[সোর্স না জানা অজানা গল্প]

আচমকা এক টুকরো ৩

আচমকা এক টুকরো ৩

ছেলেবেলা থেকেই সবকিছু অবিশ্বাস করতে শিখেছিলাম।

দ্বিজেন জ্যাঠামশাইর বাড়ির বারান্দায় লণ্ঠন জ্বেলে আমরা কয়েকজন গল্প শুনতুম ওঁর কাছে। হঠাৎ বাইরে কীরকম অস্বাভাবিক শব্দ হতে আমরা সবাই ভয় পেয়ে হুড়মুড় করে জ্যাঠামশাইর সামনে এসে বসতাম। দ্বিজেন জ্যাঠা গম্ভীর হয়ে বলতেন, যা দেখে আয় তো ওটা কীসের শব্দ। কে যাবে আমাদের কারুর সাহস নেই, কিন্তু জ্যাঠামশাই জোর করে একজন না একজনকে পাঠিয়ে দিতেন। হয়তো সেন্টু ফিরে এসে মুখ চুন করে বলত, কিছু তো দেখলুম না। জ্যাঠামশাই চোখ বুজে গড়াগড়া টানতে টানতে বলতেন, সে কী আর এতক্ষণ থাকে।

কে সে? আমরা একেবারে শিউরে উঠতুম! জ্যাঠামশাই হাসতে হাসতে বলতেন, কারণ ছাড়া কার্য হয় না। চোখে দেখতে না পেলেও কীসে কী হচ্ছে বুঝে নিতে হয়। আমাদের বাড়ির চাল থেকে তোদের বাড়ির রান্নাঘরের চালে লাফিয়ে লাফিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল মদনমোহন, পারেনি ঠিক মতো, ফসকে গিয়ে অতিকষ্টে রান্নাঘরের চাঁচের দেয়ালটা ধরে ফর ফর করে। নেমেছে আর দেয়ালের গায়ে ঝোলানো ছিল রুটি সেঁকার চাটুটা-সেটা পড়ে গিয়ে ওরকম শব্দ হল।

মদনমোহন জ্যাঠামশাইর আদরের হুলো বেড়ালটার নাম। ঘর থেকে এক পা না বেরিয়ে ওরকম ছবির মতো ঘটনাটা তিনি কী করে বললেন–ভেবে আমরা অবাক হয়ে যেতুম। কিন্তু বিশ্বাস করতুম জ্যাঠামশাইকে। ওইরকম ভাবেই আমরা ভূত প্রেত অবিশ্বাস করতে শিখেছিলুম। সন্ধেবেলা এক-একদিন আড়িয়াল খাঁ নদীর পাড়ে বেড়াতে যেতুম। ফেরার সময় ঘুটঘুঁটে অন্ধকারে আদিগন্ত পাটখেতের পাশ দিয়ে আসতে আসতে দূরের একটা সাদা দিঘি মতন দেখিয়ে জ্যাঠামশাই বলতেন, ওই দ্যাখ পেতনি দাঁড়িয়ে আছে।

জ্যাঠামশাই যখন বলছেন, তখন নিশ্চয়ই ওটা পেতনি নয়। কারণ জ্যাঠামশাই বলেছেন যে, ভূত-পেতনি বলে কিছু নেই। সুতরাং তাঁর কথার মর্যাদা রাখতেই আমরা তাঁর একথার প্রতিবাদ করতুম। তবে ওটা কী, এখান থেকে বল তো? তিনি জিগ্যেস করতেন। তখন আরম্ভ হত আমাদের অনুমানের খেলা। কেউ বলতো কলাগাছ, কেউ বলত–ওখানে একগোছা পাট শুকিয়ে ইন্দ্রপুজোর জন্য ধ্বজা করে তোলা। আমি বলেছিলুম : ধোপাদের বউ ওখানে দাঁড়িয়ে হারানো গাধাটাকে খুঁজছে। জ্যাঠামশাই বলেছিলেন, আমরটাই ঠিক। আমরা আর কেউ মিলিয়ে দেখতে যায়নি। অন্য গল্প করতে করতে বাড়ি চলে গেছি।

এই ভাবেই যে কোনও কাজের পিছনে যুক্তি খোঁজার বদ অভ্যাস আমার দাঁড়িয়ে গেছে। এখন মনে হয়, সত্যি সত্যিই হয়তো অনেক ভূত-প্রেত অলৌকিক রহস্যকে যুক্তি দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছি। কিন্তু কোনও একটা অলৌকিক দৃশ্য দেখতে পাওয়ার আজকাল খুব ইচ্ছে হয়। আমার দৃষ্টিশক্তি এখনও খুব ভালো। কিন্তু ইচ্ছে হয় অকারণে চশমা-টশমা নিয়ে চোখ দুটো একটু খারাপ করে ফেলি। তবু যদি কখনও কোনও সত্যিকারের দৃষ্টি বিভ্রম ঘটে। এসব চেনা জিনিস দেখতে দেখতে একঘেয়ে হয়ে গেছে। এখন আমি যুক্তি ত্যাগ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছি।

মনে পড়ে, শ্যামপুকুরের বাড়িতে যখন থাকতুম, নীচের তলাটা ছিল সম্পূর্ণ ফাঁকা, শুধু একটা ঘরে শুতুম আমি, বাড়ির আর সবাই দোতলায়। ওই বাড়িতে ভূতের ভয় ছিল। শুনেছি। আমাদের আগের ভাড়াটেদের বড় মেয়েটি আত্মহত্যা করেছিল ও বাড়িতে গলায় দড়ি দিয়ে। কতজন তাকে দেখেছে। ছাদের ওপর চুল এলো করে বসে কাঁদত কেউ দেখতে পেলেই এক মুহূর্তে অদৃশ্য হয়ে যেত। আমি কতবার চেষ্টা করেছি তার দেখা পাওয়ার।

একদিন মাঝরাত্রে হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেল। জানালার ওপর টক-টক আওয়াজ শুনলুম।

ঘুমের ঘোর কাটার আগে শব্দটা কোথা থেকে আসছে কিছুই বুঝতে পারিনি। আমার পাতলা ঘুম চট করে ভেঙে যায়। বুঝতে পারলুম, শব্দ হচ্ছে আমরা পায়ের কাছের জানালার পাল্লায়। অল্প-অল্প জ্যোৎস্নায় অস্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছি জানলার বাইরেটা-সেখানে কোনও মানুষের মুখ নেই। কিন্তু শব্দটা হাওয়ার নয়, স্পষ্টত মানুষের। একটু থেমে থেমে শব্দ হচ্ছেঠক ঠক ঠক।

