২৫. তুই যদি আমার হইতি রে

কুসুমকে নিয়ে নৌকা রওনা হয়েছে। ইঞ্জিনের নৌকা পাওয়া গেল না। বৈঠার ছোট নৌকা। দ্রুত যেতে পারে এই জন্যেই ছোট নৌকা। নৌকা বাইছে মোবারক, সুরুজ এবং মতি। রাজবাড়ির মেয়ের ইঞ্জিনের নৌকাকে যে করেই হোক ধরতে হবে। মতির মন বলছে–একবার কুসুমকে তার কাছে নিয়ে যেতে পারলে সে কুসুমকে বাঁচিয়ে ফেলবে।

প্রবল জ্বর অগ্রাহ্য করে মতি নৌকা বাইছে। প্রাণপণ শক্তিতে দাড় টানছে সুরুজ আলি। কুসুম মাঝে মাঝে বিড় বিড় করে কি বলার চেষ্টা করছে। তার কথা শোনার কারো সময় নেই।

আকাশজোড়া শ্রাবণের মেঘ। ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি পড়তে শুরু করেছে। মতি এবং সুরুজ মিয়া দুজনই এতে স্বস্থি পাচ্ছে। কারণ তাদের দুজনের চোখেই পানি। শ্রাবণ ধারার কারণে এখন আর এই চোখের পানি আলাদা করে চোখে পড়বে না।।

নৌকা হাওড়ে পড়ল। বাতাসে বড় বড় ঢেউ উঠছে। নৌকা টালমাটাল করছে–মোবারক শক্ত হাতে হাল ধরে আছে। বৃষ্টি নেমেছে মুষলধারে। জ্বর, পরিশ্রম, আতংক এবং ক্লান্তি সব মিলিয়ে মতির ভেতর এক ধরনের ঘোর তৈরী হয়েছে। তার কেন জানি মনে হচ্ছে অপূর্ব গলায় কেউ একজন কাছেই কোথাও গাইছে–

তুই যদি আমার হইতি, আমি হইতাম তোর।

Leave a Reply to হামিদুল Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *