অর্ধনারীশ্বর

নদী বন্ধন উদ্বোধনে এসেছেন এক নৃমুণ্ড শিকারি
গোলাপের পাপড়ি উড়ছে বাতাসে, এখানে শিশুরা হাসে না
এখানে শঙ্খধ্বনি ও সমর ভেঁপু এক সঙ্গে মিলে মিশে যায়
ক্ষ্যাপাটে জয়ধ্বনির মধ্য দিয়ে আস্তে আস্তে পা ফেলে
এগোচ্ছেন তিনি, ঝুঁকলেন তাঁ
র ওষ্ঠে ফুটে উঠছে পাহাড়ী হাসি, কপালে আন্তর্জাতিক ভাঁজ
আসলে তিনি সেতুর নীচে গুঁজে দিচ্ছেন বারুদ
জল বা মাটির মানুষেরা যা জানে না, তিনি তা জানেন
লম্বা হত্যা তালিকার নীচে স্বাক্ষর বসিয়েই তিনি ছুটলেন
বিমানের দিকে
জানলার বাইরে মেঘের মাধুরী তাঁর পছন্দ হলো, তলোয়ারের মতন বিদ্যুৎ বিভা
তাঁকে যৌন স্মৃতি দিল
হাত বাড়িয়ে তিনি সেবিকার হাত থেকে নিলেন নিজের সন্তানের লহু
তাঁর দুই ঊরুর অন্তবর্তী আগ্নেয়গিরি জেগে উঠলো, স্বপ্নে।

নির্জন দ্বীপের বাতিঘরের শিখরে তার বসতি, তিনি অর্ধনারীশ্বর
দেয়ালে ঝুলছে মালার পর মালা, সব সহাস্য স্থির মুখ
তিনি পোশাক খুললেন, তাঁর বুকে পিঠে সাংবিধানিক মারপ্যাচের কালসিটে
বাঁ হাতের তালুতে লেখা বাণী, রাষ্ট্র, সে তো আমি!
লোহার গরাদ আঁকড়ে ধরে তিনি দেখতে লাগলেন
অন্ধকার গোলাকার সিড়ি
আর কেউ কি উঠে আসছে, শোনা যাচ্ছে অন্য পদশব্দ?
নীচে কি ধাক্কা মারছে জোয়ারের ঢেউ না লক্ষ লক্ষ ফিসফিসানি
তাঁর ঘুম আসে না, তাঁর চোখে জল আসে
তাঁর দীর্ঘশ্বাসে ভরে যায় স্মৃতিকথার পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা
পার্থিবদের পরমার্থ-মহাযজ্ঞে তিনি প্রাণপাত করে চলেছেন
কেউ তা বোঝে না, কেউ তা বোঝে না!