০৭. শ্রীকৃষ্ণের প্রতি গান্ধারীর শাপ

কুরুকুল বিনাশিলা বসুদেব সুত।
কহিতে অনল উঠে কি কব অচ্যুত।।
পুত্রশোকে কলেবর জ্বলিছে আমার।
বল দেখি হেন শোক হয়েছে কাহার।।
শুন কৃষ্ণ আজি শাপ দিব হে তোমারে।
তবে পুত্রশোক মোর ঘুচিবে অন্তরে।।
অলঙ্ঘ্য আমার বাক্য না হবে লঙ্ঘন।
জ্ঞাতিগণ হৈতে কৃষ্ণ হইনু নিধন।।
পুত্রগণ শোকে আমি যত পাই তাপ।
তুমি এ যন্ত্রণা পাবে দিলাম এ শাপ।।
মম বধুগণ যেন করিছে ক্রন্দন।
এইমত কান্দিবেক তব বধূগণ।।
তুমি যেন ভেদকৈলা কুরু পান্ডবেতে।
যদুবংশ তেন হবে আমার শাপেতে।।
কৌরবের বংশ যেন হইল সংহার।
শুন কৃষ্ণ এই মত হইবে তোমার।।
গোবিন্দেরে শাপ দিল কুপিয়া গান্ধারী।
শুনি কম্পমান হৈল ধর্ম্ম অধিকারী।।
অন্তর্য্যামী হরি জানিলেন এ কারণ।
সতীর অলঙ্ঘ্য বাক্য না হবে লঙ্ঘন।।
আমি জন্মিলাম ভূমি ভার নিবারণে।
পৃথিবীর ভার যে ঘুচিল এত দিনে।।
ঈষৎ হাসিয়া কৃষ্ণ বলেন বচন।
মম জ্ঞাতি মারিতে পারয়ে কোনজন।।
উঠহ গান্ধারী, নাহি করহ ক্রন্দন।
শাপ দিলা তথাপি না কর সন্বরণ।।
দুর্য্যোধন দোষে হৈল বংশের নিধন।
না জানিয়া আমারে শাপিলা অকারণ।।
আমি যদি দোষে থাকি ফলিবেক শাপ।
আপনার দোষে আমি পাব নমস্তাপ।।
এতেক বলিয়া মায়া করি নারায়ণ।
পুত্রশোকে গান্ধারীকে করেন মোচন।।
মহাভারতের কথা অমৃত সমান।
কাশীরাম দাস কহে শুনে পুন্যবান।।