মধুমতী থেকে ভাগীরথী – ২১

।। একুশ ।।

বিন্দুবাসিনী একটু থেমে বলতে লাগল, ভগবান আছে, নচেৎ জগৎ-সংসারই যে মিথ্যে হয়ে যেত রে!

তাহলে তুমি বলতে চাও মুনিঋষিরা মহাযোগী ও সাধকেরা সবাই ভগবানের দেখা পান? গল্প কথা নয় বা ওঁদের মনের কল্পনা নয়?

দেখতে পান বৈকি। যে যেমন ভাবে আরাধনা করে, ভগবানকে সে সেই ভাবেই দেখতে পায়। কালী বল, কৃষ্ণ বল, শিব বল সবাই তো এক। যে যেমন চায় তিনি তার কাছে সেই ভাবেই আসেন।

তাহলে কি—

কি রে?

সত্যিসত্যিই সেরাত্রে মেজ পিসীমা মহাদেবের সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন?

বললাম তো একটু আগে, পেয়েছিলেন—তাঁর ডাক শুনে তাঁর ঠাকুর আর দূরে থাকতে পারেননি, বোধ হয় সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন এবং তাঁর জ্যোতি তার মধ্যে প্রবেশ করে তাঁর মনুষ্যজন্ম সার্থক করে দিয়েছিলেন সেই মুহূর্তে, যার পরে আর তার জ্ঞান ফিরে আসলই না

আনন্দচন্দ্র যেন কেমন হয়ে যায়। কি এক গভীর অনুভূতি যেন তার সারা মনকে আচ্ছন্ন করে। বাইরে নিষুতি রাত ঝিমঝিম করছে। মধ্যে মধ্যে বাতাসে খোলা জানালাপথে ভেসে আসছে ফোটা শিউলির গন্ধ। অজস্র ফুল ধরে আছে মণ্ডপের ধারের শিউলি গাছটায়।

ভোরের বেলা গাছের তলায় ঝরা শিউলি, মনে হয় যেন একটা সাদা চাদর কে বিছিয়ে দিয়েছে।

যা মণি শুতে যা, রাত অনেক হল—বিন্দুবাসিনী বললেন।

যাই।

আনন্দচন্দ্র উঠে দাঁড়াল।

পিসীমণি?

কি রে?

দিদিরা কি এবার পুজোর সময় আসবে না?

না রে। চঞ্চলা লিখেছে তার ছোট ছেলেটার অসুখ, আসতে পারবে না। বিমলারও আবার সন্তান হবে, ভরা পোয়াতি—এ অবস্থায় আসে কেমন করে। আর নয়নার শ্বশুর এবারে তাঁর নিজের ঘরেই মা-দুর্গাকে আনছেন —

ছোট বোন সুন্দরী এসে ঘরে ঢুকল, দাদা!

কি রে? বলে আনন্দচন্দ্র সুন্দরীর দিকে তাকাল। এক বছরও নয়, বোধ হয় ছয়- সাত মাস পরে আনন্দচন্দ্র তার এই ছোট বোনটিকে দেখছে।

হঠাৎ যেন বেড়ে উঠেছে সুন্দরী দেহে।

বয়স বোধ হয় চৌদ্দয় পড়বে সামনের বৈশাখ মাসে, কিন্তু বাড়ন্ত গড়নের জন্য মনে হয় একেবারে পনেরো-ষোল বছরের কিশোরী।

দেহের বর্ণ একটু কালোর দিকে হলেও সুন্দরী দেখতে সত্যিই সুন্দর—চমৎকার মুখশ্রী, মাথায় একরাশ কালো চুল। সুন্দরীর বিয়ের বয়স হয়ে গিয়েছে।

সুন্দরীকে দেখে হঠাৎ যেন কলকাতার সুহাসিনীকে মনে পড়ে যায় আনন্দচন্দ্রের। সুহাসিনী হয়ত সুন্দরীর চাইতে কিছু বড়ই হবে বয়সে।

কিরে তুই এখনো ঘুমোসনি?

না, তোমার বৌকে পাহারা দিচ্ছিলাম। বলে হাসল সুন্দরী।

পাহারা দিচ্ছিলি! সে কি রে?

বৌয়ের যা ভূতের ভয়! বলতে বলতে আবার হাসল সুন্দরী।

তোর ভূতের ভয় নেই?

না। যাও আর দেরি করো না। বৌ জেগে ঢুলছে। আমি শুতে চললাম।

.

উত্তরের পোতার ছোট ঘরটাতেই আনন্দচন্দ্রের শয়নের ব্যবস্থা হয়েছিল। উত্তরের পোতায় ওই ঘরটার প্রায় বাঁদিকে পুবের পোতায় রান্নাঘর। মধ্যিখানে একটু সরু পথ— ওদের বাড়ি থেকে বক্সী-বাড়িতে যাতায়াতের পথ।

উত্তরের পোতার ঘরটায় সারা বছরের জ্বালানী কাঠ স্তূপীকৃত করে রাখা একদিকে এবং তার পাশেই বড় বড় ঢাউস জালায় সারা বছরকার চাল। সামান্য একটু জায়গা খালি পড়ে আছে—সেখানেই মাটির মেঝেতে শয্যা বিছিয়ে আনন্দচন্দ্রের শয়নের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মেঝেটা পাকা নয়, উঁচু ভিত, তবে মাটির। উপরে টিনের চালাও নয়, খড়ের চালা—চারপাশে দরমার বেড়া।

দরজা ঠেলে আনন্দচন্দ্র ঘরের মধ্যে ঢুকল।

শিয়রের ধারে মাটির পিলসুজের উপরে একটি পিতলের প্রদীপ জ্বলছিল। রেড়ির তেলের প্রদীপ। প্রদীপের সামান্য আলোয় ঘরের মধ্যে একটা আলোছায়ার লুকোচুরি যেন চলেছে।

অন্নদাসুন্দরী একমাথা ঘোমটা টেনে শয্যার উপরে বসে বসে ঢুলছিল, স্বামী যে ঘরে প্রবেশ করেছে সে জানতেও পারল না।

আনন্দচন্দ্র গুণ্ঠনাবৃত স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসল, তারপর পা টিপে টিপে এগিয়ে গিয়ে মাথাটা একটু ঝাঁকিয়ে দিতেই অন্নদাসুন্দরী চমকে জেগে ওঠে। বলে, ও মাগো, কে?

আনন্দচন্দ্র গম্ভীর হয়ে জবাব দেয়, ভূত!

স্বামীর গলার স্বর চিনতে পেরে মাথার গুণ্ঠনটা ডান হাত দিয়ে সামান্য একটু উপরের দিকে টেনে তুলে দেয়।

আনন্দচন্দ্র শয্যায় একেবারে অন্নদাসুন্দরীর পাশে বসে তার মাথার উপর থেকে ঘোমটাটা টেনে ফেলে দেয়। বলে, ঘরে আমি ছাড়া আর কেউ নেই রে!

অন্নদাসুন্দরী গলায় আঁচল দিয়ে আনন্দচন্দ্রের পদপ্রান্তে নত হবার চেষ্টা করতেই দু’হাত বাড়িয়ে আনন্দচন্দ্র অন্নদাসুন্দরীকে বুকের উপর টেনে নিল।

প্রণাম করতে দিন-

আবার দিন! তোকে না বলে দিয়েছিলাম ‘আপনি’ করে কথা বলবি না আমার সঙ্গে?

আমার লজ্জা করে-

ওরে আমার লজ্জাবতী রে! ‘তুমি’ করে বলবি, বুঝেছিস?

হ্যাঁ-

কি বুঝেছিস?

যা বললেন—

আবার আপনি? এবার আপনি বললে মার খাবি বৌ।

কিন্তু কেউ যদি জেনে ফেলে?

কি জেনে ফেলবে? তুই আমাকে ‘আপনি’ না বলে ‘তুমি’ বলছিস! তা কেমন করে জানবে রে! দশজনের সামনে তো তুই আর আমার সঙ্গে কথা বলবি না।

তা হোক, ঠাকুরঝি ঠিক জেনে ফেলবে, আর তখুনি ঠাকরুনদের সব বলে দেবে।

না, বলবে না। কেন, তোর সঙ্গে ভাব হয়নি সুন্দরীর?

হুঁ।

তবে?

ঠাককুরঝি খুব ভাল।

আর ঠাকরুনরা?

আমার তাদের বড্ড ভয় করে।

কেন রে?

জান মেজ ঠাকরুন যেদিন মারা গেলেন, সেদিন আমার বড্ড ভয় করতিছিল।

ভয় করছিল! কেন?

কাউকে তুমি কথাটা বলবা না তো—ঠাকুরঝিকেও না!

কি কথা?

তুমি হয়ত কথাটা শুনলি হাসবা—

হাসব কেন? বল্ তুই—

জান মেজ ঠাকরুন যেদিন মারা যান, আমি তো কিছুই জানতি পারি নাই— ঠাকুরঝির সঙ্গে পশ্চিমের পোতার ঘরে শুয়েছিলাম—ঘুমায়ে ছিলাম, হঠাৎ ঘুমটা ভেঙে গেল—তারপর—

কি তারপর?

দেহি—দেখো—আমার গায়ে কাঁটা দিতিছে—প্রত্যক্ষ দেহি, মেজ ঠাকরুন আমার শিয়রের ধারে খাড়াইয়া আছেন—আমারে ডাকতিছেন হাতের ইশারায়—বাঁ হাতে তাঁর একটা কমণ্ডলু।

তারপর।

আমার তো বুকের মধ্যি তখন ঠাণ্ডা হিম—

ক্যান?

ওইভাবে তো অত রাত্রে তিনি আসেন না. ওই ঘরে। তা আমি ফ্যালফ্যাল করে তাকায়ে আছি, নড়াচাড়ারও খ্যামতা নেই তহন আমার—

তারপর?

হঠাৎ কানে অ্যালো কারা যেন কাঁদতিছে। কেডা কাঁদে কে জানে—সেই সময় মেজ ঠাকরুন বললেন, আমি যাই রে বৌ! তারপরই আর তাঁরে দেখতি পালাম না।

সত্যি?

হ, তিন সত্যি—

মেজ পিসী হয়ত তরে কিছু বলতি চাইছিলেন।

তা জানিনে বাপু, সেই থেকেই আমার বড্ড ভয়-ভয় করে রাত্তিরে।

ভূতের ভয়?

না না, তা নয়—

তবে কি?

অন্নদাসুন্দরী আর কথা বলতে পারে না, দু’হাতে স্বামীকে জড়িয়ে ধরে তার বুকের মধ্যে মাথাটা গুঁজে দেয়।

বৌ! কি, কও?

আমার কি মনে হয় জানিস?

কি?

মেজ পিসী হয়ত তোকে কিছু বলতে আসছিলেন—

কি বলতে?

জানি না, তবে মেজ পিসীর শুনেছি বেশ কিছু টাকাপয়সা ছিল। খুব বড় লোকের বৌ ছিলেন তো। অনেক টাকা গহনাগাঁটি সঙ্গে করে এনেছিলেন বিধবা হবার পর।

বাইরে সেই সময় একটা প্যাঁচা ডেকে উঠল।

রান্নাঘরের পিছনে বিরাট একটা গাব গাছ। সেখানে একটা প্যাঁচা রোজ রাত্রে এসে বসে—মধ্যে মধ্যে ডেকে ওঠে।

কথাটা তুমি কিন্তু কয়ো না কারেও, বুঝিছো?

ক্যান?

না, লক্ষ্মীটি কয়ো নাকবা না তো?

না, কবো না।

.

কিন্তু কথাটা আনন্দচন্দ্র ভুলতে পারে না।

কেন যেন অন্নদাসুন্দরীর কথাটা তার মনের মধ্যে ঘোরাফেরা করতে থাকে। ভূত- প্রেতে আনন্দচন্দ্রের কোনদিনই বিশ্বাস ছিল না। আধুনিক শিক্ষার আলোয় তার দৃষ্টি অনেক কু-সংস্কার, অনেক চিরাচরিত বদ্ধমূল ধারণার যুগবন্ধন থেকে মুক্ত হয়েছিল, বিশেষত সংস্কৃতির পীঠস্থান কলকাতা শহরে বাস করে ও কয়েক বৎসর ধরে ইংরাজী শিক্ষার সংস্পর্শে এসে।

তাছাড়া ডাক্তারি পড়বার জন্য নিজেকে মনে মনে প্রস্তুত করছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও কেন না-জানি স্ত্রী অন্নদাসুন্দরীর কথাগুলো একেবারে মন থেকে যেমন মুছে ফেলতেও পারছিল না বা সবটাই মিথ্যা ও স্বপ্ন বলে উড়িয়ে দিতে পারছিল না, তেমনি পিসীমণির কাছ থেকেও শোনা মেজ পিসীর মৃত্যু-মুহূর্তের কথাগুলো মন থেকে একেবারে মুছে ফেলতেও পারছিল না। ভূত যেমন সে বিশ্বাস করত না তেমনি ভগবানের অস্তিত্বের ব্যাপারেও সে বিশ্বাসী ছিল না। তবু পিসীমণিকে সে আঘাত দিতে পারেনি যেমন তাঁর বিশ্বাসের যুক্তি তুলে, তেমনি স্ত্রী অন্নদাসুন্দরীকেও হেসে উড়িয়ে দিতে পারেনি।

মনের দ্বন্দ্বটা তার সেখানেই।

.

সেইদিন দ্বিপ্রহরে আহারাদির পর সবাই যখন দিবানিদ্রায় মগ্ন, আনন্দচন্দ্র এক সময় গুটিগুটি পা ফেলে পশ্চিমের পোতার সেই ঘরটির দিকে এগিয়ে গেল। এবারে কলকাতায় যাত্রা করবার পূর্বে যেমন এসে দেখেছিল মেজ ঠাকরুনের ঘরের দরজাটা ভেজানো, তেমনিই আজও তাঁর ঘরের দরজায় শিকল তোলা ছিল বাইরে থেকে।

দিন কুড়ি হবে মেজ ঠাকরুনের মৃত্যুর পর থেকেই ওই ঘরের দরজায় শিকল তোলা ছিল। পরে শুনেছিল পিসীমণির মুখ থেকেই আনন্দচন্দ্র। হাত বাড়িয়ে দরজার শিকলটা খুলে ঘরের মধ্যে পা ফেলল আনন্দচন্দ্র এবং হঠাৎ যেন কেন সারা গা-টা তার ছমছম করে ওঠে।

অন্ধকার ঘরটা—সব জানালা-দরজা বন্ধ। এবং সেই বদ্ধ অন্ধকার ঘরের মধ্যে যেন একটা মৃদু ধূপের সৌরভ তখনো ছড়িয়ে আছে, তার সঙ্গে মিশে আছে যুঁই ও চামেলীর সুবাস।

সে যেন শুনতে পেল, মৃদু অতি মৃদুকণ্ঠে কে শিবস্তোত্র উচ্চারণ করে চলেছে, ক্ষীণ হলেও স্পষ্ট।

হে নীলকণ্ঠ বৃষভধ্বজ পঞ্চবক্ত্রো
লোকেশ শেষবলয় প্রমথেশ সর্ব
হে ধূর্জটে পশুপতে, গিরিজাপতে মাং
সংসারদুঃখদহনাৎ জগদীশ রক্ষ।

মেজ ঠাকরুন—তার সেই পিসী যেন অন্ধকারে ধ্যানমগ্না হয়ে তাঁর আরাধ্য দেবতা মহাদেবের স্তোত্র আওড়ে চলেছেন। কয়েকটা মুহূর্তের জন্য আনন্দচন্দ্র যেন কেমন মুহ্যমানের মত দাঁড়িয়ে থাকে এবং এক সময় যখন তার সংবিৎ ফিরে আসে, কানে আসে স্তব্ধ মধ্যাহ্নে ক্লান্ত ঘুঘুর ডাক।

অদূরে বাঁশবনের মধ্যে ঘুঘু ডাকছে।

এগিয়ে গিয়ে ঘরের একটা জানালা খুলে দিতেই মধ্যাহ্নের সূর্যালোক সেই স্বল্প পরিসর জানালাপথে খানিকটা সেই ছোট্ট ঘরটার মধ্যে এসে পড়ল।

চারিপাশে তাকাল আনন্দচন্দ্র। যেখানকার যে বস্তুটি ঠিক তেমনিই আছে—সেই ছোট্ট একটি শয্যা, সামান্য মাদুরের ওপরে জলচৌকির উপর কিছু বাসনপত্র। একপাশে দড়ির সিকেয় ঘরের বাতা থেকে ঝোলানো কয়েকটা পিতলের ঘটি। কিন্তু মেজ পিসীর সেই কালো ট্রাঙ্কটি সে দেখতে পেল না।

হয়ত মেজ পিসীর মৃত্যুর পর ট্রাঙ্কটি অন্য ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুবমুখী হয়ে যেখানে আসনের উপর বসে মেজ পিসী পূজা করতেন, তার সামনে তখনো পূজার সামগ্রী পড়ে আছে—কিছু ফুল, বেলপাতা শুকিয়ে আছে।

একটা মাটির ছোট বেদীমত ছিল ওই ঘরে, তার উপরেই নিজের হাতে প্রত্যহ মাটির শিবলিঙ্গ গড়িয়ে পূজা করতেন মেজ পিসী। কতদিন লক্ষ্য করেছে আনন্দচন্দ্র এই ঘরের দরজায় এসে দাঁড়িয়ে।

রেদীর উপরে তখনো একটি শিবলিঙ্গ শুকনো ফুল, বেলপাতার মধ্যে মাথা জাগিয়ে রয়েছে। পায়ে পায়ে এগিয়ে গেল সেই দিকে।

ওই মাটির বেদীর সামনেই দিবারাত্রিই কয়েক ঘণ্টা বাদে প্রায় সর্বক্ষণই বসে থাকতেন মেজ পিসী। মনে হল যেন এখনো মেজ পিসী সেখানই বসে আছেন।

হঠাৎ মৃদু একটা চাপা কণ্ঠস্বর যেন তার কানে এল, কে, মণি!

গা ছমছম করে ওঠে আনন্দচন্দ্রের। ভীত শঙ্কিত দৃষ্টিতে এদিক ওদিক তাকায় আনন্দচন্দ্ৰ।

তাড়াতাড়ি ঘর থেকে বের হয়ে যেতে গিয়ে তার পায়ে যেন কি ঠেকল—তার পরই গং গং একটা শব্দ। চেয়ে দেখল গঙ্গাজলের শিশিটা—যে শিশিতে কলকাতা থেকে আনীত তার গঙ্গাজল থাকত।

শিশিটা কাত হয়ে পড়েছে এবং তার মধ্যে যে অবশিষ্ট জলটুকু ছিল সঞ্চিত, সেটা মাটির মেঝেতে ছড়িয়ে পড়েছে।

নীচু হয়ে গঙ্গাজলের শিশিটা তুলতে গিয়ে হঠাৎ নজরে পড়ল তার, ঘরের কোণে রক্ষিত একটা তামার কমণ্ডলু।

তখনো কমণ্ডলুটা ঝকঝক করছে।