দ্বৈতবাদীর মতে ঈশ্বর এবং প্রকৃতি চিরকাল পৃথক্। বিশ্ব ও প্রকৃতি অনন্তকাল ধরিয়া ঈশ্বরাধীন।
চরম অদ্বৈতবাদিগণ এইরূপ তারতম্য করেন না। সর্বশেষ বিচারে তাঁহারা ঘোষণা করিয়া থাকেন যে, যাহা কিছু আছে সবই ব্রহ্ম, তাঁহাতেই বিশ্বপ্রপঞ্চ লয়প্রাপ্ত হয়; ঈশ্বর এই বিশ্বের অনন্ত জীবনস্বরূপ।
তাঁহাদের মতে অসীম ও সসীম—কেবল শব্দমাত্র। ভেদবুদ্ধিবশতই বিশ্বজগৎ প্রকৃতি প্রভৃতি স্বতন্ত্রভাবে দণ্ডায়মান। প্রকৃতি স্বয়ং বিভিন্নতার স্বরূপ।
‘ঈশ্বর এই বিশ্ব সৃষ্টি করিলেন কেন?’ ‘যিনি স্বয়ং পূর্ণ, তিনি এই অপূর্ণ সৃষ্টি করিলেন কেন?’ ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যায় না, কারণ এই ধরনের প্রশ্নগুলি তর্কানুসারে অযৌক্তিক। যুক্তির স্থান প্রকৃতির এলাকার মধ্যে; প্রকৃতির ঊর্ধ্বে উহার কোন অস্তিত্ব নাই। ঈশ্বর সর্বশক্তিমান্, সুতরাং ‘কেন তিনি এইরূপ করিলেন, কেন তিনি ঐরূপ করিলেন?’— ইত্যাদি প্রশ্ন করিলে তাঁহাকে সীমাবদ্ধ করা হয়। যদি তাঁহার কোন উদ্দেশ্য থাকে, তবে তাহা নিশ্চয় কোন লক্ষ্যপ্রাপ্তির উপায়স্বরূপ এবং উহার অর্থ এই দাঁড়ায় যে, ঐ উপায় ব্যতিরেকে ঈশ্বর লক্ষ্য সিদ্ধ করিতে পারেন না। ‘কেন? ও কোথা হইতে?’—ইত্যাদি প্রশ্নগুলি সেই বস্তুর সম্বন্ধেই উঠিতে পারে, যাহার অস্তিত্ব অপর কোন বস্তুর উপর নির্ভর করে।