টেলিফোনে তুমি

টেলিফোনে তুমি সেদিন সন্ধেবেলা
কান্নায় ভেঙে পড়েছিলে প্রিয়তমা।
বুঝতে পারিনি তোমার ভেতরে কত
ক্ষোভ, কত ব্যথা আর হাহাকার ছিল জমা।

তোমার হৃদয় গোলাপ বাগান জেনে
ছিলাম ব্যস্ত একাকী নিজেরই মনে।
তোমার গোলাপ ছিন্ন হয়েছে শুধু
এবং আমিও বিদ্ধ কাঁটার বনে।

যে যুগে আমরা করি আজ বসবাস,
তার সন্ত্রাসে জীবনের ভিত কাঁপে।
তুমি কি কখনও দেখনি আমার মুখ
কেমন দগ্ধ প্রাক্তন অভিশাপে?

চৌদিকে কত ভীষণ দৃশ্য দেখি,
জ্যোৎস্না রাতের প্রহরও মাতমে কাটে।
তবুও অনেক ভাঙা সেতু পার হ’য়ে
ক্যামেলিয়া হাতে বসেছি তোমার ঘাটে।

কখনও সখনও রুক্ষ চলার পথে
ঝড়ঝাপটায় যদি ভুল হ’য়ে যায়
হয়ো না ক্রুদ্ধ অথবা হতাশাময়,
আজও তোমাকেই জীবন আমার চায়।

হঠাৎ যখন মৃত্যুর ছায়া কাঁপে,
তোমার কথাই খুব বেশি ক’রে ভাবি।
যতদিন বেঁচে আছি অনিত্য ঘরে,
আমার হৃদয়ে থাকবে তোমার দাবি।

টেলিফোনে তুমি যেদিন কেঁদেছ, আমি
কুড়িয়ে নিয়েছি তোমার চোখের মোতি।
ঝ’রে-পড়া সেই অক্ষয় মোতিগুলো
আমার তিমিরে ছড়াক নিয়ত জ্যোতি।
২৭.১১.৯৭