৪৯. পাণ্ডবগণের ইন্দ্রপ্রস্থে প্রত্যাগমন

তবে ধর্ম্ম-নরপতি জ্যেষ্ঠতাত-আগে।
সবিনয়ে মিষ্টভাষে কহে করযুগে।।
আজ্ঞা কর তাত, কিবা করি মোরা সব।
তোমার শাসনে সদা বঞ্চয়ে পাণ্ডব।।
শুনিয়া কৌরব-পতি অন্তরে লজ্জিত।
শান্ত কৈল যুধিষ্ঠিরে কহি বহু প্রীত।।
সাধুজন-শ্রেষ্ঠ তুমি ধর্ম্মজ্ঞ পণ্ডিত।
তোমারে বুঝাব কিবা, জান সর্ব্ব নীত।।
সাধুজন-কর্ম্ম, কভু দ্বন্দ্বে না প্রবেশে।
নিজ-গুণ নাহি ধরে, পর-গুণ ঘোষে।।
গুণাগুণ কহে যেই, সে হয় মধ্যম।
সদা আত্মগুণ কহে, সেই সে অধম।।
বংশের তিলক তুমি কুরুকুল-নাথ।
দুর্য্যোধন যত দোষ, ক্ষমা কর তাত।।
আমা আর গান্ধারীর দেখিয়া বদন।
সব ক্ষম, যত দুঃখ দিল দুষ্টগণ।।
কুরুকুল-শ্রেষ্ঠ তুমি, পরম ভাজন।
বালকের যত দোষ কর সম্বষণ।।
যে দ্যূত করিল পূর্ব্বে কেহ নাহি করে।
পুত্র-বলাবল মিত্রামিত্র বুঝিবারে।।
ভাল মতে তোমারে জানিনু এত দিনে।
কি ভার কৌরবকূলে তোমার পালনে।।
ভীমার্জ্জুন-রক্ষা আর ক্ষত্তার মন্ত্রণা।
দ্রৌপদী সতীর গুণ না হয় বর্ণনা।।
আমার ভারত বংশ করিল উজ্জ্বল।
যার কীর্ত্তি ঘুষিবেক ত্রৈলোক্য-মণ্ডল।।
যাহ তাত নিজ রাজ্য, কর অধিকার।
পালহ আপন দেশ প্রজা পরিবার।।
এত বলি পঞ্চ জনে করিল মেলানি।
প্রণমিয়া গেলেন সহিত যাজ্ঞসেনী।।
সভাপর্ব্ব সুধা-রস ব্যাস-বিরচিত।
শুনিলে অধর্ম্ম খণ্ডে, পরলোকে হিত।।