০৩. পত্রাবলী ২১-৩০

২১

[বলরাম বাবুকে লিখিত]

শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণো জয়তি

এলাহাবাদ
৫ জানুআরী, ১৮৯০

নমস্কার নিবেদনঞ্চ—
মহাশয়ের পত্রে আপনার পীড়ার সমাচার জ্ঞাত হইয়া বিশেষ দুঃখিত হইলাম। বৈদ্যনাথ change (বায়ুপরিবর্তন) সম্বন্ধে আপনাকে যে পত্র লিখি তাহার সার কথা এই যে, আপনার ন্যায় দুর্বল অথচ অত্যন্ত নরম-শরীর লোকের অধিক অর্থব্যয় না করিলে উক্ত স্থানে চলা অসম্ভব। যদি পরিবর্তনই আপনার পক্ষে বিধি হয় এবং যদি কেবল সস্তা খুঁজিতে এবং গয়ংগচ্ছ করিতে করিতে এতদিন বিলম্ব করিয়া থাকেন, তাহা হইলে দুঃখের বিষয় সন্দেহ নাই। …

বৈদ্যনাথ—হাওয়া সম্বন্ধে অত্যন্ত উৎকৃষ্ট, কিন্তু জল ভাল নহে, পেট বড় খারাপ করে, আমার প্রত্যহ অম্বল হইত। ইতঃপূর্বে আপনাকে এক পত্র লিখি—তাহা কি আপনি পাইয়াছেন, না bearing (বিনা মাশুলে প্রেরিত) দেখিয়া the devil take it করিয়াছেন?১৫ আমি বলি change (বায়পরিবর্তন) করিতে হয় তো শুভস্য শীঘ্রং। রাগ করিবেন না—আপনার একটি স্বভাব এই যে ক্রমাগত ’বামুনের গরু’ খুঁজিতে থাকেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এ জগতে সকল সময়ে তাহা পাওয়া যায় না—আত্মানং সততং রক্ষেৎ। Lord have mercy (ঈশ্বর করুণা করুন) ঠিক বটে, কিন্তু He helps him who helps himself (যে উদ্যমী, ভগবান্ তাহারই সহায় হন)। আপনি খালি টাকা বাঁচাতে যদি চান, Lord (ভগবান্) কি বাবার ঘর হইতে টাকা আনিয়া আপনাকে change (বায়ুপরিবর্তন) করাইবেন? যদি এতই Lord-এর উপর নির্ভর করেন, ডাক্তার ডাকিবেন না। … যদি আপনার suit না করে (সহ্য না হয়) কাশী যাইবেন—আমিও এতদিন যাইতাম, এখানকার বাবুরা ছাড়িতে চাহে না, দেখি কি হয়।…

কিন্তু পুনর্বার বলি, change-এ (বায়ুপরিবর্তনে) যদি যাওয়া হয়, কৃপণতার জন্য ইতস্ততঃ করিবেন না। তাহা হইলে তাহার নাম আত্মঘাত। আত্মঘাতীর গতি ভগবান্‌ও করিতে পারেন না। তুলসী বাবু প্রভৃতি সকলকে আমার নমস্কারাদি দিবেন। ইতি—

দাস
নরেন্দ্রনাথ

২২

[শ্রীযজ্ঞেশ্বর ভট্টাচার্যকে লিখিত]

