৫
আজ ৫ এপ্রিল, শুক্রবার। রাত এখন সাড়ে বারোটা। ঘণ্টাদেড়েক আগে আমরা মির্জাপুরের মিশ্র-ভবনে এসে পৌঁছেছি। আমরা মানে ভাদুড়িমশাই, সদানন্দবাবু আর আমি। ট্রেন-জার্নিটা মোটেই আরামদায়ক হয়নি। অথচ এই ট্রেনে না-এসে কোনও উপায়ও ছিল না। ভাদুড়িমশাই গতকাল সকালে রঘুনন্দনের ফোন পান। রঘুনন্দন তাঁকে জানায় যে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাঁর মির্জাপুরে যাওয়া দরকার। ইতিমধ্যে নতুন-কিছু ঘটেছে কি না, জিজ্ঞেস করায় সে বলে, ওখানে পৌঁছলেই তিনি সব জানতে পারবেন।
রঘুনন্দনের সঙ্গে কথা শেষ হবার পরেই ভাদুড়িমশাই আমাকে ফোন করে সব জানিয়ে বলেন, কলকাতার কাজ শেষ হয়েছে, কিন্তু একটা দিনও রেস্ট পাবার উপায় নেই, “আজই মির্জাপুরে রওনা হতে পারলে ভাল হয়।” যেতে যে হবে, তা অবশ্য আমার জানাই ছিল। তবে এত শর্ট নোটিসে যেতে হবে, তা ভাবিনি। বিস্তর দৌড়ঝাঁপ করে আর একে-তাকে ধরেও কোনও ভদ্রগোছের গাড়ির রিজার্ভেশন পাওয়া গেল না, শেষ পর্যন্ত ফার্স্ট ক্লাসের তিনটে বার্থ মিলল মোগলসরাই এক্সপ্রেসে। রাত্তিরের গাড়ি, শেয়ালদা স্টেশন থেকে ছাড়ে, কাল সেই গাড়ি ধরে আজ বিকেলে আমরা মোগলসরাই জংশনে পৌঁছই। এমন লক্কড় গাড়ি বোধহয় দুটি হয় না। চেকিংয়ের বালাই না থাকায় পথে যে দুর্ভোগ গেছে, সে আর কহতব্য নয়। সদানন্দবাবু নাক-কান মলে প্রতিজ্ঞা করেছেন যে, আর কক্ষনো তিনি বিষ্যুতবারে কোথাও রওনা হবেন না। মরে গেলেও না।
মোগলসরাই থেকে ট্যাক্সি নিয়ে যখন মির্জাপুরে পৌঁছই, শহরটা তখন বলতে গেলে ঘুমোচ্ছিল। রাস্তায় লোকজন নেই, দোকানপাটও অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। শেষ পর্যন্ত এক টাঙ্গাওয়ালাকে ঘুম থেকে তুলে জিজ্ঞেস করতে হয় যে, মিশ্রদের বাড়িতে যেতে হলে কোন পথ দিয়ে যাব। তবে শ্যামনন্দন মিশ্র দেখলুম এখানে খুবই পরিচিত মানুষ, নাম বলতেই টাঙ্গাওয়ালা তাঁকে চিনতে পারল। বাড়ি খুঁজে পেতে তাই আর কোনও অসুবিধে হয়নি, এগারোটা নাগাদ আমরা মিশ্র-ভবনে পৌঁছই।
অত রাতেও রঘুনন্দন যে জেগেই ছিল, তাতে আমরা অবাক হইনি। তার কারণ, কোন ট্রেনে আমরা মোগলসরাইয়ে পৌঁছচ্ছি আর সেখান থেকে কীভাবে আমরা মির্জাপুরে যাব, কলকাতা থেকে রওনা হবার ঘণ্টা দুয়েক আগেই ভাদুড়িমশাই এসটিডি করে তাকে সে-সব জানিয়ে রেখেছিলেন। এত তাড়াতাড়ি আমাদের আসতে বলা হল কেন, রঘুনন্দনকে সে-কথা জিজ্ঞেস করতে সে বলল, পরশু অর্থাৎ বুধবার রাত্তিরেও তাদের বাড়িতে ফের চুরির একটা অ্যাটেম্৳ হয়েছিল। “ফলে কাল সকালেই দাদু আমাকে বলেন যে, আর দেরি করা ঠিক হবে না, এক্ষুনি মিঃ ভাদুড়িকে ফোন করে ওঁকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আসতে বলে দাও। ওঁরই কথায় আমি আপনাকে ফোন করেছিলুম।”
“উনি এখনও জেগে আছেন?”
