4 of 11

২০.০৭ কি করে ঈশ্বরকে ডাকতে হয় — “ব্যাকুল হও”

সপ্তম পরিচ্ছেদ

১৮৮৪, ২রা ফেব্রুয়ারি

কি করে ঈশ্বরকে ডাকতে হয় — “ব্যাকুল হও”

ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ বালকের ন্যায় আবার হাসিতেছেন ও কথা কহিতেছেন — বালক যেমন বেশি অসুখ হলেও এক-একবার হেসে খেলে বেড়ায়। মহিমাদি ভক্তের সহিত কথা কহিতেছেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ — সচ্চিদানন্দ লাভ না হলে কিছুই হল না বাবু!

“বিবেক-বৈরাগ্যের ন্যায় আর জিনিস নাই।

“সংসারীদের অনুরাগ ক্ষণিক — তপ্ত খোলায় জল যতক্ষণ থাকে — একটি ফুল দেখে হয়তো বললে, আহা! কি চমৎকার ঈশ্বরের সৃষ্টি!

“ব্যাকুলতা চাই। যখন ছেলে বিষয়ের ভাগের জন্য ব্যতিব্যস্ত করে, তখন বাপ-মা দুজনে পরামর্শ করে, আর ছেলেকে আগেই হিস্যা ফেলে দেয়। ব্যাকুল হলে তিনি শুনবেনই শুনবেন। তিনি যে কালে জন্ম দিয়েছেন, সে কালে তাঁর ঘরে আমাদের হিস্যা আছে। তিনি আপনার বাপ, আপনার মা — তাঁর উপর জোর খাটে! ‘দাও পরিচয়। নয় গলায় ছুরি দিব!”

কিরূপে মাকে ডাকিতে হয়, ঠাকুর শিখাইতেছেন — “আমি মা বলে এইরূপে ডাকতাম — ‘মা আনন্দময়ী! — দেখা দিতে যে হবে!’ —

“আবার কখন বলতাম — ওহে দীননাথ — জগন্নাথ — আমি তো জগৎ ছাড়া নই নাথ! আমি জ্ঞানহীন — সাধনহীন — ভক্তিহীন — আমি কিছুই জানি না — দয়া করে দেখা দিতে হবে।”

ঠাকুর অতি করুণ স্বরে সুর করিয়া, কিরূপে তাঁহাকে ডাকিতে হয়, শিখাইতেছেন। সেই করুণ স্বর শুনিয়া ভক্তদের হৃদয় দ্রবীভূত হইতেছে, — মহিমাচরণ চক্ষের জলে ভাসিয়া যাইতেছেন।

মহিমাচরণকে দেখিয়া ঠাকুর আবার বলিতেছেন —

“ডাক দেখি মন ডাকার মতন কেমন শ্যামা থাকতে পারে!”

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *