১২
সকাল ছ’টায় বিছানায় শুয়েই চা খেয়েছি। সদানন্দবাবু তার আগেই শয্যাত্যাগ করেছিলেন। যে-লোকটি চা দিয়ে গিয়েছিল, তাকে জিজ্ঞেস করে জানা গেল ভোরবেলাতেই বাড়ি থেকে তিনি বেরিয়ে গেছেন। তার আগে অবশ্য একতলার কিচেনে ঢুকে কাজের লোকদের দিয়ে চা বানিয়ে নিয়ে এক কাপ খেয়ে যেতে ভোলেননি। ওই একই সময়ে নাকি বেরিয়ে পড়েছেন ভাদুড়িমশাই আর এ-বাড়ির কর্তাবাবু মহেশ্বর ফুকনও। অন্য দু’জন কখন ফিরবেন, তা সে জানে না, তাঁরা সে-কথা বলে যাননি। তবে কর্তাবাবু রোজ সাতটা নাগাদ ফিরে আসেন। ঘর থেকে বেরোবার আগে লোকটি জানিয়ে দিয়ে গেল যে, এ-বাড়িতে সকাল আটটায় ব্রেকফাস্ট সার্ভ করা হয়।
মুখহাত ধুয়ে, দাড়ি কামিয়ে, স্নানটা সেরে নিয়ে বাথরুম থেকে বেরিয়ে দেখি, সদানন্দবাবু ফিরে এসেছেন। ভাদুড়িমশাইও যে জগিং সেরে ফিরে এসেছেন তাঁরই সঙ্গে, সদানন্দবাবু এই খবর দিয়ে বললেন, “আমাদের কর্তাবাবুটি এখন এ-বাড়ির কর্তাবাবুর সঙ্গে একতলার ড্রয়িং রুমে বসে জমিয়ে আড্ডা দিচ্চেন।…তা ব্রেকফাস্ট যে আটটায় দেবে, সেটা জানেন তো?”
বললুম, “জানি।”
“ভাল, তা কাল রাত বারোটায় কোথায় গেসলেন?”
“চোর তাড়াতে গেসলুম। মানে ভেবেছিলুম যে, বাড়িতে চোর ঢুকছে। কিন্তু পরে দেখলুম, চোর নয়, বেড়াল।”
“তার মানে সত্যি কতাটা চেপে যাচ্চেন।”
কথাটা বলে আর দাঁড়ালেন না, বাথরুমে গিয়ে ঢুকে পড়লেন।
সদানন্দবাবুর মুখ দেখলেই তাঁর মনের কথাটা বুঝে নেওয়া যায়। বুঝলুম যে, সত্যি কথাটা বলিনি বলে ভদ্রলোক বেজায় রেগে গেছেন। কিন্তু সত্যি কথাটা কি আমিই জানি? কেন যে ভাদুড়িমশাই অত রাত্তিরে আমাকে তাঁর ঘরে যেতে বলেছিলেন, আর কেনই বা আমাকে তাঁর বিছানায় শুয়ে থাকতে বলে কালো পোশাক পরে নিজে নেমে গিয়েছিলেন একতলায়, তা তো আমিও জানি না।
জামাকাপড় পালটে, ঘর থেকে বেরিয়ে, দরজাটা ভেজিয়ে রেখে, একতলায় নেমে আমি ড্রয়িং রুমে গিয়ে ঢুকলুম। দেখলুম, ভাদুড়িমশাই আর মহেশ্বর ফুকন সেখানে দুটো সোফায় বসে জমিয়ে গল্প করছেন। আমি গিয়ে ঢুকতে মহেশ্বর ফুকন বললেন, “আসুন, আসুন। যে-জন্যে আপনারা কলকাতা থেকে এখানে এসেছেন, তা-ই নিয়েই কথা হচ্ছিল। তা লোকটির তো মাথার ঠিক নেই মশাই, তাকে খুঁজে বার করা কি সহজ হবে?”
“মাথার ঠিক নেই ভাবছেন কেন?”
মহেশ্বর ফুকন বললেন, “কলকাতা ছেড়ে যে-লোক কোকরাঝাড়ের জঙ্গলে আসে, তাও এক-আধ দিনের জন্যে বেড়াতে আসার ব্যাপার নয়, সারা জীবনের জন্যে আসা, তার মাথা যে ঠিক আছে, তা কী করে ভাবব?”
ভাদুড়ি বললেন, “কিন্তু তার সঙ্গে তো দেখা হয়েছিল আপনার। দশই মার্চ আপনার বাড়িতে যে পার্টি হয়েছিল, সেখানে এসেছিল সে। তখন নিশ্চয় তার সঙ্গে দু-চারটে কথাও আপনার হয়েছিল। তা কথা বলেও কি আপনার মনে হয়েছিল যে, লোকটি উন্মাদ?”
“শুধু উন্মাদ নয়, অভদ্র। কেতা-কানুনের ধারই ধারে না। বউমা… আই মিন ডোরা…এই প্রথম বিলেত থেকে এখানে এসেছেন, তাঁর সঙ্গে সকলের আলাপ-পরিচয় করিয়ে দেব বলেই তো পাঁচজনকে সেদিন ডেকেছিলুম, তা বউমার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে লোকটি কী করল জানেন?”
“কী করল?”
“যা করল, সে আপনি ভাবতে পারবেন না।” মহেশ্বর ফুকন বললেন, “পরিচয় করিয়ে দিতে বউমা তাকে হাতজোড় করে নমস্কার করলেন, বললেন, ‘আমার ভাশুর তো আপনার বন্ধু, তাঁর কাছে আপনার কথা আমি শুনেছি।’…ওই মানে ভদ্রতা করে যে-সব কথা বলতে হয় আর কি, তো তার উত্তরে লোকটিও তো কিছু বলবে। কিন্তু লোকটি কী করল? না একটাও কথা না-বলে মুখ ঘুরিয়ে চলে গেল আর-এক দিকে। এখন আপনারাই বলুন, ঘোর অভদ্র না-হলে কেউ এমন কাজ করে?”
“তা হয়তো করে না…হয়তো কেন, নিশ্চয়ই করে না…” ভাদুড়িমশাই বললেন, “তবে কিনা এর একটা অন্য-রকম কারণও হয়তো থাকতে পারে। যা-ই হোক, সুশান্ত ওইভাবে মুখ ঘুরিয়ে চলে যাওয়ায় আপনার বউমা’র রিঅ্যাকশনটা কী হল?”
“যা হওয়া স্বাভাবিক। তিনি খুবই দুঃখ পেয়েছেন। তাঁর ধারণা হয়েছে, তিনি যে এ-বাড়ির পুত্রবধূ হয়ে এসেছেন, লোকটি সেটা পছন্দ করেনি।”
একটুক্ষণ চুপ করে রইলেন মহেশ্বর ফুকন। তারপর তাঁর আগের কথার জের টেনে বললেন, “কেদারেরও বলিহারি বুদ্ধি। নিজে তো একটা পয়লা নম্বরের গাধা, তার উপরে আবার তেমনি একটি বন্ধু জুটিয়েছে! আরে হতভাগা, তোর বন্ধুকে তো তুই ভালই চিনিস, তা হলে তাকে তুই নেমন্তন্ন করে এখানে আসতে বললি কেন? কোনও মানে হয়?”
আমি বললুম, “কেদারেশ্বর হয়তো ভাবতেই পারেননি যে, এমন একটা কান্ড হবে।”
মহেশ্বর বললেন, “ভাবা উচিত ছিল। তবে ওই যে বললুম, ওটা তো একটা গাধা!”
আরও কিছুক্ষণ কথাবার্তা হল। মামুলি কথা। দিল্লিতে যারা ক্ষমতায় এসেছে, দেশটাকে তারা ঠিকমতো চালাতে পারবে কি না, ব্যাবসা-বাণিজের এতে ভাল হবে না খারাপ হবে, পেট্রোলের দাম, পাকিস্তান, কাশ্মির, ল অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশান, একটার-পর-একটা বিষয় আমাদের আলোচনার মধ্যে ঢুকে পড়তে লাগল এবং কোনও বিষয়েই যে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব হবে, একবারও তা আমার মনে হল না। তারই মধ্যে অবশ্য একটা ব্যাপার লক্ষ করলুম। সেটা এই যে, মহেশ্বর ফুকন যা-কিছুই বলেন, খুব জোরের সঙ্গে বলেন। দেশটা যে উচ্ছন্নে গেছে, এই কথাটাও তিনি খুব জোরের সঙ্গে বললেন। উত্তরে ভাদুড়িমশাই বললেন, “না না, এখনই অত হতাশ হবার মতো কিছু হয়নি, কারণ…”
কারণটা কী, তা আর শোনা হল না। কেননা, ঠিক সেই সময়েই সদানন্দবাবুকে সঙ্গে করে ডোরা এসে বললেন, “ড্যাড, তোমাদের আলোচনা বন্ধ রেখে এবারে খেতে চলো। …আপনারাও উঠে পড়ুন।”
ডাইনিং হলটা সিঁড়ির অন্য পাশে। সেখানে গিয়ে দেখলুম, লুচি, আলুর দম আর মোহনভোগের ব্যবস্থা হয়েছে। ডোরা বললেন, “কাল রাত্তিরের বিস্তর খাবার বেঁচে গেছে। ভেবেছিলুম যে, তার মধ্যে পায়েসটা অন্তত ব্রেকফাস্টে সার্ভ করা যাবে। কিন্তু অন্য সব খাবার ঠিক থাকলেও দেখলুম সেটাই ঠিক নেই।”
মহেশ্বর ফুকন বললেন, “ঠিক নেই কেন? ফ্রিজে তুলে রাখেনি?”
“তা রেখেছিল, কিন্তু তা সত্ত্বেও নষ্ট হয়ে গেছে।” মহেশ্বরের দিকে তাকিয়ে ডোরা বললেন, “কিন্তু ড্যাড, পায়েসটা ঠিক থাকলেও তোমাকে দিতুম না। কাল তুমি বিস্তর অনিয়ম করেছ, আজ একেবারে স্ট্রিক্ট ডায়েটে থাকবে। ইন ফ্যাক্ট এই লুচি, আলুর দম আর মোহনভোগও তোমার জন্যে নয়। স্রেফ দুধের সঙ্গে কর্ন ফ্লেকস আর একটা ডিমের সাদা অংশ, বাস্, এ ছাড়া আর কিচ্ছু তুমি পাবে না।”
একটা দাপুটে মানুষের এই রকম চেহারাও যে দেখতে হবে, তা ভাবিনি। মহেশ্বর একেবারে ধমক-খাওয়া শিশুর মতো কাতর কন্ঠে বললেন, “মোহনভোগও পাব না?”
“ঠিক আছে, ঠিক আছে, ওটা পাবে। কিন্তু জাস্ট্ ওয়ান স্পুনফুল। তার বেশি চেয়ো না, চাইলেও আমি দেব না।”
সদানন্দবাবু আলুর দমের সঙ্গে আস্ত একটা লুচি জড়িয়ে নিয়ে মুখের মধ্যে ফেলে দিয়ে ধীরেসুস্থে সেটি গলাধঃকরণ করলেন। তারপর বললেন, “বউমা তো কিচ্ছু ভুল বলেননি। আপনি মর্নিং ওয়াক করচেন, তাতে উদ্গারও বেশ ভালই পাচ্চেন নিশ্চয়, কিন্তু এই সময়ে যদি ডায়েটে অনিয়ম করেন, মর্নিং ওয়াকের গুণ তো তা হলে নষ্ট হয়ে যাবে, মশাই।”
কথাটা যাঁর উদ্দেশে বলা, তিনি কিছুই বললেন না। এমন তেতো খাওয়ার মতো মুখ করে দুধে-ডোবানো কর্নফ্লেকস খেয়ে যেতে লাগলেন যে, তাতেই বুঝলুম ভিতরে-ভিতরে তিনি বেশ রেগে আছেন। সদানন্দবাবু সেটা বুঝতে পারেননি বলে আরও কিছু উপদেশ দিতে যাচ্ছিলেন, ইশারায় তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বললুম, “কেদারেশ্বরবাবুর সঙ্গে আজ আমাদের কোকরাঝাড়ে যাবার কথা। কথা আছে যে, দুপুরের খাওয়াটা তাঁর ওখানে সেরে নিয়ে আমরা রওনা হব। তাঁকে একটা ফোন করলে হত না?”
ভাদুড়িমশাই বললেন, “ঘন্টাখানেক আগে তাকে ফোন করেছিলুম। কেদারের শরীর বিশেষ ভাল নেই। কাল রাত্তিরে এখান থেকেই সামান্য জ্বর নিয়ে ফিরেছিল। তবে বলেছে যে, কোকরাঝাড়ে যাবে। গায়ে জ্বর নিয়ে যাওয়া উচিত হবে কি না, তা অবশ্য বুঝতে পারছি না।”
ডোরা বললেন, “ফোন একটু আগে আমিও করেছি। দিদির সঙ্গে কথা হল।”
“দিদি কী বললেন?”
“বললেন, জ্বর খুব সামান্যই, সর্দি-জ্বর, কাল রাত্তিরে এখান থেকে ফিরতি পথে ঠান্ডা লেগেছে, তা নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই, গাড়ি চালিয়ে আপনাদের নিয়ে কোকরাঝাড়ে যেতে পারবে।”
“গাড়িটা কোনও ব্যাপার নয়,” ভাদুড়িমশাই বললেন, “ওটা আমিও চালাতে পারি, কিরণবাবু পারেন। তার জন্যে কেদারকে জ্বর-গায়ে কোকরাঝাড়ে যেতে হবে কেন? গাড়িটা পেলে আমরাই চালিয়ে যেতে পারব।”
আমি বললুম, “তা-ই ভাল। কেদারেশ্বর দু’-একটা দিন বিশ্রাম নিন। আমরা বরং এখান থেকে একটা সাইকেল রিকশা নিয়ে ওঁর ওখানে চলে যাই, তারপর ওঁর গাড়িটা নিয়ে বেরিয়ে পড়া যাবে। আমি তো এ-দিককার রাস্তাঘাট মোটামুটি চিনি, তাই কোনও অসুবিধে হবে না।”
“একটা রিকশায় হবে না মশাই,” সদানন্দবাবু বললেন, “আমরা তিনজন প্যাসেঞ্জার, তাই দুটো সাইকেল-রিকশা লাগবে। অবিশ্যি আমাকে যদি সঙ্গে না নেন, তো অন্য কতা।”
মহেশ্বর ফুকন বললেন, “আহা-হা, সাইকেল-রিকশার কথা উঠছে কেন? এ-বাড়িতে দু’-দুটো গাড়ি রয়েছে, তার মধ্যে যেটা খুশি সেটাই আপনাদের কেদারের ওখানে পৌঁছে দিয়ে আসবে। ….আর হ্যাঁ, কেদারের গাড়ি নেবারই বা দরকার কী, ড্রাইভারকে বলে দিচ্ছি, সে-ই আপনাদের কোকরাঝাড় থেকে ঘুরিয়ে আনুক।”
ডোরা বললেন, “ড্যাড, তুমি ঠিক কথাই বলেছ। তবে আমি তোমার কথার সঙ্গে আর-একটা কথা যোগ করতে চাই।”
“আবার কী কথা?”
“এঁরা যখন ও-বাড়ি হয়ে তারপর কোকরাঝাড় যেতে চাইছেন, তখন তা-ই যাবেন। কিন্তু আমি বলি কী, দুপুরের খাওয়াটা ও-বাড়িতে না-খেয়ে বরং এখানেই খেয়ে নিন।”
ভাদুড়িমশাই বললেন, “তা কী করে হয়? কেদার জানে যে, লাঞ্চটা আমরা ও-বাড়িতে করব। অনুপমা নিশ্চয়ই সেই মতো ববেস্থা করে রেখেছে। এখন হুট করে প্ল্যান পালটানো কি ঠিক হবে?”
“বাঃ, তা কি আমি ভেবে দেখিনি নাকি?” ডোরা হেসে বললেন, “দিদির সঙ্গে আমি ফোনেই কথা বলে নিয়েছি। দুপুরে আপনারা এখানেই খাচ্ছেন। শি ওন্ট মাইন্ড।”
“তা হলে তো কথাই নেই। যাঁর বাড়িতে খাবার কথা তিনিই যখন আপনার ব্যবস্থা মেনে নিয়েছেন, তখন আমরা আর আপত্তি করতে যাব কোন দুঃখে?”
“থ্যাঙ্ক ইউ।” ডোরা বললেন, “এবারে আসল কথায় আসি, কোকরাঝাড়ে আপনারা যাচ্ছেন কেন?…মানে কারণটা যে আমি জানি না, তা নয়, তবে আপনাদের মুখেই সেটা শুনতে চাই।”
“যাচ্ছি একটা লোকের সন্ধান করতে। লোকটা হারিয়ে গেছে।”
“আপনাদের চেনা লোক?”
“এক কালে চিনতুম,” ভাদুড়িমশাই বললেন, “তবে অনেক কাল দেখাসাক্ষাৎ নেই। ইন ফ্যাক্ট, আমার চাইতে আপনিই হয়তো তাকে ভাল চিনবেন। এ হচ্ছে সেই লোক, দশই মার্চের পার্টিতে যে আপনাদের এই বাড়িতে এসেছিল, কিন্তু আপনার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেনি।”
একটা বিষাদের ছায়া পড়ল ডোরার মুখে। নিচু গলায় বললেন, “হ্যাঁ, মনে পড়েছে। কিন্তু কেন যে উনি আমার সঙ্গে অমন ব্যবহার করলেন, একটাও কথা না-বলে মুখ ঘুরিয়ে চলে গেলেন, কিছুই বুঝলুম না।” বলতে-বলতেই হেসে উঠলেন ডোরা। উঁচু পর্দায় গলা তুলে বললেন, “কিন্তু আপনি কী করে তাঁকে খুঁজে বার করবেন?”
এবারে ভাদুড়িমশাইও হাসলেন। বললেন, “আপনার ধারণা পারব না? জানেন, আমি একজন মস্ত বড় গোয়েন্দা?”
ডোরা বললেন, “ও-বাড়ির দাদার কাছে তা-ই শুনেছি বটে। দাদার ধারণা, শুধু মস্ত বড় গোয়েন্দা নন, দ্য গ্রেটেস্ট ওয়ন ইন ইয়োর লাইন। কিন্তু আমার ধারণা, দাদা বাড়িয়ে বলেছেন। আরে মশাই, আপনি তো একটা আংটিই এ-বাড়ি থেকে খুঁজে বার করতে পারলেন না। আর এখন কিনা একজন মানুষকে খুঁজে বার করবেন! ফরগেট ইট!”
ভাদুড়িমশাই নিঃশব্দে সব শুনে গেলেন। একবারও প্রতিবাদ করলেন না। তারপর ডোরার কথা শেষ হতে, পাঞ্জাবির ঝুল-পকেট থেকে কাগজে-মোড়া ছোট্ট একটা জিনিস বার করে ডাইনিং টেবিলের উপর দিয়ে ডোরার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন, “এই নিন আপনার আংটি!”