০৩. বিরাট-গৃহে দ্রৌপদীর প্রবেশ ও বিরাট-রাণী সুদেষ্ণার সহিত কথোপকথন

তবে কতক্ষণে কৃষ্ণা প্রবেশে নগরে।
চতুর্দ্দিকে নরনারী ধায় দেখিবারে।।
ক্লেশেতে মলিন মুখ, দীর্ঘ মুক্তকেশ।
পিন্ধন মলিন জীর্ণ, সৈরন্ধ্রীর বেশ।।
পুনঃ পুনঃ জিজ্ঞাসয়ে যত নারীগণ।
কে তুমি, একাকী ভ্রম কিসের কারণ।।
তোমার রূপের সীমা বর্ণনে না যায়।
কিন্নর অপ্সরা তুমি দেবকন্যা প্রায়।।
সবারে প্রবোধি কৃষ্ণা বলে এই বাণী।
সৈরন্ধ্রীর কর্ম্ম করি, নরজাতি আমি।।
এমতে বেষ্টিত লোকে ভ্রমে দেবী কৃষ্ণা।
প্রাসাদে থাকিয়া তাহা দেখিল সুদেষ্ণা।।
কৈকেয়-রাজের কন্যা, বিরাট মহিষী।
কৃষ্ণারে আনিতে শীঘ্র পাঠালেন দাসী।।
আদর করিয়া তাঁরে যতেক কামিনী।
অন্তঃপুরে লয়ে গেল যথা রাজরাণী।।
শত শত রাজকন্যা সুদেষ্ণা বেষ্টিতা।
দ্রৌপদীরে হেরি সবে হইল লজ্জিতা।।
সাশ্চর্য্যে কৃষ্ণার রূপ সবে নিরীক্ষণে।
নীরবে যতেক নারী চিন্তে মনে মনে।।
বুঝি শাপভ্রষ্ট হৈয়া কোন দেবকন্যা।
আসিয়াছে মৎস্যদেশ করিবারে ধন্যা।।
কতক্ষণে জিজ্ঞাসিল বিরাটের রাণী।
দেবকন্যা হয়ে কেন ভ্রমহ অবনী।।
মহাভারতের কথা সুধা হৈতে সুধা।
সাধুজন করে পান নাশিবারে ক্ষুধা।।
কাশীরাম দাস করে নতি সাধুজনে।
পাইবে পরম প্রীতি যাহার শ্রবণে।।