৬. মনোয়ারা দরজা জানালা বন্ধ করে

মনোয়ারা দরজা জানালা বন্ধ করে শুয়ে আছেন। বাড়ি ফিরে তিনি একবার বমি করেছেন। মুখ ধোয়ার জন্যে কলপাড়ে যেতে গিয়ে মাথাঘুরে হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেছেন।

আজহার সাহেব অবাক হয়ে বললেন, তোমার কী হয়েছে?

মনোয়ারা বললেন, বুঝতে পারছি না। মাথা ঘুরছে।

‘সেকি!’

‘নিশ্বাসে কষ্ট হচ্ছে।’

‘নেত্রকোনায় যাওয়াই তোমার ঠিক হয়নি। অসুস্থ শরীর নিয়ে গিয়েছ— গাড়ির ঝাঁকুনি, পেট্রলের ধোঁয়া। এসো বিছানায় শুয়ে থাক।’

‘বিছানায় শুয়ে থাকলে হবে কীভাবে? রাতে মেহমান খাবে।’

‘সেটা আমি দেখব। দেলোয়ারকে নিয়ে যা পারি করব। তুমি শুয়ে থাক। ঘণ্টাখানিক ঘুমাও—দেখবে ভালো লাগবে।

‘আমার ঘুম আসবে না।’

‘আমি ঘুম আনার ব্যবস্থা করছি।’

‘ঘুম কি তোমার কোর্টের পেশকার যে তুমি ডাকলেই চলে আসবে?’

‘আসে কি না দেখ।’

আজহার সাহেব নিজেই দরজা জানালা বন্ধ করলেন। পর্দা টেনে দিলেন। মশারি ফেলতে গেলেন। মনোয়ারা বিরক্ত গলায় বললেন, দিনের বেলা মশারি খাটাচ্ছ কেন?

‘মশা আছে। তোমার যখন ঘুম আসতে ধরবে তখন কানের কাছে যদি একটা মশা গুনগুন করে ওঠে তাহলেই ঘুম শেষ। আমি এমন ব্যবস্থা করে দিচ্ছি যেন সন্ধ্যা পর্যন্ত তুমি ঘুমাতে পার। তুমি লেপ গায়ে দিয়ে শুয়ে থাক। আমি আসছি।’

‘আর কিছু বাকি আছে?’

‘লেবুর শরবত বানিয়ে আনছি। বিশেষ উপায়ে বানানো লেবুর শরবত। একগ্লাস খেয়ে শুয়ে পড়বে, দশ মিনিটের মধ্যে ঘুম আসবে। পরীক্ষিত অষুধ।’

মনোয়ারা বললেন, তোমার সঙ্গে আমার খুব জরুরি কিছু কথা আছে।

‘তুমি ঘুম থেকে ওঠো তারপর জরুরি কথা শুনব। এখন আমি লেবুর শরবত বানিয়ে নিয়ে আসি। আমি তোমাকে রেসিপি শিখিয়ে দিচ্ছি—কড়া ধরনের ইনসমনিয়াতে রেসিপিটা ট্রাই করবে। খুব মিষ্টি দিয়ে একগ্লাস শরবত বানাবে। দু’টা মাঝারি সাইজের লেবু কচলে রস দেবে। কাগজি লেবু না। সামান্য একটু লবণ দেবে। দুই-তিন দানার বেশি না। দু’টা শুকনা মরিচ পুড়িয়ে পোড়া মরিচটা শরবতের সঙ্গে মেশাবে। ঢক ঢক করে পুরোটা খেয়ে বিছানায় যাবে।’

‘আনো তোমার লেবুর শরবত।’