এলাহাবাদ
৫ জানুআরী, ১৮৯০

প্রিয় ফকির,
একটি কথা তোমাকে বলি, উহা সর্বদা স্মরণ রাখিবে, আমার সহিত তোমাদের আর দেখা না হইতে পারে—নীতিপরায়ণ ও সাহসী হও, হৃদয় যেন সম্পূর্ণ শুদ্ধ থাকে। সম্পূর্ণ নীতিপরায়ণ ও সাহসী হও—প্রাণের ভয় পর্যন্ত রাখিও না। ধর্মের মতামত লইয়া মাথা বকাইও না। কাপুরুষেরাই পাপ করিয়া থাকে, বীর কখনও পাপ করে না—মনে পর্যন্ত পাপচিন্তা আসিতে দেয় না। সকলকেই ভালবাসিবার চেষ্টা করিবে। নিজে মানুষ হও, আর রাম প্রভৃতি যাহার সাক্ষাৎ তোমার তত্ত্বাবধানে আছে, তাহাদিগকেও সাহসী, নীতিপরায়ণ ও সহানুভূতিসম্পন্ন করিবার চেষ্টা করিবে। হে বৎসগণ, তোমাদের জন্য নীতিপরায়ণতা ও সাহস ব্যতীত আর কোন ধর্ম নাই, ইহা ব্যতীত ধর্মের আর কোন মতামত তোমাদের জন্য নহে। যেন কাপুরুষতা, পাপ, অসদাচরণ বা দুর্বলতা একদম না থাকে, বাকী আপনা-আপনি আসিবে। রামকে কখনও থিয়েটার বা কোনরূপ চিত্তদৌর্বল্যকারক আমোদ-প্রমোদে লইয়া যাইও না বা যাইতে দিও না।

তোমার
নরেন্দ্রনাথ

২৩

[প্রমদাবাবুকে লিখিত]

এলাহাবাদ
৫ জানুআরী, ১৮৯০

পূজ্যপাদেষু,
প্রিয় রাম, কৃষ্ণময়ী ও ইন্দু, বৎসগণ, মনে রাখিও কাপুরুষ ও দুর্বলগণই পাপাচরণ করে ও মিথ্যা কথা বলে। সাহসী ও সবলচিত্ত ব্যক্তিগণ সদাই নীতিপরায়ণ। নীতিপরায়ণ, সাহসী ও সহানুভূতিসম্পন্ন হইবার চেষ্টা কর। ইতি

তোমাদের
নরেন্দ্রনাথ

২৪

[প্রমদাবাবুকে লিখিত]

ঈশ্বরো জয়তি

শ্রীযুক্ত সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের বাটী
গোরাবাজার, গাজীপুর
শুক্রবার, ২৪ জানুআরী, ১৮৯০

পূজ্যপাদেষু,
অদ্য তিন দিন যাবৎ গাজীপুরে পৌঁছিয়াছি। এস্থানে আমার বাল্যসখা শ্রীযুক্ত বাবু সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের বাসাতে আছি; স্থানটি অতি মনোরম। অদূরে গঙ্গা আছেন, কিন্তু স্নানের বড় কষ্ট—পথ নাই, এবং বালির চড়া ভাঙ্গিতে বড় কষ্ট হয়। আমার বন্ধুর পিতা শ্রীযুক্ত ঈশানচন্দ্র মুখোপাধ্যায় মহাশয়—যে মহানুভবের কথা আমি আপনাকে বলিয়াছিলাম—এ স্থানে আছেন। অদ্য ইনি ৺কাশীধামে যাইতেছেন, কাশী হইয়া কলিকাতা যাইবেন। আমার বড় ইচ্ছা ছিল, ইঁহার সঙ্গে পুনর্বার কাশী যাই। কিন্তু যে জন্য আসিয়াছি—অর্থাৎ বাবাজীকে১৬ দেখা—তাহা এখনও হয় নাই। অতএব দুই-চারি দিন বিলম্ব হইবে। এস্থানের সকলই ভাল, বাবুরা অতি ভদ্র, কিন্তু বড় westernized (পাশ্চাত্যভাবাপন্ন); আর দুঃখের বিষয় যে, আমি western idea (পাশ্চাত্যভাব) মাত্রেরই উপর খড়্গহস্ত। কেবল আমার বন্ধুর ও-সকল idea (ভাব) বড়ই কম। কি কাপুড়ে সভ্যতাই ফিরিঙ্গী আনিয়াছে! কি materialistic (জড়ভাবের) ধাঁধাই লাগাইয়াছে! বিশ্বনাথ এই সকল দুর্বলহৃদয়কে রক্ষা করুন। পরে বাবাজীকে দেখিয়া বিশেষ বৃত্তান্ত লিখিব। ইতি

দাস
বিবেকানন্দ

পুঃ—ভগবান্ শুকের জন্মভূমিতে আজি বৈরাগ্যকে লোকে পাগলামি ও পাপ মনে করে! অহো ভাগ্য!

২৫

[বলরাম বাবুকে লিখিত]

শ্রীরামকৃষ্ণো জয়তি

গাজীপুর
৩০ জানুআরী, ১৮৯০

পূজ্যপাদেষু,
আমি এক্ষণে গাজীপুরে সতীশবাবুর নিকট রহিয়াছি। যে কয়েকটি স্থান দেখিয়া আসিয়াছি, তন্মধ্যে এইটি স্বাস্থ্যকর। বৈদ্যনাথের জল বড় খারাপ, হজম হয় না। এলাহাবাদ অত্যন্ত ঘিঞ্জি—কাশীতে যে কয়েকদিন ছিলাম দিনরাত জ্বর হইয়া থাকিত—এত ম্যালেরিয়া! গাজীপুরের বিশেষতঃ আমি যে স্থানে থাকি, জলবায়ু অতি স্বাস্থ্যকর। পওহারী বাবার বাড়ী দেখিয়া আসিয়াছি। চারিদিকে উচ্চ প্রাচীর, ইংরেজী বাঙলার মতন, ভিতরে বাগান আছে, বড় বড় ঘর, chimney u0026amp;c. (চিমনি ইত্যাদি)। কাহাকেও ঢুকিতে দেন না, ইচ্ছা হইলে দ্বারদেশে আসিয়া ভিতর থেকে কথা কন মাত্র। একদিন যাইয়া বসিয়া বসিয়া হিম খাইয়া ফিরিয়া আসিয়াছি। রবিবারে কাশী যাইব। ইতোমধ্যে বাবাজীর সহিত দেখা হইল তো হইল—নহিলে এই পর্যন্ত। প্রমদাবাবুর বাগান সম্বন্ধে কাশী হইতে স্থির করিয়া লিখিব। কালী ভট্টাচার্য যদি একান্ত চাহে তো আমি কাশীতে রবিবার যাইলে যেন আসে—না আসিলেই ভাল। কাশীতে দুই-চারিদিন থাকিয়া শীঘ্রই হৃষীকেশ চলিতেছি—প্রমদাবাবুর সঙ্গে যাইলেও যাইতে পারে। আপনারা এবং তুলসীরাম সকলে আমার যথাযোগ্য নমস্কারাদি জানিবেন ও ফকির, রাম, কৃষ্ণময়ী প্রভৃতিকে আমার আশীর্বাদ।

দাস
নরেন্দ্রনাথ

আমার মতে আপনি কিছুদিন গাজীপুরে আসিয়া থাকিলে বড় ভাল, এখানে সতীশ বাঙলা ঠিক করিয়া দিতে পারিবে ও গগনচন্দ্র রায় নামক একটি বাবু—আফিম আফিসের Head (বড়বাবু), তিনি যৎপরোনাস্তি ভদ্র, পরোপকারী ও social (মিশুক)। ইঁহারা সব ঠিক করিয়া দিবেন। বাড়ী ভাড়া ১৫৲।২০৲ টাকা; চাউল মহার্ঘ, দুগ্ধ ১৬।২০ সের, আর সকল অত্যন্ত সস্তা। আর ইঁহাদের তত্ত্বাবধানে কোন ক্লেশ হইবার সম্ভাবনা নাই, কিন্তু কিছু expensive (বেশী খরচ)। ৪০৲।৫০৲ টাকার উপর পড়িবে। কাশী বড় damned malarious (অত্যন্ত ম্যালেরিয়াপূর্ণ)।

প্রমদাবাবুর বাগানে কখনও থাকি নাই—তিনি কাছ-ছাড়া করিতে চান না। বাগান অতি সুন্দর বটে, খুব furnished (সাজান গোজান) এবং বড় ও ফাঁকা। এবার যাইয়া থাকিয়া দেখিয়া মহাশয়কে লিখিব। ইতি

নরেন্দ্র

২৬

[প্রমদাবাবুকে লিখিত]

ঈশ্বরো জয়তি

বরাহনগর, কলিকাতা
১৩ ডিসেম্বর, ১৮৮৯

পূজ্যপাদেষু,
বাবাজীর সহিত দেখা হওয়া বড় মুশকিল, তিনি বাড়ীর বাহিরে আসেন না, ইচ্ছা হইলে দ্বারে আসিয়া ভিতর হইতে কথা কন। অতি উচ্চ প্রাচীরবেষ্টিত উদ্যান-সমন্বিত এবং চিমনীদ্বয়-শোভিত তাঁহার বাটী দেখিয়া আসিয়াছি, ভিতরে প্রবেশের ইচ্ছা নাই। লোকে বলে, ভিতরে গুফা অর্থাৎ তয়খানা গোছের ঘর আছে, তিনি তন্মধ্যে থাকেন; কি করেন তিনিই জানেন, কেহ কখনও দেখে নাই। একদিন যাইয়া অনেক হিম খাইয়া বসিয়া বসিয়া চলিয়া আসিয়াছি, আরও চেষ্টা দেখিব। রবিবার ৺কাশীধামে যাত্রা করিব—এখানকার বাবুরা ছাড়িতেছেন না, নহিলে বাবাজী দেখিবার সখ আমার গুটাইয়াছে। অদ্যই চলিয়া যাইতাম; যাহা হউক, রবিবার যাইতেছি। আপনার হৃষীকেশ যাইবার কি হইল?

দাস
নরেন্দ্রনাথ

পুঃ—গুণের মধ্যে স্থানটি বড় স্বাস্থ্যকর।

২৭

[প্রমদাবাবুকে লিখিত]

ওঁ বিশ্বেশ্বরো জয়তি

গাজীপুর
৪ ফেব্রুআরী, ১৮৯০

পূজ্যপাদেষু,
আপনার পত্রও পাইয়াছি এবং বহু ভাগ্যফলে বাবাজীর সাক্ষাৎ হইয়াছে। ইনি অতি মহাপুরুষ—বিচিত্র ব্যাপার, এবং এই নাস্তিকতার দিনে ভক্তি এবং যোগের অত্যাশ্চর্য ক্ষমতার অদ্ভুত নিদর্শন। আমি ইঁহার শরণাগত হইয়াছি, আমাকে আশ্বাসও দিয়াছেন, সকলের ভাগ্যে ঘটে না। বাবাজীর ইচ্ছা—কয়েক দিবস এই স্থানে থাকি, তিনি উপকার করিবেন। অতএব এই মহাপুরুষের আজ্ঞানুসারে দিন কয়েক এ স্থানে থাকিব। ইহাতে আপনিও আনন্দিত হইবেন, সন্দেহ নাই। পত্রে লিখিলাম না, কথা অতি বিচিত্র, সাক্ষাতে জানিবেন। ইঁহাদের লীলা না দেখিলে শাস্ত্রে বিশ্বাস পুরা হয় না।

দাস
নরেন্দ্রনাথ

পুঃ—এ পত্রের বিষয় গোপন রাখিবেন। ইতি

২৮

[প্রমদাবাবুকে লিখিত]

