কৈশোরের ঘরবাড়ি

নদীর কিনারে ছিল মাটির মমতা মাখা
কৈশোরের বাড়ি
একই লপ্তে বাঁশবাগান। বেগুন-লঙ্কার কুচো খেত
পবিত্র শূন্যতা ছিল চারদিকে, কিছু কিছু ঘাস ফুল ছিল
রাত্রির বাড়িটি ছিল দিনের বেলার বহুদূরে
কখনো অদৃশ্য, ফের চাঁদের উদ্যোগে ভাসমান
কিসের সৌরভ যেন ঘুরে যায় সন্ধেবেলা, ঠিক যে-সময়।
নদী ডাকে
আকাশ বাঁধানো তীর, সন্ন্যাসীর মতো এক নদী
কোথায় যে যাবে বলে বেরিয়েছে, নিজেই জানে না।

কৈশোরের মাঠকোঠায় ছিল না একটুও সোনা,
ইস্পাত, বারুদ
সদ্য রূপকথা ভেঙে জেগে উঠছে মন কেমন করা এক দেশ
পিছনে অস্পষ্ট ধ্বনি, মেঘ-ছেড়া চকিতের ছবি
গ্রীষ্মের বাতাসে ভাসে জামরুল ফুলের মিহি কণা
যেন মোহময় মিথ্যে, একা একা জল নিয়ে খেলা
লম্বা গাছটির ডালে এক এক দিন এসে বসে
অবাক অবাক চোখ প্যাঁচা
মৃদু বৃষ্টি, শব্দের জোয়ারে তার ভুরুক্ষেপ নেই
অজস্র সুতোর জাল বাতাস ছড়িয়ে যায় বাতাসের মনে
ধিকধিকে ক্ষিধের মতো সবদিকে প্রতীক্ষার তীব্র ব্যাকুলতা
লক্ষ্মীর পায়ের ছাপ ফেলে ফেলে মা যাচ্ছে
কাঁচা রান্নাঘরে
কুপির আলোয় কাঁপে ছোট্ট একটি সংসারের ছায়া
আবার মিলিয়ে যায়, ঝড় ওঠে অতি প্রিয় ধ্বংসের আওয়াজে
আচমকা ঘুম ভেঙে শোনা যায় রুদ্র সন্ন্যাসীর নিশি ডাক।

কৈশোরের ঘরবাড়ি নদীর কিনারে
আজো রয়ে গেছে।