আজহার সাহেব ব্যস্ত ভঙ্গিতে লেবুর শরবত বানাতে গেলেন। মনোয়ারা খাটে হেলান দিয়ে বসে আছেন। বুকের ব্যথা এখনো আছে তবে মাথা ঘোরানোটা নেই। মনোয়ারা ঠিক করলেন লেবুর শরবত খেয়ে তিনি চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকবেন। একটা ব্যাপার নিয়ে ভালোমতো চিন্তা করা দরকার। মীরার বাবাকে কি সবকিছু জানাবেন? এখন তাঁর মনে হচ্ছে জানানো উচিত। এতবড় দায়িত্ব একা-একা তাঁর পক্ষে নেয়া সম্ভব না। তার শাশুড়িকেও জানানো দরকার। পুরানো দিনের মানুষদের মাথা খুব ঠাণ্ডা থাকে। জটিল ধরনের সমস্যা তাঁরা খুব সহজ সমাধান দিতে পারেন।

দরজা ঠেলে শেফা ঢুকল। সে চিন্তিত মুখে বলল, মা তোমার কী হয়েছে? ‘শরীরটা খারাপ করেছে।’

‘জ্বর?’

‘না জ্বর না। এম্নি শরীর খারাপ।’

‘মাছটার ওজন কত জানো মা? সাত কেজি। দেলোয়ার ভাই দাঁড়িপাল্লা এনে মেপেছেন। পুরোপুরি সাত কেজি না। সাত কেজির সামান্য কম। দুইশ গ্রাম বা ধরো দুইশ পঞ্চাশ গ্রাম।

‘আচ্ছা ঠিক আছে।’

‘মাছটা আমি আর বাবা, আমরা দু’জন মিলে রান্না করছি।’

‘ভালো কথা, রান্না কর।’

‘আপার সঙ্গে মাছ মারা নিয়ে বাজি ছিল। আপা বাজির টাকা দিয়ে দিয়েছে। এক হাজার এক টাকা।’

‘আচ্ছা ঠিক আছে। এক মাছ নিয়ে আর কত কথা বলবে। আমি তো ঘরে পা দেবার পর থেকে শুনছি মাছ, মাছ, মাছ। মাছ ছাড়াও তো জগতে অনেক ব্যাপার আছে। আছে না? একটা কিছু মাথায় ঢুকে গেলে ভাঙা রেকর্ডের মতো সেটাই বাজাতে হবে?’

‘আই এ্যাম সরি।’

‘সরি বলে দাঁড়িয়ে থাকার দরকার নেই, দয়া করে যাও। যেমন ভূতের মতো চেহারা তেমন ভূতের মতো আচরণ। মাছ, মাছ, মাছ। কান ঝালাপালা করে দিলে তো।’

‘মা আমি তো বলেছি আই এ্যাম সরি। আর কখনো মাছ নিয়ে কথা বলব না।’

‘বলবে না কেন? অবশ্যই বলবে। শুধু কথা বলা না, মাছ কোলে নিয়ে রাতে ঘুমিয়ে থাক। রান্না করার কোনো দরকার দেখি না। যাও তোমার আপাকে আসতে বলো, একগ্লাস পানি আর একটা চামচ নিয়ে যেন আসে।’

শেফা ঘর থেকে বের হয়ে এল। সে দাঁত দিয়ে ঠোঁট চেপে কান্না থামাবার চেষ্টা করছে। তাকে অনেকক্ষণ কান্না চেপে রাখতে হবে। আপাকে খবর দিতে হবে, তারপর নির্জন কোনো জায়গায় গিয়ে কাঁদতে হবে। তার সব বন্ধুরাই খুব কান্না পেলে বাথরুমে দরজা বন্ধ করে কাঁদে। সে তা পারে না। বাথরুমে সে যতবার কাঁদতে গেছে ততবার আয়নার দিকে চোখ পড়েছে। আয়নায় চোখ পড়তেই মনে হয়েছে—অন্য আরেকটা মেয়ে তার কান্না দেখছে।

.

আজহার সাহেবের বানানো লেবুর শরবত মনোয়ারা সবটাই খেয়ে ফেললেন। স্বামীকে খুশি করার জন্যে খাওয়া। দীর্ঘদিন এই জাতীয় কাজ করতে করতে ব্যাপারটা অভ্যাসের মতো হয়ে গেছে। চা খেতে ইচ্ছা করছে না—আজহার সাহেব বললেন, খাও এককাপ চা। স্বামীকে খুশি করার জন্যে খেলেন। টিভিতে শুকনা ধরনের কোনো আলোচনা হচ্ছে। আজহার সাহেব বললেন, এই শুনে যাওতো। লোকটা তো ইন্টারেস্টিং কথা বলছে। দেশের ইকনমিক প্রবলেমটার মূল জায়গায় হাত দিয়েছে—এসো দেখে যাও। কুৎসিত সেই প্রোগ্রাম তিনি হাসিমুখে দেখেছেন।

‘শরবতটা খেতে ভালো না?’

‘না ভালো না। তোমাকে খুশি করার জন্যে খেলাম।’

আজহার সাহেব বিস্মিত হয়ে স্ত্রীর দিকে তাকালেন। মনোয়ারা ক্লান্ত গলায় বললেন, এই জীবনে আমি বেশির ভাগ কাজই তোমাকে খুশি করার জন্যে করেছি।

‘তাই নাকি?’

‘হ্যাঁ তাই। তোমার পছন্দকে আমি নিজের পছন্দ করে নিয়েছি। আমার কষ্ট হয়েছে কিন্তু করেছি।’

আজহার সাহেবের বিস্ময় আরো বাড়ল। মনোয়ারার কথার ধরন তিনি বুঝতে পারছেন না। তার কী হয়েছে?

মনোয়ারা বললেন, দাঁড়িয়ে আছ কেন বোস।

আজহার সাহেব বসলেন। মীরা গ্লাস-ভর্তি পানি এবং চামচ নিয়ে উঁকি দিল। মনোয়ারা বললেন, তুই একটু পরে আয়। আমি তোর বাবার সঙ্গে কথা বলছি।

আজহার সাহেব বললেন, কথা বলার দরকার নেই তুমি রেস্ট নাও।

‘রেস্ট তো নেবই। কথা বলতে ইচ্ছা করছে, কথা বলে নেই। আমার যখন তোমার কথা শুনতে ইচ্ছা করে না তখনো তো কথা শুনি। খুব মন দিয়ে শুনি। যেখানে হাসার কথা সেখানে হাসি। যেখানে দুঃখিত হবার দরকার সেখানে দুঃখিত হই।’

‘হঠাৎ এইসব কী ধরনের কথা শুরু করলে?’

‘তোমাদের গ্রামের বাড়িতে আমার একেবারেই আসতে ইচ্ছা করছিল না। বড় আপার ছেলেটা চিকিৎসার জন্যে বাইরে যাবে। সে মনে হয় বাঁচবে না। আমি চেয়েছিলাম কয়েকটা দিন বড় আপার কাছে থাকতে। কিন্তু তা করিনি তোমাকে খুশি করার জন্যে গ্রামে এসেছি। হৈ চৈ করছি। মজা করছি।’

‘আমাকে বললেই তো হত।’

‘বলেছিলাম। তুমি মুখে হ্যাঁ না কিছুই বলনি, কিন্তু খুব বিরক্ত হয়েছিলে। কাজেই আমি হাসিমুখে তোমার সঙ্গে এসেছি। কেন জানো?’

‘কেন?’

‘সংসারটাকে ঠিক রাখার জন্যে, সুন্দর রাখার জন্যে। যেন যেই দেখে সেই ভাবে—আহা এরা কী সুখেই না আছে! বড় আপা যতবার আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে ততবারই বলে—মনোয়ারা আমি তোর কাছে আসি সুখ দেখার জন্যে। তোর সুখ দেখে মন ভরে যায়।

‘সুখ দেখে কেউ যদি খুশি হয় সেটা কি দোষের?’

‘না দোষের না। আনন্দের।’

‘সংসারটা সুখের করার চেষ্টাটা কি দোষের?’

‘না দোষের হবে কেন? তবে মেকি চেষ্টাটা দোষের।’

আজহার সাহেব হতভম্ব গলায় বললেন, তোমার চেষ্টা মেকি?

‘শুধু আমার না। আমাদের সবার চেষ্টাই মেকি।’

‘মনোয়ারা তোমাকে একটা কথা বলি। যে-কোনো কারণেই হোক আজ তুমি উত্তেজিত। উত্তেজিত অবস্থায় তুমি কী বলছ না বলছ নিজেই জানো না।’

‘জানব না কেন? খুবই জানি। তবে আমি উত্তেজিত না। আমি খুব ঠাণ্ডা মাথায় কথা বলছি।’

‘সব কথা আজই বলতে হবে কেন?’

‘আজই বলতে হবে কারণ সুখী-সুখী খেলা আর আমার ভালো লাগছে না।’

আজহার সাহেব একদৃষ্টিতে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আছেন। মনোয়ারা চোখের লাল ভাব আরো বেড়েছে এবং চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। আসলে মনোয়ারা কাঁদছেন। কান্নাটাকে কান্না মনে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে চোখের কোনো অসুখ।

মনোয়ারা বললেন, তোমাকে খুবই জরুরি কিছু কথা বলব। মন দিয়ে শোন।

আজহার সাহেব বললেন, জরুরি কথাটা পরে শুনি।

‘না পরে শুনবে না। এখনি শুনবে। তোমার বড় মেয়ের একটা ছেলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল। মেয়ে এখন পেট বাধিয়ে ফেলেছে।’

‘কী বলছ তুমি?’

‘খুব খারাপভাবে বলছি। খারাপ জিনিস খারাপভাবেই বলতে হয়।’

আজহার সাহেবের চোখমুখ শক্ত হয়ে গেল। তিনি বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালেন। মনোয়ারা তাঁর হাত ধরে টান দিয়ে আগের জায়গায় বসিয়ে কঠিন গলায় বললেন—কোনো চিৎকার করবে না। কোনো হৈ চৈ না। তারচে বড় কথা আমার মেয়েকে একটা কথা বলবে না। আমার মেয়ের সম্মান আছে। সে জলে ভেসে আসেনি।

‘সম্মান? তোমার মেয়ের সম্মান?’

‘হ্যাঁ সম্মান। সে ভুল করেছে। এ যুগে মেলামেশার যে বাড়াবাড়ি তাতে ভুল হতেই পারে। এই ভুলের কারণে তার সম্মান সারাজীবনের জন্যে নষ্ট হবে কেন?’

‘তুমি তাকে সাপোর্ট করছ? তুমি?’

‘হ্যাঁ আমি। কারণ আমার কাজই হচ্ছে সাপোর্ট করা। তুমি যখন ভুল কর তখন ভুল জেনেও ভুলটাকে সাপোর্ট করি। করি না?’

‘আমি ভুল করি?’

‘অবশ্যই কর। তুমি ফেরেশতা না—মানুষ। এবং সাধারণ মানুষ। তুমি তো ভুল করবেই। এখন সেইসব নিয়ে কথা বলব না। এখন কথা বলব মীরার ভুল নিয়ে। তুমিতো জাজ সাহেব। মেয়ের বিচার কর।’

‘মেয়ের বিচার করব?’

‘হ্যাঁ মীরা ভার্সাস আজহার পরিবার, ফৌজদারি মামলা।’

‘তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে।’

‘হয়তো হয়েছে। মাথা খারাপ না হলে সত্যিকথা বলা যায় না। সত্যি যখন বলছি তখন মনে হয় মাথা খারাপই হয়েছে। মেয়েকে নিয়ে এখন কী করবে বল।’

‘ওকে এক্ষুনি বাড়ি থেকে চলে যেতে বল। এই মুহূর্তে। আমি যেন ওর মুখ না দেখি। আমি আর কোনো দিনও এই মেয়ের মুখ দেখতে চাই না।’

‘খুব ভালো কথা। মেয়েকে ডেকে ‘রায়’ শুনিয়ে দাও। আর দেলোয়ারকে বল তাকে যেন রেলস্টেশনে নিয়ে ট্রেনে তুলে দেয়। সে কি এক বস্ত্রে যাবে, না একটা স্যুটকেস সঙ্গে নিতে পারবে?’

আজহার সাহেব একদৃষ্টিতে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আছেন। তাঁর হাত কাঁপছে। মনে হচ্ছে তিনি চোখেও ঝাপসা দেখছেন মনোয়ারার মুখ কেমন যেন অস্পষ্ট লাগছে।

মনোয়ারা চোখ মুছতে মুছতে বললেন, যা করবে নিজের সম্মান বজায় রেখে করবে। লোকজন যেন কানাকানি না করে। আচ্ছা শোন, মেয়েকে গলা টিপে মেরে দড়ি দিয়ে ঘরে ঝুলিয়ে দিলে কেমন হয়? আমরা আত্মহত্যা বলে প্রচার করে দেই। তোমার কি ধারণা এতে সব দিক রক্ষা হয়?

আজহার সাহেব আবারো উঠে দাঁড়াতে গেলেন, মনোয়ারা তাঁকে ধরে বসিয়ে দিয়ে কঠিন গলায় বললেন—না তুমি উঠবে না। তুমি জাজ সাহেব, রায় না দিয়ে আমি তোমাকে উঠতে দেব না।

আজহার সাহেব ক্লান্ত গলায় বললেন, তুমি যা ভালো বোঝ কর।

‘আমার উপর দায়িত্ব?’

‘হ্যাঁ।’

‘এই দায়িত্ব সবসময় মেয়েদেরই নিতে হবে কেন? ছেলেরা কেন নেবে না? ছেলেরা কি পৃথিবীতে এসেছে গায়ে ফুঁ দিয়ে বেড়ানোর জন্যে?’

‘আমাকে এইসব কেন বলছ?’

‘জানি না কেন বলছি। আসলেই,তো তোমাকে না জানালেই হত। আনন্দের ব্যাপারগুলি তোমাকে জানানো যায়। সমস্যাগুলি কেন জানবে? মেয়েকে ক্লিনিকে নিয়ে ঝামেলা মুক্ত করে আনব, তুমি কিছুই জানবে না। তুমি কফি খেতে খেতে মেয়েদের সঙ্গে পাপ-খাদকের গল্প করবে। একসময় মেয়ের বিয়ে হবে। তুমি মেয়ে জামাইকে গ্রামের বাড়ি দেখাতে আনবে। তুমি তোমার এক জগতে কী সব মহৎ কর্ম করেছ তা দেখাবে।’

‘মনোয়ারা তুমি ঠিক করে বল। তুমি কি আমাকে ঘৃণা কর।’

‘তোমাকে ঘৃণাও করি না আবার ভালোওবাসি না।’

‘ভালোবাস না?’

‘না। এত অবাক হয়ে তাকাচ্ছ কেন? আমি যা করি তার নাম অভিনয়। ভালোবাসার অভিনয়। তুমিও তাই কর। ‘আমাদের গাড়ি’

‘আমাদের বাড়ি’ এইসব বলে এমন ভাব করি যেন একজন আরেকজনের প্রেমে হাবুডুব খাচ্ছি। আসল ব্যাপার তা না। তুমি এখন যাও—তোমার পাথরের মতো মুখ দেখতে ভালো লাগছে না। তুমি গিয়ে রান্না-বান্নার জোগাড় দেখ। রাতে মাস্টারসাহেবরা খাবেন। তাদের কী গল্প করবে তাও ঠিক করে রাখো। পাপ-খাদকদের গল্পটা আবারো করতে পার। অনেক গল্পের মধ্যে তোমার এই গল্পটা হল কুমিরের বাচ্চা। বার বার দেখানো যায়।’

আজহার সাহেব ঘর থেকে বের হবার পর পরই মীরা পানির গ্লাস এবং চামচ নিয়ে ঢুকল। সে দেখল মা ঘুমিয়ে পরেছেন। সে মাকে জাগাল না। ঘর থেকে বের হয়ে এল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *