১. খাট

১. খাট

‘খাট? খাট দিয়ে কী হবে?’ তিতলি আকাশ থেকে পড়ে।

 ‘লাগে, দিদিভাই, লাগে। আপনারা মূল্য ধরে দিচ্ছেন, আমরা যা যা লাগে সবই কিনে দেব, শুধু ওই খাটটা বাদে। ওর মধ্যে শয্যাবস্ত্র সবই পাবেন। শতরঞ্চি, তোশক, বালিশ, কোলবালিশ, চাদর, লেপ, শুধু খাটটাই এক্সট্রা। ওটাও আমরা দিতে পারি, তার জন্য একটু এক্সট্রা লাগবে। আর যদি নিজে দেখে কিনে দিতে চান তাহলে বৌবাজার চলে যান, ভালো ভালো ফার্নিচারের দোকান আছে—’ সাধুটি হাসিমুখে জানালেন, ‘হাজার তিন-চারে হয়ে যাবে।’

‘কিন্তু খাট কেন? খাট দিয়ে কি হবে?’ তিতলির এককথা।

‘শয্যা কেন? তোশক কেন? কোলবালিশ কেন? প্রশ্ন তুললে তো সবই কেন-র মধ্যে পড়ে যাবে দিদিভাই। বায়ুভূত প্রাণের কি বিছানা লাগে? ওই নিয়ম আর কী!’

‘বউবাজারের ফার্নিচারের দোকানেই যাই তাহলে।’ মিতুলের দিকে তাকাল তিতলি।

‘তিতলি, পাগলামি করিসনি। খাট দিয়ে কী হবেটা কী, শুনি? ও খাট তো পুরুতরাই পাবে—’ মিতুল ধমক দেয়।

‘পুরুতরাও রাখে না, আবার মার্কেটে ফিরে যাবে ওই খাট—ওই দোকানেই। পাঁচশো টাকা কমে—বুঝলি? মাঝখান থেকে পকেট থেকে হাজার তিন-চার খসবে,—’ মৌ যোগ দিল, ‘ফর নাথিং!’

দেড় হাজারেও খাট হয়—’ বলে রিলা।

‘ধুত! সে শ্যালদার খাট,—পাঁচশোতেও হবে—সেবারে দত্তবাবুদের কী কাণ্ড হল মনে নেই? বডি তুলতে না তুলতে খাটখানা ভেঙে মচকে পড়ল মড়মড় করে—অত বড়লোক—অত চালিয়াতি,—অথচ খাটটা কিনেছে ওঁছা—’

দেবের কথা মধ্যপথে থামিয়ে মৌসুমি বলল, ‘আরে সে তো ছিল ডেডবডি বইবার খাট, এটা তো হচ্ছে দানের—’

তিতলির চোখে ভাসছিল তাদের তক্তাপোশটা—পায়ার নীচে ইট বসিয়ে উঁচু করা। নীচে ট্রাংক, বাসনকোসন, বইপত্র। সেই তক্তাপোশে শুতেন বাবা। মিতু, তিতুকে নিয়ে। মা শুতেন নীচে শতরঞ্চি পেতে বিছানা করে। আর দাদা শুতে যেত শিবুদাদের বাড়িতে, ওপরে। দোতলায়। তিতলিদেরটা ছিল দেড়তলার ঘর—এখন যার নাম মেজানাইন ফ্লোর। ওই একটা ঘরেই সবাই মিলে থাকা। একটা বারান্দা ছিল, ঢাকা বারান্দা। তার ওপরের দিকে অনেকগুলো পায়রার বাসা। রোজ বারান্দাটা নোংরা করে রাখত তারা, আর রোজ ভোরে সেই নোংরা বারান্দা পরিষ্কার করে, মা রান্না করতে বসতেন।

