ঋগ্বেদ ১০।০২৯

ঋগ্বেদ ১০।০২৯
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ১০ম মণ্ডল সূক্ত ২৯
ইন্দ্র দেবতা। বসুক্র ঋষি।

১। হে শীঘ্রগামী অশ্বিদ্বয়! এই সুনিৰ্ম্মল স্তব তোমাদিগের উদ্দেশে যাইতেছে। যেরূপ পক্ষী সভয়ে চতুর্দিক নিরীক্ষণ করিতে করিতে আপন শাবককে বৃক্ষের কুলায় মধ্যে সংস্থাপন করে, আমি তাদৃশ যত্নে এই স্তব প্রস্তুত করিয়াছি। কত দিন এই স্তবে আমি ইন্দ্রকে আহবান করি, তিনি আসিয়া যজ্ঞ সম্পন্ন করেন। তিনি নেতাব্যক্তিদিগেরও নায়ক, তিনি মনুষ্যের হিতার্থী, তিনি রাত্রিতে সোমের ভাগ গ্রহণ করেন।

২। হে ইন্দ্র! তুমি নেতা ব্যক্তিদিগেরও নায়ক। অদ্যকার প্রাতঃকাল ও অন্য অন্য প্রাতঃকাল যেন তোমার স্তবে ক্ষেপণ করিতে পারি। তোমাকে স্তব করিয়া ত্রিশোক নামক ঋষি শত ব্যক্তির সাহায্য পাইয়াছিলেন এবং কুৎস নামে ঋষি তোমার সহিত এক রথে আরোহণ করিয়াছিলেন।

৩। হে ইন্দ্র! কোন প্রকারে মত্ততা তোমার সর্বাপেক্ষা প্রীতিকর? তুমি আমাদিগের স্তুতিবাক্য শ্রবণপূর্বক মহাবেগে যজ্ঞগৃহের দ্বারাভিমুখে এস। কবে আমি উত্তম বাহন পাইব? কবে আমি স্তবের দ্বারা অন্ন ও অর্থ আপনার নিকটে আকর্ষণ করতে পারিব?।

৪। হে ইন্দ্র! কবে অর্থ হবে? কোন স্তব পাঠ করিলে তুমি মনুষ্যদিগকে তোমার মত করিবে? কবে আসিবে? গে কীৰ্ত্তিশালী! তুমি যথার্থ বন্ধুর ন্যায় সকলকে ভরণপোষণ কর, স্তব করলেই তুমি ভরণপোষণ কর।

৫। যেরূপ পতি আপনার পত্নীর কামনা পূর্ণ করে, তদ্রুপ যাহারা তোমার কামনা পূর্ণ করে, অর্থাৎ ইচ্ছামত যজ্ঞ সম্পাদন করে, তাহাদিগকে যথেষ্ট অর্থ দাও, যেহেতু তুমি সূৰ্য্যের ন্যায় দাতা, হে বহুরূপধারী! যাহারা চির প্রচলিত স্তুতিবাক্য তোমার উদ্দেশে পাঠ করে এবং অন্ন দেয়, তাহা্দিগকে অর্থ দাও।

৬। হে ইন্দ্র! পূর্বকালে অতি সুন্দর সৃষ্টি প্রক্রিয়াদ্বারা বিরচিত এই যে দ্যাবাপৃথিবী, ইহারা তোমার দুই জননীর তুল্য। এই যে ঘৃতযুক্ত সোমরস প্রস্তুত করা হইয়াছে, ইহা পান করিয়া তুমি যেন প্রীত হও; এই মধুর রসযুক্ত অন্ন যেন তোমার পক্ষে সুস্বাদু হয়।

৭। সেই ইন্দ্রের জন্য পাত্র পূর্ণ করিয়া মধুরস দেওয়া হইল, কারণ তিনি যথার্থই ধন দান করেন। তিনি পৃথিবী অপেক্ষাও বৃহৎ হইয়া উঠিলেন; তিনি মনুষ্যর হিতৈষী; তাহার কাৰ্য্য ও পৌরুষ আশ্চৰ্য্য।

৮। চমৎকার বলশালী ইন্দ্র বিপক্ষ সৈন্যগণকে আচ্ছন্ন করিমা ফেলিলেন, গত উৎকৃষ্ট উৎকৃষ্ট শত্রুসৈন্য ইহার সহিত বন্ধুত্ব করবার জন্য চেষ্টা করিতেছে। হে ইন্দ্র! যেমন জগতের হিতার্থে সুবুদ্ধি ব্যক্তির ন্যায় তুমি যুদ্ধের জন্য রথে আরোহণ করিয়া থাক, তদ্রুপ এখনও রথে আরোহণ কর।