১৩. দারে আরকাম

অত্যাচারের এবং নির্যাতনের ভয়াবহ এ অবস্থার কৌশল হিসাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলমানদের বলেছিলেন যে, প্রকাশ্যে ইসলাম গ্রহণের কথা নতুন মুসলমানরা যেন প্রচার না করেন। তাছাড়া দেখা সাক্ষাত এবং মেলামেশার ব্যাপারে মুসলমানরা যেন গোপীনয়তার আশ্রয় নেন। কেননা আল্লাহর রসূলের সাথে মুসলমানদের দেখা সাক্ষাতের কথা যদি অমুসলিমরা শোনে তাহলে তারা ইসলামের শিক্ষা দীক্ষার প্রসারে বাধা সৃষ্টি করবে। ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের আশস্কা তীব্র হয়ে উঠবে। নবুয়তের চতুর্থ বছর এ ধরণের একটি ঘটনা ঘটেছিলো। ঘটনাটি হচ্ছে, সাহাবায়ে কেরাম ঘাঁটিতে একত্রিত হয়ে নামায আদায় করতেন। একবার সে অবস্থায় তাদের একদল পৌত্তলিক দেখে ফেলে। এ সময় তারা মুসলমানদের গালাগাল করতে শুরু করে। এ পর্যায়ে হযরত সা’দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রা) একজন লোককে এমনভাবে প্রহার করলেন যে তাতে রক্ত গড়িয়ে গেলো। ইসলামে এটা ছিলো রক্তপাতের প্রথম ঘটনা।
এ ধরণের সংঘর্ষ বারবার ঘটলে এবং দীর্ঘায়িত হলে মুসলামনদের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভবনা ছিলো। এ কারণে গোপনীয়তা কৌশল অবলম্বন করা ছিলো অত্যা বশ্যক। এই কৌশল অনুযায়ী সাধারণ সাহাবায়ে কেরাম তাদের ইসলাম গ্রহণ, এবাদাত বন্দেগী, তাবলীগ, পারস্পরিক দেখা সাক্ষাৎ মেলামেশা সবই গোপনভাবে করতেন। তবে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাবলীগে দ্বীন এবং এবাদাত সব কিছুই প্রকাশ্যে করতেন। কোন বাধাই তাঁকে এ কাজ থেকে বিরত রাখতে পারেনি। তবুও তিনি মুসলামানদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ এবং আলাপ-আলোচনার ক্ষেত্রে গোপনীয়তা রক্ষা করতেন। আরকাম ইবনে আবুল আরকাম মাখযমীর ঘর সাফা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ছিলো। এখানে পৌত্তলিক বিদ্রোহীরা আসত না। এ কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নবুয়তের পঞ্ঝম বছর থেকে “দারে আরকাম”কে দ্বীনের দাওয়াত এবং মুসলামানদের সাথে মেলামেশার কেন্দ্র রূপে নির্ধারণ করেন।