বিশ্বেশ্বরো জয়তি

গাজীপুর
৭ ফেব্রুআরী, ১৮৯০

পূজ্যপাদেষু,
বএইমাত্র আপনার পত্র পাইয়া সাতিশয় প্রীতি প্রাপ্ত হইলাম। বাবাজী আচারী বৈষ্ণব; যোগ, ভক্তি এবং বিনয়ের মূর্তি বলিলেই হয়। তাঁহার কুটীর চতুর্দিকে প্রাচীর দেওয়া, তাহার মধ্যে কয়েকটি দরজা আছে। এই প্রাচীরের মধ্যে এক অতি দীর্ঘ সুড়ঙ্গ আছে, তন্মধ্যে ইনি সমাধিস্থ হইয়া পড়িয়া থাকেন; যখন উপরে আসেন, তখনই লোকজনের সঙ্গে কথাবার্তা কহেন। কি খান, কেহই জানে না, এইজন্যই ‘পওহারী বাবা’ বলে। মধ্যে একবার ৫ বৎসর—একবারও গর্ত হইতে উঠেন নাই, লোকে জানিয়াছিল যে, শরীর ছাড়িয়াছেন; কিন্তু আবার উঠিয়াছেন। এবার কিন্তু দেখা দেন না, তবে দ্বারের আড়াল হইতে কথা কহেন। এমন মিষ্ট কথা আমি কখনও শুনি নাই। কোন direct (সোজাসুজি) প্রশ্নের উত্তর দেন না, বলেন ‘দাস ক্যা জানে?’ তবে কথা কহিতে কহিতে আগুন বাহির হয়। আমি খুব জিদাজিদি করাতে বলিলেন যে, ‘আপনি কিছুদিন এ স্থানে থাকিয়া আমাকে কৃতার্থ করুন।’ এ প্রকার কখনও কহেন না; ইহাতেই বুঝিলাম, আমাকে আশ্বাস দিলেন এবং যখনই পীড়াপীড়ি করি, তখনই বলেন, ‘কিছুদিন থাকুন।’ এই আশায় আছি। ইনি অতি পণ্ডিত ব্যক্তি, কিন্তু কিছুই প্রকাশ পায় না, আবার কর্মকাণ্ডও করেন—পূর্ণিমা হইতে সংক্রান্তি পর্যন্ত হোম হয়। অতএব ইহার মধ্যে গর্তে যাইবেন না নিশ্চিত। অনুমতি কি লইব, direct (স্পষ্ট) উত্তর দিবেন না। ‘দাসকে ভাগ্য’ ইত্যাদি ঢের বলিবেন। আপনার ইচ্ছা থাকে, পত্রপাঠ চলিয়া আসুন। ইঁহার শরীর যাইলে বড় আপসোস থাকিবে—দুদিনে দেখা অর্থাৎ আড়াল হইতে কথা কহিয়া যাইতে পারিবেন। আমার বন্ধু সতীশবাবু অতি সমাদরে আপনাকে গ্রহণ করিবেন। আপনি পত্রপাঠ চলিয়া আসুন, ইতোমধ্যে আমি বাবাজীকে বলিব।

দাস
নরেন্দ্রনাথ

পুঃ—ইঁহার সঙ্গ না হইলেও এ প্রকার মহাপুরুষের জন্য কোন কষ্টই বৃথা হইবে না নিশ্চিত। অলমতিবিস্তরেণ।

২৯

[প্রমদাবাবুকে লিখিত]

ঈশ্বরো জয়তি

গাজীপুর
১৩ ফেব্রুআরী, ১৮৯০

পূজ্যপাদেষু,
আপনার শারীরিক অসুস্থতা শুনিয়া চিন্তিত রহিলাম। আমারও কোমরে একপ্রকার বেদনা হইয়া রহিয়াছে, সম্প্রতি অত্যন্ত বাড়িয়াছে এবং যাতনা দিতেছে। বাবাজীকে দুই দিন দেখিতে যাইতে পারি নাই, তজ্জন্য তাঁহার নিকট হইতে আমার খবর লইতে এক ব্যক্তি আসিয়াছিল—অতএব আজ যাইব। আপনার অসংখ্য প্রণাম দিব। আগুন বাহির হয়, অর্থাৎ অতি অদ্ভুত গূঢ় ভক্তির কথা এবং নির্ভরের কথা বাহির হয়—এমন অদ্ভুত তিতিক্ষা এবং বিনয় কখনও দেখি নাই। কোন মাল যদি পাই, আপনার তাহাতে ভাগ আছে নিশ্চিত জানিবেন। কিমধিকমিতি—

দাস
নরেন্দ্রনাথ

৩০

[প্রমদাবাবুকে লিখিত]

ঈশ্বরো জয়তি

গাজীপুর
১৪ ফেব্রুআরী, ১৮৯০

পূজ্যপাদেষু,
গতকল্য আপনাকে যে পত্র লিখিয়াছি, তাহাতে শরৎ-ভায়ার পত্রখানি পাঠাইতে—বলিতে ভুলিয়াছি বোধ হয়; অনুগ্রহ করিয়া পাঠাইয়া দিবেন। গঙ্গাধর ভায়ার একখানি পত্র পাইয়াছি। তিনি এক্ষণে কাশ্মীর, রামবাগ সমাধি, শ্রীনগরে আছেন। আমি lumbagoতে (কোমরের বাতে) বড় ভুগিতেছি। ইতি

দাস
নরেন্দ্রনাথ

পুঃ—রাখাল ও সুবোধ ওঁকার, গির্নার, আবু, বোম্বে, দ্বারকা দেখিয়া এক্ষণে বৃন্দাবনে আছে।

নরেন্দ্র