৯
পয়লা অঘ্রানের আগের দিনেই হঠাৎ গিরিডিতে এসে পড়লেন পাটনার মামী। কুসুম ঘোষ আশ্চর্য হন— এ কি কণিকা? রওনা হবার কথা একটা টেলিগ্রাম ক’রে জানিয়ে দিতে হয়!
মামী বলেন—টেলিগ্রাম করবারও সময় ছিল না কুসুমদি।
কুসুম ঘোষ—নরেন আর বরযাত্রীদের সঙ্গে নিয়ে আসবে কে?
মামী—অরুণের বাবাই আসবেন। উনিই সব ব্যবস্থা করেছেন। আমি একটা দুশ্চিন্তা নিয়ে, বাধ্য হয়ে আগেই চলে এলাম।
—দুশ্চিন্তা? আতঙ্কিত হয়ে ভীরু চোখে তাকিয়ে থাকেন কুসুম ঘোষ।
—হ্যাঁ, যূথিকা কোথায়?
—মেয়ে তো গিরিডি পৌঁছবার পর থেকে ওপরতলার ঘরটিতে সেই যে ঢুকেছে, সহজে আর নড়তে চায় না।
– কি বলে যূথিকা?
—কিছু না।
—একেবারে কিছু না?
—মাঝে একবার তোমাকে একটা টেলিগ্রাম করবার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেছিল।
—কিসের জন্য?
—তা জানি না। কিছুক্ষণ এঘর-ওঘর ক’রে, আর গজ গজ ক’রে, তারপর নিজেই চুপ হয়ে গেল।
—আর কোন কাগু করেনি?
—কাণ্ড? না, কাণ্ড আর কি করবে বল? হ্যাঁ, অনেকক্ষণ ধরে একটা চিঠি লিখেছিল, বোধ হয় নরেনের কাছে। কিন্তু হঠাৎ নিজেই আবার চিঠিটাকে কুটি কুটি ক’রে ছিঁড়ে ফেলে দিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত একটা লম্বা ঘুম দিলো। কাণ্ড বলতে এই তো কাণ্ড।
—বিয়ে করতে কোন আপত্তির কথা বলেছে কি?
—কোন আপত্তির কথা বলেনি, বরং নিজেই তো বেশ দেখেশুনে দশটা শাড়ি বাছাই করেছে; শর্মা ব্রাদার্সের দোকান থেকে একশ’টা শাড়ি এসেছিল। বিয়ের নিমন্ত্রণের ব্যাপার নিয়েও নিজের থেকেই যেচে দু’চারটে ভাল ভাল কথা বলেছে।
—কি কথা?
—যূথিকার ইচ্ছে, বিয়েতে যেন হিমু-টিমুর মত লোককে নিমন্ত্রণ না করা হয়।
মামী খুশি হয়ে হেসে ফেলেন—যাক্, নিশ্চিন্ত হলাম। এইবার মেয়ের কাণ্ডজ্ঞান হয়েছে। কিন্তু ওদিকে একটা কাণ্ড হয়ে গিয়েছে।
—অ্যা?
—নরেন আমাকে তিনবার জিজ্ঞাসা করেছে, হিমাদ্রি নামে লোকটার সঙ্গে আপনাদের কি সম্পর্ক?
চেঁচিয়ে ওঠেন কুসুম ঘোষ—কোন সম্পর্ক নেই। হিমাজি একটা চাকর গোছের লোক। মাথায় ছিট আছে। লোকটাকে কোন কাজ ক’রে দিতে বললেই তেড়েমেড়ে এসে কাজ ক’রে দিয়ে চলে যায়।
—কিন্তু হিমাদ্রির সঙ্গে যূথিকার সম্পর্কটা কি দাড়িয়েছে?
—ছি ছি; তুমি কি বিশ্রী বাজে কথা বলছো কণিকা?
—একটুও বাজে কথা নয় কুসুমদি।
—খুব বাজে কথা।
—না, নরেনও নিজের চোখে কিছু কিছু দেখেছে। আমি অনেক কিছুই দেখেছি।
—কি দেখেছো তুমি?
—হিমাদ্রির সঙ্গে বিশ্রীরকমের বন্ধুত্ব করেছে যূথিকা।
—কি আশ্চর্য, এমন অসম্ভব কেমন করে সম্ভব হয়?
—সম্ভব তো হলো, আশ্চর্য হয়ে লাভ নেই।
—দুশ্চিন্তা করেও লাভ নেই। চেঁচিয়ে ওঠেন কুশুম ঘোষ।
—কেন? একটু আশ্চর্য হন কণিকা।
কুসুম ঘোষ—ভয়টা কিসের? চুলোয় যাক্ হিমাদ্রি।
কণিকা—কিন্তু নরেনকে তো আর চুলোয় ঠেলে দিতে পারেন না কুসুমদি?
—কখখনো না। কিন্তু নরেনের কথা তুলছো কেন?
—নরেনের মন বড় অহঙ্কারী মন। এসব ব্যাপারের সামান্য আভাসও জানতে পেরেছে কি বেঁকে বসবে। যূথিকাকে বিয়ে করতে কোনমতেই রাজি হবে না।
—কিন্তু নরেন জানবে কি ক’রে?
—জানিয়ে দেবে হিমাদ্রি।
—সে ছোটলোকের এত সাহস হবে?
—আপনার মেয়ে যদি ছোটলোককে সাহস দিয়ে থাকে তবে…।
স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলেন কুসুম ঘোষ। চারু ঘোষও শুনলেন সির সির ক’রে কাঁপতে থাকেন চারু ঘোষ। চারু ঘোষের জীবনের নিরেট অহঙ্কারটাই যেন ভয়ে সির সির ক’রে উঠেছে। হিমু দত্ত নামে একটা লোক, যে লোকটা বলতে গেলে একটা মানুষই নয়, তারই অহঙ্কারের কাছে যেন মাথা হেঁট ক’রে, ভেঙ্গে গুঁড়ো হয়ে আর ধূলো হয়ে লুটিয়ে পড়েছে তিনতলা উদাসীন।
কণিকা বলেন— নরেন বলেছে, গিরিডিতে এসেই প্রথমে হিমাদ্রি নামে লোকটার সঙ্গে আলাপ করতে হবে।
চারু ঘোষ হতভম্বের মত তাকিয়ে বলেন—এটা তো নরেনের মনের একটা ভয়ানক সন্দেহের কথা হলো।
কণিকা বলেন—সেই জন্যেই তো আমি আগেভাগে চলে এলাম। একটা ব্যবস্থা করতেই হয়। হিমাদ্রিকে সরিয়ে না দিতে পারলে নিশ্চিন্ত হতে পারা যাবে না।
চারু ঘোষ—কি ক’রে সরানো যায়? ওকে টাকা সাধলেও সরে যেতে রাজি হবে বলে মনে হয় না।
চুপ ক’রে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ ধরে চিন্তা করেন কণিকা। তাঁরও চার বছরের চেষ্টার ইতিহাস এমন করে ভুয়ো হয়ে যাবে, এ দুঃখ যে কণিকারও এতদিনের জেদের একটা ভয়ানক পরাজয়ের দুঃখ। শীতাংশু ডাক্তার যে হেসে হেসে আটখানা হয়ে যাবে, নরেনের মা অভিশাপ দেবেন, এবং গর্দানিবাগে কোন ভদ্রলোকের বাড়িতে মুখ দেখাতে পারবেন না কণিকা, যদি এই বিয়ে ভেঙ্গে যায়।
আস্তে আস্তে সিঁড়ি ধরে উপরতলায় উঠে যূথিকার ঘরের দিকে এগিয়ে যান এবং দরজার কাছে এসেই হেসে ওঠেন কণিকা মামী।
—চুপটি ক’রে বসে কি করছো যূথিকা?
চমকে ওঠে যূথিকা—কিছু না। তুমি কখন এলে?
মামী—এই তো সকাল নটার গাড়িতে পৌঁছেছি। শুনলাম, তুমি নাকি আমাকে একটা টেলিগ্রাম করতে চেয়েছিলে?
যূথিকা—হ্যাঁ। কিন্তু করিনি তো? এত ভয় পাচ্ছ কেন?
মামী—নরেনের কাছে কি একটা চিঠি লিখতে চেয়েছিলে?
—-হ্যাঁ।
—তবে লিখলে না কেন?
—লেখবার দরকার আর হলো না।
—ওরা সবাই কাল সকাল নটার গাড়িতে এখানে পৌঁছে যাবে।
যূথিকা হাসে—তুমিও বরযাত্রিণী হয়ে ওদের সঙ্গেই এলে পারতে; একদিন আগে এসে লাভটা কি হলো?
মামী হঠাৎ গম্ভীর হয়ে যান।—আসতে বাধ্য হয়েছি।
—কেন?
—বিয়ে ভেঙ্গে যাবার ভয় আছে।
ভয় পেয়ে শিউরে উঠে যূথিকা। মুখ কালো ক’রে আস্তে আস্তে বলে—কেন মামী? কি ব্যাপার হলো?
—হিমাদ্রিকে বিশ্বাস নেই।
যূথিকার হৃৎপিণ্ডের সাড়া বোধ হয় এই মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে যাবে! হাঁপিয়ে হাঁপিয়ে জোরে শ্বাস টানতে চেষ্টা ক’রে যূথিকা প্রশ্ন করে।—কি করেছে হিমাদ্রি?
—কিছু করেনি এখনো, কিন্তু কিছু একটা করবে বলে বুঝতে পেরেছি।
—কি?
—নরেনের কাছে ভয়ানক কোন কথা বলে দেবে।
—বলুক না, নরেন বিশ্বাস করবে কেন সে কথা?
—নরেন বিশ্বাস ক’রে ফেলবে বলে ভয় হচ্ছে।
—কেন?
—নরেনের মনে একটা খট্কা আছে বলে মনে হচ্ছে।
—অকারণে একটা খট্কা। বেশ মজার খট্কা তো।
—অকারণে নয়। পাটনাতে ট্রেনে ওঠবার সময় তুমিই নরেনের চোখের সামনে হিমাদ্রি হিমাদ্রি ক’রে চেঁচিয়ে আর উতলা হয়ে যে কাণ্ড করেছিলে, তাতে নরেনের মনে কোন খটকা লাগলে সেটা কি দোষের হবে?
—এসবই তো তোমার অনুমান। নরেনকে ছোট ক’রে ভাবতে তোমার ইচ্ছে করছে।
—নরেন নিজেই সন্দেহের কথা বলে আমাকে ভাবিয়ে দিয়েছে।
—কি বলেছে নরেন?
—গিরিডিতে এসেই প্রথমে হিমাদ্রির সঙ্গে আলাপ করবে।
দু’চোখ অপলক করে তাকিয়ে থাকে আর বিড়বিড় করে যূথিকা।—নরেনের মত মানুষ হিমাদ্রির মত একটা লোকের সঙ্গে আলাপ করবে কেন?
—সেটা বুঝতে চেষ্টা কর।
—কি জানতে চায় নরেন?
—সেটা বুঝে দেখ।
—হিমাদ্রিই বা কি এমন অদ্ভুত কথা বলে দেবে?
—তুমি জান।
যূথিকা ঘোষের মাথাটা এবার অলস হয়ে ঝুঁকে পড়ে। যূথিকা ঘোষের জীবনের পয়লা অঘ্রানের উৎসবকে ভেঙ্গে গুঁড়ো ক’রে দেবার শক্তি আছে হিমাদ্রির। নরেনের মনের এই খটকা যে হিমাদ্রির জীবনের একটা সৌভাগ্য। চারু ঘোষের মেয়ের ছলনার জ্বালায় শুধু চুপ ক’রে পুড়ে মরে যাবে না হিমাদ্রি। বিনা দোষের শাস্তি আর অপমান মাথা পেতে সহ্য করবে না, যতই মাটির মানুষ হোক না কেন হিমাজি। নরেনকে অনায়াসে বলে দিতে পারবে হিমাদ্রি; হ্যাঁ, চারু ঘোষের মেয়ে আমারই হাত ধরে আমাকে বলেছিল, বোম্বাই যেতে চাই না।
মামী বলেন—ছোটলোকের রাগের কোন বিশ্বাস নেই যূথিকা।
যূথিকা ঘোষের মাথাটা আরও ঝুঁকে পড়ে। বিশ্বাস করা যায় না ঠিকই, কিন্তু ছোটলোকের মত রাগ করেছে কে? হিমাদ্রির মনের প্রতিহিংসাটা, না নরেনের মনের ঐ খটকাটা?
মামী বলেন—এখনই সাবধান হয়ে একটা ব্যবস্থা করে ফেলা উচিত যূথিকা।
ঝুঁকে পড়া মাথাটাকে আরও নামিয়ে দিয়ে আর হাত তুলে যেন লুকিয়ে লুকিয়ে চোখ ঘষে যূথিকা। হ্যাঁ, সাবধান হওয়া উচিত, একটা ব্যবস্থা ক’রে ফেলা উচিত, নইলে পয়লা অজ্ঞানের সন্ধ্যায় উৎসবহীন উদাসীনের অন্ধকারে ঢাকা চেহারার দিকে তাকিয়ে হাততালি দেবে গণেশবাবুর বাড়ির লোকগুলি। হো হো করে হেসে উঠবে হিমাদ্রি। ছি ছি, হিমাদ্রিও স্বপ্নের ঘোরে একটা মিথ্যে কথা বলেছিল। সত্যি ভালবেসে থাকলে কি এরকম ভয়ানক প্রতিশোধ কেউ নিতে পারে?
এক গাদা টাকা ওর হাতে তুলে দিয়ে বলা যায়, চলে যাও হিমাদ্রি। কিন্তু তাতে কোন ফল হবে কি?
ভ্রুকুটি করে বলা যায়, কিন্তু তাতেও কোন ফল হবে না মনে হয়। ভ্রুকুটিকে ভয় করবে কেন হিমাদ্রি?
ক্ষমা চেয়ে বলা যায়, চলে যাও হিমাদ্রি। কিন্তু তাতে কি চলে যেতে রাজি হবে? ক্ষমা করবে কেন?
যদি একটা সুন্দর নকল হাসি হেসে ওর কানের কাছে একটা সুন্দর কথা ঘুস দেওয়া যায়, আমিই তো মনে মনে তোমার চিরকালের জিনিস; তাতেও কি কোন ফল হবে?
চলে যেতে রাজি হবে না, চারু ঘোষের মেয়ের কথা বিশ্বাসই করবে না হিমাদ্রি।
—যদি ভালবেসে থাক, তবে চলে যাও হিমাদ্রি! যূথিকা ঘোষের নীরব ঠোঁট দুটো যেন হঠাৎ মনে পড়া একটা মন্ত্রকে ধরতে পেরে ফিসফিস ক’রে ওঠে। যূথিকার বন্ধ চোখ, ভেজা চোখ দুটোও যেন দেখতে পায়, যূথিকার কথা শোন। মাত্র গিরিডি ছেড়ে ছুটে চলে গেল হিমাদ্রি। আর, একবারও ফিরে তাকালো না। যূথিকাকে বিশ্বাস না করুক, নিজেকে যে বিশ্বাস করে হিমাজি। এইবার, এই কথা শোনবার পর না চলে গিয়ে পারবে কেন?
ব্যস্তভাবে উঠে দাড়িয়ে যূথিকা বলে—আমি একবার বাইরে ঘুরে আসছি মামী; তোমরা ভয়-টয় পেও না।
মামী উদ্বিগ্নভাবে বলেন—বেশ তো, আমিও না হয় তোমার সঙ্গে যাচ্ছি।
যূথিকা হাসে—চল।
লোহার পুল পার হয়েই বাঁ দিকের সরু সড়ক। পথের দুপাশে সরু ড্রেনের শেওলা খুঁটে খায় পোষা হাঁসের দল। মাঝে মাঝে ছাই-এর গাদা; তারই পাশে ছড়ানো এঁটো-কাঁটা নিয়ে কাকে কুকুঁরে ঝগড়া করে।
বড় রাস্তার উপর গাড়ি থামিয়ে এই সরু সড়কের দিকে হাত তুলে দেখিয়ে দেয় ড্রাইভার গিরধারি—ওই যে দিয়ালকে উপর লকড়িকা ছোটা সাইন বোর্ড দিখাচ্ছে, বাস্, ওহি আছে হিমুকা ঘর।
এগিয়ে গিয়ে থমকে দাড়ায় যূথিকা। মামীও যূথিকার পাশে ধমকে দাড়িয়ে থাকেন। হ্যাঁ, এই তো হিমাদ্রির ঘর। দরজার পাশে দেয়ালের গায়ে এক টুকরো কাঠের উপর বড় বড় হরফে লেখা, ডাক্তার হিমাদ্রিশেখর দত্ত, হোমিও।
—কাকে চাই?
হিমুর ঘরের মাথার উপরে একটা ছোট ঘরের ঘুলঘুলির কাছে একজোড়া চোখ ভাসিয়ে প্রশ্ন করে একটা লোক।
যূথিকা—হিমাদ্রিবাবুকে চাই।
—সে ইখানে নাই। গিরিডি ছোড়কে চলিয়ে গিয়েছে।
চেঁচিয়ে হেসে ওঠে যূথিকা। —হিমাদ্রি নিজেই চলে গিয়েছে মামী।
একটা ঢোঁক গিলে নিয়ে ছটফট ক’রে, আরও উৎফুল্ল হয়ে, চোখের তারা দুটো আরও ঝিকমিকিয়ে, আরও জোরে চেঁচিয়ে হেসে ওঠে যূথিকা—হিমাদ্রি আমাকেই বিশ্বাস ক’রে পালিয়ে গিয়েছে মামী।
হাসি থামাতে গিয়ে যূথিকার শরীরটা কাঁপতে থাকে; শরীরের কাঁপুনিটা থামাতে গিয়ে আস্তে হাত তুলে দেয়ালটাকে ধরতে চেষ্টা করে যূথিকা। আর, দেয়ালটা ধরতে গিয়ে সেই ছোট কাঠের ফলকটা ছুঁয়ে ফেলে। এবং কাঠের ফলকটাকে ছুঁতে গিয়ে বড় বড় হরফে লেখা সেই নামটাকেই যেন আঁকড়ে ধরে যূথিকা।
একটা নাম মাত্র। কে জানে কবে কাঠের ঘুনে এই নামটাকেও কুরে কুরে খেয়ে প্রায় মুছে ফেলবে। দেখলেও বুঝতে পারা যাবে না, কার নাম আর কি নাম?
মামী বলেন—চল যূথিকা।
– সমাপ্ত –