১১. ভীষ্মের নীতি কথন

হেনমতে কহে তবে ভীষ্ম মহাশয়।
তব অগ্রে সেই মৈল কি তার সংশয়।।
এত শুনি যুধিষ্ঠির করয়ে রোদন।
সান্ত্বাইয়া বলে তারে শান্তনু নন্দন।।
বিষাদ না কর রাজা স্থির কর মতি।
ভ্রাতৃগণ সংহতি ভুঞ্জহ বসুমতী।।
নীতিবাক্য কথা কিছু শুনহ রাজন।
কদাচিত নিন্দা না করিহ ব্রাহ্মণ।।
পিতা মাতা পালিবে, রাখিবে অন্তঃপুরে।
জননীরে রাখিবেক রন্ধনের ঘরে।।
গৃহমধ্যে রাখিবে আপন প্রিয় নারী।
গোধন রক্ষণে দিবে ভ্রাতে অধিকারী।।
পুত্রকে রাখিবে রাজকার্য্যে সভাসদে।
করিলে সকল কার্য্য পাইবে সম্পদে।।
দান ধর্ম্ম যজ্ঞ তপ করিবে সতত।
প্রজাগণ পালিবে করিয়া পুত্রবত।।
প্রীতিবাক্য কহিয়া প্রজার কর লৈবে।
সাধুগণ পালি দুষ্টগণ নিবারিবে।।
প্রজার রমণী নিজ জননী জানিবে।
পুত্র মিত্র ভেদাভেদ কখন নহিবে।।
দোষাদোষ দেখি তার নিভৃতে বুঝিবে।
খলের বচনে রাজা প্রত্যয় না যাবে।।
উপার্জ্জন করি ধন করিবে সঞ্চয়।
ভয় ক্রোধ লোভ নিদ্রা ত্যজিবে সময়।।
না লইবে পরদ্রব্য, স্থাপ্য না হরিবে।
আপন জানিয়া মিথ্যা সাক্ষ্য নাহি দিবে।।
সেই সাধুজন যেই থাকে নিষ্ঠাচার।
সংক্ষেপে কহিনু ধর্ম্ম ধর্ম্মের বিচার।।