সরলতাই রহস্য। আমার গুরুদেবের কথ্য অথচ গভীরভাব-প্রকাশক ভাষাই আমার আদর্শ। যে-ভাব প্রকাশের অভিপ্রায় থাকে, সেই ভাবই প্রকাশ করিবে।
এত অল্প সময়ের মধ্যে বাংলা ভাষাকে নিখুঁত করিবার চেষ্টা করিলে উহা বাঁধাধরা ভাষায় পরিণত হইবে। ঠিক ঠিক বলিতে গেলে বাঙলা ভাষায় ক্রিয়া নাই। মাইকেল মধুসূদন দত্ত কবিতায় ইহার প্রতিকার করিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন। কবি-কঙ্কন বাঙলার শ্রেষ্ঠ কবি ছিলেন। পতঞ্জলির মহাভাষ্য সংস্কৃত ভাষায় শ্রেষ্ঠ গদ্য; ইহার ভাষা বলিষ্ঠ। হিতোপদেশের ভাষা মন্দ নয়, কিন্তু কাদম্বরীর ভাষা অপকৃষ্টতার দৃষ্টান্ত।
বাঙলা ভাষা বরং পালির ধাঁচে গঠিত হওয়া উচিত, সংস্কৃতের ধাঁচে নয়। কারণ বাঙলার সহিত পালির অধিকতর সাদৃশ্য আছে। বাঙলায় পরিভাষা-শব্দ সৃষ্টির জন্য সংস্কৃত শব্দ ব্যবহার করিতে হইবে এবং নূতন নূতন শব্দ উদ্ভাবন করিবার চেষ্টাও করিতে হইবে। এই উদ্দেশ্যে যদি সংস্কৃত অভিধান হইতে ঐ সকল শব্দ সংগ্রহ করা হয়, তাহা হইলে বাঙলা ভাষা গঠনের প্রভূত সহায়তা হইবে।