ঋগ্বেদ ০৮।০৯৫

ঋগ্বেদ ০৮।০৯৫
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ৮ম মণ্ডল সূক্ত ৯৫
ইন্দ্র দেবতা। তিরশ্চী ঋষি।

১। হে স্তুতিভাক ইন্দ্র! সোম অভিযুত হইলে, আমাদের স্তুতিবাক্য রথীর ন্যায় তোমার অভিমুখে অবস্থিত হয়, মাতা বৎসের অভিমুখে যেরূপ শব্দ করে, সেইরূপতোমার উদ্দেশে শব্দ করে।

২। হে স্তুতিভাক ইন্দ্র! দীপ্তিমান, অভিযুত সোম তোমার নিকট আগমন করুক, এই অন্নের ভাগ শীঘ্র পান কর। হে ইন্দ্র! চারিদিকে তোমার জন্য চরু পুরোডাসাদি নিহিত আছে।

৩। হে ইন্দ্র! শ্যেনকর্তৃক আহুত অভিযুত সোম আনন্দাৰ্থ সুখে পান কর, যেহেতু তুমি বহুতর প্রজার পালক ও রাজা।

৪। যে তিরশ্চী তোমার পূজা করিতেছে, তাহার আহ্বান শ্রবণ কর। তুমি মহান্ তুমিই সুবীরযুক্ত ও গবাদিযুক্ত ধনদানে আমাদিগকে পূর্ণ কর।

৫। হে ইন্দ্র! যে ব্যক্তি তোমার উদ্দেশে নূতন মদকর বাক্য উৎপাদন করে, সেই স্তোতার উদ্দেশে তুমি পুরাতন, সত্যযুক্ত, প্রবৃদ্ধ, সকলের হৃদয়ঙ্গম রক্ষাকার্য সম্পাদন কর।

৬। যে ইন্দ্র আমাদের স্তুতি ও উকথ বর্ধিত করেন, তাহাকেই স্তব করিব। আমরা তাহার বহুতর বীৰ্য সম্ভোগ করিবার অভিলাষে তাহার ভজনা করিব।

৭। শীঘ্র আগমন কর, শুদ্ধ সাম ও শুদ্ধ উথকসমূহের দ্বারা বিশুদ্ধ ইন্দ্রকে স্তব করিব(১), দশাপবিত্রের দ্বারা শোধিত সোম বর্ধিত ইন্দ্রকে হৃষ্ট করুক।

৮। হে ইন্দ্র! তুমি শুদ্ধ, তুমি আগমন কর। তুমি শুদ্ধ, শুদ্ধ রক্ষা কাৰ্যের সহিত আগমন কর। তুমি শুদ্ধ, ধন স্থাপন কর। তুমি শুদ্ধ ও সোমার্হ, হষ্ট হও।

৯। হে ইন্দ্র! তুমি শুদ্ধ, আমাদিগকে ধন দাও। তুমি শুদ্ধ, হব্যদায়ীকে রত্ন দাও, তুমি শুদ্ধ, বৃত্রগণকে বধ করিয়া থাক, তুমি শুদ্ধ অন্নভোগ করিতে ইচ্ছা করিয়াথাক।

————

(১)পূর্বকালে ইন্দ্র বৃত্রবধ করিলে ব্রহ্মহত্যা তাহাতে প্রবেশ করে তাহাতে তিনি ঋষিগণের নিকট গমন করিয়া বলেন, আমি অপবিত্র হইয়াছি আমাকে পবিত্র করুন। ঋষিগণের সামগানদ্বারা তাহাকে পবিত্র করিয়াছিলেন। তখন সোম ও হবি ইন্দ্রের উদ্দেশ্যে প্রাদুর্ভূত হইল। এই ঋকে ঋষিগণ পরস্পর কথোপকথন করিতেছেন। সায়ণ। কিন্তু ঋকে বৃত্র সংহারে ব্রহ্মহত্যা পাপ উৎপন্ন হওয়ার কথা নাই এবং ঋষিদিগের দ্বারা সে পাপ খণ্ডন করিবার কথাও নাই। বিশুদ্ধ স্তোত্রদ্বারা বিশুদ্ধ ইন্দ্রকে অর্চনা করার কথা আছে মাত্র। বালকোচিত পৌরাণিক গল্প অবলম্বন করিয়া ঋগ্বেদের অর্থ করিতে গেলে অনেক স্থানে আমরা ঋগ্বেদের পবিত্র ভাব কলুষিত করি।