২৮. অশ্বত্থামা কর্ত্তৃক কর্ণকে র্ভৎসনা

মাতুলের বচনান্তে অশ্বত্থামা বলে।
শরীর জ্বলিছে সূর্য্যপুত্র-বাক্যজালে।।
গবী নাহি লই, নাহি করি কোন কার্য্য।
সীমান্ত না হই, নাহি যাই নিজ রাজ্য।।
এতেক যে গর্ব্ব করে রাধার নন্দন।
কোন্ কর্ম্ম করি বলে, না জানি কারণ।।
বহু শাস্ত্র শুনিয়াছি কথা পুরাতন।
ক্ষিতিমধ্যে হইয়াছে বহু রাজগণ।।
মায়াদ্যূত বলে কেহ নাহি ভুঞ্জে ক্ষিতি।
তুমি যথা পররাজ্যে হইলে নৃপতি।।
ইন্দ্রপ্রস্থে রাজা হৈলে কোন্ যুদ্ধে জিনি।
কোন্ তেজে ধরিয়া আনিলে যাজ্ঞসেনী।।
জিনিলে কি যুধিষ্ঠিরে ভীম ধনঞ্জয়ে।
কিম্বা যুদ্ধে জিনিয়াছ মাদ্রীর তনয়ে।।
চারি জাতি বিধি ভূমে করিল সৃজন।
যে ‍যাহার জাতিধর্ম্ম করিবে পালন।।
পড়িবে পড়াবে, যজ্ঞ করিবে ব্রাহ্মণ।
বাহুবলে ক্ষত্রিয়েরা করিবে শাসন।।
কৃষি করিবেক বৈশ্য বাণিজ্য ব্যাপার।
ব্রাহ্মণে সেবিবে শূদ্র, নীতি বিধাতার।।
অশক্ত বৃত্তিতে নিজ অধর্ম্ম আচারী।
ইতর জনের প্রায় করিয়া চাতুরী।।
ইহাতে পৌরুষ এত শোনা নাহি যায়।
ধর্ম্মবন্ত পাণ্ডুপুত্র ক্ষমিল তোমায়।।
তোমারে আচার্য্য-বাক্য সহিবে কেমনে।
চন্দনেতে প্রীতি কোথা শীত-ভীত জনে।।
স্ত্রীধর্ম্মে আছিলা কৃষ্ণা একবস্ত্র পরি।
সভামধ্যে বিবসনা কৈলে কেশে ধরি।।
কোন্ পরাক্রমে তুমি কৈলে হেন কর্ম্ম।
পৃথিবীতে খ্যাত আছে তব ক্ষত্রধর্ম্ম।।
ধর্ম্মশাস্ত্র সত্য যদি, সত্য আছে ক্ষিতি।
ধর্ম্মপুত্র যুধিষ্ঠির হবে ক্ষিতিপতি।।
যে সভায় সভাসদ্ রাধার নন্দন।
তথায় কিরূপে হবে আচার্য্য শোভন।।
তিন লোক মধ্যে বসে যত যত জন।
অর্জ্জুন অজেয়, হেন কহে মুনিগণ।।
বাসুদেব সব পরাক্রমে মহাতেজা।
কোন্ জন আছয়ে, না করে তার পূজা।।
ধর্ম্মবিজ্ঞ জন হেন কহে শাস্ত্রমত।
পুত্রে স্নেহ যথা হয়, শিষ্যে সেইমত।।
সে কারণে আচার্য্যের পাণ্ডুপুত্রে প্রীত।
গুপ্ত কথা নহে ইহা জগতে বিদিত।।
পার্থ সহ আচার্য্যের দ্বন্দ্বে কোন্ কার্য্য।
পাশা খেলিবার পূর্ব্বে বৈল কি আচার্য্য।।
ইন্দ্রপ্রস্থ নিলে পূর্ব্বে যেই যুদ্ধে জিনে।
সেই যুদ্ধ বিধান না কর আজি কেনে।।
এই ত আছয়ে তব মাতুল শকুনি।
তাহার সহায় নিলে জিনিতে অবনী।।
সে পাশায় প্রতিকার মরণ বিহিত।
অর্জ্জুন দিবেক আজি ফল সমুচিত।।
ক্রোধেতে আচার্য্য-পুত্র কাঁপে থর থর।
কাশী কহে, রক্ষ তুমি দেব দামোদর।।