১৬. প্রজালোকের প্রতি যুধিষ্ঠিরের প্রবোধবাক্য এবং অর্জ্জুনের গাণ্ডীব ধনু ও অক্ষয় তূণীরদ্বয় পরিত্যাগ

ধর্ম্ম বলিলেন শুন আমার বচন।
শোক না করহ সবে যায় নিকেতন।।
এই পরীক্ষিত হ’ল রাজ্যেতে রাজন।
আমা সম তোমা সবে করিবে পালন।।
সংসার অসার সার নন্দের নন্দন।
মনেতে চিন্তহ সেই কৃষ্ণের চরণ।
কৃষ্ণ ভজ কৃষ্ণ চিন্ত কৃষ্ণ কর সার।
ভেবে দেখ কৃষ্ণ বিনা গতি নাহি আর।।
এইরূপে প্রবোধ করিয়া বহুতর।
কৃষ্ণ বলি চলিলেন পঞ্চ সহোদর।।
হেনমতে পঞ্চ ভাই যান পূর্ব্বমুখে।
হেনকালে বৈশ্বানর দেখেন সম্মুখে।
অর্জ্জুনে চাহিয়া চলিছেন বৈশ্বানর।
আমার বচন শুন পার্থ ধনুর্দ্ধর।।
আমি হুতাশন, শুন ইন্দ্রের নন্দন।
মম হেতু করিয়াছ খাণ্ডবদাহন।।
তোমা পঞ্চ সহোদর দেব অবতার।
বিষ্ণু সহ পৃথিবীতে করিলে বিহার।।
করিলে অনেক কর্ম্ম বিনাশিলে ভার।
পরম সন্তোষ হৈল পৃথিবী অপার।।
অতঃপর কিছু আর নাহি প্রয়োজন।
স্বর্গবাসে চলিলে তোমরা পঞ্চজন।।
অক্ষয় যুগল তূণ গাণ্ডীব ধনুক।
দেহত আমায় তবে এ নহে কৌতুক।।
এত শুনি পঞ্চভাই পাঞ্চালী সহিত।
প্রণিপাত করিলেন হ’য়ে হরষিত।।
গাণ্ডীব ধনুক আর তূণপূর্ণ শর।
অগ্নি বিদ্যমানে দেন পার্থ ধনুর্দ্ধর।।
ধনুক লইয়া অগ্নি হৈল অন্তর্দ্ধান।
করপুটে পঞ্চজন করেন প্রণাম।।
তবে পূর্ব্বমুখ হ’য়ে যান ছয় জন।
বনে বনে চলিলেন ভাই পঞ্চজন।

মুষলপর্ব্ব সমাপ্ত।