“উনি তো এখন এই বাড়িতেই নেই।”
“তার মানে?” ভাদুড়িমশাই বললেন, “উনি তা হলে কোথায় আছেন?”
“নার্সিং হোমে।”
“কেন? কী হয়েছে? কাল বিকেলে যখন আপনাকে ফোন করি, তখনও তো আপনি কিছু বলেননি। এর মধ্যে তা হলে কী হল?”
“আপনার ফোন যখন পাই, তখনও উনি ভালই ছিলেন। পরে রাত দশটা নাগাদ বলেন যে, ওঁর শরীরে একটা অস্বস্তি হচ্ছে। সঙ্গে-সঙ্গে ডাক্তার ডাকি। ডাক্তার চতুর্বেদী এখানকারই লোক, আমাদের ফ্যামিলি ফিজিশিয়ান, একই পাড়ায় থাকি, ফোন পেয়েই তিনি চলে আসেন। এসে, দাদুকে পরীক্ষা করে বলেন, ‘ব্লাড প্রেশার খুবই বেশি, একটা ওষুধ দিয়ে যাচ্ছি, এটা খেলেই প্রেশার নেমে যাবে, তবে ইমিডিয়েটলি নার্সিং হোমে ট্রান্সফার করা দরকার।’ তা-ই করি। ডঃ চতুর্বেদীরই নার্সিং হোম… দাদু এখন সেখানেই আছেন।”
ভাদুড়িমশাই বললেন, “এ তো কালকের খবর হল, আজকের খবর কী?”
“ভাল নয়।” রঘুনন্দন বলল, “আসলে নার্সিং হোমে নিয়ে যাবার খানিক বাদেই উনি অজ্ঞান হয়ে যান। সেরিব্রাল অ্যাটাক। জ্ঞান অবশ্য মিনিট পনরো-কুড়ির মধ্যেই ফিরে এসেছিল, তবে শরীরের ডান দিকটা অসাড় হয়ে গেছে। জিভ জড়িয়ে যাচ্ছে বলে কথাও ভাল বলতে পারছেন না।”
“আজ ওঁকে কখন দেখতে গিয়েছিলেন?”
“সারা দিন তো ওখানেই ছিলুম, একটু আগে ফিরেছি। দাদুর সঙ্গে দেখা হয়নি, উনি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে আছেন, শুধু ডাক্তারবাবুর সঙ্গেই কথা হল। তিনি বলছেন, ক্রাইসিস কেটে গেছে, প্রাণের ভয় নেই, তবে অবস্থা আর-একটু স্টেবিলাইজ না-করা পর্যন্ত নার্সিং হোমেই থাকতে হবে, খুব শিগগির ওঁকে বাড়িতে পাঠানো যাবে না।”
শুনে, একটুক্ষণ চুপ করে রইলেন ভাদুড়িমশাই। তারপর বললেন, “পরশু রাত্তিরে তো ফের আপনাদের বাড়িতে চুরির একটা অ্যাটেম্৳ হয়েছিল! তাই নিয়ে কি খুব আপসেট হয়ে পড়েছিলেন উনি?”
রঘুনন্দন বলল, “দাদু খুবই ঠাণ্ডা স্বভাবের মানুষ। আমরা অন্তত কখনও কোনও ব্যাপারে ওঁকে উত্তেজিত বা আপসেট হতে দেখিনি। হয়তো ভিতরে-ভিতরে উত্তেজিত হতেন, কিন্তু সেটা হলেও বাইরে কখনও প্রকাশ পেত না। বরং আমাদের কখনও উত্তেজিত হতে দেখলে বলতেন, ডোন্ট গেট সো রাল্ড, টেক ইট ইজি। কাল সকালেও তা-ই বলেছিলেন। আমি তো থানায় গিয়ে ডায়েরি করতে চেয়েছিলুম। তাতে আগের বারের মতো এবারেও আমাকে বাধা দিয়ে বললেন, থানায় গিয়ে কিছু হবে না, এটা পুলিশের কাজ নয়, বরং মিঃ ভাদুড়িকে ফোন করে আমার নাম করে বলো যে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তিনি যেন এখানে চলে আসেন।”
“কিন্তু এ তো সকালের কথা, তার পরেও ওঁর কাজেকর্মে কি কথাবার্তায় অস্বাভাবিক কিছু লক্ষ করেননি?…মানে সারাটা দিন তো কাল বাড়িতেই ছিলেন উনি, তখনও কিছু চোখে পড়েনি আপনার?”
“কিচ্ছু না। তবে সারাটা দিন যে উনি বাড়িতেই ছিলেন, তাও নয়। দু’-দু’ বার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন, যেমন রোজই বেরোন। একবার ব্রেকফাস্টের পর, আর একবার লাঞ্চের পর।”
“খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে কিছু অনিয়ম হয়েছিল?”
“না, তাও হয়নি।” রঘুনন্দন বলল, “যেমন সব ব্যাপারে, তেমনি খাওয়ার ব্যাপারেও তো উনি ঘড়ি ধরে চলেন। খানও যৎসামান্য। ভোরবেলায় হাল্কা এক কাপ চা আর একটা বিস্কুট। সাড়ে আটটায় দুধ, কর্নফ্লেকস আর একটা কলা। দুপুরে কাঁটায়-কাঁটায় একটার সময় একটা চাপাটি, দু’ চামচ ডাল আর ভিণ্ডি কুরি কি ওই রকমের কোনও একটা সব্জি-সেদ্ধ, তাও খুবই অল্প পরিমাণে। বিকেলে ফের এক কাপ হাল্কা চা। আর রাত্তিরে চিকেন-স্টুর সঙ্গে খুব-কড়া-করে সেঁকা এক স্লাইস টোস্ট। বাস্, এই হচ্ছে ওঁর খাওয়া। কালও এ-ই খেয়েছিলেন।”
“ওর রোজকার রুটিনটা কীরকম?”
“সেও একেবারে ঘড়ি-ধরা। ভোরবেলায় বেড-টি খেয়ে সামনের লনে এই ধরুন আধঘণ্টার মতো পায়চারি করেন। তারপর স্নান সেরে নেন। ব্রেকফাস্ট করে চলে যান মিউজিয়ামে। সেখান থেকে দুপুরে বাড়িতে ফিরে লাঞ্চ। তারপর ঘড়ি ধরে এক ঘণ্টা বিশ্রাম নিয়ে ফের মিউজিয়ামে চলে যান। ফিরে আসেন সাড়ে পাঁচটা নাগাদ। চা খান। আবার কিছুক্ষণ পায়চারি করেন। তারপর একতলার লাইব্রেরি রুমে ঢুকে পড়াশুনো করেন, সেদিনকার চিঠিপত্রের জবাব লেখেন। সে-সব সেরে দোতলায় আসেন রাত ন’টা নাগাদ। রাত্তিরের খাওয়া সেরে নিয়ে দোতলার বারান্দাতেই ফের কিছুক্ষণ পায়চারি করেন, আমাদের সঙ্গে দু-একটা কথা বলেন, তারপর ঠিক দশটা বাজতেই বেড-রুমে ঢুকে যান।…এ একেবারে ফিক্সড রুটিন, অন্তত গত দশ-বারো বছরে এর কোনও ব্যতিক্রম ঘটতে আমরা দেখিনি।” ভাদুড়িমশাই চুপ করে সব শুনে যাচ্ছিলেন। রঘুনন্দনের কথা শেষ হতে বললেন, “আপনাদের মিউজিয়াম ক’টা থেকে ক’টা পর্যন্ত খোলা থাকে?”
“সকাল ন’টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত।”
“রবিবারেও খোলা থাকে?”
“না। এক ওই রবিবারটাই ছুটির দিন। দাদু সে-দিন আর বাড়ি থেকে বেরোন না। যে-সময়টা মিউজিয়ামে গিয়ে বসতেন, সেটা লাইব্রেরি-রুমে বসে পড়াশুনো করে কাটিয়ে দেন।”
কথা বলতে-বলতে রঘুনন্দন বার দুয়েক হাই তুলেছিল। সেটা নিশ্চয় ভাদুড়িমশাইয়ের নজর এড়ায়নি। সামান্য হেসে বললেন, “ঠিক আছে, আর আপনাকে জাগিয়ে রাখব না।
রঘুনন্দন বলল, “আপনারাও শুয়ে পড়ুন। একে ট্রেন-জার্নি, তায় মোগলসরাই থেকে এতটা পথ ট্যাক্সির ঝাঁকুনি খেতে-খেতে এসেছেন, ধকল আপনাদের নেহাত কম যায়নি।”
বারান্দায় বসে কথা হচ্ছিল। সেখান থেকে উঠে আমরা শোবার ঘরে চলে এলুম। শুনেছি, এই বাড়িরই কম্পাউন্ডের মধ্যে এদের একটা আলাদা গেস্ট-হাউস আছে। সেটা এখনও দেখিনি। আপাতত এই দোতলাতেই আমাদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। দোতলায় পাশাপাশি তিনটি বেডরুম। একটা ঘরে সস্ত্রীক রঘুনন্দন থাকে, আর-একটা ঘরে প্রোফেসর শ্যামনন্দন মিশ্র। তৃতীয় ঘরটা খালিই পড়ে থাকে। পরিবারের লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পেলে ওটা কাজে লাগবে। রঘুনন্দনের স্ত্রীও অবশ্য এখন মির্জাপুরে নেই, দিন কয়েকের জন্যে লখনউয়ে তার পিত্রালয়ে গেছে, তবে তার দাদাশ্বশুরের অসুখের খবর যখন পেয়েছে, তখন কালকের মধ্যেই এসে পড়বে হয়তো। প্রোফেসর নিজেও রয়েছেন নার্সিং হোমে। ফলে পাশাপাশি দুটো ঘর আমাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। একটায় আছেন ভাদুড়িমশাই, আর একটায় আমি ও সদানন্দবাবু। মিনিট পাঁচেক আগেও সদানন্দবাবুর সঙ্গে কথা হচ্ছিল। কিন্তু কথা বলতে-বলতেই যে তিনি ঘুমিয়ে পড়েছেন, সেটা তাঁর মৃদুমন্দ নাক ডাকার শব্দ থেকেই বুঝতে পারছি।
নতুন কোনও জায়গায় এলে প্রথম রাত্রিটা আমার একটু অস্বস্তিতে কাটে, ঘুম হতে চায় না। আজও ঘুম আসছে না। মোগলসরাই জংশনে নেমে বাইরে গিয়ে ট্যাক্সি ধরবার আগে স্টেশনের হুইলারের স্টল থেকে একটা থ্রিলার কিনে এনেছিলুম। আর্ভিং ওয়ালেসের ‘দ্য সেকেন্ড লেডি’। ব্লাব পড়ে মনে হয়েছিল রগরগে স্পাই-স্টোরি। পাছে সদানন্দবাবুর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে, তাই বেড-ল্যাম্প জ্বেলে সেটা পড়তে শুরু করলুম। কিন্তু হয়তো মনটা একটু বিক্ষিপ্ত ছিল বলেই পৃষ্ঠা দুয়েক পড়বার পরে আর মন বসানো গেল না। তাই সুইচ অফ করে দিয়ে চুপচাপ এখন ভাবছি যে, কাজকর্ম ফেলে রেখে হুট করে এখানে চলে এলুম কেন! ·
এদের সমস্যা যে ঠিক কী, সেটাও ভাল করে বোঝা গেল না। ভাদুড়িমশাইয়ের কাছে কী চান এঁরা? কেন বারবার এঁদের বাড়িতে চোর এসে হানা দিচ্ছে, সেইটে বোঝা-ই কি তাঁর কাজ, নাকি এঁদের অন্য কোনও সমস্যা রয়েছে? এ-ব্যাপারে রঘুনন্দন এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলেনি, শ্যামনন্দন মিশ্রের অসুখ আর দৈনন্দিন কাজকর্মের আলোচনাতেই তো সময় কেটে গেল। ভাল থাকলে প্রোফেসর মিশ্রই হয়তো সব কথা খুলে বলতেন। কিন্তু তিনি তো এখন নার্সিং হোমে। ছোটখাটো অসুখ নয়, সেরিব্রাল স্ট্রোক। শরীরের ডান দিকটা পড়ে গেছে, জ্ঞান অবশ্য ফিরেছে, তবে কথাই ঠিকমতো বলতে পারছেন না। তা হলে? হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন কেন? কোনও ব্যাপারে কি ভিতরে-ভিতরে খুব উত্তেজিত হয়ে ছিলেন? সেই ব্যাপারটাই বা কী? মিউজিয়ামে আর বাড়িতে পরপর চোরের হামলা, না আর-কিছু?
আর-একটা প্রশ্নও আমাকে একটু অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। প্রশ্নটা অবশ্য এখানকার কোনও ব্যাপার নিয়ে নয়। গত রবিবার অরুণ সান্যালদের বাড়িতে রঘুনন্দন যখন প্রথম আসে, তখন তাকে দেখবামাত্র ভাদুড়িমশাই চমকে উঠেছিলেন। রঘুনন্দন চলে যাবার পরে তিনি এমনও বলেছিলেন যে, তাঁর ভূতদর্শনের অভিজ্ঞতা হল। পরে যখন এই নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ভাদুড়িমশাই তখন প্রোফেসর শ্যামনন্দন মিশ্রের সঙ্গে তাঁর প্রথম সাক্ষাৎকারের কথা শোনান। বলেন যে, তিনি চমকে উঠেছিলেন তখনও। তার কারণ আর-কিছু নয়, দেউলপুর থেকে বোম্বাই আসার পথে যিনি জাহাজে উঠতে গিয়ে জলে পড়ে গিয়েছিলেন, সেই সায়েন্টিস্ট ভদ্রলোকের সঙ্গে প্রোফেসর শ্যামনন্দন মিশ্রের চেহারার অদ্ভুত সাদৃশ্য। শ্যামনন্দন মিশ্রের কাছেই ভাদুড়িমশাই জানতে পারেন যে, হরিনন্দন অর্থাৎ সেই সায়েন্টিস্ট ভদ্রলোক তাঁরই ছেলে। সমুদ্রে পড়ে যাওয়ার কিছুদিন বাদেই নাকি এক রোড-অ্যাক্সিডেন্টে হরিনন্দনের মৃত্যু ঘটে।
আমার পক্ষে হরিনন্দনকে দেখার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। আর শ্যামনন্দন মিশ্রকে অন্তত এখনও আমি দেখিনি। কিন্তু রঘুনন্দনকে দেখেই বা ভাদুড়িমশাই চমকে উঠেছিলেন কেন? শ্যামনন্দনের সে পৌত্র। তার মানে সে হরিনন্দনের ছেলে। তার চেহারার সঙ্গেও কি তা হলে শ্যামনন্দন আর হরিনন্দনের চেহারার এমন মিল রয়েছে, যা দেখে চমকে উঠতে হয়? ভাদুড়িমশাইকে জিজ্ঞেস করতে হবে।