২৭. কৃপাচার্য্যের বক্তৃতা

কর্ণবাক্য শুনি কৃপাচার্য্য বলে বাণী।
যতেক করহ তেজ সব আমি জানি।।
মুখে মাত্র বল, কিন্তু শক্তি নাই কাজে।
শরতের মেঘ যথা নিষ্ফল গরজে।।
পণ্ডিতে কহিতে হেন মনে করে লাজ।
কি কর্ম্ম করিয়া এত কহ সভামাঝ।।
অজ্ঞান বাতুল যথা কর্ম্মে ক্ষম নহে।
ভাল মন্দ নাহি, মুখে যাহা আসে কহে।।
একেশ্বর যুদ্ধ ইচ্ছ অর্জ্জুনের সনে।
অসম্ভব কথা কহ শুনিনু শ্রবণে।।
যে পার্থ একাকী জিনে এ তিন ভুবন।
খাণ্ডব দহিয়া কৈল অগ্নির তর্পণ।।
চতুর্দ্দশ ভুবনেতে বলী যদুগণ।
বলে ভদ্রা হরি নিল একাকী অর্জ্জুন।।
একেশ্বর চিত্রসেনে জিনিয়া সমরে।
দুর্য্যোধনে মুক্ত কৈল অরণ্য ভিতরে।।
নিবাতকবচ কালকেয় মহাতেজা।
মারি নিষ্কণ্টক করি দিল দেবরাজা।।
পাঞ্চাল দেশেতে পাঞ্চালীর স্বয়ম্বরে।
জিনিলেক লক্ষ লক্ষ রাজা একেশ্বরে।।
একেশ্বর হেন জনে জিনিবারে ‍চাহ।
যেই মূর্খ নাহি জানে তার আগে কহ।।
গলে শিলা বান্ধি চাহ জলনিধি তরি।
গারুড়ি না জানি সর্প মুখে হাত ভরি।।
ত্রয়োদশ বর্ষ সবে নিয়ম পালিল।
পাইয়া শত্রুর ঘ্রাণ হেথায় আসিল।।
মেঘ হৈতে মুক্ত যেন হইল মিহির।
তাদৃশ আসিল দেখ পার্থ মহাবীর।।
একেশ্বর কেবা আছে এ তিন ভুবনে।
যুদ্ধে জয় করিবেক পাণ্ডব অর্জ্জুনে।।
ভীষ্ম দ্রোণ তুমি আমি দ্রৌণি দুর্য্যোধন।
ছয়জন যুদ্ধে যদি পারি কদাচন।।
মহাক্রোধে কৃপাচার্য্যে বহে ঘন শ্বাস।
অগ্নি হেন জ্বলে না কহিল অন্য ভাষ।।