বাবা-মাকে একসঙ্গে শুতে দেখেনি তিতলি,—যতদিন না তারা, বোনেরা বাড়ি ছাড়ল। দিদির বিয়ে হয়ে যাবার পরে মা খাটে উঠে এলেন। তিতলি আমেরিকা যাবার পরে মা-বাবা দুজনে খাটে শুলেন। খাট মানে সেই উঁচু করা তক্তাপোশ। মিতুল আর তার স্বামী যখন অষ্টমঙ্গলায় এল, ওপরতলায় শিবুদারা একটা ঘর ছেড়ে দিয়েছিল। এর পরে মিতুল স্বামীকে নিয়ে এসে কখনও বাপের বাড়িতে রাত্রিবাস করেনি। হাসিমুখে সারাদিন থেকে, রাত্রে খেয়েদেয়ে শ্বশুরবাড়িতে চলে যেত। অশোকদা খুব ভালো ছেলে। দিদির সঙ্গে পড়ত যাদবপুরে। দিদি পড়ত জিওলজি, অশোকদা ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং। অশোকদারাও উদ্বাস্তু, অনেক যুদ্ধ করে দাঁড়িয়েছে জীবনে। ওরা বুঝত তিতলিদের সমস্যা। বাঘাযতীনে ওদের দুটো ঘর ছিল। মিতুলরা গেলে, সবাই একটা ঘরে গিয়ে, অন্যটা ওদের ছেড়ে দিত। সেই জন্যেই তো অশোকদা চাকরি নিয়ে প্রথমেই বাইরে চলে গেল। ওরা সংসার পাতল ঘর থেকে অনেক দূরে গিয়ে। দিল্লিতে। তারপর বাঙ্গালোরে চাকরি বদল। তারপরই আখেন। জার্মানিতে। এখনও ওরা জার্মানিতেই। শহরটা ওরা পালটেছে, আরও বড় শহর। ফ্রাঙ্কফুর্টে এখন থাকে দিদিরা।

.

‘তিতলি, বল, তাহলে কী করবি? যাবি বউবাজার?’

‘—আই ডোন্ট সি এনি রিজন—’

রিলার আপত্তি থামিয়ে মিতুল বলে, ‘না রে যাব। চল দেখি, আরেকটু সস্তায় যদি—’

গাড়িতে স্টার্ট দিয়ে, দেব বলল, ‘বেশ বাওয়া, তোমরা যখন চাও। দিব্যি কেমন বেওসা শুরু করে দিয়েছে এইসব মঠগুলো? প্রত্যেকটা মঠে এখন শ্রাদ্ধ, পৈতে, অন্নপ্রাশন, মায় বিয়ে পর্যন্ত হচ্ছে! কী লাইফ হয়েছে মাইরি! মঠের সাধুগুলো পর্যন্ত ব্যাবসাদারি শিখে গেল? হিন্দু রিচুয়ালসগুলো জানিস বলেই সেগুলো তোরা ভাড়া খাটাবি? তোরা কি রাঁধুনি-বামুন, যে রান্না জানিস, তাই কেটারিং-এর বিজনেস খুলবি? পুরোপুরি সব বন্দোবস্ত ওরা করবে, তুমি শুধু টাকাটা ধরে দাও—জায়গাটাও ওদের—ভেবে দ্যাখো।’

‘হ্যাঁ, কেটারিং-এর দায়িত্বও ওঁদের। ওঁরা চমৎকার করে প্রসাদ ভোগ রেঁধে খাইয়ে দেন। শ্রাদ্ধের দিন লাঞ্চ ওঁদেরই ভোগপ্রসাদ। মৎস্যমুখীর আমিষ খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা অবশ্য নতুন ফ্ল্যাটেই করছি—মায়ের জন্যেই তো ফ্ল্যাট। মার খুব ইচ্ছে ছিল—নিজের বাড়িতে সংসার করবেন—নিজস্ব বসতবাটি…’

তিতলির গলার স্বর বুজে গেল। চোখও। মিতুল আস্তে পিঠে হাত রাখে। বলে, ‘ঠিক আছে। মা তো দেখছেন।’

মিতুল-তিতলির সঙ্গে ঘুরছে তিতলির স্কুলের বন্ধু মৌসুমি, রিলা। মাসিমার সংসার ওরাও দেখেছে। তিতলি যখন আমেরিকার পথে, তখন একজনের বিয়ে হয়ে গেছে, আরেকজন দিল্লি-স্কুলে ইকনমিকসে এম.এ. করছে। তবুও এত বছর পরেও এত বৈচিত্র্যের মধ্যেও মৌসুমি-রিলা-তিতুর সম্পর্কে চিড় ধরেনি। মৌয়ের দুটি মেয়ে, রিলার এক ছেলে। তিতলি এখনও একা। তিতলি সত্যিই ভেবেছিল এইবার ফিরে আসবে। আসছি আসব করে, ছাড়ছি-ছাড়ব করে কিছুতেই আর আমেরিকা ছেড়ে আসা হচ্ছিল না তিতলির। বাবা মারা যাবার পরই ও স্থির করেছিল মা’র জন্যে দেশে ফিরবে! ওর যা ডিগ্রি, যে-বিষয়ে কাজ, তাতে চাকরি পাওয়া অসম্ভব হবে না। বায়োকেমিস্ট্রিতে অনেক ধরনের কাজ পাওয়া যায়। এসব জেনেও কেন যেন তিতলির ফিরে আসাটা আর হয়ে উঠছিল না। সকলকে বলে রেখেছিল কলকাতায় একটা বাড়ি দেখতে। একটা মাঝারি মাপের ফ্ল্যাট। বেশি বড় নয়, বেশি ছোট নয়। বসার ঘর, বারান্দা, একটা বড়সড়ো রান্নাঘর, আর অন্তত দুটো বেডরুম। তিনটে হলেই সবচেয়ে ভালো হত। কিন্তু তিনটে বেডরুম হলেই যে দামটা লম্ভ দিয়ে গাছে ওঠে! এতদিন ধরে খোঁজখবর করতে করতে শেষে মিলেছে ফ্ল্যাট। সুন্দর ফ্ল্যাট—গ্রিন রিজেস, বেশ খোলামেলা, খুব সুব্যবস্থা—একটা মার্কেটিং কমপ্লেক্স পর্যন্ত আছে। টু বেড়রুম, টু বাথরুম, কিন্তু সঙ্গে দিব্যি একটা সার্ভেন্টস কোয়ার্টার আছে যেটা অনায়াসেই ওর স্টাডিতে কনভার্টেড হতে পারে। এবং একটা ছোট্ট লু-ও। এতদিনে ফ্ল্যাটটা কেনা হয়েই যেত, কীসব তুচ্ছ আইনি জটিলতায় আটকে ছিল—মাকে আর নিয়ে যাওয়া হল না মায়ের নিজস্ব ফ্ল্যাটে। মায়ের সঙ্গে জয়েন্ট নামেই কিনেছিল ফ্ল্যাটটা তিতলি। মা জেনে গিয়েছেন। সইটই করেছিলেন। এইটুকু শান্তি।

.

‘কি রে, এইটে কেমন?’ মৌ ঠেলা মারে।

সুন্দর ঝকঝকে একটা সিংগল খাট। পালিশ করা। খুব স্মার্ট দেখতে। আজকাল এদেশে কী দারুণ ফার্নিচার বানাচ্ছে। নতুন ফ্ল্যাটে খুব মানাবে এটা। ছোট বেডরুমে একটা সিংগল খাট দেবার কথাই ভাবছিল তিতলি।

‘কী হবে অত দামি খাট দিয়ে?’ রিলা আবার যথারীতি বাস্তববুদ্ধির দোহাই পাড়ে।

‘ও খাটটা তো পুরুতের জন্যে কেনা হচ্ছে। ওতে কি মাসিমা শোবেন? অত দামিতে কাজ নেই। আরেকটু কম দামের দেখান। শ্রাদ্ধের দানের জন্য খাট চাইছি আমরা। শোবার জন্যে নয়। অত শক্তপোক্ত—’

‘আমাদের সব খাটই শক্তপোক্ত দিদি! কিন্তু যদি আরেকটু কম দামি কাঠের নেন তাও দেখাতে পারি—যার যেমন চয়েস।’

দেব এক ধমক লাগায়—’অত কথায় কাজ নেই—আপনার কারবারটা কাঠের—কথার নয় মশাই—শুনলেন তো শ্রাদ্ধে দানের জন্য খাট! ঘর সাজানোর জন্যে নয়, সভা সাজানোর জন্যে।’

‘থাক গে, ওই খাটটাই নিয়ে নে’—হঠাৎ সবাইকে চমকে দিয়ে তিতলি বলে ওঠে, ‘আসলে মা’র জন্যেই তো! দামি কাঠই ভালো।’ তারপর মৃদু গলায় আপনমনেই বলে যায়, ‘আমার মাকে কখনও দামি খাটে কেন, কোনও খাটেই শুতে দেখিনি, দেবদা। নিজস্ব খাট আর হয়নি মায়ের।’

নিস্তব্ধতা ভেঙে দোকানদার বলে, ‘তাহলে এটাই ফাইনাল তো?’

.

ফ্ল্যাটটা বসবাসের যোগ্য না হওয়া অবধি তিতলি মৌয়ের কাছে রয়েছে। শ্রাদ্ধের আগেই নিজের ফ্ল্যাটে উঠে যাবে। যদিও কলকাতা শহরে তিতলিদের আত্মীয়ের অভাব নেই। কিন্তু তাঁরা স্বজন পর্যায়ের নন। রিলা থাকে শোভাবাজারে, মস্ত এক বাড়িতে। স্বামী-সন্তান নিয়ে যৌথ সংসারের বউ। সে-বাড়িতে অনেকগুলি পাতা পড়ে দু-বেলা। পরিবারের সদস্য সংখ্যা রীতিমতো চমকপ্রদ। তার মধ্যে অতিথি সৎকারের সুবিধা থাকে না সবসময়। কিন্তু মৌয়ের নিজস্ব ছোট্ট সংসার। ওর সঙ্গে দেবের আলাপ দিল্লি স্কুলে পড়তে গিয়ে। দেব পি. এইচ ডি. শেষ করছিল তখন। মৌসুমি অধ্যাপনা করে। দেব একটা ইনস্টিটিউটে কাজ করে। মেয়ে দুটো সাউথ পয়েন্টে পড়ছে। রিলা তার সংসার থেকে ছুটি নিয়েছে—দিনকয়েক সকালবেলায় বেরিয়ে পড়বে, মিতুল আর তিতলির সঙ্গে সঙ্গে থাকবে, ওকে সাহায্য করবে বলে। ওর সংসারটা বড় বলেই ওর স্বাধীনতা আছে। জায়েরা ছেলেকে সামলায়। স্বামীকে খেতে দেয়, রিলাকে ছেড়ে দেয়। জানে, তাদের প্রয়োজনের সময়ে রিলা করবে। মৌ-দেব আজ আসতে পেরেছে, আজ ওদের মহাবীর জয়ন্তীর ছুটি। রিলা হঠাৎ প্রশ্ন করে—’আচ্ছা মৌ, আমাদের কি মহাবীর জয়ন্তীর জন্য ছুটি হত? মনে তো হয় না। বুদ্ধপূর্ণিমাও তো ছুটি তাহলে? বাপ রে তোদের কত ছুটি রে!

‘আমাদের কিন্তু বড্ড পড়াতে হয়। ওদেশে এত ছুটি নেই’—তিতলি বলে, সব হাতে গোনা ছুটির দিন। আমি কলেজে পড়াই বলে আমার তবু তিনমাস সামার ভেকেশন আছে—যারা করপোরেট কাজ করে তাদের মাত্র বছরে পনেরো দিন।’

‘কিন্তু ওরা তেমনি উইক এন্ডে কত বেড়ায়? কথায় কথায় বাইরে বেরিয়ে পড়ে! এক দিন ছুটি নিয়ে লং উইক এন্ড তৈরি করে নেয়—আমাদের তো তা নেই—শনিবার ছুটিই নেই। সরকারি চাকরিতে তবু সেকেন্ড স্যাটারডে ছুটি থাকে, অন্যদের নেই।’

‘আমার তো ছেলের কলেজ খোলা, তোর মেয়েদের ইস্কুল?’

‘বন্ধ রে। ইস্কুলগুলো যে কোনও ছুতো পেলেই হল, অমনি বন্ধ হয়ে যাবে।’

‘রিলা, তোর ছেলে কলেজে! ইস, ভাবলেই আমার কেমন যেন লাগে!’

‘কেন? কেমন-কেমন লাগবার কী আছে? তুই যখন আমেরিকায় গেলি তখনই তো ঝন্টু দু-বছরের। আমার তো কলেজে ঢুকতে-না-ঢুকতেই বিয়ে হয়ে গেল—তোদের মতন পড়াশুনো করা তো আমার হল না।’

‘সুন্দরী হবার প্রতিফল! বুঝেছ? আরও হও ”পদ্মমুখী”! ভ্রমর বসবে না?’ তিন বন্ধুতে হেসে উঠল।

এর একটা কাহিনি আছে। রিলা সত্যিই সুন্দরী, ছোটবেলায় ভালো সম্বন্ধ এল—হঠাৎ করেই বিয়েটা হয়ে গেল, বনেদি বাড়ির সপ্তদশী বউ হল রিলা। কিন্তু ওই ‘পদ্মমুখী’ কথাটার একটা গল্প আছে। ওদের স্কুলে সংস্কৃতের দিদিমণির রিলার প্রতি একটা বিশেষ ঝোঁক ছিল। তার রূপের প্রশংসা করে ক্লাসেই তিনি নানারকম সংস্কৃত শ্লোক-টোক আওড়াতেন। একদিন বাংলায় বুঝিয়ে দিয়েছিলেন পদ্মফুলের মতো সুন্দর ওর মুখটি, আর অলকচূর্ণ না কী যেন, মুখের চারিপাশে যেসব ছোট, কোঁকড়া, কুচো চুলগুলি ওড়ে সেগুলো যেন কালো ভ্রমর, —মুখের মধুর লোভে উড়ছে—সেই থেকে ওরা খ্যাপাত রিলাকে ‘পদ্মমুখী’ বলে।

‘অলকাদি নিশ্চয়ই তোর প্রেমে পড়েছিলেন রে—তখন তো অত জানতাম না, এখন বুঝতে পারি—শি মাস্ট হ্যাভ বিন আ লেসবিয়ান—বাবা:, কী প্রেম নিবেদনটাই না করতেন তোকে ক্লাসের মধ্যে—’

‘একদিন তোকে একা-একা বাড়িতে যেতেও বলেছিলেন, মনে আছে? তুই যাসনি,—বেহালা অনেক দূর পথঘাট চিনিস না, কাছাকাছি হলে তো চলেই যেতিস! —তখন তো আমরা জানতামই না লেসবিয়ান কাকে বলে—ইশ—’

স্টিয়ারিং হাতে মুখ ফিরিয়ে হাসে দেব।—’কীসের ভয়? আরে দূর! গেলেই বা কী করতেন তোমাদের সংস্কৃতের দিদিমণি? আরও ক’টা শ্লোক শোনাতেন, আর চা-মিষ্টি খাওয়াতেন। বড়জোর একটা চুমু! এই তো? রেপ তো করতেন না? ফিমেল টিচারদের পক্ষে সেটা সম্ভব?’

তিতলি আপত্তি করে ওঠে, ‘কেন? মেয়েরা বুঝি মেয়েদের রেপ করতে পারে না? আজ্ঞে তারা সিডিউসও করতে পারে, রেপও করতে পারে—শুধু মেয়ে হলেই যে সে সেকসুয়ালি সেফ হবে, এটা ধরে নেবার কারণ নেই দেবদা! বি কেয়ারফুল উইথ ইওর ডটার্স!

‘থাক থাক, এসব কথা থাক না, ‘মৌ থামিয়ে দেয়—’আচ্ছা রিলা, তোর কি মনে হয় অলকাদি কি এখনও পড়াচ্ছেন রে?’

‘ধ্যাত? তাই কখনও হয়—উনি এখনও পড়াবেন? রিটায়ার করেছেন নিশ্চয়—’

‘কেন পড়াবেন না? তখন কত আর বয়েস ছিল তাঁর? ভেবে দেখ, বড়জোর তিরিশ-বত্রিশ, নিশ্চয়ই এখনও পড়াচ্ছেন।’

‘ওঁকে ডাকবি? ইস্কুলে একটা চিঠি দিবি? হয়তো অনেকেই এখনও আছেন।’

‘তা দেওয়া যায়। তোর আইডিয়াটা মন্দ না, মারও ভালো লাগবে—যদি মা অন্তরিক্ষ থেকে এসব দেখাশুনো করেন।’

‘যেমন এই খাট-ফাট’—দেব জুড়ে দেয়—’আশা করি, ওঁর নজরে পড়বে।’

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *