4 of 11

১৮.১৩ ঠনঠনিয়া কালীমন্দিরেতে

ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ

১৮৮৩, ১৮ই ডিসেম্বর

ঠনঠনিয়া কালীমন্দিরেতে 

শ্রীরামকৃষ্ণ রাখালের জন্য ৺সিদ্ধেশ্বরীকে ডাব-চিনি মানিয়াছেন। মণিকে বলিতেছেন, “তুমি ডাব, চিনির দাম দিবে।”

বৈকালে শ্রীরামকৃষ্ণ রাখাল, মণি প্রভৃতির সঙ্গে ঠনঠনের ৺সিদ্ধেশ্বরী-মন্দির অভিমুখে গাড়ি করিয়া আসিতেছেন। পথে সিমুলিয়ার বাজার, সেখানে ডাব, চিনি কেনা হইল।

মন্দিরে আসিয়া ভক্তদের বলিতেছেন, একটা ডাব কেটে চিনি দিয়ে মার কাছে দাও।

যখন মন্দিরে আসিয়া পৌঁছিলেন, তখন পূজারীরা বন্ধু লইয়া মা-কালীর সম্মুখে তাস খেলিতেছিলেন। ঠাকুর দেখিয়া ভক্তদের বলিতেছেন, দেখেছ, এ-সব স্থানে তাস খেলা! এখানে ঈশ্বরচিন্তা করতে হয়।

এইবার শ্রীরামকৃষ্ণ যদু মল্লিকের বাটীতে আসিয়াছেন। তাঁহার সঙ্গে অনেকগুলি বাবু বসিয়া আছেন।

যদু বলিতেছেন, ‘এস’ ‘এস’। পরস্পর কুশল প্রশ্নের পর, শ্রীরামকৃষ্ণ কথা কহিতেছেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে) — তুমি অত ভাঁড়, মোসাহেব রাখ কেন?

যদু (সহাস্যে) — তুমি উদ্ধার করবে বলে। (সকলের হাস্য)

শ্রীরামকৃষ্ণ — মোসাহেবরা মনে করে বাবু তাদের টাকা ঢেলে দেবে। কিন্তু বাবুর কাছে আদায় করা বড় কঠিন। একটা শৃগাল একটা বলদকে দেখে তার সঙ্গ আর ছাড়ে না। সে চরে বেড়ায়, ওটাও সঙ্গে সঙ্গে। শৃগালটা মনে করেছে ওর অণ্ডের কোষ ঝুলছে সেইটে কখন না কখন পড়ে যাবে আর আমি খাব। বলদটা কখন ঘুমোয়, সেও কাছে ঘুমোয়; আর যখন উঠে চড়ে বেড়ায়, সেও সঙ্গে সঙ্গে থাকে। কতদিন এইরূপে যায়, কিন্তু কোষটা পড়ল না; তখন সে নিরাশ হয়ে চলে গেল। (সকলের হাস্য) মোসাহেবের এইরূপই অবস্থা।

যদু ও তাঁহার মাতাঠাকুরানী শ্রীরামকৃষ্ণ ও ভক্তদের জলসেবা করাইলেন।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *