ওরা তোর অলৌকিক পাখা ছেঁটে দেয়ার উদ্দেশে
সর্বদা পাকাচ্ছে ঘোঁট, তবু কেন তুই
এমন নিঃসাড় একা একা
গৃহকোণে নিমগ্ন থাকিস ওরে চৌদিকে এন্তার
দপদপে অক্ষরের নাচ
দেখে, কারো আসার ব্যাকুল প্রতীক্ষায়?
সুযোগ পেলেই ওরা ভীমরুল হ’য়ে
ছেঁকে ধরে তোকে,
তবু কেন তুই মুখ বুঁজে সহ্য করে যাস সেই
কুটিল দংশন? কেন এক ঝটকায়
দিস না তাড়িয়ে
ওদের নিমেষে? তাড়া খেয়ে যাক ভেসে নর্দমায়।
ঘুমন্ত সিংহকে মৃত ভেবে
অগাধ আহ্লাদে
শেয়াল কুকুর যে রকম ঘুরঘুর করে তার
আশেপাশে, ওরাও তেমন বারংবার
তোকে ঘিরে ফিচেল চক্কর কাটে; ওরে কেন তুই
হঠাৎ গর্জন করে দিস না কাঁপিয়ে দশদিক?
তোকে স্থির লক্ষ্য করে চোরাগোপ্তা হামলা চালায়
ওরা,প্রায়শই ছোড়ে তীর,
হৃৎপিণ্ডে বসিয়ে দিতে চায় ছোরা, বিষাক্ত বল্লম,
তবু কেন অস্ত্র তোর ক্ষিপ্র ঝলসে ওঠে না ক্রোধে?
‘সত্য ছাড়া অন্য কোনো অস্ত্র নেই আমার এবং
আমি প্রতীক্ষায় আছি, বুঝলে হে, তার উত্থানের’
দিলো সে উত্তর হেসে। সত্য আজ গেছে বনবাসে,
বলি তাকে। ‘সত্যের জুলফিকার করবে মিথ্যার
শিরশ্ছেদ একদিন সুনিশ্চিত,’ বলে সে আবার
দ্বেষহীন, উদাসীন, একা
ঘাট ছেড়ে নৌকা দিলো ভাসিয়ে উজানে
নিরুদ্দেশে; এক ঝাঁক পরিযায়ী পাখি সঙ্গ নেয় লোকটার।