॥ ৭ ॥
গলির পথটুকু তাড়াতাড়ি পেবিয়ে এসে গাড়িতে উঠে পড়লুম আম। ভাদুড়িমশাই সেলফের চাবি ঘুরিয়ে গাড়িতে স্টার্ট দিলেন। পরমেশ চৌধুরির বাড়িতে এসে পৌঁছনো পর্যন্ত পথে একটিও কথা হল না। বাড়িতে ঢুকে ভাদুড়িমশাই বললেন, “চিঠিখানা পড়তে হবে, এখন খানিকক্ষণ আমি একটু একলা থাকতে চাই। .. পরমেশ, তুমি এদের সঙ্গে বসে গল্প করো, আমি পাশের ঘরে আছি।”
ড্রয়িং রুমের লাগোয়া পুব দিকের ঘরটা ভাদুড়িমশাই আর কৌশিকের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি সেখানে ঢুকে গেলেন
সদানন্দবাবু খুব বেশিক্ষণ কথা না বলে থাকতে পারেন না। এতক্ষণ তিনি একটাও কথা বলেননি। এইবারে কৌশিকের দিকে তাকিয়ে বললেন, “মানুষ বুড়ো হলে কী হয় বলে দিকি?”
কৌশিক বলল, “তা আমি কী করে বলব? আমি কি বুড়ো হয়েছি? ও-সব আপনারাই ভাল বুঝবেন।”
পরমেশ ক্লিষ্ট হেসে বললেন, “বুড়ো হলে বাতগ্রস্ত হয়।”
“আরে ধুর মশাই, সদানন্দবাবু বললেন, “আপনার কতা হচ্ছে না, আপনি, তো ছেলেমানুষ। কত বয়েস হল আপনার?”
“সিক্সটিটু।”
“ওটা কি একটা বয়েস হল নাকি? এই যে আমি সেভেন্টি পেরিয়ে এইচি, তাও নিজেকে বুড়ো ভাবি না। আমার ওয়াইফ অবিশ্যি গেঁটেবাতে একটু কাবু হয়ে পড়েছেন, কিন্তু আমি?” সদানন্দবাবু চেয়ার ছেড়ে তড়াক করে দাঁড়িয়ে উঠে বললেন, “রোজ তিন মাইল মর্নিং ওয়াক করি।”
আমি বললুম, “ও নিয়ে এত জাঁক করবেন না। হরসূন্দরবাবুর বয়েস তো শুনলেন, বিরানব্বই, তা মর্নিং ওয়াক তো তিনিও নাকি করেন। বাতগ্রস্ত হতে পারতেন?”
কৌশিক বলল, “সত্যি, এত বয়েস ভদ্রলোকের, অথচ এখনও দিবি। সটান। ভাবা যায়? মেমারিও তো মনে হল ঠিকই আছে।”
“শুধু মেমারি কেন, পরমেশ বললেন, “চোখ, কান, নাক, সব ঠিক আছে। তা ছাড়া, দেখলেই তো, একেবারে ফোটোগ্রাফিক মেমারি। খাওয়া-দাওয়াও একদম স্বাভাবিক। বুড়ো হলে শুনেছি হজমশক্তি কমে যায়। ওঁর খাওয়া দেখে তা কিন্তু মনে হয় না। প্রতিটি নেমা অ্যাটেন্ড করেন, খানও পংক্তিভোজনে বসে…। না, এত যে বয়েস, হাঁটা-চলা খাওয়া-দাওয়া, কোনও কিছু দেখেই তা বুঝবার উপায় নেই।”
সদানন্দবাবু বললেন, “দাত দেকলুম একটাও নেই। বাঁদিয়ে নেন না কেন?”
“দরকার হয় না।” পরমেশ বললেন, “যে-লোক স্রেফ মাড়ি দিয়ে চিবিয়ে সজনে ডাটা ছিবড়ে করে ফেলতে পাবে, তার আবার নকল-দাঁতের দরকার কী…. তবে হ্যাঁ, বার্ধক্যের একটা লক্ষণ অবশ্য বছর খানেক হল দেখা দিয়েছে। পকেটে সব সময় একটা কঁচি নিয়ে ঘোরেন। রাস্তায় বেরিয়ে একবার দেখতে পেলেই হল যে, কোনও বাচ্চা ছেলেব চুল তার কাধ অব্দি নেমে এসেছে, বাস, কাঁক করে তাকে ধরে অমনি পকেট থেকে কাচি বার করে ঘাচ-গ্র্যাচ করে তার চুল কাটতে বসে যাবেন। তার ফলে কী হয়, সে তো আপনারা একটু আগেই আজ দেখলেন। মানতেব চুল কেটে ফেলেছে, বাচ্চাটার মা কি ওঁকে সহজে ছেড়ে দেবে?”
কৌশিক বলল, “বাতিকগ্রস্ত আর কাকে বলে!”
সদানন্দবাবু বললেন, “আমার পিসশ্বশুরের সঙ্গে হরসূন্দরবাবুব খুব মিল আচে দেকচি। বুড়ো বয়সে তিনিও তার ফতুয়ার পকেটে কঁচি নিয়ে ঘুরতেন।”
“বলেন কী, কৌশিক আঁতকে উঠে বলল, “তিনিও বাচ্চা-ছেলেদের ধরে চুল কেটে দিতেন?”
‘না, চুল নয়… মানে চুলই, তবে গোটা মাতার চুল নয়, সদানন্দবাবু বললেন, “শুদু টিকি। একবার তো সরস্বতী পুজোর দিনে, গুটিগুটি পেছন দিক থেকে গিয়ে, ঘ্যাঁচ করে এক পুরুতঠাকুরের টিকি কেটে দিয়েছিলেন।”
“অ্যাঁ, বলেন কী?”
“সে মানে কেলেঙ্কারির একশেষ! পুরুতঠাকুর তো হাপুস নয়নে কাঁদতে লাগলেন। কাঁদেন আর বলেন যে, তার মিনস অফ লাইভলিহুডই চলে গেল। যে পুরুতের টিকিই নেই, কে তাকে পুজো করতে ডাকবে!…তো শেষ পর্যন্ত কী হল জানেন?”
পরমেশ বললেন, “কী হল?”
“পিসতুতো শালাকে নগদ ফিফটি রুপিজ দিয়ে ব্যাপারটা মেটাতে হল।” সদানন্দবাবু বললেন, “আজ যা কাণ্ড দেকলুম, তাতে মনে হচ্চে হরসুন্দরবাবুকেও তার গাঁট থেকে কিছু খসাতে হবে। মানতের চুল কেটেচেন, তার দণ্ড দিতে হবে না?”
আমি বললুম, “পাড়ার ছেলেরা ওঁর পিছনে লাগে না?”
“লাগে বই কী, পরমেশ বললেন, “আড়ালে-আবডালে বলে, হরসুন্দর না নরসুন্দর!”
সদানন্দবাবু বললেন, “তাও তো আমার বাবার এক মামাতো ভাইয়ের কতা এখনও বলিনি। তিনি ছিলেন…”
তিনি যে কী ছিলেন, তা আর শোনা হল না, কেন না ঠিক সেই মুহূর্তেই পাশের ঘর থেকে ভাদুড়িমশাই বেরিয়ে এসে, হরসুন্দরবাবুর কাছ থেকে সংগৃহীত চিঠিখানা পরমেশবাবুর দিকে এগিয়ে ধরে বললেন, “তুমি তো ফরাসি জানো, চিঠিখানা পড়ে দ্যাখো তো কী মনে হয়।”
চিঠির ভাঁজ খুলে একবার মাত্র চোখ বুলিয়েই সেটা আবার ভাদুড়িমশাইকে ফিরিয়ে দিলেন পরমেশ। বললেন, “ওরে বাবা, এ তো দেখছি কাগের ঠ্যাং আর বগের ঠ্যাং! এ হাতের লেখা আমি পড়তে পারব না। তুমি পেরেছ?”
“পেরেছি বললে বাড়িয়ে বলা হবে।” ভাদুড়িমশাই হেসে বললেন, “শুধু যে হাতের লেখাটাই কদর্য, তা তো নয়, বানান জানে না, ব্যাকরণ অশুদ, চিঠিখানা যার লেখা, সে যে ঘোর অশিক্ষিত লোক, তাতে সন্দেহ নেই। টেনেবুনে একটা অর্থ অবশ্য করেছি।”
এক মুহূর্ত চুপ করে রইলেন ভাদুড়িমশাই। তারপর বললে “অবশ্য পরিষ্কার কোনও অর্থ যে এ-ক্ষেত্রে থাকবেই, এমন আশা করাটাই হয়তো বোকামি হয়ে যাচ্ছে।”
পরমেশ বললেন, “কেন?”
ভাদুড়িমশাই হেসে বললেন, “তোমার প্রশ্ন থেকেই বুঝতে পারছি যে, চিঠির উপরকার ঠিকানাটাও তুমি দ্যাখোনি। নাও, সেটা অন্তত পড়ে দ্যাখো।”
হাত বাড়িয়ে ভাদুড়িমশাইয়ের কাছ থেকে চিঠিখানা আবার নিলেন পরমেশ। তারপর ঠিকানায় চোখ বুলিয়েই কৌতুকের সঙ্গে বিস্ময় মেশানো একটা ভঙ্গি করে বললেন,
“ওরেব্বাবা, এ তো পাগলাগারদ থেকে লেখা!”
কৌশিক বলল, “কী হচ্ছে মামাবাবু, আমরা ফরাসি জানি না বলে কি তোমরা দুজনে শুধু নিজেদের মধ্যেই হাসাহাসি করবে নাকি? আমাদেবও একটু বুঝিয়ে বলল।”
“বলছি।” ভাদুড়িমশাই এতক্ষণ দাঁড়িয়ে-পঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। এবারে একটা চেয়ার টেনে নিয়ে বসলেন। পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট আর দেশলাই বার করে একটা সিগারেট ধরালেন। তারপর মুখ থেকে গলগল করে একরাশ ধোঁয়া বার করে বললেন, “এইক্স-এর নাম শুনেছিস?”
“না।” কৌশিক বলল, “ওটা কী বস্তু? খায়, না গায়ে মাখে?”
রসিকতাটাকে আমল না-দিয়ে ভাদুড়িমশাই বললেন, “দক্ষিণ ফ্রান্সের বন্দর মার্শাইয়ের নাম তো শুনেছিস, এই শহরটা তার খুব কাছেই। এই চিঠিটা সেখানকার….”
কথাটা লুফে নিয়ে কৌশিক বলল, “সেখানকার এক পাগলাগারদ থেকে লেখা হয়েছে, এই তো?”
“পাগলাগারদ নয়,” ভাদুড়িমশাই হেসে বললেন, “পরমেশ ওটা মজা করে বলছিল। আসলে লেখা হয়েছে এইক্স-এর একটা প্রাইভেট নার্সিং হোম থেকে। সেখানে অবশ্য সব রকমের রোগীদের নেওয়া হয় না, ভর্তি করা হয় শুধু মেন্টাল পেশেন্টদের।”
“তো সেই নার্সিংহোম থেকে একজন পেশেন্ট এই চিঠি লিখেছে?”
“হ্যাঁ।”
“কী লিখেছে?” ভাদুড়িমশাই এই প্রশ্নের উত্তরে যা বললেন, সংক্ষেপে সেটা এইরকম :
চিঠির তারিখ সম্পর্কে হরসুন্দর ভুল বলেননি। এ-চিঠি ১৯৭০ সালেই লেখা বটে। যিনি লিখেছেন, তাঁর নাম লুই আঁতোয়ান। তিনি জানাচ্ছেন যে, বাজারে তার দেনার পরিমাণ আড়াই লাখ ফ্রা। ছ’মাসের মধ্যে যদি না এই দেনা মেটাতে পারেন, তা হলে পাওনাদারেরা তাকে জেলে পাঠাবে। মাদাম শান্তিলতা সেন যদি আজ বেঁচে থাকতেন, তা হলে তার পুরনো বন্ধু পিয়ের আঁতোয়ানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার প্রতীক হিসেবে পিয়েরের নাতির এই দুর্দিনে তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন নিশ্চয়। কিন্তু মাদাম অথবা তার পুত্র কীর্তিভূষণ তো বেঁচে নেই, তাই বাধ্য হয়ে তাকে মাদামের নাতি চন্দ্রভূষণকে এই চিঠি লিখতে হচ্ছে। চন্দ্রভূষণ যদি আড়াই লাখ ফ্রাঁ অথবা তার সমমূল্যের ডলার, পাউন্ড কিংবা অন্য কোনও ইয়োরোপীয় মুদ্রার ব্যবস্থা করে দিতে পারেন, পত্রলেখক তা হলে রক্ষা পান। একই সঙ্গে, খুবই বিনীতভাবে হলেও, লুই আঁতোয়ান চন্দ্রভূষণকে এ-কথা জানিয়ে দিতে ভোলেননি যে, পিয়ের আঁতোয়ান মাদাম শান্তিলতাকে একটি উপহার দিয়েছিলেন, যে-উপহারের আর্থিক মূল্য আড়াই লাখ ফ্রার চেয়ে বেশি ছাড়া কম হবে না।
কথা শেষ করে পরমেশের দিকে তাকিয়ে ভাদুড়িমশাই বললেন, “কোন উপহারের কথা বলা হচ্ছে বুঝতে পারছ?”
পরমেশ প্রায় খাবি খাওয়ার ভঙ্গিতে বললেন, “এই হিরেজোড়া?” ভাদুড়িমশাই মৃদু-মৃদু হাসছিলেন। বললেন, “তা-ই তো মনে হয়।”
“ওরে বাবা,” সদানন্দবাবু বললেন, “হরসূন্দর মুখুটি তো তা হলে মিচে কত কননি। কিন্তু একটা কতা তো মশাই আমি ঠিক বুজে উঠতে পারছি না।”
“কোন কথাটা?”
“লোকটা..মানে ওই পিয়ের তত ছিল গ্রেনাডিয়ার। হরসুন্দরবাবু অন্তত সেই কতাই বলেছেন। তার মানে তো সেরেফ একজন সোলজার। তা সোলজার হয়ে সে অত দামি হিরে পেল কোতায়? আর হ্যাঁ, পেলই বা কীভাবে?”
“সেটাও কিন্তু হরসুন্দরবাবুই বলেছেন।” ভাদুড়িমশাই বললেন, “মানে সরাসরি বলা তো আর তার পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি কি গণতকার যে, অদ্দিন আগে কে কীভাবে একজোড়া হিরে জোগাড় করেছিল, খড়ি পেতে আঁক কষে সেটা বলে দেবেন। না মশাই, সেইভাবে তিনি কিছু বলেননি। তবে হ্যাঁ, একটা আন্দাজ দিয়েছিলেন ঠিকই।…তার শেষ কথাটা মনে নেই?”
“কী যেন একটা ডায়মন্ডের কথা বলেছিলেন।” কৌশিক বলল, “এও বলেছিলেন যে, সেটা ছিল চোরাই হিরে।”
“ঠিকই বলেছিলেন।”ভাদুড়িমশাই বললেন, “যে অলভ ডায়মন্ডের জগৎজোড়া খ্যাতি, সেটা তো এখন ক্রেমলিনে রয়েছে, কিন্তু এইটিনথ সেঞ্চুরিতে সেটা কোথায় ছিল জানিস?”
“কোথায় ছিল?”
“সাউথ ইন্ডিয়ার এক মন্দিরে। আদতে সেটাও ছিল বিগ্রহের চোখ। সেভেন্টিন ফিফটিতে সেটা চুরি হয়ে যায়। তাজ্জব ব্যাপার কী জানিস, সেটাও একজন ফ্রেঞ্চ সোলজারই চুরি করেছিল। এ-হাত সে-হাত ঘুরে সেটা কাউন্ট গ্রিগরি অর্লভের হাতে গিয়ে পৌঁছয়। বাস, সেই থেকে তার নাম হয়ে গেল অর্লভ ডায়মন্ড।
সদানন্দবাবু হাঁ করে সব শুনছিলেন। ভাদুড়িমশাই চুপ করতেই হা বন্ধ করে তিনি আমার দিকে তাকালেন। আমি বললুম, “কী ভাবছেন?”
“ভাবছি যে, এই হিরেজোড়াও চোরাই মাল নয় তো?”
“হতেই পারে।” ভাদুড়িমাশাই বললেন, “এ দুটোও হয়তো কোথাও কোনও বিগ্রহেরই চোখ ছিল। পিয়ের আঁতোয়ান সেখান থেকে হাপিস করে চন্দননগরে চলে আসে।”
“তা তো বুজলুম।” সদানন্দবাবু বললেন, “কিন্তু তত দামি জিনিস সে শান্তিলতাকে উপহার দিতে গেল কেন? বাপ রে, কতায় বলে সাত রাজার ধন এক মাণিক্য। আর এ তো একজোড়া। চোদ্দো রাজার ধন বললেই হয়। দুম করে সেটা সে কিনা একজন ইন্ডিয়ান লেডিকে দিয়ে ক্লি। ভাবা যায়? কী ব্যাপার বলুন তো?”
ভাদুড়িমশাই হেসে বললেন, “থাক, থাক্, ও নিয়ে আব গবেষণা করে লাভ নেই। দিয়েছে, বেশ করেছে। আর তা ছাড়া, এমন একজনকেই তো দিয়েছে, বুড়ো বয়সেও যার সেবা যত্নের কথা সে ভুলতে পারেনি। সত্যিই পারেনি। নয়তো নাতির কাছে পিয়ের কেন বারেবারে সেই সেবাযত্নের গল্প করবে? না না, মিথ্যে বলছি না। লুই তার চিঠিতেই তা জানিয়েছে।”
চিঠিখানা খুলে ধরলেন ভাদুড়িমশাই। তা থেকে লাইন দুয়েক পড়ে শোনালেন। তারপর বললেন, “যচ্চিলে, আপনারা তো আবার ফরাসি বুঝবেন না।…. ওহে পরমেশ, তুমি এই জায়গাটা পড়ে এঁদের একটু বাংলায় বুঝিয়ে বলল তো।’
পরমেশ হেসে বললেন, “আমি ফরাসি জানি ঠিকই, কিন্তু ওই হাতের লেখার পাঠোদ্ধার করতে পারব না। তুমিই বুঝিয়ে বলে, চারুদা।”
ভাদুড়িমশাই বললেন, “তা হলে শুনুন। লুই লিখছে যে, তার ঠাকুর্দা তাদের কাছে প্রায়ই সেই দয়াবতী মহিলার অর্থাৎ শান্তিলতার গল্প করতেন। বলতে যে, তাঁর সেবাযত্নেরও তুলনা হয় না, আবার রান্নার হাতও ছিল অসাধারণ। শান্তিলতা তাঁকে যে পোয়র কারি বেঁধে খাইয়েছিলেন, তার স্বাদ নাকি তিনি বুড়ো বয়েসেও ভুলতে পারেননি।…বুঝুন।”
সদানন্দবাবু বললেন, “বুজলাম। কিন্তু পোয়র কারিটা কী বস্তু?” আমি হেসে বললাম, “মাছের ঝোল। ওইটুকু ফরাসি আমি জানি।”
.