১৬. পত্রাবলী ২৬৫-২৭৪

২৬৫*

আমেরিকা
মার্চ, ১৮৯৬

প্রিয় আলাসিঙ্গা,
এই সঙ্গে পত্রিকার জন্য তোমাকে ১৬০ ডলার পাঠালাম। আমি আমার শিষ্যদের বলেছি, যাতে তারা তোমার জন্য কিছু গ্রাহক সংগ্রহ করে। জনকয়েক ইতোমধ্যেই পাওয়া গেছে। কাজ চালিয়ে যাও। কিন্তু তুমি মনে রেখো যে, আমাকে লণ্ডন নিউ ইয়র্ক কলিকাতা ও মান্দ্রাজে কাজ চালাতে হচ্ছে। এখন আমি লণ্ডনের কাজে যাচ্ছি। প্রভুর ইচ্ছে হলে এখানে ও ইংলণ্ডে গৈরিক-পরিহিত সন্ন্যাসীতে ছেয়ে যাবে। বত্সগণ, কাজ করে যাও।

মনে রেখো, যতদিন তোমাদের গুরুর উপর শ্রদ্ধা থাকবে, ততদিন কেউ তোমাদের বাধা দিতে পারবে না। ভাষ্য তিনখানির ঐ অনুবাদটি পাশ্চাত্যবাসীদের দৃষ্টিতে একটা মস্ত বড় কাজ হবে।

ঐ ‘সর্বজনীন ভাবের মন্দির’টি (Temple of the Universal Spirit) আমি ছেড়ে দিয়েছি—এখন একটা নূতন নাম দিয়েছি … । ইতোমধ্যেই আমার দুইজন সন্ন্যাসী শিষ্য ও কয়েক শত গৃহস্থ শিষ্য হয়েছে; কিন্তু বত্স, জনকয়েক ছাড়া তাদের অধিকাংশই গরীব; তবে জনকয়েক খুব ধনীও আছে। এ সংবাদটি এখনই প্রকাশ করে দিও না যেন। যথাসময়ে আমি জনসাধারণের সামনে আবার আত্মপ্রকাশ করব। স্থির হয়ে থাক, বত্স! স্থির হও, আর কাজ করে যাও। ধৈর্য, ধৈর্য! আগামী বত্সর আমি নিউ ইয়র্কে একটি মন্দির করবার আশা রাখি; তারপর প্রভু জানেন।

এখানে একখানি পত্রিকা চালাব; লণ্ডনে যাচ্ছি এবং যদি প্রভুর কৃপা হয়, তবে ওখানেও তাই করব। আমার ভালাবাসাদি জানবে। ইতি

তোমাদের
বিবেকানন্দ

২৬৬*

আমেরিকা
১৮৯৬

প্রিয় আলাসিঙ্গা,
গত সপ্তাহে আমি তোমাকে ‘ব‍্রহ্মবাদিন্’ সম্বন্ধে লিখেছিলাম। তাতে ‘ভক্তি’ সম্বন্ধে বক্তৃতাগুলির কথা লিখতে ভুলে গিয়েছিলাম। ঐগুলি সব একসঙ্গে পুস্তিকাকারে বের করা উচিত। কয়েক শত আমেরিকায় নিউ ইয়র্কে গুডইয়ারের নামে পাঠাতে পার। আমি বিশ দিনের মধ্যে জাহাজে ইংলণ্ড রওনা হচ্ছি। কর্মযোগ, জ্ঞানযোগ ও রাজযোগ সম্বন্ধে আমার আরও বড় বড় বই আছে। ‘কর্মযোগ’ ইতোমধ্যেই বেরিয়ে গেছে। ‘রাজযোগ’খানা খুব বড় হবে—তাও যন্ত্রস্থ হয়েছে। ‘জ্ঞানযোগ’খানা বোধ হয় ইংলণ্ড থেকে ছাপাতে হবে।

তোমরা ‘ব‍্রহ্মবাদিন্’-এ কৃ—র একখানা পত্র ছেপেছ, কাজটা ভাল হয়নি। … ‘ব‍্রহ্মবাদিন্’-এর সুরের সঙ্গে ওটি খাপ খায় না। … কোন সম্প্রদায়—ভালই হোক, আর মন্দই হোক, তাদের বিরুদ্ধে ‘ব‍্রহ্মবাদিন্’-এ কিছু ছাপান যেন না হয়। অবশ্য বুজরুকদের প্রতি গায়ে পড়ে সহানুভূতি দেখাবারও কোন আবশ্যক নেই। আবার তোমাদের জানিয়ে রাখছি, কাগজটা এতই পারিভাষিক হয়ে পড়েছে যে, এখানে এর গ্রাহক বড় হবে না। সাধারণ পাশ্চাত্যদেশবাসী ঐ সব দাঁতভাঙ্গা সংস্কৃত কথা বা পরিভাষা জানেও না, জানবার বিশেষ আগ্রহও রাখে না। এইটুকু আমি দেখছি যে, কাগজটা ভারতের পক্ষে বেশ উপযোগী হয়েছে। কোন একটা মতবিশেষের ওকালতি করা হচ্ছে, এমন একটি কথাও যেন সম্পাদকীয় প্রবন্ধে না থাকে। আর সর্বদা মনে রেখো যে, তোমরা শুধু ভারত নয়, সমগ্র জগৎকে সম্বোধন করে কথা বলছ; আর তোমরা যা বলতে চাইছ, জগৎ তার সম্বন্ধে একেবারে অজ্ঞ। প্রত্যেক অনূদিত সংস্কৃত শব্দ খুব সাবধানে ব্যবহার করো; আর ভাষা যতটা সম্ভব সহজ করবার চেষ্টা করো।

তোমরা এই পত্র পাবার আগেই আমি ইংলণ্ড পৌঁছে যাব। সুতরাং আমাকে স্টার্ডির ঠিকানায়—হাইভিউ, কেভার্শ্যাম, ইংলণ্ড—পত্র লিখবে। ইতি

তোমাদের বিবেকানন্দ

২৬৭*

চিকাগো
৬ এপ্রিল, ১৮৯৬

প্রিয় মিসেস বুল,
আপনার হৃদ্যতাপূর্ণ পত্রখানি যথাসময়ে পেয়েছি। বন্ধুগণের সঙ্গে আমি ইতোমধ্যে অনেক সুন্দর স্থান দেখেছি এবং অনেকগুলি ক্লাস করেছি। আরও কয়েকটি ক্লাস করতে হবে, তারপর আগামী বৃহস্পতিবার রওনা হব।

মিস এডামসের অনুগ্রহে এখানকার সব ব্যবস্থাই সুন্দর হয়েছে; তিনি এত ভাল এবং দরদী! গত দুইদিন যাবৎ সামান্য একটু জ্বরে ভুগছি বলে দীর্ঘ পত্র লিখতে পারলাম না।বোষ্টনের সকলকে আমার ভালবাসা জানাবেন। ইতি

বিবেকানন্দ

২৬৮*

125, East, 44th St, নিউ ইয়র্ক
১৪ এপ্রিল, ১৮৯৬

প্রিয়—,
… এই অনুসন্ধিৎসু ভদ্রলোকটি বোম্বে থেকে একখানি চিঠি নিয়ে এখানে আমার কাছে এসেছেন। ভদ্রলোক যন্ত্রশিল্পে দক্ষ (practical mechanic), এবং তাঁর একমাত্র ইচ্ছা এই যে, তিনি এদেশের ছুরি, কাঁচি ও অন্যান্য লৌহ নির্মিত দ্রব্যগুলির কারখানা দেখে বেড়ান। … আমি তাঁর সম্বন্ধে কিছুই জানি না; তিনি যদি মন্দ লোকও হন, তা হলেও আমার স্বদেশবাসীদের ভেতর এরকম বেপরোয়া সাহসের ভাব দেখলে উৎসাহ দিতেই ইচ্ছা করি। তাঁর নিজের খরচ চালাবার মত যথেষ্ট টাকা আছে।

লোকটি কতদূর সাচ্চা—এ সম্বন্ধে পরীক্ষা করে যদি আপনি সন্তুষ্ট হন, তা হলে তাঁকে সুবিধা দেবেন; তিনি ঐ কারখানাগুলি দেখবার একটা সুযোগ চান মাত্র। আশা করি, তিনি খাঁটি লোক, আর আপনি তাঁকে এ বিষয়ে সাহায্য করতে পারেন। আমার আন্তরিক শ্রদ্ধাদি জানবেন। ইতি

ভবদীয়
বিবেকানন্দ

২৬৯*

[ডাঃ নাঞ্জুণ্ড রাওকে লিখিত]

নিউ ইয়র্ক
১৪ এপ্রিল, ১৮৯৬

প্রিয় ডাক্তার,
আজ সকালে আপনার চিঠি পেলাম। আগামী কাল আমি ইংলণ্ডে রওনা হচ্ছি, তাই আপনাকে দু-চারটি মাত্র আন্তরিক কথা লিখতে পারব। ছেলেদের প্রস্তাবিত কাগজের বিষয়ে আমার সম্পূর্ণ সহানুভূতিটি আছে এবং তা চালিয়ে যাবার জন্য আমি যথাসাধ্য সাহায্যও করব। আপনার উচিত, ‘ব‍্রহ্মবাদিন্’-এর ধারা অবলম্বন করে কাগজটাকে স্বাধীনমতাবলম্বী করা; কেবল ভাষা ও লেখাগুলো যাতে আরও সহজবোধ্য হয়, সেদিকে বিশেষ নজর রাখবেন। ধরুন, আমাদের সংস্কৃত সাহিত্যে যে-সব অপূর্ব গল্প ছড়ান আছে, তা সহজবোধ্য ভাষায় আবার লেখা ও জনপ্রিয় করা দরকার; এই একটা মস্ত সুযোগ রয়েছে, যা হয়তো আপনারা স্বপ্নেও ভাবেননি। এই জিনিষটাই আপনাদের কাগজের একটা উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হবে। যেমন সময় পাব, তেমন আপনাদের জন্য আমি যত বেশী পারি—গল্প লিখব। কাগজটাকে খুব পাণ্ডিত্যপূর্ণ করবার চেষ্টা একেবারে ত্যাগ করুন, তার জন্য ‘ব‍্রহ্মবাদিন্’ রয়েছে। এভাবে চললে কাগজটা ধীরে ধীরে সমস্ত পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে নিশ্চয়ই। ভাষাটা যতদূর সম্ভব সহজ করবেন, তা হলেই আপনারা সফল হবেন। গল্পের ভেতর দিয়ে ভাব দেওয়াই হবে প্রধান বৈশিষ্ট্য। কাগজটাকে জটিল দার্শনিক তত্ত্ববহুল মোটেই করবেন না। লেনদেনের দিকটা সম্পূর্ণরূপে নিজের হাতে রাখবেন—অনেক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট। ভারতে একটা জিনিষের বড়ই অভাব—একতা বা সংহতিশক্তি, তা লাভ করবার প্রধান রহস্য হচ্ছে আজ্ঞানুবর্তিতা।

কলিকাতায় বাঙলা ভাষায় একখানি পত্রিকা আরম্ভ করতে সাহায্য করব বলে কথা দিয়েছি। কিন্তু ব্যাপার এই—প্রথম দু-বছরই মাত্র বক্তৃতার জন্য টাকা আদায় করেছি; গত দু-বছর আমার কাজের সঙ্গে দেনা-পাওনার কোন সম্পর্ক ছিল না। এর ফলে আপনাকে বা কলিকাতার লোকদের পাঠাবার মত টাকা আমার মোটেই নেই। তথাপি আপনাকে সাহায্য করতে পারে, এমন লোক আমি শীঘ্রই জুটিয়ে দেব। বীরের মত এগিয়ে চলুন। একদিনে বা এক বছরে সফলতার আশা করবেন না। সর্বদা শ্রেষ্ঠ আদর্শকে ধরে থাকুন। দৃঢ় হউন, ঈর্ষা ও স্বার্থপরতা বিসর্জন দিন। নেতার আদেশ মেনে চলুন; আর সত্য, স্বদেশ ও সমগ্র মানবজাতির নিকট চিরবিশ্বস্ত হউন; তা হলেই আপনি জগৎ কাঁপিয়ে তুলবেন। মনে রাখবেন—ব্যক্তিগত ‘চরিত্র’ এবং ‘জীবন’ই শক্তির উৎস, অন্য কিছু নহে। এই চিঠিখানা রেখে দেবেন এবং যখনই উদ্বেগ ও ঈর্ষার ভাব মনে উঠবে, তখনই এই শেষের কটা লাইন পড়বেন। ঈর্ষাই সমস্ত দাসজাতির ধ্বংসের কারণ। এ থেকেই আমাদের জাতির সর্বনাশ। এটি সর্বদা পরিত্যাজ্য। আপনার সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল হোক; আপনার সাফল্য কামনা করি। ইতি

আপনার স্নেহপরায়ণ
বিবেকানন্দ

২৭০*

[হেল ভগিনীগণকে লিখিত]

6 West, 43rd St., নিউ ইয়র্ক
১৪ এপ্রিল, ১৮৯৬

স্নেহের ভগিনীগণ,
রবিবার নিরাপদে এসে পৌঁছেছি এবং অসুস্থতার জন্য আগে চিঠি দিতে পারিনি। হোয়াইট স্টার লাইনের ‘জার্মানীক’ জাহাজে আগামী কাল বেলা বারটায় যাত্রা করছি। ভালবাসা, কৃতজ্ঞতা ও আশীর্বাদের চিরস্থায়ী স্মৃতির সঙ্গে—

তোমাদের চির স্নেহের ভ্রাতা
বিবেকানন্দ

২৭১

[স্বামী ত্রিগুণাতীতানন্দকে লিখিত]

নিউ ইয়র্ক
১৪ এপ্রিল, ১৮৯৬

কল্যাণবরেষু,
তোমার পত্রে সবিশেষ অবগত হইলাম। শরৎ পৌঁছিয়াছে সংবাদ পাইলাম। তোমার প্রেরিত Indian Mirror (ইণ্ডিয়ান মিরর) ও পত্র পাইলাম। লেখা উত্তম হইতেছে, বরাবর লিখিয়া যাও। দোষ দেখা বড়ই সহজ, গুণ দেখাই মহাপুরুষের ধর্ম—এ-কথা ভুলিবে না। ‘মুগের ডাল তৈয়ার হয় নাই’ মানে কি? ভাজা মুগের ডাল পাঠাইতে আমি পূর্বেই নিষেধ করিয়াছি, ছোলার ডাল ও কাঁচা মুগের ডাল পাঠাইতে বলি। ভাজা মুগ এতদূর আসিতে খারাপ ও বিস্বাদ হইয়া যায়, সিদ্ধ হয় না। যদি এবারও ভাজা মুগ হয়, টেমসের জলে যাইবে ও তোমাদের পণ্ডশ্রম। আমার চিঠি না পড়িয়াই কাজ কেন কর? চিঠি হারাও বা কেন? যখন চিঠি লিখবে, পূর্বের পত্র সম্মুখে রাখিয়া লিখিবে। তোমাদের একটু business (কাজ-চালানর) বুদ্ধি আবশ্যক। যে-সকল কথা আমি জিজ্ঞাসা করি, তাহার উত্তর প্রায়ই পাই না—কেবল আবোল-তাবোল! … চিঠি হারায় কেন? ফাইল হয় না কেন? সকল কাজেই ছেলেমানুষি! আমার চিঠি হাটের মাঝে পড়া হয় বুঝি? আর যে আসে, সে-ই ফাইল টেনে চিঠি পড়ে বুঝি? … You need a little business faculty. … Now what you want is organization—that requires strict obedience and division of labour. I will write out everything in every particular from England, for which I start to-morrow. I am determined to make you decent workers thoroughly organized. ৯৪

‘Friend’ (ফ্রেণ্ড—বন্ধু) শব্দ সকলের প্রতি ব্যবহৃত হয়। ইংরেজী ভাষায় ও-সকল cringing politeness (দীনা হীনা ভদ্রতা) নাই; ঐ সকল বাঙলা শব্দের তর্জমা হাস্যাস্পদ হয়। রামকৃষ্ণ পরমহংস, ঈশ্বর, ভগবান্—ও-সকল এদেশে কি চলে? M—has a tendency to put that stuff down everybody’s throat, but that will make our movement a little sect. You keep separate from such attempts. At the same time, if people worship him as God, no harm. Neither encourage, nor discourage. The masses will always have the person, the higher ones, the principle; we want both. But principles are universal, not persons. Therefore stick to the principles he taught; let people think whatever they like of this person. … Truce to all quarrels and jealousy and bigotry! These will spoil everything. ‘The first should be last and the last first’.৯৫

‘মদ্ভক্তানাঞ্চ যে ভক্তাস্তে মে ভক্ততমা মতাঃ’ (আমার ভক্তগণের যাহারা ভক্ত, তাহারাই আমার শ্রেষ্ঠ ভক্ত)। ইতি

বিবেকানন্দ

২৭২*

[মিঃ স্টার্ডিকে লিখিত]

Waveney Mansions
Fairhazel Gardens, London
এপ্রিল, ১৮৯৬, বৃহস্পতিবার অপরাহ্ণ

প্রিয় স্টার্ডি,
আমি সকালবেলা তোমাকে বলতে ভুলে গিয়েছিলাম যে, অধ্যাপক ম্যাক্সমূলার চিঠিতে জানিয়েছেন—যদি আমি অক্সফোর্ডে বক্তৃতা করতে যাই, তিনি যথাসাধ্য সাহায্য করবেন।

তোমার স্নেহবদ্ধ
বিবেকানন্দ

পুনঃ—শঙ্কর পাণ্ডুরঙ্গ কর্তৃক সম্পাদিত অথর্ববেদ-সংহিতার জন্য তুমি কি চিঠি লিখেছ?

—বি

২৭৩

[স্বামী রামকৃষ্ণানন্দকে লিখিত]

হাইভিউ, কেভার্শ্যাম
রিডিং, ইংলণ্ড
সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ১৮৯৬

কল্যাণবরেষু,
শরতের মুখে সবিশেষ অবগত … হইলাম। ‘দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল’—একথা সর্বদা মনে রাখিবে। … আমি নিজের কর্তৃত্বলাভের আশায় নয়, কিন্তু তোমাদের কল্যাণ ও প্রভুর অবতীর্ণ হইবার উদ্দেশ্য সফলের জন্য লিখিতেছি। তিনি তোমাদের ভার আমার উপর দিয়াছিলেন এবং তোমাদের দ্বারা জগতের মহাকল্যাণ হইবে, যদিও অনেকেই এক্ষণে তাহা অবগত নও; এজন্যই বিশেষ লিখিতেছি, মনে রাখিবে। তোমাদের মধ্যে দ্বেষভাব ও অহমিকা প্রবল হইলে বড়ই দুঃখের বিষয়। যারা দশজনে দশদিন প্রীতির সহিত বাস করিতে সক্ষম নহে, তাহাদের দ্বারা জগতে প্রীতিস্থাপন কি সম্ভব? নিয়মবদ্ধ হওয়া ভাল নয় বটে, কিন্তু অপক্ব অবস্থায় নিয়মের বশে চলা আবশ্যক—অর্থাৎ প্রভু যে প্রকার আদেশ করিতেন যে, কচিগাছের চারিদিকে বেড়া দিতে হয় ইত্যাদি। দ্বিতীয়তঃ অলস মনে অনেক পরচর্চা, দলাদলি প্রভৃতি ভাব সহজেই আসে। সেইজন্য নিম্নলিখিত নির্দেশগুলি লিখিতেছি। তদনুযায়ী কাজ যদি কর, পরম মঙ্গল হইবে, তাহাতে আর সন্দেহ নাই। না যদি কর, শীঘ্রই সমস্ত পরিশ্রম বিফল হইবার সম্ভাবনা।

প্রথমতঃ মঠ চালাইবার সম্বন্ধে লিখিঃ

১। মঠের জন্য একটা যথেষ্ট স্থান সহিত বাটী ভাড়া লইবে অথবা বাগান, যাহাতে প্রত্যেকের জন্য এক একটি ছোট ঘর হয়। একটা বড় হল পুস্তকাদি রাখিবার জন্য, এবং একটি ছোট ঘর—সেখানে লোকজনের সহিত দেখাশুনা করিবে। যদি সম্ভব হয়—আরও একটা বড় হল ঐ বাটীতে থাকার আবশ্যক, যেখানে প্রত্যহ শাস্ত্র ও ধর্মচর্চা সাধারণের জন্য হইবে।

২। কোন লোক মঠে আসিলে সে যার সহিত দেখা করিতে চায়, তারই সঙ্গে দেখা করিয়া চলিয়া যাইবে, অপরকে দিক্ না করে।

৩। এক একজন পরিবর্তন করিয়া প্রত্যহ কয়েক ঘণ্টা উক্ত হলে সর্বসাধারণের নিমিত্ত উপস্থিত থাকিবে—যাহাতে সাধারণ লোক যাহা জিজ্ঞাসা করিতে আসে, তাহার সদুত্তর পায়।

৪। যে যার আপনার ঘরে বাস করিবে—বিশেষ কার্য না পড়িলে আর একজনের ঘরে কিছুতেই যাইবে না। পুস্তকাগারে যাহার পড়িবার ইচ্ছা হইবে, যাইয়া পাঠ করিবে। কিন্তু তথায় তামাক খাওয়া বা অপরের সহিত কথাবার্তা একেবারেই নিষেধ করিবে। নিঃশব্দে পাঠ করিতে হইবে।

৫। সারাদিন সকলে পড়ে (মিলে) একটা বাজে কথা কওয়া ও বাহিরের লোক যে-সে আসছে ও সেই গোলমালে যোগ দিচ্ছে, তাহা একেবারেই নিষেধ।

৬। কেবল যাহারা ধর্মজিজ্ঞাসু, তাহারা শান্তভাবে আসিয়া সাধারণ হলে বসিয়া থাকিবে ও যাহাকে চায় তাহার সহিত দেখা করিয়া চলিয়া যাইবে। অথবা কোন সাধারণ জিজ্ঞাস্য থাকে, সেদিনকার জন্য যিনি সেই কার্যের ভার পাইয়াছেন, তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিয়া চলিয়া যাইবে।

৭। একজনের কথা আর একজনকে বলা বা গুজোগুজি, পরনিন্দা একেবারেই ত্যাগ করিবে।

৮। একটা ছোট ঘর অফিস হইবে। যিনি সেক্রেটারী, তিনি সেই ঘরে থাকিবেন ও সেই ঘরে কালি, কাগজ, চিঠি লিখিবার সরঞ্জাম ইত্যাদি সমস্ত থাকিবে। তিনি সমস্ত আয়ব্যয়ের হিসাব রাখিবেন ও যে-সমস্ত চিঠিপত্র ইত্যাদি আসে, তাহা তাঁহার নিকট আসিবে ও তিনি পত্রাদি না খুলিয়া যাহার যাহার নামে তাহাকে তাহাকে বাঁটিয়া দিবেন। পুস্তক ও পত্রিকাদি পুস্তকাগারে যাইবে।

৯। একটা ছোট ঘর থাকিবে তামাক খাইবার জন্য। তদ্ভিন্ন অপর কোন স্থানে তামাক খাইবার আবশ্যক নাই।

১০। যিনি গালিমন্দ বা ক্রোধাদি করিতে চান, তাঁহাকে ঐ সকল কার্য মঠের বাহিরে যাইয়া করিতে হইবে। ইহার অন্যথা তিলমাত্র না হয়।

শাসন সমিতি

১। একজন মহান্ত প্রতি বৎসর নির্বাচন করিবে অধিক লোকের মত লইয়া। দ্বিতীয় বৎসর আর একজন ইত্যাদি।

২। এ বৎসর রাখালকে মহান্ত কর, তদ্বৎ আর একজনকে সেক্রেটারী কর; তদ্বৎ আর একজন পূজাপত্র ও রান্নাবান্নার তদারক করিবার জন্য নির্বাচন কর।

৩। সেক্রেটারীর আর এক কাজ—তিনি সকলের স্বাস্থ্যের উপর নজর রাখিবেন। এই বিষয়ে তিনটি উপদেশ আছে—

১ম—প্রত্যেক ঘরে প্রত্যেক লোকের জন্য এক একটি নেয়ারের খাটিয়া ও তোষক ইত্যাদি (থাকিবে)। প্রত্যেককে আপনার আপনার ঘর পরিষ্কার করিতে হইবে।

২য়—রান্না ও খাওয়ার জন্য জল যাহাতে পরিষ্কার ও দোষহীন হয়, তাহা অবশ্যই করিবে; কারণ দুষ্ট বা অপরিষ্কৃত জলে ভোগ রাঁধিলে মহাপাপ হয়।

৩য়—শরৎকে যে প্রকার কোট করিয়া দিয়াছ, ঐ প্রকার গেরুয়া আলখাল্লা প্রত্যেককে দুটি করিয়া দিবে এবং কাপড়-চোপড় যাহাতে পরিষ্কার থাকে (তাহা দেখিবে); … বাটী অত্যন্ত পরিষ্কার যাহাতে হয়—নীচের উপরের সমস্ত ঘর—(সেদিকে নজর রাখিবে)।

৪। যে কেউ সন্ন্যাসী হতে চায়, প্রথমে তাহাকে ব্রহ্মচারী করিবে—এক বৎসর মঠে, এক বৎসর বাহিরে—তার পর সন্ন্যাসী করিয়া দিবে।

৫। ঠাকুরপূজার ভার উক্ত ব্রহ্মচারীদের মধ্যে একজনকে দিবে এবং মধ্যে মধ্যে বদলাইয়া দিবে।

বিভাগ

মঠে এই কয়েকটি বিভাগ থাকিবে, যথাঃ (১) বিদ্যা-বিভাগ, (২) প্রচার-বিভাগ, (৩) সাধন-বিভাগ।

বিদ্যা-বিভাগঃ যাহারা পড়িতে চায়, তাহাদের জন্য পুস্তকাদি ও অধ্যাপক সংগ্রহ—এই বিভাগের উদ্দেশ্য। প্রত্যহ প্রাতঃকালে এবং সায়ংকালে তাহাদের জন্য অধ্যাপক উপস্থিত থাকিবে।

প্রচার-বিভাগঃ মঠবাসী ও প্রবাসী। মঠবাসী প্রচারকেরা প্রত্যহ শাস্ত্রাদিপাঠ ও প্রশ্নোত্তরাদি দ্বারা জিজ্ঞাসুদের শিক্ষা দিবে। প্রবাসীরা গ্রামে গ্রামে প্রচার করিবে ও স্থানে স্থানে উক্তরূপ মঠ স্থাপনের চেষ্টা করিবে।

সাধন-বিভাগঃ যাঁহারা সাধন-ভজন করিতে চান, তাঁহাদের আপন আপন ঘরে সাধন-ভজনের যাহা আবশ্যক—তাহার সহায়তা করা ইত্যাদি। কিন্ত একজন সাধন করেন বলিয়া আর কাউকেও যে পড়িতে দিবেন না, অথবা প্রচার করিতে দিবেন না—এ প্রকার না হয়। যিনি উৎপাত করিবেন, তাঁহাকে অন্তর (তফাৎ) হইতে তৎক্ষণাৎ বলিবে—ইহাতে অন্যথা না হয়।

মঠবাসী প্রচারকেরা পর্যায়ক্রমে ভক্তি জ্ঞান যোগ ও কর্মসম্বন্ধে উপদেশ করিবেন, এবং তৎসম্বন্ধে দিবস ও সময় নির্দিষ্ট করিয়া উক্ত শিক্ষাগৃহের দ্বারে লটকাইয়া দিবেন—অর্থাৎ যাহাতে ভক্তিজিজ্ঞাসু জ্ঞানশিক্ষার দিনে আসিয়া আঘাত না পায় ইত্যাদি। বামাচার সাধনে উপযুক্ত তোমরা কেহই নহ; অতএব বামমার্গের নামগন্ধও মঠে যেন না হয়। যিনি এ-কথা না শুনিবেন, তাঁহার স্থান বাহিরে। ওঁ-সাধনের নাম পর্যন্ত যেন মঠে না হয়। ‘তাঁর’ ঘরে যে- দুর্বৃত্ত বিকট বামাচার ঢোকায়, তার ইহ-পরকাল উৎসন্ন হইবে।

কয়েকটি সাধারণ নির্দেশ

১। কোন স্ত্রীলোক যদি কোন সন্ন্যাসীর সহিত দেখা করিতে আইসে, তাহা হইলে সাধারণ গৃহে যাইয়া কথাবার্তা কহিবে। কোন স্ত্রীলোক অন্য কোন ঘরে প্রবেশ করিতে পাইবে না, ঠাকুরঘর ছাড়া।

২। কোন সন্ন্যাসী মেয়েদের মঠে যাইয়া বাস করিতে পাইবে না। যদি না শুনে, মঠ হইতে দূর করিবে। দুষ্ট গরু অপেক্ষা শূন্য গোয়াল (ভাল)। …

৩। দুশ্চরিত্র লোকের একেবারেই প্রবেশ নিষেধ। কোন অছিলায় তাদের ছায়া যেন আমাদের ঘরে না পড়ে। যদি তোমাদের মধ্যে কেউ দুশ্চরিত্র হয়, যে-কেহ হউক—তৎক্ষণাৎ বিদায় কর। দুষ্ট গরুর দরকার নাই। প্রভু অনেক ভাল ভাল লোক আনিবেন।

৪। শিক্ষা দিবার গৃহে ও সময়ে, এবং প্রচারের গৃহে ও সময়ে যে-কোন স্ত্রীলোক আসিতে পারেন; কিন্তু উক্ত সময় অতীত মাত্রেই চলিয়া যাইতে হইবে।

৫। কোন ক্রোধ বা ঈর্ষা প্রকাশ, বা গোপনে একজনের নিন্দা আর একজনের কাছে কদাচ করিবে না। … একজন আর একজনের দোষ দেখিতে খুব মজবুত—আপনার দোষগুলি কেউ সারাইবেন না!

৬। আহারের নির্দিষ্ট সময় যেন হয়। প্রত্যেকের বসিবার জন্য একটা আসন ও খাইবার জন্য একটা ছোট চৌকি (থাকিবে)—আসনে বসে চৌকির উপর থালা রেখে খাবে—যে প্রকার রাজপুতানায়।

কর্মচারী – সভা (office-bearers)

 

সমস্ত অফিসার—তোমরা করিয়া লইবে ব্যালটের দ্বারায়, যে প্রকার ‘বুদ্ধ মহারাজে’র আজ্ঞা—অর্থাৎ একজন প্রপোজ (প্রস্তাব) করিল, ‘অমুক এক বৎসরের জন্য মহান্ত হউক।’ সকলে ‘হ্যাঁ’ কি ‘না’ কাগজে লিখিয়া একটা কুম্ভে নিক্ষেপ করিবে। যদি ‘হ্যাঁ’ অধিক হয়, তিনি মহান্ত (হইবেন) ইত্যাদি।

যদিও তোমরা উক্ত প্রকারে অফিসার বাছিয়া লইবে, তথাপি আমি suggest (প্রস্তাব) করি যে, এ বৎসর রাখাল মহান্ত, তুলসী সেক্রেটারী ও ট্রেজারার, গুপ্ত লাইব্রেরিয়ান, শশী কালী হরি ও সারদা পর্যায়ক্রমে পড়াবার ও উপদেশ করবার ভার লউক—ইত্যাদি। সারদা যে কাগজ বার করতে চেয়েছে, সে উত্তম কথা বটে; কিন্তু সকলে মিলেমিশে করতে পার তো আমার সম্মতি আছে।

মতামত সম্বন্ধে এই যে, যদি কেউ পরমহংসদেবকে অবতার ইত্যাদি বলে মানে উত্তম কথা, না মানে উত্তম কথা। সার এই যে, পরমহংসদেব চরিত্রসম্বন্ধে পুরাতন ঠাকুরদের উপরে যান এবং শিক্ষাসম্বন্ধে সকলের চেয়ে উদার ও নূতন এবং Progressive (প্রগতিশীল) অর্থাৎ পুরানোরা সব একঘেয়ে—এ নূতন অবতার বা শিক্ষকের এই শিক্ষা যে, এখন যোগ ভক্তি জ্ঞান ও কর্মের উৎকৃষ্ট ভাব এক করে নূতন সমাজ তৈয়ারী করতে হবে। … পুরানোরা বেশ ছিলেন বটে, কিন্তু এ যুগের এই ধর্ম—একাধারে যোগ জ্ঞান ভক্তি ও কর্ম—আচণ্ডালে জ্ঞান-ভক্তি দান—আবালবৃদ্ধবনিতা। ও-সকল কেষ্ট বিষ্টু বেশ ঠাকুর ছিলেন; কিন্তু রামকৃষ্ণে একাধারে সব ঢুকে গেছেন। সাধারণ লোকের পক্ষে এবং প্রথম উদ্যোগীর পক্ষে নিষ্ঠা বড়ই আবশ্যক—অর্থাৎ শিক্ষা দাও যে, অন্য সকল দেবকে নমস্কার, কিন্তু পূজা রামকৃষ্ণের। নিষ্ঠা ভিন্ন তেজ হয় না—তা না হলে মহাবীরের ন্যায় প্রচার হয় না। আর ও-সব পুরানো ঠাকুরদেবতা বুড়িয়ে গেছে—এখন নূতন ভারত, নূতন ঠাকুর, নূতন ধর্ম, নূতন বেদ। হে প্রভো, কবে এ পুরানোর হাত থেকে উদ্ধার পাবে আমাদের দেশ! গোঁড়ামি না হলে কল্যাণ দেখছি কই? তবে অপরের দ্বেষ ত্যাগ করতে হবে।

যদি আমার বুদ্ধিতে চলা তোমাদের উচিত বিচার হয় এবং এই সকল নিয়ম পালন কর, তাহলে আমি মঠভাড়ার এবং সমস্ত খরচ-পত্র পাঠিয়ে দেব। নতুবা তোমাদের সঙ্গত্যাগ—একদম। অপিচ গৌর-মা, যোগীন-মা প্রভৃতিকে এই চিঠি দেখিয়ে তাঁহাদের দিয়ে ঐ প্রকার একটা মেয়েদের জন্য স্থাপন করাইবে। সেখানে গৌর-মাকে এক বৎসর মহান্ত করিবে ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু তোমাদের মধ্যে কেউই সেখানে যেতে পাবে না। তারা আপনারা সমস্ত করিবে, তোমাদের হুকুমে কাউকে চলিতে হবে না। তারও সমস্ত খরচ-পত্র আমি পাঠিয়ে দেব।

প্রভু তোমাদের সৎবুদ্ধি দিন! দু-জন জগন্নাথ দেখতে গেল—একজন দেখলে ঠাকুর, আর একজন দেখলে পুঁই গাছ!!! বাপু হে, তোমরা সকলেই তাঁর সেবায় ছিলে বটে, কিন্তু যখনই মন ফুলে আমড়া গাছ হবে, তখনই মনে করো যে, থাকলে কি হয় তাঁর সঙ্গে?—দেখেছ কেবলই পুঁই গাছ! যদি তা না হত তো এত দিনে প্রকাশ হত। তিনি নিজেই বলতেন, নাচিয়ে গাহিয়ে তারা নরকে যাইবে—ঐ নরকের মূল ‘অহঙ্কার’। ‘আমিও যে, ও-ও সে’—বটে রে মধো? ‘আমাকেও তিনি ভালবাসতেন’—হায় মধুরাম, তাহলে কি তোমার এ দুর্গতি হয়? … এখনও উপায় আছে—সাবধান! মনে রেখ যে, তাঁর কৃপায় বড় বড় দেবতার মত মানুষ তৈয়ারী হয়ে যাবে, যেখানে তাঁর দয়া পড়বে। … এখনও সময় আছে, সাবধান! Obedience is the first duty (আজ্ঞাবহতাই প্রথম কর্তব্য)—যা বলি, করে ফেল দেখি! এই কটা ছোট্ট ছোট্ট কাজ প্রথমে কর দেখি—তারপর বড় বড় কাজ ক্রমে হবে। অলমিতিL

নরেন্দ্র

পুঃ—এই চিঠি সকলকে পড়াবে এবং তদনুযায়ী কাজ করা যদি উচিত বোধ হয়, আমাকে লিখবে। রাখালকে বলবে—যে সকলের দাস, সে-ই সকলের প্রভু। যার ভালবাসায় ছোট বড় আছে, সে কখনও অগ্রণী হয় না। যার প্রেমের বিরাম নাই, উচ্চ নীচ নাই, তার প্রেম জগৎ জয় করে।

নরেন্দ্র

২৭৪

High View, Caversham, Reading
C/o E. T. Sturdy, Esq.,
১৮৯৬

প্রিয়—,
… প্রত্যেকে পূর্ণ উদ্যম প্রকাশ না করলে কি কোন কাজ সম্পন্ন হয়? ‘উদ্যোগিনং পুরুষসিংহমুপৈতি লক্ষ্মীঃ’—সিংহহৃদয় কাজের মানুষের কাছেই লক্ষ্মীদেবী এসে থাকেন।

পেছন ফিরে তাকানর প্রয়োজন নেই। আগে চল! আমাদের চাই অনন্ত শক্তি, অফুরন্ত উৎসাহ, সীমাহীন সাহস, অসীম ধৈর্য, তবেই আমরা বড় বড় কাজ করতে পারব। … ইতি

তোমাদের স্নেহশীল
বিবেকানন্দ