স্কুলে হৈ চৈ হচ্ছে। মওলানা ইরতাজউদ্দিন হৈ চৈ অগ্রাহ্য করে ফজলুল করিম সাহেবের বাসায় এসেছেন। রেশমীর সঙ্গে জরুরী কথা বলা দরকার। এখনই বলা দরকার।
মওলানাকে দেখেই রেশমী বের হয়ে গেল। সেও আনন্দে ঝলমল করছে।
মওলানা বললেন, খবর জান তো রেশমী?
জি জানি। খালুজান কই?
উনি বদরুলকে কোলে নিয়ে চক্কর দেয়ার চেষ্টা করছেন।
রেশমী শাড়ির আঁচল মুখে দিয়ে হাসি চাপার চেষ্টা করছে। মওলানা বললেন, রেশমী শোন–আমাদের স্কুল আবার শুরু হবে। নতুন করে শুরু হবে। খুব ভালোমত শুরু হবে।
জ্বি আমি জানি।
এখন তোমার কাছে একটা অনুরোধ। তুমি উনাকে ছেড়ে চলে যাবে।
আমি কি করেছি?
তুমি খুব ভাল করে জান আমি কেন এইসব বলছি। তুমি বুদ্ধিমতি মেয়ে, তোমার বুদ্ধির অভাব নেই। তুমি উনার মনের ভাব জান। ওনারটাও জান।
রেশমী মাথা নিচু করে রইল। মওলানা বললেন, হেড স্যারকে নিয়ে কোন রটনা হতে দেয়া যাবে না। তুমি যদি থাক ঘটনা অনেক দূর গড়াবে। লোকজন হেড স্যারকে ছিঃ ছিঃ করবে। তুমি কি সেটা জান না?
জানি।
তুমি চাও না আমরা স্কুলটাকে নিয়ে অনেক দুর যাই?
চাই। আমি চলে যাব।
কখন যাবে?
আপনি যদি বলেন এখন, তা হইলে এখনই যাব।
হ্যাঁ, এখনই চলে যাও।
উনার পা ধোয়ার পানির ব্যবস্থা করে তারপরে যাই?
আচ্ছা।
রেশমী জলচৌকির পাশে পানির বালতি টেনে আনছে। খড়ম জোড়া এনে রাখল। রেশমী কাদছে। টপ টপ করে তার চোখ থেকে দু ফোটা পানি জলচৌকিতে পড়ল।
মওলানা দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি মনে মনে মেয়েটির জন্যে প্রার্থনা করলেন। এই মেয়েটা ভাল। আল্লাহ এর ভাল কর। বাজী পোড়ানোর শব্দ হচ্ছে। স্কুলে মনে হয় বাজী পোড়ানো হচ্ছে। ঢোল বাজানোর শব্দ আসছে। নিশ্চয়ই হরিপদের কান্ড। ঢোলের শব্দ প্রবল থেকে প্রবলতর হচ্ছে।