১২৪. যুধিষ্ঠিরের প্রতি ধর্ম্মের ছলনা

প্রশ্নের উত্তর শুনি ধর্ম্ম মহাশয়।
পুত্র প্রতি কন হৈয়া অন্তরে সদয়।।
ছদ্মরূপী দেবতা আমি জেন পরিচয়।
বুঝিনু তুমি যে হও অতি সদাশয়।।
বর মাগ নরপতি হয়ে একমন।
জীয়াইয়া লহ তব ভ্রাতা এক জন।।
যুধিষ্ঠির শুনি তবে করে নিবেদন।
কেবল সতত যেন ধর্ম্মে থাকে মন।।
আর যদি অনুগ্রহ কর মহাশয়।
প্রাণ দেহ সহদেবে বিমাতৃ তনয়।।
ধম্মবলিলেন, রাজা তুমি জ্ঞানহীন।
অত্যন্ত বালক তুমি, না হও প্রবীণ।।
বিশেষে বৈমাত্র ভ্রাতা অনেক অন্তর।
জীয়াইয়া লহ তব ভ্রাতা বৃকোদর।।
নতুবা অর্জ্জুনে রাজা বাচাঁইয়া লহ।
পরপুত্রে কি কারণে জীয়াইতে চাহ।।
লক্ষ্মী-স্বরূপিণী ‍যিনি কৃষ্ণা গুণবতী।
অথবা ইহার প্রাণ চাহ নরপতি।।
আছয়ে প্রবল রিপূ দুষ্ট দুর্য্যোধন।
ভীমার্জ্জুন বিনা তারে কে করে নিধন।।
কুরুযুদ্ধে শক্তমাত্র পার্থ বৃকোদর।
কি কার্য্য হইবে তব জীয়াইলে পর।।
রাজা বলে, পর নহে বিমাতৃ নন্দন।
নকুল ও সহদেব মোর প্রাণধন।।
ভীমার্জ্জুন হৈতে স্নেহ করি অতিশয়।
বর দেহ, প্রাণ পায় বিমাতৃ তনয়।।
বিশেষ আমার এক শুন নিবেদন।
আমা হতে পিশু পাবে মম পিতৃগণ।।
মম মাতামহ গণ তারা পিণ্ড পাবে।
নকুলের মাতামহে কেবা পিণ্ড দিবে।।
সহদেব প্রাণ পেলে ধর্ম্ম রক্ষা পায়।
নতুবা পরম ধর্ম্ম একেবারে যায়।।
পরম ধর্ম্মেতে প্রভু যদি করি হেলা।
ভবসিন্ধু তরিবারে নাহি আর ভেলা।।
হেন ধর্ম্ম লঙ্ঘিবারে মোর মন নয়।
নিতান্ত আমার কথা এই কৃপাময়।।
মহাভারতের কথা অমৃত লহরী।
কাশীরাম দাস কহে, ভবভয়ে তরি।।।