এরপর কিছুদিনের জন্য ওহী বন্ধ থাকে বিষয়টি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য খুবই কষ্টকর হয়ে উঠলো। এরপর জিবরীল (আ) তাঁর কাছে সূরা ‘আদ্ দুহা’ নিয়ে আবির্ভূত হলেন। যে মহান প্রতিপালক তাঁকে নবুওয়াত দ্বারা সম্মানিত করেছেন তিনি ঐ সূরাতে শপথ করে বলেছেন যে, তিনি তাঁকে ত্যাগ করেননি এবং তাঁর প্রতি বৈরীও হননি। মহান আল্লাহ বলেন, “মধ্যাহ্নের শপথ এবং তিমিরাচ্ছন্ন রজনীর শপথ!
তোমার প্রভু তোমাকে ত্যাগ করেননি এবং পরিত্যাগ করেননি এবং তোমার প্রতি বৈরিও হননি।” অর্থাৎ তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে তোমাকে পরিত্যাগ করেননি, আর তোমার প্রতি শত্রুতা পোষণ করার পর পুনরায় ভালোবেসেছেন এমনও হয়নি। “বস্তুতঃ তোমার জন্য পূর্বের অবস্থার চেয়ে পরবর্তী অবস্থাই ভালো।” অর্থাৎ আমার নিকট তোমার প্রত্যাবর্তনের পর তোমার জন্য যা প্রস্তুত করে রেখেছি তা দুনিয়াতে তোমাকে যা দিয়েছি তার চেয়ে উত্তম। অবশ্যই তিনি তোমাকে অচিরেই এতো পরিমাণে প্রদান করবেন যাতে তুমি খুশী হয়ে যাবে। অর্থাৎ দুনিয়ায় সাফল্য ও বিজয় এবং আখিরাতে প্রতিদান। “তিনি কি তোমাকে ইয়াতীম অবস্থায় পেয়ে আশ্রয় দেননি? আর তিনিই তোমাকে দিশেহারা দেখে পথের সন্ধান দিয়েছেন এবং তোমাকে দরিদ্র অবস্থায় পেয়ে সম্পদশালী করেছেন।” এ আয়াত ক’টিতে আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর প্রথম জীবনে প্রাপ্ত সম্মান এবং তাঁর মাতৃ-পিতৃহীন, সহায়-সম্বলহীন ও দিশেহারা অবস্থায় আল্লাহ তাঁর প্রতি যে করুণা-অনুকম্পা দেখিয়েছেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাঁকে যে শোচনীয় দুরবস্থা থেকে উদ্ধার করেছেন, তার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। “অতএব তুমি ইয়াতীমের প্রতি ক্রোধ প্রদর্শন করো না এবং সাহায্য প্রার্থনাকারীকে ধমক দিও না।” অর্থাৎ আল্লাহর দুর্বল বান্দাদের ওপর ঐদ্ধত্য ও অহংকার প্রদর্শন করো না এবং নিষ্ঠুর ও স্বেচ্ছাচারী আচরণ করোনা। “আর তোমার প্রতিপালকের দেয়া নিয়ামতের কথা প্রচার কর।” অর্থাৎ আল্লাহর তরফ থেকে নবুওয়াত প্রপ্তির মাধ্যমে যে অতুলনীয় সম্পদ ও অনুপম মর্যাদা তুমি লাভ করেছ, তার কথা মানুষকে জানাও ও তাদেরকে সেদিকে দাওয়াত দাও।
এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অতি সংগোপনে তাঁর নিকটতম লোকদের মধ্য হতে বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিদের কাছে দীন প্রচারে আত্ননিয়োগ করলেন। আল্লাহ তাঁকে নবুওয়াত দান করে স্বয়ং তাঁর ওপর ও সমগ্র মানব জাতির ওপর যে মহা অনুগ্রহ করেছেন তার কথা ব্যক্ত করতে লাগলেন।