আমার বালিশের তলায় বেড স্যুইচ। তা ছাড়া ইঁদুরের উৎপাতের জন্য পাশে একটা মোটা বেতের লাঠি রেখে দিতাম। সুতরাং সশস্ত্র ছিলাম। তবু আলো জ্বালিনি, শুরু করেছি যুক্তির খেলা। প্রথমে ভেবেছিলাম, আমারই কোনও বন্ধু-বান্ধব ডাকতে এসেছে। দীপকের ফ্ল্যাট বাড়ির সদর দরজা বন্ধ হয়ে গেলে মাঝেমাঝে রাত্রে এসে ও আমার সঙ্গে শুত। কিন্তু দীপক তো চুপ করে থেকে জানলা নক করার ছেলে নয়। এতক্ষণে ওর কম্বুকণ্ঠে সারা পাড়া নিনাদিত হয়ে উঠত। তবে কি কোনও চোর? আমি জেগে আছি কিনা দেখার জন্য আওয়াজ করছে? আমি খর চোখে তাকিয়ে রইলুম–জানালার পাল্লায় আবার আওয়াজ ঠক ঠক ঠক। কিন্তু কোনও মানুষের হাত বা মুখ দেখা গেল না। অথচ জানালাতেই যে শব্দটা করা হচ্ছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। জানালার কপাট দুটো ঘরের মধ্যে ঢোকানো–সুতরাং কেউ আওয়াজ করলে তার হাত দুটো আমি দেখতে পাবই। এমন মূর্খ আমি, কোনও অদৃশ্য বা অলৌকিক অস্তিত্বের কথা তখন আমার মাথাতেই আসেনি। আমার পক্ষে সবচেয়ে সহজ ছিল–আলো জ্বেলে উঠে গিয়ে দেখা। কিন্তু ওই যে–অনুমান এবং ডিডাকশান করার লোভ। অন্ধকারে শুয়ে শুয়ে নানান যুক্তি ভাবতে লাগলুম। শেষ পর্যন্ত পেয়ে গেলুম সমাধান। টিকটিকিতে আরশোলা ধরেছে। আরশোলাটাকে মারার জন্য টিকটিকি অনেকবার ঝাঁপটা মারে। টিকটিকির যা স্বভাব–অসীম ধৈর্য নিয়ে থেমে ঝাঁপটা মারতে মারতে ওকে শেষ করবে। কাঠের জানলায় ওইরকম আওয়াজ হচ্ছে ঝাঁপটা মারার। আমার এই সিদ্ধান্তে আমি এতদূর নিশ্চিন্ত হয়ে গেলুম যে, উঠে গিয়ে মিলিয়ে দেখারও ইচ্ছে হল না। ঘুমিয়ে পড়লুম পাশ ফিরে।

আজ সে জন্য কত অনুতাপ হয়। হয়তো টিকটিকি নয়–সেই আত্মহত্যাকারিনী অষ্টাদশী মেয়েটি আসতে চেয়েছিল আমার ঘরে। দুটো কথা বলতে এসেছিল। আসবার আগে ভদ্রভাবে অনুমতি চেয়েছিল। আমি তাকে ফিরিয়ে দিয়েছি। আজকাল ভূত আর ভগবান তো একই অবিশ্বাসীর কাছে আসে না একেবারেই। ভয় দেখাতেও আসে না।

কিন্তু আমি যদি কোনও অলৌকিকের দেখা না পেয়ে থাকি তবে এ লেখাটা লিখছি কেন? না, পেয়েছিলাম একবার। একটি অসম্ভব অলৌকিক দৃশ্যের রাত্রি।

চক্রধরপুর থেকে রাঁচি যাওয়ার রাস্তায়, পাহাড়ের ওপর হেশাডি ডাকবাংলোয় একবার বেড়াতে গিয়েছিলাম কয়েক বন্ধু। চারপাশে জঙ্গল–সন্ধের পর ভাল্লুক আর চিতাবাঘের ভয় আছে। রাস্তার পাশে এই বাংলো–আর চতুর্দিকে ১৫ মাইলের মধ্যে কোনও জনমানব নেই। সন্ধ্যের পরই অন্ধকার এবং স্তব্ধতা একসঙ্গে ছেয়ে আসে। মাঝেমাঝে শুধু দু-একটা ট্রাক তীব্র আলো জ্বেলে ঝড়ের বেগে ছুটে যায়–ডাকাতির ভয়ে কোথাও না থেমে।

কয়েকদিন তাসটাস খেলে হই-হুল্লোড় করে কাটল। তারপর আর সন্ধে কাটতে চায় না। কী বিপুল দীর্ঘ সন্ধেগুলো। সুতরাং একদিন ১৮ মাইল দূরে ওঁরাওদের গ্রামে হাট হবে শুনে আমরা দুপুরবেলাই একটা ট্রাক ধরে চলে গেলাম। চাল, হাস, মুরগি, কাঁচের চুড়ি, আয়না আর হাঁড়িয়া ও জুয়ার আড্ডা নিয়ে ছোট্ট গ্রাম্য হাট। সন্ধের পরই ভেঙে গেল। তখন সমস্যা হল আমাদের ফেরা নিয়ে। কী করে অতখানি রাস্তা ফিরে যাব–কোনও ট্রাক আমাদের নিতে রাজি হয় না। শেষ পর্যন্ত একটা সিমেন্টের ট্রাক আমাদের পৌঁছে দিতে রাজি হল বাদগাঁও পর্যন্ত। সেখান থেকে আমাদের বাংলো ৪ মাইল। হেঁটে ছাড়া যাওয়ার আর কোনও উপায় নেই। জমাট অন্ধকারে পাকা পিচের রাস্তা ধরে চুপচাপ হাঁটছিলুম আমরা খুব সাবধানে। যে-কোনও সময় ছুটন্ত ট্রাক আমাদের চাপা দিয়ে যেতে পারে–এখানে আর কে দেখছে। হাঁটতে একদম ভালো লাগছিল না। শেষে, কে এই হাটে আসার প্রস্তাব দিয়েছিল সেই নিয়ে খিটিমিটি বেধে গেল। তারপর তুমুল ঝগড়া। আমি ঝগড়ায় এমন উন্মত্ত হয়ে গেলাম যে পাহাড়ের ধার দিয়ে নীচে নেমে যাওয়া একটা পায়ে চলা রাস্তা দেখে বললাম, আমি ওই রাস্তায় যাব–এটাই শর্টকাট। কেউ আমার সঙ্গে যেতে রাজি হল না। দু-একজন আমাকে বারণ করল। আমি তখন নামতে শুরু করেছি।

খানিকটা বাদে বুঝতে পারলুম, কী ভুল করেছি। পায়ে চলা পথ আর দেখা যায় না, মিলিয়ে গেছে জঙ্গলে। আমি নামার ঝোঁকে অনেকখানি নেমে এসে দাঁড়ালুম, বুঝতে পারলুম, ফেরার আর উপায় নেই। খাড়া পাহাড়–অতি কষ্টে ঝোঁক সামলে নীচে নামা যায়। কিন্তু ওপরে ওঠা যায় না, খানিকটা ওঠার চেষ্টা করে হাঁপিয়ে গেলুম। তাকিয়ে দেখলাম এতদূরে নেমে এসেছি যে ওপরের রাস্তাটা আর দেখা যায় না। পায়ের কাছে অনেকটা সমতল হয়ে এসেছে–শুধু জঙ্গল আর জঙ্গল। কোথাও এক বিন্দু আলোর চিহ্ন নেই। আমার সঙ্গে হাট থেকে কেনা বাঁশের ছড়ি–আর কিছু না, একটা টর্চ পর্যন্ত নেই। আমি জঙ্গলে পথ হারালাম।

মনে আছে সেই রাত্রির কথা। ভাল্লুক আর চিতাবাঘ বেরোয় ওই জঙ্গলে শুনেছিলাম, তার চেয়েও ভয়ংকর পাহাড়ে চিতিবোড়া সাপ, যার একটা আমরা আগের দিন নিজেরাই দেখেছিলাম। বন্ধুদের নাম ধরে ডাকলুম। কোনও সাড়া নেই। ওরা শুনতে পাচ্ছে না বা এগিয়ে গেছে। বেশি ডাকতেও সাহস পেলুম না–শব্দ করতে যেন ভয় করছিল। পাগলের মতো হন্যে হয়ে ছুটতে লাগলুম। তারপর একবার ক্লান্ত হয়ে বসলাম একখণ্ড পাথরের ওপর। ছড়িটা দিয়ে চারপাশ পিটিয়ে দেখে নিলাম সাপ আছে কি না কাছে। বসে থেকে এমন অসহায় লাগতে লাগল। কোনও গাছের ওপর বসে যে রাত কাটাব তারও উপায় দেখলুম না। লম্বা-লম্বা শালগাছগুলো অনেকদূর উঠে গেছে সিধেভাবে–তারপর ডালপালা ছড়িয়েছে। ও গাছে চড়া আমার সাধ্য নয়।

চুপ করেই বসে রইলুম। হঠাৎ এক ঝলক হাওয়া দিল, কেঁপে উঠল গাছের পাতাগুলো। আমি স্পষ্ট গলায় আওয়াজ শুনতে পেলুম, আহা-হা, লোকটা লোকটা। ফিসফিস করে কেউ বলল আমার মাথার ওপরের গাছটা থেকেই। আমি একটু নড়েচড়ে বসলাম। আবার এক ঝলক হাওয়া দিতে সামনের গাছ থেকে ফিসফিস শব্দ হল, আহা-হা, লোকটা লোকটা। আমি ওপরের দিকে তাকালুম। দুটো গাছ যেন পরস্পরের দিকে তাকিয়ে বলছে, আহা-হা, লোকটা লোকটা।

তারপর বেশ জোরে হাওয়া দিল একবার–আশেপাশের সবগুলো গাছ বলে উঠল, আহা-হা, লোকটা লোকটা।

মনের ভুল তাতে সন্দেহ কী। কিন্তু এরকম মন বা কানের ভুল হবেই বা কেন? শুনেছি মরুভূমিতে অনেক লোক পাগল হয়ে যায়, আমিও শেষে জঙ্গলে? উঠে হাঁটতে আরম্ভ করলুম। বেশ কিছুটা হাঁটার পর আবার ফিসফিস সুর…আহা-হা…। লোকটা! নিষ্ঠুর কৌতুকের নয়, করুণ সহানুভুতিময় সেই সুর, যেন শতশত বৃক্ষ আমার দিকে তাকিয়ে আছে–আমি ছুটতে লাগলুম।

হঠাৎ একবার বাতাস থেমে গেল। তারপর আর এক ঝলক বাতাস বইতেই আমি অন্যরকম কথা শুনতে পেলুম। এইখানেই অলৌকিক দৃশ্যের আরম্ভ। আমি থেমে দাঁড়ালাম। এবার শুনতে পেলুম–ওদিকে নয়, ওদিকে নয়! এই প্রথম শিহরণ হল। গাছের পাতাগুলো দুলে-দুলে সরসর শব্দ করে আমাকে বলছে, ওদিকে নয়, ওদিকে নয়। এক মুহূর্তে দ্বিধা করে আমি পিছন ফিরে হাঁটতে লাগলুম। আবার শুনতে পেলাম, ওদিকে নয়, ওদিকে নয়!

চিৎকার করিনি, কিন্তু মনে মনে জিগ্যেস করলুম, কোন দিকে? বোবা বৃক্ষেরা কথার উত্তর দেয় না, শুধু নিজেরা কথা বলে, ওদিকে নয়, ওদিকে নয়। কীরকম বোবা ওরা কী জানি।

আমি ডানদিকে ঘুরলুম, আর কোনও কথা নেই। হাওয়া থেমে গেছে। এবার সবাই আমাকে দেখছে, আমি স্পষ্ট বুঝতে পারলুম। ডানদিকেই হাঁটতে লাগলুম। বেশ কিছুটা হাঁটার পর আবার হাওয়া উঠল। আবার শব্দ উঠল, ওদিকে নয়। থেমে দাঁড়িয়ে আবার ডানদিকে বাঁক নিলুম। তখনও শব্দ ওদিকে নয়, ওদিকে নয়। দাঁড়িয়ে বাঁদিকে বাঁক নিলুম। শব্দ থেমে গেল।

তারপর যতক্ষণ হেঁটেছি ভুলে গিয়েছিলুম বাঘ ভাল্লুক বা সাপের কথা। শুধু উত্তর্ণ হয়ে শুনেছি গাছের পাতার সরসরানি। মাঝেমাঝে থেমে ওদের নির্দেশ মতো চলেছি। একটু পরেই দেখতে পেলুম, দূরে ডাকবাংলোর আলো, শুনতে পেলুম বন্ধুদের গলায় আওয়াজ।

মনের ভুল? কানের ভুল? আর যাচাই করে দেখতে চাই না। এরপর যখনই সেই রাত্তিটার কথা ভাবি, আমার যেন একটা অলৌকিক সুখানুভূতি হয়।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *