1 of 2

৪১. আবু উমামা আসআদ ইবন যুরারার ইনতিকাল

আবু উমামা আসআদ ইবন যুরারার ইনতিকাল

আসআদি ইবন যুরোরা ইবন আদাস ইবন উবায়দ ইবন ছালাবা ইবন গানাম ইবন মালিক

ইবন নাজ্জার আকাবার বায় আতের রাত্রে বনু নাজার কাওমের ১২ জন নাকীবের অন্যতম।

আকাবার তিনটি বায়আতেই তিনি উপস্থিত ছিলেন। আকাবার দ্বিতীয় বায়আতের রজনীতে এক উক্তি মতে তিনিই সর্বপ্রথম রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর হাতে বায়আত করেন, আর তখন তিনি ছিলেন একজন যুবক। ইতোপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘হাযমুন নাবীত” অঞ্চলে ‘নাকীউল খাযমাত’ নামক স্থানে তিনিই সর্বপ্রথম লোকদেরকে নিয়ে মদীনায় জুমুআর নামায আদায় করেন। মুহাম্মদ ইবন ইসহাক বলেন : মসজিদে নববী নির্মাণকালের মাসগুলোতে আবু উমামা আসআদি ইবন যুরারা গলায় বা বুকে ব্যথার কারণে ইনতিকাল করেন।*।। ইবন জারীর তার ইতিহাস গ্রন্থে উল্লেখ করেন, মুহাম্মদ ইবন আবদুল আলা। সূত্রে আনাস (রা) থেকে বর্ণিত! তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা) আসআদি ইবন যুরোরাকে ‘শাওক৷” ব্যাধিতে লোহা গরম করে দাগান।

ইবন ইসহাক আবদুল্লাহ ইবন আবু বকর সূত্ৰে আসআদ ইবন যুরারার উদধূতি দিয়ে বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন : আবু উমামার মৃত্যু ছিল মদীনার ইয়াহুদী এবং আরবের মুনাফিকদের দৃষ্টিতে অলক্ষুণে মৃত্যু। ইয়াহুদী এবং মুনাফিকরা বলতে : (মুহাম্মদ সা) নবী হলে তার সাখী মারা যেতো না। অথচ আমার নিজেকে এবং আমার কোন সাহাবীকে আল্লাহর পাকড়াও থেকে রক্ষা করার কোন ক্ষমতা আমার নেই। এ বর্ণনার দাবী এই যে, নবী (সা) মদীনায় আগমনের পর আসআদি ইবন যুরোরা সর্বপ্রথম মৃত্যুবরণ করেন (উসৃদুল) গাবাহ গ্রন্থে আবুল হাসান ইবন আহীর ধারণা করেছেন যে, নবী (সা)-এর মদীনায় আগমনের সপ্তম মাস শাওয়ালে তিনি ইনতিকাল করেন। আর মুহাম্মদ ইবন ইসহাক আসিম ইবন উমর ইবন কাতাদার উদধূতি দিয়ে উল্লেখ করেন যে, আসআদ ইবন যুরোরার পর বনু নাজারের জন্য একজন নকীব নির্ধারণের নিমিত্ত তারা রাসূল (সা)-এর নিকট আবেদন জানালে রাসূলুল্লাহ্ (সা) তাদেরকে বলেন, : তোমরা হলে আমার মাতৃকুলের বংশধর। তোমাদের প্রয়োজন আমি দেখবো। এবং আমি তোমাদের নকীব। তিনি একজনকে বাদ দিয়ে অন্য জনকে বিশেষভাবে নির্দিষ্ট করা নাপসন্দ করেন। বনু নাজার অন্যদের উপর এ কারণেই শ্রেষ্ঠত্ব দাবী করতো যে, স্বয়ং রাসূলুল্লাহ্ (সা) তাদের নকীব। ইবন আহীর বলেন, আসআদ ইবন যুরোরা বনু সাইদার নকীব ছিলেন বলে আবু নুআয়ম এবং ইবন মান্দাহ যে উক্তি করেছেন, এই বর্ণনা দ্বারা তা রদ হয়ে যায়। আসলে তিনি নকীব ছিলেন বনু নাজ্জারের। তাই ইবন আহীর যা বলেছেন, ঠিকই বলেছেন। আর ইবন জারীর তাবারী তার ইতিহাস গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, নবী করীম (সা)-এর মদীনায় আগমনের পর মুসলমানদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইনতিকাল করেন তাঁর গৃহের মালিক কুলছুম। ইবন হিন্দম। রাসূলের মদীনায় আগমনের অল্পকাল পরই ইনি ইনতিকাল করেন। এরপর আসআদি ইবন যুরোরার মৃত্যু হয়। রাসূলের আগমনের বছর গলা ব্যথা বা বুকে ব্যথার কারণে মসজিদে নববীর নির্মাণকালে তাঁর মৃত্যু হয়। আমার মতে, কুলছুমা ইবন হিন্দম

আওফ ইবন আমর ইবন আওফ ইবন মালিক ইবন আওস আল-আনসারী আল-আওসী ছিলেন। বনু আমর ইবন আওফের অন্তর্ভুক্ত। তিনি ছিলেন অতিশয় বৃদ্ধ এবং রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর মদীনায় আগমনের পূর্বেই তিনি ইসলাম গ্ৰহণ করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ্ (সা) মদীনায় আগমন

১. ওয়াকিদী বলেন, হিজরতের নবম মাসের গোড়ার দিকে শাওয়াল মাসে আসআদ ইবন ঘুরোরা ইনতিকাল

করেন। আর এ ঘটনা বদর যুদ্ধের পূর্বের।

সঙ্গে কথাবার্তা বলতেন সাআদ ইবন রাবী’-এর গৃহে। সেখান থেকে বনু নাজ্জারের পল্লীতে যাওয়ার কথা ইতোপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। ইবন আহীর বলেন, কথিত আছে যে, রাসূলের মদীনা আগমনের পর মুসলমানদের মধ্যে সর্বপ্রথম যিনি ইনতিকাল করেন, তিনি ছিলেন কুলছুম ইবন হিন্দম। এরপর মৃত্যু হয় আসআদি ইবন যুরারার। ঐতিহাসিক তাবারীও একথা উল্লেখ করেছেন।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *