০৩. অম্বথামা কর্ত্তৃক শিবের স্তব

গুন প্রভু দিগন্বর, বাঞ্চা পূর্ণ কর হয়,
আমি দীন হীন অভাজন।
ক্ষমা কর দোষ যত, আমি তব অনুগত।
নাহি জানি ভজন পূজন।।
আকাশ পাতল ভূমি, স্থাবর জঙ্গম তুমি,
দশ দিক অষ্ট কুলাচল।
ক্ষিতি অপ তেজঃ ব্যোম, পবন ভাস্কর সোম,
তব মুত্তি বিশেষ সকল।।
কি কব তোমার তত্ত্ব, তুমি রজঃ তুমি সত্ত্ব,
তমোগুণে করহ সংহার।
পড়িয়াছি এই দায়, উদ্ধার করহ তায়,
তোমা বিনা কেবা আছে আর।।
ভজনবিহীন জন, হের প্রভু ত্রিলোচন,
লজ্জা রক্ষা কর এইবার।
কাতর এ দীন জানি, কৃপা কর শূলপাণি,
তোমা বিনা গতি কি আমার।।
সুমতি কুমতি দাতা, তুমি সবাকার ধাতা,
পাষন্ড কি জানিবে মহিমা।
ভক্তজনে জানে তত্ত্ব, ও চরণে সদা মত্ত,
গুণাতীত গুণে নাই সীমা।।
তব ভক্ত যেই জন, তার নহে দুঃখী মন,
সদা সুখে বঞ্চে চিরকাল।
অভক্ত তোমার যেই, সদা দুঃখে মরে সেই,
বদ্ধ থাকে নাহি কাটে কাল।।
জ্ঞানোদয় নাহি হয়, সদা অন্ধকারময়,
বৃথা সেই ভ্রমে অবিরত।
না বুঝে ধর্ম্মের মর্ম্ম, যেমতে আপন কর্ম্ম,
ফল পায় সেই সেইমত।।
যদি জ্ঞান হয় তার, তবে ঘুচে অন্ধকার,
তব পদ আশ্রয় করিলে।
দিনে দিনে বাড়ে মান, পুনঃ হয় পুন্যবান,
ভক্তিতে কেবল ইহা মিলে।।
এমন নামের গুণ নিগুর্ণের জন্মে গুন,
গুণিগণে অধিক বাহুল্য।
অনায়াসে মুক্ত হয়, যেই জন নাম লয়,
পৃথিবীতে নাহি তার তুল্য।
এত বলি দ্রোণপুত্র, স্তব করি শুদ্ধচিত,
মহেশের ভুলাইল মন।
সদয় হইয়া হর, তারে কন নিতে বর,
কি বাসনা বলহ এখন।।
দ্রৌণি বলে এই বর, দেহ দেব দিগন্বর,
বাঞ্ছা পূর্ণ যেন মম হয়।
করি গিয়া শত্রুনাশ, দ্বার ছাড়ি কৃত্তিবাস,
এই বর দেহ মহাশয়।।