১৮. উত্তরকে অর্জ্জুনের অভয় ও আশ্বাস প্রদান

এমত বিচার করে কুরু সৈন্যগণ।
নির্ণয় করিতে নাহ পারে কোন জন।।
পলায় উত্তর, ধনঞ্জয় ধায় পাছে।
শত পদ অন্তরে ধরিল গিয়া কাছে।।
আর্ত্ত হয়ে রাজসুত বলে গদ গদ।
না ‍মারিহ বৃহন্নলা, ধরি তব পদ।।
এবার লইয়া যদি ‍যাহ মোরে ঘর।
নানা রত্ন তোমা আমি দিব বহুতর।।
দিব্য হেম মণি মুক্ত গজ হয় রথ।
এক লক্ষ গবী দিব স্বর্ণ-অলঙ্কৃত।।
বহু দেশ গ্রাম দিব, দাসদাসীগণ।
আর যাহা চাহ, তাহা দিব সেইক্ষণ।।
না মারিহ বৃহন্নলা, দেহ মোরে ছাড়ি।
এত বলি কান্দেকত ধরাতলে পড়ি।।
অচেতন হৈল বীর, যেন নাহি প্রাণ।
হরিল মুখের বাক্য, যেন হতজ্ঞান।।
আশ্বাসিয়া পার্থ কহে করি সচেতন।
না করিহ ভয়, শুন আমার বচন।।
যুদ্ধ করিবারে যদি ভয় হয় মনে।
সারথি হইয়া রথে বৈস মম সনে।।
রথী হয়ে দেখ আমি করিব সমর।
যত যোদ্ধাগণে পাঠাইব যমঘর।।
তোমার গোধন সব লইব ছাড়ায়ে।
কেবল থাকহ তুমি সারথি হইয়ে।।
ক্ষত্র হয়ে কেন তব রণে মৃত্যুভয়।
না করিহ রণভয়, ত্যজহ সংশয়।।
এত বলি ধরি তারে তুলে রথোপরে।
তথাপি বিরাট পুত্র কান্দে উচ্চৈঃস্বরে।।