॥ ৬ ॥
ভাদুড়িমশাই বললেন, “মহিলাটি কে?”
চকিতে কৌশিকের দিক থেকে ভাদুড়িমশাইয়ের দিকে মুখ ফেরালেন হরসুন্দর মুখুটি। দুই চোখের ধবধবে সাদা ভুরু দুটি একেবারে হঠাৎই তাদের স্বাভাবিক জায়গা থেকে আধ-ইঞ্চি উর্ধ্বে উঠে গেল। গলা ঈষৎ নামিয়ে তিনি বললেন, “ধরতে পেরেছেন দেখছি।”
ভাদুড়িমশাই সামান্য হেসে বললেন, “ঠিক যে ধরতে পেরেছি তা বলব না। তবে হ্যাঁ, আন্দাজ করেছি। কিন্তু আন্দাজ দিয়ে তো কাজ চলে না, আপনার কাছে সবটা জানতে চাই।”
“আমিও কি আর তেমনভাবে জানি যে, সাক্ষ্যপ্রমাণ সাজিয়ে সব বলব?” হরসুন্দর বললেন, “না মশাই, তা আমি জানি না। পাথুরে কোনও প্রমাণও আমি দাখিল করতে পারব না। তবে হ্যাঁ, দুয়ে-দুয়ে যে চার হয়, তার কি কোনও প্রমাণ লাগে?”
“তা লাগে না বটে!”
“তো সেইভাবে একটা থিয়োরি আমি দাঁড় করিয়েছি।” হরসুন্দর বললেন, “তার খানিক-খানিক অবশ্য গেস্-ওয়ার্ক। বিশেষ করে কালীভূষণের মৃত্যুর ব্যাপারটা।”
“বেশ তো, সেটাই বলুন।”
“খোলাখুলি বলব না, শুধু কু ধরিয়ে দেব। কিন্তু তার আগে দুটো কথা আপনাদের মনে রাখতে হবে। শ্যারশে লা ফাম বলে একটা প্রবাদবাক্য আছে জানেন তো?”
“জানি।” ভাদুড়িমশাই বললেন, “ওটা ফরাসি প্রোভার্ব। এর অর্থ হচ্ছে মেয়েটাকে খুঁজে বার করুন। মানে, ধরেই নেওয়া হয় যে, তাবৎ জটিল রহস্যের মূলে রয়েছে কোনও মেয়ে। রহস্যের কিনারা করতে হলে সেই মেয়েটাকে খুঁজে বার করা চাই।”
হরসুন্দর বললেন, “কারেক্ট। কিন্তু শুধু এই কথাটা জানলেই তো হবে না। মনে রাখতে হবে আর-একটা কথাও।”
“সেটা কী?”
“ফাম ফাতাল কথাটা কখনও শুনেছেন?”
“শুনেছি। এটাও ফরাসি কথা।”
“অর্থ জানেন?”
“জানি। ইংরেজিতে এর অর্থ হল ফেটাল উয়োম্যান। সংস্কৃতে ওই যে বিষকন্যা বলে একটা কথা আছে, এ হল তা-ই। বাংলায় বলতে পারি; সর্বনাশা মেয়ে। যাব ঘাড়ে চাপে, তার সর্বনাশ করে ছাড়ে। …কিন্তু ব্যাপারটা কী মুখুটিমশাই? আপনি কি আমার ফরাসি বিদ্যের পরীক্ষা নিচ্ছেন নাকি?”
হরসুন্দর মুখুটি এতক্ষণ নিঃশব্দে হাসছিলেন। এবারে শব্দ করে হাসলেন। তারপর হাসি থামিয়ে বললেন, “আরে না। এককালে যে এখানে ফরাসি বিদ্যের বেশ ভালরকম চর্চা হত, যেমন পণ্ডিচেরিতে তেমনি এখানে..মানে ভদ্রেশ্বরে নয়, চন্নননগরে সেটা জানেন তো?”
“তা কেন জানব না?” ভাদুড়িমশাই বললেন, “ফরাসি কলোনি, সেখানে ফরাসি ল্যাংগুয়েজ অ্যান্ড লিটারেচারের চর্চা হবে, সেটাই তো স্বাভাবিক।”
“ঠিক কথা। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, যারাই চননগরের বাসিদে, তারাই ফরাসিতে এক-একজন মস্ত পণ্ডিত। আবার ফরাসি কলোনির বাইরের লোক হলেই যে সে ফরাসি ভাষা জানবে না, তাও কিন্তু নয়।“
আলোচনা যে কোন দিকে যাচ্ছে, আমরা কেউই তা ঠিকমতো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তবে হরসুন্দরের প্রতিটি কথাতেই আমরা মাথা নেড়ে সায় দিয়ে যাচ্ছিলুম। সদানন্দবাবু অবশ্য শুধু মাথা নেড়েই ক্ষান্ত থাকার পাত্র নন। মাথা নাড়ার সঙ্গে-সঙ্গে তিনি মাঝে-মাঝেই বলছিলেন, “তা তো বটেই, তা তো বটেই।”
হরসুন্দর হয়তো সেই কারণেই ধরে নিয়ে থাকবেন যে, আমাদের মধ্যে সদানন্দবাবুই তার কথাবার্তার সবচেয়ে বড় বোদ্ধা। সরাসরি এবারে সদানন্দবাবুর দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন, “এই আমার কথাই ধরুন। আমি ভদ্রেশ্বরের লোক, কিন্তু ফরাসিটা আমি যে শুধু বুঝতে পারি, পড়তে পারি আর বলতে পারি, তা নয়, ওতে আমি যেমন আমার অটোবায়োগ্রাফি আর একখানা নাটক, তেমনি তিন-তিনখানা উপন্যাসও লিখে ফেলেছি।”
ভাদুড়িমশাই বললেন, “ছেপে বেরিয়েছে?”
“এখনও বেরোয়নি।” হরসুন্দর বললেন, “আশে কোম্পানির নাম শুনেছেন? ইংরেজরা ওই যাকে হ্যাঁচেট বলে আর কি। শুনেছেন?”
“তা কেন শুনব না? ডাকসাইটে ফ্রেঞ্চ পাবলিশার।”
“ঠিক বলেছেন। তো তাদের কাছে ম্যানাসক্রিপট পাঠিয়ে দিয়েছি। তারা পড়ে দেখছে। ছাপবে নিশ্চয়।”
ভদ্রলোক আরও কিছু বলতেন হয়তো, কিন্তু যে মেয়েটি চা দিয়ে গিয়েছিল, সে এই সময়ে ফের ঘরে ঢুকে বলল, “দাদু, তোমার বেড়াতে যাবার সময় হয়েছে। লাঠিটা এনে দেব?”
“আজ একটু পরে বেরোব।” হরসুন্দর বললেন, “কাপগুলো নিয়ে যা।” শূন্য পেয়ালাগুলিকে থালায় তুলে নিয়ে মেয়েটি নিঃশব্দে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
ভদ্রলোকের বেড়াতে যাবার সময় হয়েছে শুনে আমরাও উঠে পড়তে যাচ্ছিলুম, কিন্তু হরসুন্দরই আমাদের বাধা দিয়ে বললেন, “আরে বসুন, বসুন, আসল কথাটাই তো এখনও বলিনি।…ও হ্যাঁ, কী বলছিলাম যেন?”
সদানন্দবাবু বললেন, “আপনার বই ছাপার কথা।”
“না, না, ওটা নয়। তার আগে কী বলছিলাম?”
পরমেশ বললেন, “বলছিলেন যে, আমরা চননগরের লোকেরাও সবাই ফরাসি জানি না, আবার আপনি ভদ্রেশ্বরের লোক হয়েও…”
কথাটা শেষ করতে দিলেন না হরসুন্দর। বললেন, “ঠিক ঠিক। আমি যা ফরাসি জানি, তোমাদের অনেকেই তার সিকির সিকিও জানো না।…কী, বিশ্বাস হচ্ছে না? বেশ, তা হলে ওই সেনেদের কথাই ধরো।”
বলেই হঠাৎ ভাদুড়িমশাইয়ের দিকে তাকালেন হরসুন্দর মুখুটি। বললেন, “ও মশাই, ওই সেনেদের বাড়ি নিয়েই তো কথা হচ্ছিল, তাই না?”
“হ্যাঁ,” ভাদুড়িমশাই বললেন, “টু বি প্রিসাইজ, ওদের হরপার্বতীর চোখের হিরে নিয়ে।”
“ঠিক হিরে নিয়েও নয়, হিরে দুটো কী করে ওদের হাতে এল, তা-ই নিয়ে। কিন্তু আমিই বা সে-কথা জানলুম কী করে? আরে মশাই, আমিও জানতে পারতাম না, কালীভূষণের ধারাটা যদি ওবাড়িতে বজায় থাকত।..কী, এর থেকে কিছু বুঝলেন?”
কিছুই বুঝলুম না। অন্যদের দিকে তাকিয়ে মনে হল, তারাও কিছুই বোঝেননি। একা সদানন্দবাবুই শুধু মুখে একটা বুঝি-বুঝি ভাব জাগিয়ে রেখে মৃদু-মৃদু হাস্য করছেন।
ওই হাসিটাই তাঁর বিপদ ঘটাল। হরসুন্দর সরাসরি তার দিকে তাকিয়ে বললেন, “যাক, আপনি অন্তত বুঝেছেন।”
হাসিটা একেবারে সঙ্গে-সঙ্গেই সদানন্দবাবুর মুখ থেকে মুছে গেল। কাতর গলায় তিনি বললেন, “আজ্ঞে না।”
ভাদুড়িমশাই বললেন, “দেখুন হরসুন্দরবাবু, এর মধ্যে যে একজন মহিলা জড়িয়ে আছে, সেটা আমি আগেই আন্দাজ করেছিলুম। সম্ভবত তিনি বিমলভূষণের প্রপিতামহী শান্তিলতা দেবী। কিন্তু কালীভূষণের ধারা’ বলতে যে আপনি কী বোঝাতে চাইছেন, সেটা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। একটু যদি বুঝিয়ে বলেন তো বড্ড ভাল হয়।”
হরসূন্দর বললেন, “বলছি, বলছি। হিরে দুটো কোত্থেকে কীভাবে এল, তা তো আমাকে বলতেই হবে। তার প্রমাণও আমার কাছে রয়েছে। কিন্তু কথা হচ্ছে, প্রমাণটাই বা আমার হাতে এল কীভাবে। আপনারা কি কালীভূষণের কথা কিছু জানেন?”
“এইটুকু জানি যে, তিনি বিত্তশালী মানুষ ছিলেন। ভাদুড়িমশাই বললেন, “শুনেছি যে, ওই মন্দিরের তিনিই প্রতিষ্ঠাতা। এও শুনেছি যে, তিনি গঙ্গাস্নান করতে গিয়ে জলে ডুবে মারা যান।”
“ঠিকই শুনেছেন। তবে ওই মারা যাওয়াটা নেহাতই দুর্ঘটনা, না আত্মহত্যা, তাই নিয়ে সেকালে কিছু মতভেদ ছিল বলে আমার বাপ-ঠাকুর কাছে শুনেছি। সে যা-ই হোক, কালীভূষণ যে ফরাসিটা খুব ভাল জানতেন, এটা আপনারা শুনেছেন?”
‘না। তবে জানাই তো স্বাভাবিক।” ভাদুড়িমশাই বললেন, “ফরাসি এলাকায় থাকতেন, ফরাসি অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের আনুকূল্যে নিজের বিত্তসম্পদ যথাসম্ভব বাড়িয়ে নিয়েছিলেন, তাদের মন জুগিয়ে চলতে হত, তাদের ভাষাটা না জানলে চলে?”
“সে তো ঠিক,” হরসুন্দর হেসে বললেন, “ফরাসিদের সঙ্গে যার কাজ-কারবার, মেলামেশা, ওঠাবসা, ফরাসি ভাষায় তাকে দুরস্ত হতে হবে বই কী। কিন্তু না, কথাটা তো তা নয়।”
“কথাট। তা হলে কী?”
“কথাটা এই যে, কালীভূষণকে তো তার নিজের স্বার্থে …মানে নিজের কাজ কারবারের স্বার্থে ফরাসিতে দুরস্ত হতে হয়েছিল। কিন্তু তার স্ত্রীকে তাই বলে ফবাসি শেখাবার দরকার হল কেন?”
“বটে?” ভাদুড়িমশাই বললেন, “শান্তিলতাও ফরাসি জানতেন নাকি?”
“নামটাও জানেন দেখছি।”
“হ্যাঁ, জানি।” ভাদুড়িমশাই বললেন, “বিমলভূষণের কাছে শুনেছিলুম। সেনেদের বাড়ির বিমলভূষণকে তো আপনি ভালই চেনেন?”
“তা চিনি বই কী।” হরসুন্দর তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বললেন, “ওটা না-শিখেছে ফরাসি, না-শিখেছে ইংরেজি। বাংলাটাও ঠিকমতো শিখেছে কি না, তাতে আমার সন্দেহ আছে। ওটা একটা গাধা। ওর বাবা চন্দ্রভূষণ ছিল আমার ছেলেবেলার বন্ধু। তবে সেটাও ছিল একটা গাধা। লেখাপড়ায় ডডনং। ফরাসিদের একোলে পড়ত, কিন্তু ক্লাস ফোর
থেকে ফাইভে উঠতেই বার তিনেক তার প্রোমোশন আটকে যায়। ভাবতে পারেন?”
সদানন্দবাবু বললেন, “একোলটা কী জিনিস।“
“ইস্কুল।” হরসুন্দর বললেন, “কিন্তু যা বলছিলাম। কালীভূষণের পরে ও-বাড়িতে আর লেখাপড়ার চর্চা হয়নি। ওরা না জানে ফরাসি, না জানে ইংরেজি।” একটুক্ষণের জন্যে চুপ করলেন হরসুন্দর। তারপর বললেন, “কীর্তিভূষণ সম্পর্কে শুনেছি, তিনি তবু তাঁর মায়ের চাপে পড়ে একটু-আধটু ফরাসি শিখেছিলেন। কিন্তু চন্দ্রভূষণ তো আ-বে-সে দে’র পরে আর কিছুই শেখেনি। আরে মশাই, ফরাসি জানলে কি আর ফ্রান্স থেকে লেখা একখানা চিঠি পড়াবার জন্যে তাকে আমার কাছে ছুটে আসতে হত। আর সেই চিঠি না পড়লে কি আমিই জানতে পারতুম যে, ওদের হিরে দুটো কোত্থেকে কীভাবে এসেছিল?”
ভাদুড়িমশাইয়ের চোখ দুটো দেখলুম হঠাৎই সরু হয়ে এসেছে। বললেন, “চিঠিখানা কোথায়?”
“আমারই কাছে আছে। তবে কাউকে দেখাইনি। কথা ছিল, চিঠিখানা পড়ে বাংলায় আমি তার তর্জমা করে রাখব, চন্দ্রভূষণ তার পরদিন এসে তর্জমা আর মূল চিঠি আমার কাছ থেকে নিয়ে যাবে। কিন্তু তা আব সে নিতে পারেনি। সেই রাত্তিরেই বাড়িতে ফিরে তার জ্বর আসে। কী জ্বর তা বোঝা গেল না। তিন দিনের মধ্যে চন্দ্র মারা গেল।”
“এটা কবেকার কথা?”
“নাইনটিন সেভেন্টির। তার মানে প্রায় তিরিশ বছর আগেকার।”
“চিঠিখানা দেখা যায়?”
“স্বচ্ছন্দে।” হরসুন্দর বললেন, “চান তো সঙ্গে করে নিয়েও যেতে পারেন। তবে কিনা ফেরত চাই। ফরাসি ভাষায় চন্দননগরের একটা ইতিহাস লিখছি কিনা, ডকুমেন্টারি এভিডেন্স হিসেবে ওটা কাজে লাগবে।”
চিঠি সম্পর্কে তক্ষুনি আর-কিছু বললেন না ভাদুড়িমশাই। প্রসঙ্গ পালটে বললেন, “শান্তিলতাকে ফরাসি শেখাবার কথা হচ্ছিল। তা এতে তো আমি অস্বাভাবিক কিছু দেখছি না। কালীভূষণের সঙ্গে তখনকার ফরাসি কর্তাদের যে দহরম-মহরমের কথা শুনেছি, তাতে তো মনে হয়, তাদের দেওয়া পার্টি-টার্টিতেও তাকে যেতে হত। মিল্ড পার্টি হলে গিন্নিকেও হয়তো নিয়ে যেতেন..। মানে সেটাই তো স্বাভাবিক। আর গিন্নি যদি যানই, তো ভাষা না জানার দরুন সেখানে গিয়ে তিনি বোবা হয়ে বসে থাকবেন, তা তো হয় না। তা সে যা-ই হোক, ফরাসিটা তিনি শিখলেন কোথায়? এখানকারই কোনও ইস্কুলে, না তার স্বামীর কাছে?”
হরসুন্দর হেসে বললেন, “পার্টি-টাটির কোনও কথাই উঠছে না, এমনকী ইস্কুলেরও না। আমার ঠাকুমার কাছে শুনেছি যে, শান্তিলতা ছিলেন…. ওই যাকে ঘোর পর্দানশিন মহিলা বলে, তা-ই। আর তার স্বামী? যে-লোককে সম্পত্তি বাড়ানোর কাজেই অষ্টপ্রহর ব্যস্ত থাকতে হয়, স্ত্রীকে ফরাসি শেখাবার সময় কোথায় তার?”
“তা হলে তিনি ফরাসিটা শিখলেন কোথায়?”
“সেই কথাই তো বলছি।” হরসুন্দর আবার নিঃশব্দ হাসতে শুরু করলেন। তারপর বললেন, “টাকাপয়সার তো অভাব নেই, স্ত্রীকে ফরাসি শেখাবার জন্যে কালীভূষণ তার বাড়িতেই একজন টিউটর রেখে দিলেন।”
“লোকটা ফরাসি?”
“অবশ্য। লোকটা গ্রেনাডিয়ার হয়ে এসেছিল, কিন্তু শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্যে ফ্রেঞ্চ আর্মি থেকে তার চাকরি যায়। তখন কালীভূষণ তাকে বাড়িতে আশ্রয় দেন। আর এতকাল যাঁকে বন্ধ্যা ভাবা হয়েছিল, সেই শান্তিলতা সন্তানসম্ভবা হন। …তো যা বুঝবার, এর থেকেই বুঝে নিন আপনারা। বাকি যা বুঝবার, চিঠিটা পড়লেই বুঝতে পারবেন। আমি বরং চিঠিটা নিয়ে আসি।”
হরসুন্দর ভিতরে গিয়ে মিনিট তিন-চারের মধ্যেই ফিরে এলেন। হাত বাড়িয়ে ভাদুড়িমশাইয়ের হাতে একটা খাম ধরিয়ে দিয়ে বললেন, “এই সেই চিঠি।… ক যা পাবার, এরই মধ্যে পেয়ে যাবেন। আর হ্যাঁ, চিঠিটা পড়তে পড়তে হয়তো অর্লভ ডায়মন্ডের কথা আপনাদের মনে পড়তে পারে। সেটা ছিল চোরাই হিরে।”
বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছি, হঠাৎ একটি অল্পবয়সী বউ একেবারে ঝড়ের মতো এসে হরসুন্দর মুখুটির বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়ল। ঢুকেই তারস্বরে চেঁচিয়ে উঠল, “ও দাদু, এ
কী সর্বনাশ করলেন আপনি?”
হরসুন্দর বাড়ির বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছিলেন। সেখান থেকেই হতভম্ব গলায় বললেন, “কেন, কী করেছি?”
“পটলার চুল কেটে দিলেন কেন?” কপাল চাপড়ে বউটি বলল, “ও তো মানতের চুল! সামনের জষ্টি মাসে যষ্ঠীতলায় গিয়ে ওর চুল ফেলার কথা! এ কী সর্বনাশ হল!”
.