেক বড় আর কত যে মজার মজার বই! লাইব্রেরিয়ানের সাথে আমার খুব ভালো পরিচয় হয়ে গেছে, আমি তাই একবারে অনেকগুলো করে বই নিতে পারি। বইগুলো বুকে চেপে ধরে আমি আর দুলাল বড় সড়ক ধরে হেঁটে হেঁটে ফিরে আসি। দু’পাশে ধানক্ষেতের উপর দিয়ে বাতাস বয়ে যায়, ধানের শিষ ঢেউয়ের মতো নাচতে থাকে, তখন কী যে ভালো লাগে আমার। আমি আর দুলাল সড়ক ধরে হাঁটতে হাঁটতে কত রকম গল্প করি, বড় হয়ে কি করব এইসব।

ব্ল্যাক মার্ডারের দলবল একবার আমার কাছে বেড়াতে এসেছিল টুকুনজিলের গল্প শুনতে। স্যার নিয়ে এসেছিলেন, সবাই মিলে কী যে মজা হল তখন। আমি আর দুলাল ব্ল্যাক মার্ডারের দলকে সবকিছু ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখলাম, কেমন করে জাল দিয়ে মাছ ধরতে হয়, কেমন করে গরুর দুধ দেয়াতে হয়, কেমন করে নৌকা বাইতে হয়, কেমন করে ক্ষেতে মই দিতে হয়। বিকেলে রাঙাবুবু সবাইকে খই ভেজে দিল দেখে সবাই এত অবাক হয়ে গেল যে বলার নয়। নান্ট তো ফিরে যেতেই চাইছিল না, তারিক বলল, সে তার বাবাকে বলবে নীলাঞ্জনা হাই স্কুলে বদলি হয়ে আসতে চায়। আমাদের বাড়ি থেকে পড়াশোনা করবে।

স্যার আমার সাথে পড়াশোনা নিয়ে অনেক কথা বললেন। আমার বইপত্র বাড়ির কাজ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলেন। সাথে অনেকগুলো বই এনেছিলেন, গল্পের বই নয়, পড়ার বই, সেগুলো বুঝিয়ে দিলেন। ঘরে বসে নিজে নিজে কেমন করে পড়তে হয় তার উপর বই।

রাতে উঠানে বড় আগুন জ্বালিয়ে সবাই গোল হয়ে বসেছিলাম, আমি তখন টুকুনজিলের গল্প করছি সবাইকে। কেমন করে টুকুনজিলের দেখা পেলাম, কেমন করে না বুঝে হোমিওপ্যাথিক ওষুধের শিশিতে তাকে আটকে রাখলাম, কেমন করে পিঁপড়ারা তাকে ঠিক করে দিল, কেমন করে সোনার আংটি চুরি করে আমি কী বিপদে পড়লাম। তারপর বব কার্লোসের কথা বললাম, তারা বিষাক্ত ওষুধ দিয়ে আমাকে কেমন কষ্ট দিল শুনে রাঙাবুবু আঁচল দিয়ে চোখ মুছতে থাকে। তারপর যখন টুকুনজিল কী ভাবে ঘর ভেঙে আমাকে উদ্ধার করে আনল সেটা বললাম, সবাই। আনন্দে চিৎকার করে উঠল। এর পরের অংশটা ব্লাক মার্ডারের দলের সবাই জানে, তবুও আবার বললাম, সবাই যোগ দিল আমার সাথে। নান্টু আর তারিক অভিনয় করে দেখাল কেমন করে ভয়ঙ্কর মারপিট হল মেশিনগান হাতে সেই লোকের সাথে। সেই লোক কী ভাবে আছাড় খেয়ে পড়ল তার অভিনয়টা এত ভালো হল যে সেটা নান্টু আর তারিককে দু’বার করতে হল। সবাই হেসে কুটিকুটি হল তখন। তারপর বব কার্লোসকে ঝুলিয়ে রেখে আমরা কেমন করে পালিয়ে এলাম সেটা বললাম আমি। খালার বাসায় এসে বাঙাবুবর চিঠি পড়ে আমার কী মন-খারাপ হল, তখন টুকুনজিল। কেমন করে আমাকে আকাশে উড়িয়ে আনল সেটা বললাম। টুকুনজিল কেমন করে। বিদায় নিল, সেটা বলতে গিয়ে আমার গলা ধরে এল, সবার চোখে পানি এসে গেল তখন।

গল্প শেষ হবার পর অনেকক্ষণ কেউ কোনো কথা বলল না। অনেকক্ষণ পর স্যার বললেন, বিলু, এত বড় একটা ব্যাপার, কিন্তু তুই যে কী ভালোভাবে এটা সামলেছিস, তার কোনো তুলনা নেই। মহাকাশের সেই প্রাণী পৃথিবী সম্পর্কে কী ভালো একটা ধারণা নিয়ে গেল, বুকে করে কত ভালবাসা নিয়ে ফিরে গেল! আহা!

বাবা শুধু মাথা নেড়ে বললেন, এটা কি কখনো হতে পারে যে কেউ মহাকাশের একটা প্রাণীকে হোমিওপ্যাথিক ওষুধের শিশির মাঝে আটকে রাখবে? হতে পারে? বিলুটা যা গুল মারতে পারে।

নান্টু, তারিক, সুব্রত সবাই একসাথে চিৎকার করে বলল, কী বলছেন চাচা আপনি? আমরা নিজের চোখে দেখেছি।

 

তারপর অনেক দিন হয়ে গেছে। এখনো মাঝে মাঝে হঠাৎ হঠাৎ কোনো মানুষ আমার খোঁজে আসে। কেউ এদেশের, কেউ বিদেশের। তারা আমার কাছে টুকুনজিলের কথা শুনতে চায়। নানারকম প্রশ্ন করে। ঘুরেফির সবাই শুধু একটা জিনিস জানতে চায়, ফিরে যাবার আগে টুকুনজিল কি কোনো প্রমাণ রেখে গেছে? কোনো চিহ্ন? কোনো তথ্য? কোনো অজানা সত্য? কোনো ভবিষ্যদ্বাণী?

আমি যখন বলি রেখে যায় নি, তখন সবাই আমার দিকে কেমন অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকায়। আমি বুঝতে পারি, আমার কথা তারা ঠিক বিশ্বাস করছে না।

আমি কিছু মনে করি না। বিশ্বাস না করলে নাই। আমি জানি, টুকুনজিল আছে। কেউ বিশ্বাস করলেও আছে, না করলেও আছে।

রাতে যখন আকাশভরা নক্ষত্র ওঠে, আমি তখন এন্ড্রোমিডা নক্ষত্রপুঞ্জকে খুঁজে বেড়াই, আমি জানি সেই নক্ষত্রপুঞ্জের কোনো একটি নক্ষত্রের কোনো একটি গ্রহে আছে আমার এক বন্ধু। আমি জানি যখন তার আকাশ ভরে নক্ষত্র উঁকি দেয়, সেও ছায়াপথের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।

তাকিয়ে সে আমার কথা ভাবে।

আমি যেরকম করে তার কথা ভাবি।

Category: টুকুনজিন
পূর্ববর্তী:
« ১৫. ফেরা

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