০৭. যুধিষ্ঠিরের প্রতি ভীমের প্রশ্ন

মুনি বলে শুনহ নৃপতি জন্মেজয়।
তবে কতক্ষণে পঞ্চ পাণ্ডুর তনয়।।
দ্রৌপদীরে বেড়িয়া বৈসেন পঞ্চজন।
ধর্ম্মরাজ বলিলেন গদগদ বচন।।
তোমার বিচ্ছেদ প্রাণে সহিতে না পারি।
হায় ‍প্রিয়ে মোরে ছাড়ি গেলে কোন পুরী।।
পড়িয়া রহিলে কেন পর্ব্বত উপরে।
তোমার শয়নে মম পরাণ বিদরে।।
উত্তর না দেহ কেন স্বামী পঞ্চজনে।
সঙ্গ ছাড়ি কেমনে রহিলে মহাবনে।।
কপট পাশায় আমি করিলাম পণ।
তব অপমান কৈল দুষ্ট দুঃশাসন।।
তোমার কারণে ভীম প্রতিজ্ঞা করিল।
দুঃশাসনের বক্ষ চিরি রক্তপান কৈল।।
ঊরু ভাঙ্গি মারিল নৃপতি দুর্য্যোধন।
নিঃক্ষত্রা হইল ক্ষিতি তোমার কারণ।।
তোমা হেতু জয়দ্রথ পায় অপমান।
গোবিন্দের প্রিয় তুমি পাণ্ডবের প্রাণ।।
তোমার বিহনে দিনে দেখি অন্ধকার।
এত শুনি কান্দে রাজা চক্ষে জলধার।।

বৃকোদর বলিলেন ধর্ম্ম নৃপমণি।
কোনপাপে পর্ব্বতে পড়িল যাজ্ঞসেনী।।
পতিব্রতা হৈয়া স্বর্গে নাহি গেলে কেনে।
এত শুনি শ্রীধর্ম্ম বলেন ভীমসেনে।।
দ্রৌপদীর পাপ শুন কহি যে তোমারে।
আমা হৈতে বড় স্নেহ ছিল পার্থ বীরে।।
এই পাপে দ্রৌপদী রহিল এই ঠাঁই।
জানাই বৃত্তান্ত শুন বৃকোদর ভাই।।
জ্ঞাতিবধ পাপে সদা জ্বলিছে আগুনি।
ঘৃতাহুতি তাহাতে হৈল যাজ্ঞসেনী।।
মহাভারতের কথা সুধা হৈতে সুধা।
কর্ণপথে পান কৈলে খণ্ডে মনক্ষুধা।।
কাশীরাম দাস প্রভু নীল শৈলা রূঢ়।
দক্ষিণে অনুজানুজ সম্মুখে গরুড়।।