চণ্ডালডাঙা

চণ্ডালডাঙা

মনে করো এখানে কিছুই নেই, একটা চণ্ডালডাঙা
তারও ভেতরে কোথাও রয়েছে
এক টুকরো হারানো ভালোবাসা
তাই খুঁজতেই তো আসা এখানে, এই ঠা-ঠা দুপুরে
আরও কার কার যেন সঙ্গে আসার কথা ছিল
মাঝপথে তারা খসে পড়লো টুপটাপ
তারা অনেকেই নিশ্চয়ই পেয়ে গেছে অনেক কিছু
কেউ হয়তো চড়ে বসেছে একটা লম্বা গাছের ডগায়
খুব আরামে চিবিয়ে চিবিয়ে খাচ্ছে কর্মফল
কেউ বা ঝাঁটা হাতে নেমে গেছে সমাজ সংস্কারে
কেউ ব্যাধ সেজে উপেক্ষা করেছে প্রতিষ্ঠা
যেখানে কিছুই নেই, এমনকি ভালোবাসাও হারিয়ে গেছে
সেখানে আর কেইবা আসবে।

একটা বেশ চমৎকার গোলোকধাম খেলা জমে উঠেছিল
নিজেরই আদলে গড়া মূর্তিগুলো ভেঙে ফেলতে ফেলতে হা
তে বিঁধেছে টুকরো টুকরো স্মৃতি
খিদে তেষ্টা পেলেই গলায় ঢেলে দিয়েছি উচ্চাকাঙ্ক্ষা
নেশার জন্য তো ছিলই প্রচুর অহমিকা
জল ও আগুনের মধ্যে যে ধর্মযুদ্ধ চলেছে অবিরাম
তা আমরা লঘু প্রতীকে ছড়িয়ে দিয়েছি
বিছানায়, নিম্ন শরীরে
সূর্যাস্তের মতন বর্ণাঢ্য উল্লাস ছড়িয়েছে ঘুমের শিখরে
রাতপাখি যেমন অন্ধকারকে বাঙ্ময় করে
সেই রকম আমরা খরচ করেছি সঞ্চিত স্তব্ধতা
কেউ যাতে আচমকা এগিয়ে যেতে না পারে
তাই যখন তখন উল্টো দিকে ফিরে শুধু করেছি পিঠ-দৌড়।

একদিকে পাহাড় জঙ্গল, অন্য দিকে নদী-সমুদ্রে
ছিল প্রচুর ডাকাডাকি
দিক শূন্য কাশ ফুলের ওড়াউড়ির মতন হৃৎস্পন্দন
তারই মধ্যে একটি বেদনার রেখা টিট্টিভের ডাকের মতন
তীক্ষ্ণ
উড়ে যায় দিগন্ত ছাড়িয়ে শূন্যতায়
যেন লিখতে লিখতে হঠাৎ শব্দ-রোধ
অতল কালো গহ্বর, একটি বুলেটের আওয়াজ
যেন সহাস্য দীপাবলির মধ্যে অকস্মাৎ যৌন-ধিক্কার
যেন কঠিন সত্যকে চাওয়ার বদলে রক্তের উত্তর
তখন একবার যেতে হয় সেই চণ্ডালডাঙায়
যেখানে আর নেই, কিছু নেই
মধ্যদুপুরে নিজের ছায়াও পড়ে না
সেখানে এক টুকরো ভালোবাসার জন্য খোঁজাখুঁজি
যেন হারিয়ে যেতে যেতে, হারিয়ে যেতে যেতে
জলের মধ্যে, জল-শৈশবের মধ্যে হাত পা ছড়িয়ে
কোমল ফিরে যাওয়া।