ঋগ্বেদ ০৮।০৩২

ঋগ্বেদ ০৮।০৩২
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ৮ম মণ্ডল সূক্ত ৩২
ইন্দ্র দেবতা। কণ্বগোত্রীয় মেধাতিথি ঋষি।

১। হে কণ্বগণ! তোমরা ইন্দ্রের গাথাম্বারা তাঁহার মত্ততা জন্মিলে ঋজীষ সোমের কাৰ্য্যসমূহ কীৰ্ত্তন কর।

২। উগ্র ইন্দ্র জল প্রেরণ করতঃ সৃবিন্দ, অনর্শনি, পিপ্রু দাস ও অহীশুবকে বধ করিয়াছেন।

৩। হে ইন্দ্র! বৃহৎ মেঘের আবরকস্থানবিদ্ধ কর, ঐ বীরকৰ্ম্ম সম্পাদন কর।

৪। মেঘের নিকট যেরূপ জল প্রার্থণা করে, সেইরূপ ইন্দ্র তোমাদিগের স্তুতি শ্রবণ করুন ও তোমাদিগকে রক্ষা করুন, এই তাহার নিকট প্রার্থনা করি। তিনি শত্রুগণের দমনকারী ও শোভন হনুবিশিষ্ট।

৫। হে শূর! তুমি হৃষ্ট হইয়া স্তোতাগণের জন্য শত্রুনগরীর ন্যায় গো ও অশ্ব নিবাসের দ্বার অপাবৃত কর।

৬। হে ইন্দ্র! যদি আমার অভিযুত সোমে অথবা স্তোত্রে অনুরক্ত হও, যদি অন্ন দান কর, তাঁহা হইলে দূরদেশ হইতে অন্নের সহিত নিকটে আগমন কর।

৭। হে স্তুতিযোগ্য ইন্দ্র! আমরা তোমার স্তোতা, হে সোমপায়ী! তুমি আমাদিগকে প্রীত কর।

৮। হে মঘবন! তুমি প্ৰীত হইয়া আমাদিগকে অক্ষয় অন্ন দান কর, তোমার ধন প্রভূত।

৯। তুমি আমাদিগকে গোযুক্ত, অশ্বযুক্ত ও হিরণ্যযুক্ত কর; আমরা যেন অন্নবিশিষ্ট হই।

১০। ইন্দ্র লোকগণকে রক্ষা করিবার জন্য বাহু প্রসৃত করেন এবং পালন করিবার জন্য সুকাৰ্য্য সম্পাদন করেন। তিনি মহৎ উকৃথবিশিষ্ট, আমরা তাঁহাকে আহ্বান করি।

১১। যিনি যুদ্ধে বহুকৰ্ম্মবিশিষ্ট হন, তৎপরে এই শত্রু বধ করেন এবং যিনি বৃত্রহন্তসা, স্তোতাগণের জন্য যাঁহার অনেক ধন আছে।

১২। সেই শত্রু আমাদিগকে শক্তিবিশিষ্ট করুন। ইন্দ্র দানশীল, তিনি সমস্ত রক্ষা দ্বারা আমাদের ছিদ্র সমূহ পরিপূর্ণ করেন।

১৩। যিনি ধনপালক, মহান, সুপার এবং সোমাভিষবকারীর সখা; সেই ইন্দ্রের উদ্দেশে স্তুতি কর।

১৪। তিনি আগমনশীল, মহান, সংগ্রামে অচল, অন্নজয়কারী এবং বলপূর্বক বহুধনের ঈশ্বর।

১৫। উহার সৎকার্যেরতকেহই নিয়ামক নাই, উনি দান করেন না, ইহা কেহই বলে না।

১৬। সোমপায়ী এবং সমাভিষবকারী স্তোতাগণের ঋণ থাকে না। সামান্য ধন্যবান ব্যক্তি সোম পান করিতে পারে না।

১৭। স্তুতিযোগ্য ইন্দ্রের উদ্দেশে গান কর, স্তুতিযোগ্য ইন্দ্রের উদ্দেশে স্তোত্র উচ্চারণ কর,স্তুতিযোগ্য ইন্দ্রের উদ্দেশে ব্রহ্ম (স্তো্ত্রসমূহ) সম্পাদন কর।

১৮। স্তুতিযোগ্য বলবান ইন্দ্র শত্রুগন কর্তৃক অপরিবৃত হইয়া শত ও সহস্র শত্রু বিদীর্ণ করিয়াছেন; তিনি যজ্ঞকারীর বর্ধক।

১৯। হে আহ্বানযোগ্য! তুমি মনুষ্যগণের হব্যের নিকট বিচরণ কর এবং অভিযুত সোম পান কর।

২০। হে ইন্দ্র! ধেনু বিনিময়ে ক্রীত এবং জলসংসৃষ্ট তোমার এই সোম পান কর।

২১। হে ইন্দ্র! ক্ৰোধপূর্বক অভিষবকারীকে ও অনুপযুক্ত স্থানে অভিষবকারীকে অতিক্রম করিয়া চলিয়া আইস। তুমি আমাদের দত্ত এই অভিযুত সোম পান কর।

২২। হে ইন্দ্র! তুমি স্তুতি অবগত হইয়াছ, তুমি দূরদেশ হইতে তিন পথে আগমন কর। তুমি পঞ্চজনকে (১) অতিক্রম করিয়া আগমন কর।

২৩। সূৰ্য্য যেরূপ রশ্মি দান করেন, তুমি সেইরূপ ধন দান কর, জল যেরূপ নিম্নদেশে মিলিত হয়, সেইরূপ আমার স্তুতি তোমার সহিত মিলিত হউক।

২৪। হে অধ্বর্য্যুগণ! সুন্দর হনুবিশিষ্ট বীর ইন্দ্রের উদ্দেশে শীঘ্র সোম সেক কর, সোমপানার্থে আহ্বান কর।

২৫। তিনি জলের জন্য মেঘ ভেদ করিয়াছেন, নিম্নাভিমুখে জল প্রেরণ করিয়াছেন, তিনি গোসমূহে দুগ্ধ প্রদান করিয়াছে।

২৬। দ্বীপ্তিপ্রতিম ইন্দ্র বৃত্র, ঔর্ণবাভ ও অহীশুবকে বধ করিয়াছেন, তিনি হিমজলে মেঘ বিদ্ধ করিয়াছেন।

২৭। তোমরা উগ্র, নিষ্ঠুর, অভিভবকারী এবং প্রহসনশীল ইন্দ্রের উদ্দেশ্যে দেবপ্রসাদ লব্ধ স্তোত্র গান কর।

২৮। সোমরূপ অন্নের মত্ততা হইলে পর, তিনি দেবগণকে সমস্ত কৰ্ম্ম বিজ্ঞাপিত করেন।

২৯। সেই একত্ৰে প্রমত্ত, হিরণ্যকেশবিশিষ্ট অশ্বদ্বয় এই যজ্ঞে হিতকর ন্নাভিমুখে ইন্দ্রকে আনয়ন করুক।

৩০। হে অনেকের স্তুত ইন্দ্র! প্রিয়মেধকর্তৃক স্তুত অশ্বদ্বয় সোম পানার্থে তোমাকে আমাদের অভিমুখে আনয়ন করুক।

————

(১) পঞ্চজনের উল্লেখ। “Five Nations.” Max Muller.