শীল-শাস্ত্ৰ
উপক্রম :
প্রিয় আচার্য,
প্রণাম নেবেন। আপনাকে অবসর সময়েও বিরক্ত করার জন্যে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আপনি ‘অর্থশাস্ত্র’ লেখার কাজে পূর্ণ নিমজ্জিত এবং ব্যস্ত, একথাও আমার অজানা নয়। কিন্তু হঠাৎ এমন একটা পরিস্থিতি এসে দাঁড়িয়েছে যে এর সমাধান করার মতো একমাত্র যোগ্য ব্যক্তি আপনি।
আপনি নিশ্চয়ই শুনেছেন যে ‘তোসালি’-র শাসক মহিপাল দু-দিন আগেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তাঁর রাজ্য মগধেরই অঙ্গরাজ্য এবং কলিঙ্গর প্রতিবেশী হওয়ার কারণে, কলিঙ্গর কার্যকলাপের ওপর নজর রাখতে তোসালি বড়োই অপরিহার্য। এহেন সময়ে রাজার মৃত্যুতে সেখানকার উত্তরাধিকারী নিয়ে প্রশ্ন ওঠার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। এই পরিস্থিতিতে সেখানে মগধের প্রতিনিধি হিসেবে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির উপস্থিত প্রয়োজনীয়। এমন কেউ যে মগধের হিতাকাঙ্ক্ষী এবং রাজনীতিজ্ঞ। আমার জানা মতে, আপনার চেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি এই আর্যাবর্তে দ্বিতীয় কেউ নেই। আপনি যদি কৃপা করে আপনার যাওয়ার তিথি এবং সময় জানিয়ে দেন তবে আমি একটা ছোটো সৈন্যদল সহ আপনার যাত্রার ব্যবস্থা করতে পারি।
আপনাকে বিব্রত করার জন্যে একান্ত ক্ষমাপ্রার্থী।
ইতি,
আপনারই চির অনুগত,
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য।
চিঠির নীচে রাজকীয় অঙ্গুরী মুদ্রার সিলমোহরে আঙুল বোলালেন আচার্য বিষ্ণুগুপ্ত চাণক্য। পত্রবাহক তাঁর দিকে চেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অর্থাৎ উত্তর
নিয়ে ফেরার নির্দেশ আছে তার ওপর। একটা ভূর্জপত্র বের করে, কলম দোয়াতে ডুবিয়ে, তাতে উত্তর লিখলেন চাণক্য।
প্রিয় সম্রাট,
আয়ুষ্মান এবং সদা সুমতি ভবঃ। দু-দিন পরে, যাত্রা করব। সঙ্গে জীবসিদ্ধিকেও নিয়ে যাব। সেই অনুসারে ব্যবস্থা নিয়ো।
ইতি,
বিষ্ণুগুপ্ত চাণক্য।