ঋগ্বেদ ০৮।১০১

ঋগ্বেদ ০৮।১০১
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ৮ম মণ্ডল সূক্ত ১০১

পঞ্চমের শেষাংশের ও যষ্ঠের আদিত্য দেবতা; সপ্তম ও অষ্টমের অশ্বি দেবেতা; নবমের ও দশমের বায়ু দেবতা; একাদশ ও দশের সূৰ্য্য দেবতা; ত্রয়োদশের উষা দেবতা; চতুর্দশের পবমান দেবতা; পঞ্চদশ ও ষোড়শের গো দেবতা; অবশিষ্টের দেবতা মিত্র ও বরুণ। ভৃগুগোত্র জমদগ্নি ঋষি।

১। যে হব্যদায়ী যজমানের উদ্দেশে অভিমত সিদ্ধির জন্য মিত্র ও বরুণকে সম্বোধন করে, সেই মনুষ্য সত্যই এই প্রকারে যজ্ঞথ হবিঃ সংস্কার করে।

২। অতিশয় বর্ধিতবল, মহাদর্শন নেতা, দীপ্তিমান, অতিশয় বিদ্বান, সেই মিত্র ও বরুণদ্বয় বাহুদ্বয়ের ন্যায় সূর্যকিরণের সহিত কৰ্ম্ম লাভ করেন।

৩। হে মিত্র ও বরুণ! যে শীঘ্রগামী তোমাদের অভিমুখে গমন করে, সে দেবগণের দূত হয়, তাহার মস্তক সুবর্ণ ভূষিত হয় এবং সে মদকর ধন লাভ করে।

৪। যে পুনঃ পুনঃ প্রশ্ন করিলেও আনন্দিত হয় না, যে পুনঃ পুনঃ আহ্বান করিলেও আনন্দিত হয় না, কথোপকথনের জন্যও অনিন্দিত হয় না, তাহার সংগ্রাম হইতে আমাদিগকে আজি রক্ষা কর, তাহার বাহুদ্বয় হইতে আমাদিগকে রক্ষা কর।

৫। হে যজ্ঞধন! মিত্রের উদ্দেশে সেবার্হ, যজ্ঞগৃহভব স্তোত্র গান কর, অৰ্য্যমা উদ্দেশে গান কর, বরুণের উদ্দেশে প্রীতি উংপাদক বাক্য গান কর, মিত্রাদি রাজগণের উদ্দেশে স্তোত্র গান কর।

৬। অরুণবর্ণ, বিজয়সাধন, বাসপ্রদ, তিন জনের এক পুত্রকে দেবগণ প্রেরণ করিতেছেন। অহিংসিত, মরণরহিত দেবগণ মনুষ্যদিগের স্থান সকল দেখিতে পান।

৭। হে এক মিলিত নাসত্যদ্বয়! তোমরা আমার উচ্চারিত দীপ্ততম বাক্যে ও কাৰ্য্যে আগমন কর, হব্য ভক্ষণের উদ্দেশে গমন কর।

৮। হে অন্নবিশিষ্ট, ধনযুক্ত অশ্বিদ্বয়! তোমাদের যে রাক্ষসরহিত দান আছে, তাহা যখন আহ্বান করিব, তখন তোমরা জমদগ্নিকর্তৃক স্তরমান হইয়া পূৰ্বমুখী ও স্তুতিবর্ধনকারী নেতাস্বরূপ হইয়া আগমন কর।

৯। হে বায়ু! তুমি আমাদের সুস্তুতি-প্রযুক্ত স্বৰ্গস্পর্শী যজ্ঞে আগমন কর। পবিত্রের মধ্যে আশ্রিত এই শুভ্রসোম তোমার উদ্দেশে নিয়ত হইয়াছিল।

১০। হে নিযুৎবান বায়ু! অধ্বর্য্যু, ঋজুতম পথে গমন করিতেছে, তোমার ভক্ষণার্থ হবিঃ লইয়া যাইতেছে, আমাদের উভয় প্রকার অর্থাৎ ও সোম ও গব্যযুক্ত সোম পান কর।

১১। হে সূৰ্য্য! তুমি সত্যই মহা, হে আদিত্য! তুমি মহান্ একথা সত্য। তুমি মহান, তোমার মহিমা স্তুত হইতেছে। হে দেব! তুমি মহান, একথা সত্য।

১২। হে সূৰ্য্য! তুমি শ্রবণে মহান, একথা সত্য। তুমি দেবগণের মধ্যে মহিমায় মহা, একথা সত্য। তুমি শত্রুবিনাশী, তুমি দেবগণের হিতোপদেষ্টা, তোমার তেজ মহৎ এবং অহিংসণীয়।

১৩। এই যে নিম্নমুখী, স্তুতিমতী, রূপবতী, প্ৰকাশযুক্তা উষা উৎপাদিত হইয়াছিলেন, তিনি বহুস্থানীয় দশদিকে গমন করতঃ চিত্রিত গাভীর ন্যায় দৃষ্ট হইতেছেন।

১৪। তিন প্রজা অতিক্রম করতঃ গমন করিয়াছিল, অন্য প্রজাগণ অর্চনীয় অগ্নির চতুর্দিক আশ্রয় করিয়াছিল। ভুবন মধ্যে আদিত্য মহা হইয়া অবস্থিতি করিতেছিলেন, পবমান, দিকসমূহে প্রবেশ করিলেন।

১৫। যিনি রুদ্রগণের মাতা, বসুগণের দুহিত, আদিত্যের ভগিনী, অমৃতের আবাসস্থান, হে জলগণ! সেই নির্দোষ অদিতি গো দেবীকে হিংসা করিও না। এই কথা চেতনাবিশিষ্ট জনগণকে বলিয়াছিলাম।

১৬। বাক্য প্ৰদায়িনী, বাক্য উচ্চারণকারিণী, সমস্ত বাক্যের সহিত উপস্থিতা, দ্যোতমান, দেবগণের জন্য আমার পরিচয় বিশিষ্টা গো দেবীকে অল্প বুদ্ধি মনুষ্য পরিবর্জন করে।