2 of 11

১২.১০ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও গৃহস্থধর্ম

দশম পরিচ্ছেদ

১৮৮৩, ১১ই মার্চ

ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও গৃহস্থধর্ম

প্রায় সাড়ে পাঁচটা-ছয়টা হইল। ঠাকুর ভক্তসঙ্গে নিজের ঘরের দক্ষিণ-পূর্ব বারান্দায় বসিয়া আছেন। ভক্তদের দেখিতেছেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ (কেদারাদি ভক্তদের প্রতি) — সংসারত্যাগী সাধু — সে তো হরিনাম করবেই। তার তো আর কোন কাজ নাই। সে যদি ঈশ্বরচিন্তা করে তো, আশ্চর্যের বিষয় নয়। সে যদি ঈশ্বরচিন্তা না করে, সে যদি হরিনাম না করে তাহলে বরং সকলে নিন্দা করবে।

“সংসারী লোক যদি হরিনাম করে, তাহলে বাহাদুরি আছে। দেখ, জনক রাজা খুব বাহাদুর। সে দুখানি তরবার ঘুরাত। একখানা জ্ঞান ও একখানা কর্ম। এক দিকে পূর্ণ ব্রহ্মজ্ঞান, আর-একদিকে সংসারে কর্ম করছে। নষ্ট মেয়ে সংসারের সব কাজ খুঁটিয়ে করে, কিন্তু সর্বদাই উপপতিকে চিন্তা করে।

“সাধুসঙ্গ সর্বদা দরকার, সাধু ঈশ্বরের সঙ্গে আলাপ করে দেন।”

কেদার — আজ্ঞে হাঁ! মহাপুরুষ জীবের উদ্ধারের জন্য আসেন। যেমন রেলের এঞ্জিন, পেছনে কত গাড়ি বাঁধা থাকে, টেনে নিয়ে যায়। অথবা যেমন নদী বা তড়াগ, কত জীবের পিপাসা শান্তি করে।

ক্রমে ভক্তেরা গৃহে প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রস্তুত হইলেন। একে একে সকলে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণকে ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম করিলেন ও তাঁহার পদধূলি গ্রহণ করিলেন। ভবনাথকে দেখিয়া ঠাকুর বলিতেছেন, জ্ঞজ্ঞ “তুই আজ আর যাস নাই। তোদের দেখেই উদ্দীপন!”

ভবনাথ এখনও সংসারে প্রবেশ করেন নাই। বয়স উনিশ-কুড়ি, গৌরবর্ণ, সুন্দর দেহ। ঈশ্বরের নামে তাঁহার চক্ষে জল আসে। ঠাকুর তাঁহাকে সাক্ষাৎ নারায়ণ দেখেন।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *